লকডাউনের দিনগুলোর একঘেয়েমি থেকে বাঁচার জন্য মাঝে মধ্যেই সারাদিনের জন্য বেরিয়ে পড়ছি গাড়ির স্টিয়ারিং ঘুরিয়ে কলকাতার আশেপাশে একশো থেকে দুশো কিলোমিটারের মধ্যে ঐতিহাসিক জায়গাগুলোতে। গত রবিবার( ২০/৯/২০২০) গিয়েছিলাম ঝাড়গ্রাম জেলার জামবনীর জঙ্গলের মধ্যে চিল্কিগড়ের কনকদুর্গার মন্দিরে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ের গিধনি স্টেশন থেকে চিল্কিগড়ের দূরত্ব মাত্র ৩ কিলোমিটার এবং ঝাড়গ্রাম শহর থেকে ঠিক ১৮ কিলোমিটার দূরে। আমি কলকাতা থেকে খড়গপুরের চৌরঙ্গী হয়ে নিমপুরা, লোধাশুলী হয়ে সোজা কনকদুর্গার মন্দিরে ঢুকেছিলাম। লোধাশুলী থেকে কনকদুর্গার মন্দিরের দূরত্ব ঠিক ছাব্বিশ কিলোমিটার। নিবেদিতা সেতুথেকে ১৮৩ কিলোমিটার। চিল্কিগড়ের মূল আকর্ষণ হল, কনকদুর্গার মন্দির। দেবী কনকদুর্গা বহুকাল ধরে জামবনি তথা ঝাড়গ্রাম অঞ্চলের সাধারণ মানুষের আরাধ্যা দেবী।
জামবনীর এই জঙ্গলে প্রায় ৪৩৩ প্রজাতির গাছগাছড়া আছে। মন্দিরে ঢোকার পথে এবং তার চারপাশে ফরেস্ট বিভাগ থেকে প্রতিটি গাছের সঙ্গে তার প্রজাতির নাম উল্লেখ করা রয়েছে দেখলাম। লক্ষ করলাম যে দেবদারু, অর্জুন, নিম, বাবলা, বাঁদরলাঠির মত গাছ যেমন রয়েছে, তেমন বিরাজ করছে লং, পিপুল, গুলঞ্চ, পুনর্নবা, অতসী, মৃতসঞ্জীবনী ইত্যাদি গাছও। এইসব গাছগাছড়ার যেমন ভেষজ গুণ আছে, তেমন রয়েছে গ্রামীণ অর্থনৈতিক গুরুত্ব। ঝুড়ি বোনা থেকে শুরু করে নিমকাঠিতে শালপাতার বাসনপত্র তৈরি, খাড়াং জাতীয় গাছ থেকে তৈরি ভাল ঝাঁটা ইত্যাদি। নানাবিধ ফুল ও ফলের গাছ আর সেই গাছে আশ্রয় নেওয়া পাখিদের আওয়াজ মন্দিরে তৈরি করেছে এক অদ্ভূত আশ্রমিক পরিবেশ। গাড়ি পার্কিং করে দেখলাম টিকিট কাউন্টার। জনপ্রতি প্রবেশমূল্য পাচটাকা। এবং গাড়ির পার্কিং মূল্য পঞ্চাশ টাকা। তারজালে ঘেরা জঙ্গলের পথ ধরে হাটতে হাটতে এবং পাখির কিচিরমিচির শুনতে শুনতে পৌঁছে গেলাম মন্দিরের কাছে।
ডুলুং নদীর তীরে গভীর জঙ্গলের মধ্যে কনক দুর্গা মন্দির। দেবী এখানে অশ্বারোহিনী চতুর্ভূজা। দেবী চণ্ডীর একটি লোকরূপ হল কনকদুর্গা। দেবীর চারটি হাত। ওপরের বামহাতে পানপাত্র, নীচের বামহাতে ঘোড়ার লাগাম। ওপরের ডানহাতে খড়্গ আর নীচের ডানহাতে বরাভয় মুদ্রা। ওখানে গিয়ে শুনলাম, চিল্কিগড়ের সামন্ত রাজা গোপীনাথ সিংহ তৈরি করেন এই মন্দির ১৭৪৯ খ্রিস্টাব্দে। স্বপ্নাদেশ পেয়ে স্ত্রীর হাতের কাঁকন দিয়ে মূর্তি তৈরি করান তিনি। ১৯৬৮ সালে দেবীর আদি মূর্তিটি চুরি যায়। সেই মূর্তিতে সোনার ভাগ ছিল বেশি। পরে তৈরি হয় অষ্টধাতুর মূর্তি। সত্তরের দশকের গোড়ায় সেই মূর্তিও চুরি যায়। তবে সে বার দুষ্কৃতীরা ঘোড়াটি নেয়নি। তারপর অষ্টধাতুর ঘোড়ার উপর প্লাস্টার অফ প্যারিসের মূর্তি গড়া হয়। কিন্তু ১৯৭৭ সালে ঘোড়াসমেত মূর্তিটি ফের চুরি যায়। এর পর দীর্ঘ ১৯ বছর মূর্তি ছাড়াই দেবীর পুজো হয়েছে। ১৯৯৬ সালে অষ্টধাতুর নতুন মূর্তি তৈরি করা হয়। সেটিই আবার চুরি হয় ২০১১ সালে। এখন আবার অষ্টধাতুর তৈরি মূর্তিতে পূজা হচ্ছে। ওখানে শুনলাম এখন অষ্টধাতুর মূর্তিতে পিতলের ভাগই বেশি । স্থানীয় লোকের মুখে শুনলাম, আগে নাকি ওখানে নরবলি হত। দেবীর নির্দেশে তা বন্ধ হয়ে যায়। তবে বলি আজও হয়। পাঁঠাবলি, দূর্গাপূজার অষ্টমীর রাতে। কিন্তু বলির পাঁঠা দেবীর ভোগে দেওয়া হয় না। তবে পেঁয়াজ ছাড়া আমিস ভোগ হয়। মাছ এবং হাঁসের ডিম দেওয়া হয় আমিস ভোগে।
মন্দির বলতে দেখলাম, পুরনো আমলের যে মন্দির রয়েছে, সেটি বর্তমানে ভগ্নাবশেষমাত্র। শুনলাম প্রাচীনকালে কোন এক সময় এই মন্দিরে একটি প্রবল বজ্রপাত হয় যার ফলে মন্দিরটি সম্পূর্ণভাবে সমান দ্বিখণ্ডিত হয়ে যায়। প্রাচীন পঞ্চরত্ন মন্দিরটি জরাজীর্ণ হয়ে যাওয়ায় একই চত্বরে তৎকালীন রাজা জগদীশচন্দ্র দেও ধবলদেবের উদ্যোগে পাশেই নতুন মন্দির নির্মিত হয় ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে। নতুন মন্দিরটির স্থাপত্যশৈলী বেশ আধুনিক। মন্দিরটি দক্ষিণমুখী। একরত্ন মন্দিরের চূড়া গির্জার মত সুচালো। রয়েছে গর্ভগৃহ ও চারিদিকে খোলা বারান্দা। সামনের দিকে খানিকটা অংশ সিঁড়ির পর একটি টিনের বড় চালা, যাকে জগমোহন বলা হয়। এই প্রশস্ত জায়গাটিতে আছে বিরাট হোমকুণ্ড আর উত্তরে বলিদানের স্থান। মোষ বলির জন্য পোঁতা রয়েছে দু’টি মোটা কাঠ আর হাঁড়িকাঠ রয়েছে বলি দেওয়ার জন্য। ওড়িশা থেকে স্থপতি আনিয়ে পুরনো এবং নতুন দুটো মন্দিরই নির্মিত হয়। কথিত আছে যে, রাজা গোপীনাথ সিংহ মত্তগজের আমলে পাথরে খোদাই করা মূর্তির অনুকরণেই কনকদুর্গার বর্তমান বিগ্রহের রূপ। রাজা, রাজপুরোহিত ও ধাতুশিল্পী যোগী কামিল্যা, তিনজনেই দেবীর একই রূপ দেখেছিলেন স্বপ্নে। স্বপ্নাদেশের বর্ণনা অনুযায়ী দেবীর মূর্তি নির্মিত হয়। অশ্ববাহিনী, ত্রিনয়না, চতুর্ভুজা মূর্তি তৈরি হয় রানি গোবিন্দমণির হাতের সোনার কঙ্কন দিয়ে। সোনার দুর্গা তাই কনকদুর্গা মন্দির।
