২০১৫তে গিয়েছিলাম মহারাষ্ট্রে। উদ্যেশ্য ছিল অজন্তা, ইলোরা দেখবো। ট্রেনের টিকিট কেটে ফেললাম। যাওয়ার আগে আমরা অবশ্য সবসময়ই ম্যাপ টা দেখে নি। এক্ষেত্রে ও ব্যতিক্রম হয়নি। যাইহোক গীতাঞ্জলি তে উঠে জলগাও পৌঁছলাম। শহরটা ভালো । ছিমছাম, প্রথমদিন কেটে গেল এদিক, ওদিকে ঘুরে। অটো বুক করে নিলাম পরেরদিন অজন্তা যাওয়ার জন্য। এখানকার খাবারের হোটেল অনেক,সঙ্গত খাবারের দাম। জলগাও থেকে প্রায় ৫০ কিমি অজন্তা।৭০০টাকা আসা, যাওয়া। পরেরদিন ব্রেকফাস্ট খেয়ে বেরিয়ে পরলাম অজন্তার উদ্যেশ্যে।দারুন রাস্তা। দুধারে অসংখ্য ধাবা, সুন্দর পরিবেশ।প্রায় আড়াই, তিন ঘণ্টার মধ্যেই পৌঁছে গেলাম। ড্রাইভার বলেদিল কি করতে হবে। ওখানে টিকিট এর লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কেটে, দাঁড়াতে হয়,মহারাষ্ট পর্যটন সংস্থার গাড়ি কোরে ওরাই পৌঁছে দেয় পাহাড়ের উপরে গুহায় ঢোকার মুখে। অবশ্যই টর্চ টুপী নিতে ভুলবেন না। সম্পুর্নটাই বৌদ্ধ গুহা।৩০টা গুহা আছে, ধাপে ধাপে পরপর সাজানো, কোনটি দোতালা, কোনটি আবার একতলা। সিঁড়ি দিয়ে উপরে, নীচে নেমে দেখতে হয়।অপূর্ব ভাস্কর্য । মেসোপটেমিয়ার সভ্যতার সঙ্গে তুলনা করা চলে। বিভিন্ন ভঙ্গিমায় বুদ্ধ। তার সাথে পেন্টিং। প্রাকৃতিক গাছপালার থেকে রং বের করে কারুকার্য ।দেখলে অবাক হতে হয়। গভীর গিরিখাতের পাথর কেটে ধাপে ধাপে বানানো।অনুমান করা হয় খ্রীষ্টপূর্ব ২থেকে খ্রীষ্টিয় ৭ এর মধ্যে এটি তৈরি করা হয়েছে। বূদ্ধের জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ের কাহিনী এই চিত্রগুলির মধ্যে বর্নিত হয়েছে।ফ্রেস্কো ধাচের,জীবন্ত রূপ,নানা রং এ সমৃদ্ধ এই চিত্র বৌদ্ধশিল্পকার্যের এক অপরূপ নির্দশন।১৯নম্বর গুহা, দেখতে ভুলবেন না, যেখানে বুদ্ধের শায়িত মূর্তিটি আছে।১৮১৯সালে এ এই গুহা আবিষ্কার হয়। তার আগে এটি লোক চক্ষুর আড়ালে বিভিন্ন পশু পাখির বসবাস ছিল। স্থানীয়দেরদাবিএই গুহায় ভীলসম্প্রদায়ের লোকেদের যাতায়াত ছিল। জন স্মিথ নামে এক বাঘ শিকারী দূর্ঘটনাবশত এই গুহা আবিষ্কার করেন। তিনি যখন বাঘ শিকার করতে গুহায় ঢোকেন , তখন ভিতরে বুদ্ধের বড়ো বড়ো মূর্তি দেখতে পান,যা ভারতবর্ষের কোথাও আগে দেখা যায় নিই। ৩,৪ঘন্টা লেগেছিল দেখতে । নীচে নেমে এক ই বাসে করে আবার ফিরে এলাম। ছোট ছোট দোকান অনেক আছে । কেনাকাটা করলে করতেই পারেন। ফেরার পালা। আইসক্রিম খেতে খেতে ফিরে এলাম হোটেলে। এরপর ইলোরার বিবরণ জানাবো । Post By:- Madhumita Pal