বন দপ্তরের উদ্যোগে কনকদুর্গা মন্দির চত্বরে নানা ধরনের পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। ঢোকার মুখে পিচরাস্তার ওপর তৈরি হয়েছে বিশাল ‘অশ্বদুয়ার’। দেবীর বাহন অশ্ব। তাই প্রকাণ্ড কংক্রিটের প্রবেশপথের মাথায় দু’টি ঘোড়ার মূর্তির মাঝে রয়েছে দেবীমূর্তির কংক্রিটের রেপ্লিকা। মন্দিরে যাবার পথ আজ কংক্রিটের ঢালাই রাস্তা। রাস্তার দু’ধারে বাতিস্তম্ভ। মন্দির চত্বর জুড়ে তৈরি হয়েছে নীল-সাদা রঙের ফোয়ারা, সবুজ ঘাসের লন, পর্যটকদের বসার আসন, শিশু উদ্যানে রয়েছে দোলনা, স্লিপারের ব্যবস্থা। পুজোর সামগ্রী ও খাবার দোকানের জন্য কংক্রিটের সাতটি দোকান ও একটি গুদামঘর রয়েছেছে। হ্যা, সমস্ত মন্দির চত্বরেই হনুমানের উপস্থিতি, কিন্তু ওরা নিজেদের মতোই ঘোরাফেরা করছে।
মন্দিরের পাশ দিয়ে মোরাম বেছানো রাস্তা দিয়ে খানিকটা গিয়েই ডুলুং নদীর সাক্ষাৎ পেলাম। নামটি জলতরঙ্গের মত, কিন্তু চরিত্র দেখলাম একদম পাহাড়ি। পাথরে পাথরে ধাক্কা খেতে খেতে তিরতির করে আপনমনে বয়ে চলেছে। নদীর বেড থেকে দু’পাশের পাড় অনেকটা উঁচু। ছোট্ট পাহাড়ি ডুলুং নদীর পূর্বদিকে জঙ্গলের অপরূপ প্রাকৃতিক পরিবেশে মন্দিরটির অবস্থান। চিল্কিগড় গ্রামের পশ্চিমপ্রান্তে গভীর শাল জঙ্গল। ডুলুং নদীটির গতিপথ পূর্বদিকে বইতে বইতে চিল্কিগড় গ্রামের উত্তর সীমানায় একেবারে সোজা দক্ষিণদিকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে প্রায় সমকোণের সৃষ্টি করেছে। এই বাঁকটির বাঁদিকে কনকদুর্গা মন্দিরের জঙ্গল। খুবই ভালো লেগেছিল। কিন্তু ঘন্টা দুয়েক ছিলাম, কারন ফেরার তাড়া। রাতে কোথাও থাকার উপায় নেই কারন করোনায় সংক্রমনের আশঙ্কা। অতএব সঙ্গে বগলদাবা করে নিয়ে যাওয়া খাবারের সদ্ব্যবহার করে আবার গাড়ির এক্সেলেটরে চাপ দিয়ে, বাড়ির যাবার রাস্তার দিকে স্টিয়ারিং ঘুরিয়ে দিলাম । পারলে ঘুরে আসুন, বিশেষ করে যারা আমার মতই লম্বা ড্রাইভিং করতে ভালবাসেন। রাস্তা পুরোটাই খুব ভালো। ভালো লাগবে।
0 Comments
মেঘের চোখ রাঙানী কে উপেক্ষা করেই বেড়িয়ে পড়লাম। নাঃ সত্যিই আর পারছিলাম না। এই দীর্ঘদিনের বন্দীদশা থেকে মুক্তি নিয়ে একটুখানি খেলা হাওয়ায় উড়ে এলাম, থুড়ি ঘুরে এলাম। খুব একটা বেশি দূরে নয় মাজদিয়া শিবনিবাস মন্দির আর পাগলাখালি পাগলা বাবার মন্দির থেকে। না ভগবানে বিশ্বাসী নই তাই কোনো পুজোও দিইনি শুধু মাত্র ঘোরার উদ্দেশ্যেই গেছিলাম। বগুলা ছেড়ে গিয়ে সরু গ্রামীণ পীচ রাস্তা দিয়ে যত এগোলাম এক সুন্দর মনোমুগ্ধকর গ্রামীণ পরিবেশ ও প্রকৃতি আমাদের সম্মুখে উন্মোচিত হতেথাকল। বর্ষাস্নাত সবুজ প্রকৃতি চোখকে প্রশান্তি দিচ্ছিল, আর বিশুদ্ধ অক্সিজেন প্রানভরে টেনে নিচ্ছিলাম। এক অভাবনীয় ভালোলাগা শরীর ও মনে উপলব্ধি করছিলাম। রাস্তা ছায়া পূর্ণ এবং নানা ধরনের চেনা অচেনা এবং আমাদের চারপাশ থেকে হারিয়ে যাওয়া গাছপালা, চাষের ক্ষেতে সাজানো। এছাড়াও রাস্তার পাশে মাঝে-মাঝে বড়ো বড়ো এবং বহু দিনের পুরনো বট ও অশ্বত্থ গাছ আমাদেরকে বিশ্রাম নিতে হাতছানি দিয়ে ডাকছিল। সেই ডাক উপেক্ষা করা আমার পক্ষে সম্ভব হলনা, তাই সল্পক্ষন হলেও আমরা দাঁড়িয়ে তার শীতল আতিথ্য গ্রহণ করে আবার গন্তব্যে এগিয়ে গেলাম। রাস্তার দুই ধারে ছোটো বড়ো পুকুর প্রস্ফুটিত শালুকের সম্ভার নিয়ে আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছিল।
এরই মাঝে শিবনিবাস মন্দিরের কাছেই একটা দোকানে পেটাই পরোটা রসগোল্লা ও ছানার জিলিপী দিয়ে জলযোগ সেরে নিলাম, অসাধারণ তার স্বাদ। আবার চলতে শুরু করলাম গন্তব্য পাগলা বাবার মন্দির যা এখনো ২০কিমি।পুরো রাস্তাতে লাইন দিয়ে রাখা শুকোতে দেওয়া পাটকাঠি যেন অতন্দ্র পহরি। গ্রামের মানুষ সত্যিই অসাধারণ এবং অতিথি বৎসল। মাঠে কাজকরা একজন কে রাস্তা জিজ্ঞেস করতে তিনি রাস্তা তো বলেদিলেনই সেই সঙ্গে উপরি পাওনা হলো তার জমির টাটকা এবং সুমিষ্ট আঁখ। অবশেষে পৌঁছলাম গন্তব্যে, অবাক কান্ড!! এযে মেলা বসেছে। নেই কোনো করনাতঙ্ক মানুষ মিলেমিশে এক চলছে পুজো, কীর্তন,রান্না হচ্ছে সকলের জন্য। ভক্তিতে মাথা নোয়াছে অজস্র মানুষ। বিশাল এক ঝিলের পাড়ে (অনেকে আবার বলেছেন ওটা ঝিল নয় পলদা নদী।) এক বটগাছের নীচে এই মন্দির,নাকি বাবা খুবই জাগ্রত সকলের ইচ্ছে পূর্ণ করেন।আমরাও পেলাম ভোগের প্রসাদ খিচুড়ি এক অনবদ্য স্বাদ, আর পায়েস এ যেন সমুদ্র মন্থন জাত অমৃত। মন্দির কমিটির লোকজন বেশিরভাগই বয়স্ক এবং প্রত্যেকেই অত্যন্ত আন্তরিক ও বিনয়ী। এবার ফেরার পালা মনটা যেন খারাপ হয়েগেল। কিন্তু ফিরতেই হবে তবে পাগলা বাবা কে কথা দিয়ে এলাম আবার আসব ভক্তি নয় প্রকৃতির টানে। ধরলাম বাড়ি ফেরার পথ বহুদূর থেকেও কানে আসছে মন্দিরের মাইকে বেজেচলাগান- "ভবের এ দুনিয়ায় সব ভবেরই খেলা গুরু বুঝবে তুমি যাবার বেলা...."
পুজো শেষ তাই বেরিয়ে পড়লাম সুন্দরী সিকিম এর পথে দশমীর দিন৷ দার্জিলিং মেইল ধরে পৌঁছে গেলাম নিউ জলপাইগুড়ি৷সেখান থেকে গাড়ি করে পৌঁছে গেলাম সিলেরি গাওঁ ,তখন বাজে ৩.৩০৷আঁকা বাঁকা চরাই উৎরাই পথ ধরে শেষ পর্যন্ত পৌছালাম মায়াবী সেই গ্রামে৷ ঠান্ডা হালকা বাতাস আমাদের স্বাগত জানালো.হালকা মেঘের ভেলা ভেসে বেড়াচ্ছে মায়াবী সেই গ্রামে ৷আমাদের জন্য হোমস্টে ব্যবস্থা ছিল আগেই,কলকাতা থেকে বুকিং করে ছিলাম ৷আস্তে আস্তে নেমে এলো আধার আর তার সাথে ঠান্ডার আমেজ.পরদিন সকালে হাটা দিলাম RAMITEY ভিউ পয়েন্ট এর দিকে ৷ চারিদিকে গাছের সারি তার মাঝে চলেছি আমরা ৪ জন.৩০ মিনিট পর পৌঁছে গেলাম সেই জায়গায় ,তবে চারিদিকে কুয়াশা তখন ঘিরে রেখেছে আমাদের ৷তিস্তা নদী আর কাঞ্চনজঙ্ঘা তখন দেখা যায়নি.তাই সময় নষ্ট না করে ফিরে এলাম ৷ খেয়ে দিয়ে রওনা হলাম জুলুক এর পথে.কিছুক্ষন পরে দেখ্লাম QKHOLA জলপ্রপাত ,তারপর আবার গাড়ি চললো আঁকা বাঁকা পাহাড়ি পথ ধরে ৷ জুলুক যখন পৌছালাম তখন বিকেল ৪ তে বেজে গেছে ৷আস্তে আস্তে ঠান্ডা বেড়ে গেলো এবং আমরা এক অপূর্ব সুন্দর HOMESTAY তে এসে পৌছালাম.
৷ সেখান থেকে দেখলাম জুলুক এর এক অপূর্ব রূপ৷ পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে গেছে সিঁড়ি!চারিদিকে শুধু সবুজ পাহাড়৷ রাত বাড়তেই ঠান্ডা নেমে এলো .ইলেকট্রিসিটি ছিলো না তখন, কিছুক্ষন পরে হটাৎ দেখা দিলো আলো.কারেন্ট চলে এলো ৷সন্ধেবেলা চা আর পাকোড়ার সাথে আড্ডা বেশ জমে উঠলো.ঠান্ডা আরো বাড়তে লাগলো তাই রুম হিটার এর বাব্যস্থা করা হলো .সেদিন রাত বেশ কেটে গেলো ৷ পরদিন সকাল বেলা সেই আঁকা বাঁকা সিঁড়ি বেয়ে নেমে গেলাম নিচে জুলুককে একটু ভালো করে চিনবো বলে.সামনেই আর্মি ক্যাম্প ছিল ওখানেই সকালের চা সেরে নিলাম.তারপর সকালের খাবার শেষ করে আমাদের আসল যাত্রা সূচনা হলো গ্যাংটক এর পথে.ZIGZAG জুলুক এর পথ পেরিয়ে আমরা এসে পৌছালাম থামবি ভিউ পয়েন্ট .কুয়াশা তখন বেশ আমাদের ঘিরে রেখেছে.তবু সেই ZIGZAG পথ আমরা দেখতে পেলাম.তারপর এক অপূর্ব জায়গায় পৌঁছে গেলাম নাম লুংথু .কাঞ্চনজঙ্ঘা এখনো অধরা.পাহাড়ের গায়ে লাল গোলাপি ফুল এর বাহার এ ঘেরা দারুন এক জায়গা.তারপর আমরা পৌঁছে গেলাম নাথাং ভ্যালি.মুগ্ধ হয়ে গেলাম প্রকৃতির সেই রূপ দেখে. আস্তে আস্তে পাহাড়ের পথ বেয়ে এগিয়ে চললো আমাদের গাড়ি.কিছুক্ষন পরে এলো পাহাড়ে ঘেরা মেমেঞ্চ লেক.তারপর এলো সেই বিখ্যাত বাবা মন্দির যেখানে কিছুক্ষন সময় কাটালাম আমরা.আবার চলতে শুরু করলো গাড়ি ,তারপর এসে পৌছালাম কুপুপ লেক যাকে দেখতে হাতির মতো তাই তার নাম এলিফ্যান্ট লেক ও বলে.ভীষণ ঠান্ডা সেই জায়গায়.চারিদিকে শুধু পাহাড় আর পাহাড় .যেন মনে হচ্ছে ভূস্বর্গ তে পৌঁছে গেছি আমরা.হটাৎ শুরু হয়ে গেলো বরফের বৃষ্টি. বড়ো বড়ো বরফের টুকরো গাড়ির উপর এসে পড়লো.আমরা তো ভীষণ খুশি..এরপর এগিয়ে গেলাম ছাঙ্গু লেক এর দিকে .চমরী গাই এর দল সারি সারি পথের ধরে দাঁড়িয়ে আছে. ঠিক 4 তে ১৫ তে এসে পৌঁছলাম গ্যাংটক.গাড়ি করে হোটেলে উঠলাম.কিছুক্ষন বিশ্রাম নিয়ে আমরা চলে এলাম এম .