0 Comments
ইলোরা :: অজন্তা দেখার পরের দিনই সকালে একটা গাড়ি ভাড়া করে বেড়িয়ে পরলাম । ঠিক হলো ইলোরা দেখে ঔরঙ্গবাদ ঢুকবো। ঔরঙ্গবাদ শহর থেকে ৩০ কিমি দুরে ইলোরা গুহা। বলে রাখি প্রত্যেকটি গুহা দেখতে হলে অটো অবশ্যই ভাড়া করতে হবে।কারন একটা থেকে আরেকটা বেশ দুরত্বে। রাষ্ট্রকূট রাজবংশ এই স্থাপন কার্য করেছিল। এখানে ৩৪টা গুহা আছে। এই গুহা গুলো চরনন্দ্রী পাহাড়ের অভ্যন্তর থেকে খনন করে উদ্ধার করা হয়েছে। এখানে হিন্দু, বৌদ্ধ ও জৈন এই তিন ধর্মের মন্দিরের স্বাক্ষর রয়েছে।৫মথেকে ১০ম শতাব্দী তে এটি নির্মিত হয়।১২টি বৌদ্ধ,১৭টিহিন্দু ,৫টি জৈন । ইলোরার কৈলাস মন্দিরটি সবথেকে আর্কষণীয়। কৈলাস মন্দিরটি সাদা। এটি কৈলাস পর্বতের ধাঁচে তৈরী ।কৈলাস যেহেতূ শিবের স্থান সেহেতু মন্দিরের প্রবেশদ্বারে মন্দিরের ঐতিহ্য অনুযায়ী বিশাল পাথরের ষাড় নন্দী মূর্তি। একটি পাথর উপর থেকে কেটে এই মন্দির তৈরী। কৈলাস এর রং অনুযায়ী এর রং সাদা।প্রধান মন্দির নন্দী মন্ডপে লিঙ্গম অবস্থিত।নন্দী মন্ডপে ১৬টি স্তম্ভের উপর দাঁড়িয়ে আছে।যার উচ্চতা ২৯.৩মি.। নন্দী মন্ডপে একটি বিশাল হাতির মূর্তি আছে। একটি পাথরের সেতু দিয়ে নন্দী মন্ডপে ও শিব মন্দিরে যোগাযোগ সাধিত হয়েছে। আনুমানিক ১০০বছর লেগেছিল এটি তৈরি করতে। শিব পার্বতীর বিবাহ, শিবের রুদ্র মূর্তি, শিব, পার্বতী কৈলাস একত্রে এই স্থাপত্ত এই মন্দিরে দেখা যায়। অন্যান্য হিন্দু মন্দিরের মধ্যে ২১নম্বর গুহা টি রামেশ্বর,যার প্রবেশ দ্বারের মুখে গঙ্গা, যমুনার মূর্তি আছে।২২নম্বর গুহা টি নীলকন্ঠ এখানে অনেক স্থাপত্য বিদ্যমান, ২৯নম্বরটি ধুমরলিনা যা মুম্বাই এর এলিফ্যান্টা দ্বীপ এর গুহার মতো। আরও গুহা আছে, ভিতরে অভূতপূর্ব ভাস্কর্য সমৃদ্ধ।দেখতে প্রায় চার,সাড়ে চার ঘন্টা লেগেছিলো।দেখা শেষে পুনরায় গাড়ীতে উঠে ঔরঙ্গবাদ এর পথে রওনা হলাম। Post By:- Madhumita Pal
|
Best Washing MachineCategories
All
Archives
November 2021
Best Autoclean Chimney |