জি মার্গ .আলোয় আলোকিত লোকে লোকারণ্য সেই বিখ্যাত জায়গা.ফেরার টিকিট তখন আমাদের কনফার্ম হয়নি তাই অন্য ব্যবস্থা করতে হবে.রাতে একটি মনোরম রেস্তোরা তে ডিনার সেরে নিলাম.পরদিন গ্যাংটক শহর ভ্রমণ.সকাল বেলা বেরিয়ে পড়লাম .প্রথমে আমাদের স্বাগত জানালো বাকথাং জলপ্রপাত .সিকিম এর সাজসজ্জায় আমরা সেজে ছবি তুলতে লাগলাম..তারপর সকালের খাওয়া সব সেরে এসে এলাম এক মনাস্ট্রি দেখতে.একে একে তাশি ভিউ পয়েন্ট পেরিয়ে এলাম গণেশ টক যেখান থেকে গ্যাংটক শহর তাকে পুরোপুরি দেখা যায়. গণেশ জি কে প্রণাম জানিয়ে এগিয়ে চললাম হনুমান টক .ঘন্টা বাজিয়ে বাজিয়ে এগিয়ে চললাম.সবশেষে আমরা এসে পৌছালাম বনঝাঁকরি পার্ক এ.দুপুরের খাওয়া দাও সেরে আমরা সেখানে শোভা দর্শন করলাম.সুন্দর একটি জলপ্রপাত এর কাছে এসে পৌছালাম.বিকেলের আলো জানিয়ে দিলো এবার ফেরার পালা.থেকে গেলো শুধু আনন্দের রেশ সবার মনে.এবারের মতো গ্যাংটক কে বিদায় জানিয়ে ফিরে এলাম শিলিগুড়ি.সারা রাত বাসে করে এসে পৌছালাম কলকাতা. এবারের মতো ভ্রমণ শেষ ,শুধু স্মৃতি টুকু থেকে যাক সবার মনে চিরজীবণের মতো. 7 members ,Per head cost Rs 3300 .Total cost from NJP to Gangtok- Rs 3300* 7= 23100 (Gangtok hotel, food and sightseeing excluded)
গ্রামের বাড়ির দুর্গাপূজা
পুজো আসলেই বন্ধুবান্ধবদের মধ্যে আলোচনা শুরু হয় এবার পুজোয় কার কি প্ল্যান ? কেউ বলে সারারাত ঠাকুর দেখতে যাব , কেউ বলে ঘুরতে যাবো কলকাতার বাইরে । আর আমায় কেউ বললে আমি হেসে শুধু বলি আমার বাড়িতে পুজো হয়। ব্যাস তখন সবাই স্বীকার করে নেয় বাড়ির পুজোর কাছে বাকি সব আনন্দ কিছুই না। আসলে বাড়ির পুজোর যে কি মজা , লিখে প্রকাশ করা যায় না। তাই প্রতি বছর পুজোর আনন্দের কথা উঠলে আমার শুধু আমাদের বাড়ির পুজোর কথা মনে আসে । আমাদের বাড়ির পুজোর ইতিহাস অনেকটা গল্পের মতোই। মায়ের স্বপ্নাদেশ পেয়ে বাংলাদেশের ঢাকার বিক্রমপুরে আমাদের পরিবারে দুর্গাপুজোর সূচনা হয় ১৯৪০ সালে আমাদের পরিবারের প্রাণপুরুষ সুঁরেন্দ্রমোহন সরকারের হাত ধরে। আর তারপর দেশভাগের পর পরিবারের সদস্যরা হুগলী জেলার সোমড়াবাজারের যশড়া গ্রামে এসে বসবাস শুরু করেন এবং দেশ ভাগের জন্য আর্থিক অনটনের কারণে পুজো বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয় কিন্তু আবার মায়ের স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই সোমড়া বাজারে বাড়ির সামনে খোলা মাঠে বাঁশের খুটি ও শাড়ির বেড়া ও হ্যাজাকের আলো জ্বালিয়ে পুনঃরায় পুজো শুরু হয়। সেই থেকে আজও ওই স্থানেই মায়ের পুজো হয়ে আসছে পরম্পরা মেনেই । এবং এই আমাদের পুজোর সাথে জড়িয়ে আরও একজনের কথা না বললেই নয় তিনি সুঁকুমার দত্ত। উনার সহযোগিতা পুজোর সাথে অনেকাংশে জড়িত।এবং আরও অনেকের সাহায্য আমাদের পুজোকে অনেকাংশে এগিয়ে নিয়ে চলেছে আজও। আমরা কেউই পরিবারের সদস্যরা সোমড়াবাজারে সারাবছর থাকি না। শুধুমাত্র পুজোর ৫ দিন ও কিছু বিশেষ কারণ ছাড়া সোমড়াবাজারে যাওয়ার সুযোগ হয়ে ওঠে না। আমাদের ঠাকুর বাড়ির সাথেই আমাদের ঝুনু দিদা থাকেন ও অন্য আত্মীয়রাও থাকেন তাদের উপর বাড়ির দেখাশুনার ভার দিয়ে আমরা সারাবছর যে যার কাজ নিয়ে কলকাতাতেই কাটাই কিন্তু পুজোর ৫ দিন পরিবারের কারোরই কলকাতাতে থাকা হয় না। আমাদের কাছে পুজো মানেই আমাদের বাড়ির পুজোই সেরা।
পুজোর সময় হলেই ছোটবেলায় আমাদের খুব আনন্দ হতো সোমড়াবাজার যাবো শুনলেই । ষষ্টীর দিন সকাল ৬ টায় বাড়ি থেকে বেড়িয়ে শিয়ালদা স্টেশানে যাওয়া। পুজোর সময় শিয়ালদা স্টেশানের বাইরে হাজার ঢাকিরা এক সাথে ঢাক বাজাতো যেটা এখনও গেলে দেখতে পাওয়া যায়। সেই ঢাকের তাল শুনতে শুনতে নমে একরাশ আনন্দ নিয়ে স্টেশানের ভিতর পৌছে খুব কম করে ৩০ থেকে ৩৫ জন আমাদের পরিবারের আত্মীয়দের সাথে দেখা হতোই । তারপর সবাই এক জায়গায় দাড়ানো হতো ও টিকিট বড়ো কেউ কেটে আনতো ব্যাস তারপর কাটোয়া লোকাল যা আগে সালার নামে খ্যাত ছিল। সেই ট্রেনে সবাই মিলে একটি কামরাতে উঠে পরা হতো । ট্রেনের কামরাতে যে দিকে তাকাতাম শুধু আমাদের বাড়ির লোকজন দেখতে পেতাম । খুব আনন্দ হতো জানলার ধারে বসে শিয়ালদা থেকে সোমড়াবাজার যাওয়া । খুব বেশি না ট্রেনে মাত্র ৩ ঘন্টার পথ । সেই যাত্রাতে কি না হতো তখন গান, গল্প, আড্ডা খাওয়া দাওয়া ও হাসাহাসি করতে করতে সোমড়াবাজার স্টেশান এসে পড়তো আর স্টেশানে আমাদের এক দাদু দাঁড়িয়ে থাকতেন এবং স্টেশান মাষ্টারের সাথে আলাপ থাকায় তাকে বলে রাখতেন কলকাতা থেকে বাড়ির লোকজন আসছে ট্রেন একটু বেশী দাঁড় করাবেন পুজোর সামগ্রী, ফুলফল সব নামানো হবে তাই। তারপর আমরা সবাই নেমে পড়তাম আর তারপর ভ্যানে বসে যশড়া গ্রামে আমাদের বাড়ি। এখন এই ট্রেন যাত্রার আর হয় না এখন নিজস্ব গাড়ি আথবা ভাড়ার গাড়ি নিয়েই পুজোর সময়ে সোমড়াবাজার যাওয়া হয়।
আমাদের বাড়ির পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ঠ হলো রথের দিন নিজস্ব বাঁশঝাড় থেকে বাঁশ কেটে এনে কাঠামো বেঁধে কুলপুরহিতের তত্ত্বাবধানে প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু হয়। প্রথা মেনে মহালয়ার দিন মায়ের চক্ষুদান হয়। ষষ্টীর দিন সন্ধ্যায় পরিবারের সদস্যদের মধ্যে এক দম্পতি জোড় বেঁধে মা গঙ্গাকে গিয়ে আমন্ত্রন জানানো হয় ও তারপর তারা মায়ের স্নানের জল মাথায় করে বাদ্যযন্ত্র সহকারে বাড়ি নিয়ে আসা হয়।এরপর ঠাকুর দালানের পাশে বেলতলায় মায়ের বোধন শুরু হয়। এরপর প্রতিদিন তিথি মেনে পুজোর পাশাপাশি আমাদের পরিবারের আরও এক প্রাণপুরুষ ডাঃ শৈঁলেন্দ্র চন্দ্র সরকারের রচনা করা মায়ের গান মা ' কে শোনানো হয় সকলে একত্রে । আমাদের বাড়ির পুজো বৈষ্ণব মতে হওয়াতে আমাদের কোনও বলি প্রথা নেই এবং আমাদের পুজোয় মা' কে অন্নভোগ নয়, ফল ভোগ ও লুচি সুজি ভোগ দেওয়া হয়। আমাদের পুজোর সন্ধিপুজো খুবই আকর্ষনীয় । তারপর দশমীতে আমাদের আরও একটি বৈশিষ্ঠ্য আমাদের মায়ের আশির্বাদ নাচ ও গান সহযোগে আমরা গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে নগরকীর্তনের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয় ও বিকালে গঙ্গার ঘাটে মা'য়ের বিদায়ী গান শুনিয়ে বিসর্জনের মাধ্যমে মাকে বিদায় জানানো হয়। শেষ কয়েক বছর ধরে আমরা পুজোর সাথে সাথে কিছু সামাজিক কাজ আমরা করছি আমাদের পরিবারের সদস্য কল্লোল সরকারের হাত ধরে। বস্ত্রদান ,কম্বলদান অষ্টমীতে ভোগদান , বসে আকোঁ প্রতিযোগিতা , ও গ্রামের কৃতি ছাত্রীদের সম্মান জানানো , ছাতা প্রদান ও পরিবারের ছোট সদস্যের প্রচেষ্ঠায় নানান অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের পুজোর প্রতিটি দিন কাটে।
বর্তমানে কর্মসূত্রে পরিবারের অনেক সদস্যকেই বাইরে থাকতে হয় কিন্তু পুজোর কয়েকটি দিন আনন্দ উপভোগের জন্য ও মায়ের টানে সমস্ত কাজ ফেলে রেখে আমরা একত্রিত হই সোমড়াবাজারে । এই ভাবেই দেখতে দেখতে এই বছর আমাদের বাড়ির পুজো ৮১ বছরে পা রাখছে আমাদের সরকার ভিলা দুর্গোৎসব । মায়ের আশির্বাদ মাথায় নিয়ে বংশ পরম্পরায় এই ভাবেই এগিয়ে যেতে চাই বছরের পর বছর ।।।। ধন্যবাদ । ছবি সংগ্রহে -আমাদের পরিবারবর্গ ।
বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী কিছু স্থাপত্য আজও ভ্রমণপ্রেমী মানুষকে আকর্ষিত করে।তাই সময়কে সাথি করে অজনাকে জানার উদ্দেশ্য বেড়িয়ে পড়ে পর্যটকপ্রেমী মানুষ।
ভারতবর্ষে টেরাকোটার মন্দির অত্যান্ত গুরত্বপূর্ণ স্থাপত্য।পশ্চিমবঙ্গের পূর্ববর্ধমান জেলায় বেশ কিছু টেরাকোটার মন্দিরের মধ্যো কাটোয়া মহকুমার অন্তগত শ্রীবাটী গ্রামের টেরোকোটা ত্রিমন্দির অন্যতম শ্রেষ্ঠ স্থাপত্য।প্রায় ৪০০ বছরের স্মৃতিকে আঁকড়ে ধরে আজও পর্যটকদের চোখকে বিস্মিত করে তোলে। ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলি এততাই সমৃদ্ধ যে সময়ের অন্তিমতাকে হারিয়ে যায়। মন্দিরের বক্ষে ভাস্কর্যগুলি প্রাচীন - নবত্বের ছোঁয়ায় আজও ইতিহাসের বহু তথ্যকে সঙ্গি করে বেঁচে আছে। তৎকালীন সমাজের যুদ্ধে যোদ্ধার অংশগ্রহন, নারীদের ভূমিকা, বাদ্যযন্ত্রের শিল্পী, ধর্মনিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি, নৌকাযাত্রা মাধ্যমে ব্যাবসাবাণিজ্য,বহুদেব-দেবীর ছবি, ভগবান বিষ্ণুর দশম অবতার , তৎকালিন সমাজের রাজতান্তিক ব্যাবস্থার বিভিন্ন চিত্র তোরণ গুলি অপরূপ ভাস্কর্যের সৌন্দর্য স্বরণীয় অধ্যায় রূপে স্মৃতিকে বিরাজ করবে।বহু চিত্রতোরণ সমগ্র ত্রিমন্দিরকে আলোকিত করে রেখেছে। সময়ের কালক্রমে কিছু চিত্রতথ্য তোরণগুলি ক্ষয়িষ্ণু হয়ে বিলুপ্তর পথে,কিছু বছর আগে পশ্চিমবঙ্গ সরকার অধিগ্রহন করে মন্দিরটি।তবুও আরো একটু উন্নতি ও সংরক্ষনের প্রয়োজন আছে মন্দিরটি।রাতের অন্ধকার আজও ঢেকে যায় মন্দিরের সৌন্দর্যের রূপটির, তাই প্রয়োজন আলোক বাতিস্তম্ভ। মন্দিরে গায়ে বেড়ে ওঠা ছোটো বৃক্ষগুলিকে ছেদনের প্রয়োজন, সংরক্ষন করলে হয়ত আরও অনেক প্রজন্ম দেখতে পাবে এই সৌন্দর্যকে।বিকশিত হবে ইতিহাসের প্রাচীন ধারাবাহিকতা।তাই টেরাকোটার কতৃপক্ষকে অনুরোধ সৃষ্টিময় ধারায় প্রস্তাবগুলি বিবেচনা করা হোক।ও পর্যটনক্ষেত্রে সমৃদ্ধ হয়ে উঠুক শ্রীবাটী ত্রিমন্দির।আজও বহু পর্যটকের কাছে আকর্ষণ শ্রীবাটী টেরাকোটা ত্রিমন্দির।। পথনির্দেশিকা- হাওড়া-কাটোয়া ট্রেন অথবা ধর্মতলা- কাটোয়া বাসে কাটোয়া, কাটোয়া থেকে শ্রীবাটী ১৯ কিমি বাসে অথবা গাড়িতে শ্রীবাটী বাসস্ট্যাণ্ড। শ্রীবাটী বাসস্ট্যাণ্ড থেকে শ্রীবাটী ত্রিমন্দির ৫ মিনিটের পথ।। ধন্যবাদ - দেবপ্রিয় দাশ (শ্রীবাটী)
পায়ের তলায় সর্ষে হলে যা হয়,আমারও তাই এক জায়গায় বেশিক্ষন স্থির থাকতে পারি না। তাই কোথায় যাওয়া যায় ভাবতেই কালনা ১০৮ শিব মন্দিরের কথা মাথায় এল। ঠিক করলাম মঙ্গলবার সক্কাল সক্কাল বেড়িয়ে পড়ব, কিন্তু সকাল থেকেই প্রচন্ড বৃষ্টি, আমিও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ যাবই। তাই বৃষ্টি একটু কমতেই বাইক নিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম গন্তব্য অম্বিকা কালনা।
আকাশের মুখভার গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিও পড়ছিল। বীরনগর ছেড়ে ফুলিয়ার রাস্তা ধরতেই বৃষ্টি উধাও। রোদ উঠলেও মেঘের জন্য রোদের কোনো তেজ নেই।রাস্তার দুই পাসে সারিবদ্ধ গাছ আর সবুজ ধানক্ষেত মনোমুগ্ধকর। প্রকৃতির রূপ উপভোগ করতে করতে পৌঁছে গেলাম নৃসিংহপুর ঘাট। এখানে ভ্যাসালে গঙ্গা পাড় হওয়াটাও কম রোমাঞ্চকর নয়। নদী পেড়িয়ে পৌঁছে গেলাম অম্বিকা কালনা। একটু জিজ্ঞেস করে সহজেই পৌঁছে গেলাম মন্দিরময় অম্বিকা কালনাতে। মহারাজ তেজচন্দ্র বাহাদুর ১৮০৯ খ্রীঃ এই ইঁটের তৈরি আটচালা মন্দির গুলি তৈরী করেন। এক অনন্য সারি বিন্যাস! বাইরের দিকের বড়ো বৃত্তাকার সারিতে রয়েছে ৭৪ টি মন্দির। এই বড়ো বৃত্তের কেন্দ্রে রয়েছে ৩৪ টি মন্দির দিয়ে রচিত একটি ছোট বৃত্ত।মন্দিরের কোনো জায়গা থেকেই ১০৮ টি মন্দির একসাথে দেখা যায় না। মন্দিরের প্রতিটিতে একটি সাদা শিবলিঙ্গ ও পরেরটিতেই কালো শিবলিঙ্গ রয়েছে। ১০৮ শিব মন্দিরের ঠিক উল্টো দিকে রাজবাড়ি প্রবেশের পথ। ভিতরে ঢুকেই বাঁদিকে রয়েছে একটি কামান ও প্রতাপেশ্বর মন্দির। এর পাশেই আছে ছাদ বিহীন রাসমঞ্চ। একটু সামনের দিকে এগিয়ে রয়েছে লালজি মন্দির। এর সামনে আছে নাট মন্দির। এর একদম পাশেই গিরিবর্ধন মন্দির আর এর প্রবেশ পথে একটা পালকি রাখা আছে। রাজবাড়ির ভেতরের সবচেয়ে সুন্দর মন্দির হলো কৃষ্ণচন্দ্রজী মন্দির। অপূর্ব সুন্দর পোড়ামাটির কারুকার্যে সজ্জিত এই মন্দির। এছাড়াও ছোটো খাটো আরও মন্দির এখানে আছে। রাজবাড়ি থেকে বেড়িয়ে বাইরে আরও আছে পাতালগঙ্গা, গোপালজী মন্দির, সিদ্ধেশ্বরী মন্দির, অনন্তবাসুদেব মন্দির, ভবাপাগলার আশ্রম ( এখানে ছবিতোলা নিষিদ্ধ),আর রয়েছে মহাপ্রভু মন্দির কথিত আছে এখানে দরজা খোলা থাকলেই নাকি দেবতারা বাইরে বেড়িয়ে যান তাই বেশিরভাগ সময় বন্ধ থাকে তবে নির্দিষ্ট সময় স্বল্পক্ষনের জন্য দরজা খুলে ঝলকদর্শনের ব্যবস্থা আছে। আমরা এর ভেতরে যেতে পারিনি কারণ প্রভু শয়নে ছিলেন।এরপর ফিরে এলাম গঙ্গার ঘাটে তারপর নদী পেড়িয়ে ফুলিয়াতে কৃত্তিবাসের ভিটে ঘুরে ফিরে এলাম বাড়িতে।
পৃথিবীর অসুখ । মনেরও । চারিদিকে শুধু নেতিবাচক সতর্কতা । সদর দরজায় ঝুলছে বড় তালা । চরণযুগল সুদীর্ঘ বিশ্রামের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষনা করার জন্য মুখিয়ে আছে । চড়া বাজারেও তবু যা হোক পেটে জুটছে দুমুঠো কিন্তু দীর্ঘ অনশনে মনের মৃতপ্রায় অবস্হা ।এমন সময়ে Breathe Fresh এর ডাক । মৌমিতা বললো দারোন্দা যাবে ? শান্তিনিকেতন থেকে আট কিলোমিটার আগে ইলামবাজারে । মৌমিতা , - যার হাত ধরে সত্তর বছরের বৃদ্ধ বৃদ্ধারা কার্তিকস্বামী দর্শন করে , সুউচ্চ লাদাখ পরিভ্রমণ করে , লাক্ষাদ্বীপে ফিনিস পাখির মতো এদ্বীপ ওদ্বীপ ঘুরে বেড়ায় । সেই ভরসা আর নির্ভরতার Breathe Fresh এর সাথে , সবরকম সতর্কতা অবলম্বন করে আমরা সতেরজন , যাদের বয়স ৪০+ , একটা এসি ট্রাভেলারে করে বেড়িয়ে পড়লাম এক শনিবারের সাত সকালে । কিন্তু কিছুদূর গিয়ে দুর্গাপুর হাইওয়েতে রোড এ্যাকসিডেন্টের জন্য বিশাল জ্যাম । অতএব ঘুরপথ ।গাড়ি নেমে পড়লো গ্রামের অলি গলি মেঠো পথে । মৌমিতার কপালে চিন্তার ভাঁজ । যাত্রীদের কিন্তু কোন চিন্তা নেই । তারা দিব্যি তাজা সবজির বাজার , সরু পথের দুধারে চেনা ফুলের সমারোহ আর সবুজ বনানীর ছায়ায় ছায়ায় বেশ আমেজেই ছিল । প্রায় চল্লিশ মিনিট ঘুরপাক খেয়ে আবার গাড়ি উঠলো হাইওয়েতে ।এরপর শুধুই নির্দিষ্ট গন্তব্য । ক্রমশ শহুরে ইমারত অদৃশ্য হয়ে শুরু হলো কংক্রিট শাড়ির শুভ্র কাশপাড় । যতদূর চোখ যায় কাশের ঢেউ আর কাশের ঢেউ ।চোখের আয়নায় উড়ন্ত কাশের শিফন আঁচল , মনের কুঠরিতে অন্ধকার দূর করে আলোর লন্ঠন ।শরতের চিঠি এসে গেছে ।
কাশঘোর কাটিয়ে আমরা কিছুটা দেরিতে পৌঁছলাম উপাসনা রির্সটে । চিত্রশিল্পীর হাতে আঁকা ছবির মতো গ্রাম — ছবির মতো রির্সট । গাড়িতেই breakfast এর পর্ব মিটে গিয়েছিল । তাই চান টান সেরে , ডাল - ভাত - মাছের ঝোল দিয়ে মধ্যাহ্নভোজনের পর বিকেল চারটের সময় আমরা পৌঁছলাম অজয় নদের তীরে । তখন সূর্যাস্তের বিষন্ন আলো কাশের বুকে দিনান্তের ক্লান্তিটুকু জুড়িয়ে নিচ্ছে । নদীর জলে কাশ আর রক্তিম কিরণের ছায়া । আমরা বাক্ স্তব্ধ , মন্ত্রমুগ্ধ । প্রকৃতি দরাজ হাতে তার অতিথিদের আনন্দ বিলোতে ব্যস্ত । আমরাও নিঃসঙ্কোচে তার কাছে সঁপে দিলাম মনের যত অবসাদ । মনে হলো সাহস করে শিকল কাটতেই হয় , তবেই তো মেলে অপার মুক্তি । অদূরে গাছের তলায় চাওলার ছাউনি । ‘ র’ টি খেয়ে ফেরা হলো রির্সটে । সান্ধ্যআড্ডা জমে উঠলো মুড়ি তেলেভাজা আর গরম চায়ের সাথে । একেবারে খাঁটি বাঙালিয়ানা ।
গানের সুরে, গল্পের তোড়ে , নাচের ছন্দে বয়স পালালো হার না মানার দেশে আর কোভিড নিখোঁজ হলো নিরুদ্দেশের পাতায় । সাহস করে শিকল না কাটলে কি যে ভুল হতো তা মনে মনে স্বীকার করে নিলাম । রাত নটায় দিশি চিকেনের ঝোল , নরম রুটি আর লোভনীয় স্বাদের রসগোল্লা সহযোগে ডিনার সেরে যখন ঘরের দিকে পা বাড়ালাম তখন মাথার ওপর তারাদের সাথে অসংখ্য জোনাকিরা আলো জ্বালাতে ব্যস্ত — জীবনের আলো !! উপাসনার কর্ণধার মিন্টুদা ও তাঁর স্ত্রী নিজের হাতে রির্সটের তত্ত্বাবধান করেন । তাই কোথাও নেই কোন কৃত্রিমতার ছোঁয়া । তাঁদের নিজস্ব ভাবনায় অনন্যতার মাত্রা পেয়েছে রির্সটটি । পরিচ্ছন্নতা থেকে শুরু করে স্টাফেদের নিবিড় আন্তরিকতা কোন অতিথিকেই কোন অভিযোগ জানাবার সুযোগ দেয় না । কোভিডের মোকাবিলা করার জন্য সবরকম সতর্কতাই এখানে অবলম্বন করতে দেখেছি । এ বিষয়ে রিসর্টের কোন খামতি নেই । পরদিন কাকভোরে ছাদে উঠে দেখলাম দিনশুরুর রঙমশাল আলোর হোলি । মেঘের জন্য সূর্যোদয় অধরা থেকে গেল । দিনের আলো পরিষ্কার হতেই আমরা ছুটলাম কামার পাড়ায় লক্ষ্মীসায়র দেখতে । দারোন্দায় এখন ছোট বড় সব দীঘিই শাপলা শালুক পদ্মে ভরপুর । মহামায়াকে বরণ করতে তারা সম্পূর্ণ তৈরি । এখানে তালগাছে এখনও অনেক তাল মজুত । কত তাল মাটিতে পড়ে গড়াগড়ি যাচ্ছে । প্রচুর তাল কুড়নো হলো । লক্ষ্মীসায়র নামের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে আয়নার মতো স্বচ্ছ ও পবিত্র । মাছ আছে বলে এই দীঘির পুষ্পবাহার নেই । প্রচুর ছবি তোলা হলো এখানে । বটের ঝুড়ি ধরে খাওয়া হলো দোল । বিজ্ঞান প্রয়োজন প্রকৃতি অপরিহার্য ।পাতাঝড়া মাটির পথ পেরিয়ে মনে মনে একটা প্রতিজ্ঞা হয়েই গেল ‘ আবার আসিব ফিরে ।’ ফেরার সময় মিন্টুদা গ্রুপ ছবি তুলে সকলকে একটা করে ছোট ছোট গাছের চারা উপহার দিলেন , মধুর স্মৃতির ফুল ফুটিয়ে যা আজীবন পল্লবিত হয়ে থাকবে ।
ঝালুয়ার বেড় এর ঢোকার উল্টো দিকের রাস্তা তেই এই মন্দির এর অবস্থান, একটু ঘুরে বাজার এর মধ্যে দিয়ে মূল প্রবেশ পথ, যদিও মন্দিরের চূড়া রাস্তা থেকেই দেখা যায়, কাউকে পাবো না ভেবেই ভেতরে গেলাম, পুরো মন্দির প্রদক্ষিণ করলাম, তারপর ভাবলাম এসেছি যখন মা এর দর্শন করেই যাবো, জুতো খুলে একটু এগোতেই মা এর দর্শন পেয়ে গেলাম, বাইরে থেকে ই প্রণাম করে তারপর ছবি তুলছিলাম, এমনি সময় পূজারী মহাশয় এলেন, বললেন আরে বাবা বাইরে কেন!! ভেতরে এসে ছবি তোলো, ভেতরে যেতে মা এর পূজা করা ফুল দিলেন , আশীর্বাদ করলেন, ভালো লাগলো প্রকৃতি দর্শন করে ফেরার পথে মা এর দর্শন হলো বলে, বাইরের বেরোনোর সময় একটি হাড়িকাঠ দেখলাম, যদিও বলি হয় কিনা জিজ্ঞেস করিনি, আপনারাও যদি কখনো সময় পান, যেতে পারেন দর্শন করতে ।
তুমি তো বেশ একা একা ঘুরছো! আর ৫/৬ মাস হয়ে গেল কোথাও বেড়োইনি... এবার আমাদের নিয়ে চলো!!গত কয়েকদিন ফোন আর মেসেজে এটাই টপিক ছিল। হ্যা ফ্যামিলি নিয়ে আগস্ট থেকেই একটু করে বেরিয়েছি,তাই আমরা শুধুমাত্র অসমবয়সী মহিলাদের গ্রুপ,যা লাস্ট ঘুরে এসেছিলাম মার্চে ডুয়ার্স,আবার একটু চাগিয়ে উঠলাম.. প্ল্যান হল সেইমতন মন্দারমনি যাবো,তবে ভিড় এড়াতে আমরা উইকডে তে প্ল্যান করলাম ২১/২২ সেপ্টেম্বর। বহুদিন পর আবার হোয়াটসঅ্যাপে আলোচনা, অনেকদিন পর প্রি বেড়ানোর অনুভূতি আবার ফিল করলাম। সকাল ৭.৩০ এসপ্ল্যানেড থেকে গাড়ি ছেড়ে দিল,রাস্তা একদম ফাকা পেয়েছি,অনেকদিন পর দেখা হাসি গল্প,৪.৩০ বাদে গন্তব্য আমাদের গোল্ডেন সী কুইন রিসর্টে ঢুকে গেলাম ,ঢুকেই লেবু জল, আমাদের ও স্প্রে করে স্যানিটাইজ করে দিল,কাঁথি পৌছে ফোন করে রুম রেডি করে দিতে বলেছিলাম। আমাদের হোটেলটা মোহনার পাশেই, ঢুকেই দেখি সমুদ্র একদম দরজার পাশে,জোয়ার চলছে... ফ্রেশ হয়ে লাঞ্চ সারলাম ভাত ডাল বেগুনি স্যালাড আলুপোস্ট পমফ্রেট চাটিনি পাঁপর, রান্না আঙুল চেটে খাবার মত,একটু বেশিই খাওয়া হয়ে গেল।তাই একটু এক্সেরসাইজ করতে সুইমিং পুলে,আজ রিসর্ট ফাকা উইকডে বলে, যেটা আমরা চেয়ে ছিলাম,শুধু নিজেই মাতলাম সাথে মিউজিকের সাথে জলকেলি।বিকেল হতেই বীচে, ভাটা এখন, মোহনার দিকে থাকলে বীচটা অনেক বড় পাওয়া যায় সাথে সারি সারি লাল কাঁকড়া আর ঝাউবন,ওপারে তাজপুর দেখা যাচ্ছে। একটা পুচকি মেয়ে শামুক ঝিনুক বিক্রি করছে,এমন ভাবে এসে বলল,পিয়ালি তাই ওর ১২ টা শামুক কিনেই নিল মাত্র ১০০ টাকায়,খুব খুশি ওর ব্যাগ ফাকা আজ। সন্ধ্যের পর থেকে ওয়েদার চেঞ্জ, মেঘ আর হাওয়ার খেলা,ওয়েদার পুরো জমে ক্ষীর,সান্ধ্য আড্ডা চা পেয়াজি আর চিকেন পকোরার সাথে জমে গেল,লকডাউনের জমানো গল্প,কে কার শোনে অবস্থা,অনেকের প্রস্তাব চলে এসেছে দিনে দিনে ঘোরার প্ল্যান কর অক্টোবরে, সে নয়ে আলোচনা শেষ হতে লাঞ্চ সারলাম। ভাত ডাল স্যালাড মিক্সড ভেজ উইথ পনীর,চিকেন, কাঁকড়া মিষ্টি.. স্বাদ বলছে সব খেয়ে নে, কিন্তু পেটে পেয়াজি আর পকোড়া তখনো ঘুরফির করছে। সকালে সানরাইজ দেখা হল না,আকাশ মেঘলা, হাওয়ার দাপটে বীচে নিজের কথাই শুনতে পারছি না, তবে সমুদ্রের ধারে এমন ওয়েদার আমার বেশ লাগে, এরপর ব্রেকফাস্ট সেরে লাল কাকড়া বীচে চলে এলাম,জোয়ারে তখন কাকড়া গুলো ঘাসে উঠে পরেছে,কাশের ছটা বীচের চড়ে... ফেরার ইচ্ছা কারোর ছিল না,শুধু অক্টোবরে আবার গ্রুপ থেকে ডে ট্রিপের আশায় ফিরে এলাম,কারণ একটা শেষ হলেই নতুনের জন্ম হয়।
একদিনে 500km Ride?? শুনেই তো বুক টা ধড়াস করে উঠেছিল। কারণ long ride এর experience সেরকম নেই, আর Bike ও সেরকম Touring friendly নয়। যাইহোক দূগগা দূগগা করে বেরিয়ে পড়লাম 20th সেপ্টেম্বর। গন্তব্য Massanjore Dam, Jharkhand. গেছিলো কলকাতার 2 টি riding গ্রুপ। Group of Divine Souls আর Gear Heads Kolkata. প্রায় 20 জন. রুট টা ছিল - Dankuni - Burdwan - Guskhara - Bolpur - Suri - Massanjore. রাস্তা বেশির ভাগ এ ভালো ছিল, specially বোলপুর আর Guskhara র গ্রাম এর রাস্তা দেখলে মনে হয় এই জন্যই তো আসা। Jharkhand এর scenic beauty অসাধারণ। 5.30am এ স্টার্ট করলাম, পৌঁছলাম 12 তার আগে, বেশ অনেক গুলো halt ছিল। অল্প বিস্তর খেয়ে ছুটলাম Dam এর দিকে। নামলাম নিচে. একটি মাত্র গেট খোলা. জল আছে, অল্প, নামলাম, হাঁটু পর্যন্ত হবে, পুরো তা পার ও করলাম, সঙ্গে একজন adventure lover K পেয়েছিলাম বলেই সম্ভব হল। যাইহোক একগাদা ছবি তুলে রওনা দিলাম 2.45 এ। পেট্রোল লাগতো না, তাও একটু নিয়ে নিলাম, 2 টাকা দাম কম যে। অন্ধকার হয়ে আসায় Guskhara - Burdwan পেরোতে বেশ কষ্ট হয়েছিল। NH2 তো গর্তেই ভর্তি। যাই হোক বাড়ি পৌঁছলাম 10.15pm. সাংঘাতিক tired. ভবিষ্যৎ এ আরো ট্রিপ হবে।
|
Best Washing MachineCategories
All
Archives
November 2021
Best Autoclean Chimney |