অনেকেই হয়তো জানেন না যে পুরী ধাম /জগন্নাথ ধাম/নীলাচল/ শ্রী ক্ষেত্র / পুরুষোত্তম ধাম/ নীলাদ্রি হল একটি শক্তিপীঠ ও । পৌরাণিক মতে, দেবী সতীর নাভি এই স্থানে পতিত হয়েছিল।
দেবী এখানে বিমলা আর ভৈরব হলেন স্বয়ং জগন্নাথ। প্রত্যেকটি শক্তিপীঠে শিবকে ভৈরব রূপে পূজা করার নিয়ম প্রচলিত আছে। ভৈরব হলেন শক্তিপীঠের প্রধান দেবীর রক্ষাকর্তা। তান্ত্রিক মতে ,জগন্নাথকে শিব রূপে মনে করা হয়। জগন্নাথ, এখানে বিষ্ণু আর শিব দুই রূপেই পূজিত,অর্থাৎ শিব আর বিষ্ণু এখানে অভিন্ন,অর্থাৎ একেশ্বরবাদ এখানে প্রাধান্য পেয়েছে। আর বিমলা দেবী লক্ষী এবং দূর্গা দুই রূপেই পূজিতা। অর্থাৎ,দেবীও এখানে লক্ষী আর দুর্গার অভিন্ন রূপ। শাক্ত সম্প্রদায়ের কাছে এটি চার আদি শক্তি পীঠের একটি পীঠ।ওড়িশার শাক্ত সম্প্রদায়ের কাছে এটি দেবীশক্তির আরাধনার প্রধান মন্দির বলে মনে করা হয়। ওড়িশা রাজ্যের পুরী মন্দির চত্বরের ভিতর জগন্নাথ মন্দিরের ঠিক দক্ষিণ- পশ্চিম কোণে , জগন্নাথ মিনারের পশ্চিমে মাতা বিমলার মন্দির। এই মন্দির জগন্নাথের মন্দিরের থেকেও প্রাচীন বলে মনে করা হয়। বিমলার আদিমূর্তিটি খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দীতে নির্মিত। বর্তমান মন্দিরটি সম্ভবত খ্রিস্টীয় নবম শতাব্দীতে পূর্ব গঙ্গ রাজবংশের রাজত্বকালে আগের মন্দিরটির ধ্বংসাবশেষের উপর নির্মিত হয়েছে।মনে করা হয়, হিন্দু দার্শনিক ও সন্ত আদি শঙ্কর (খ্রিস্টীয় অষ্টম শতাব্দী) বিমলাকে প্রধান দেবী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে পুরীতে গোবর্ধন মঠ স্থাপন করেছিলেন। এই মন্দিরের পাশেই রয়েছে রোহিণী কুন্ড পবিত্র জলাধার। এই মন্দির "দেউল" স্থাপত্যশৈলীর একটি নিদর্শন। মন্দিরের চারটি অংশ রয়েছে - বিমান ( গর্ভ গৃহ / বিগ্রহ যেখানে থাকে) , জগমোহন ( সভা কক্ষ) , নাট মন্ডপ (উৎসব কক্ষ),ভোগ মণ্ডপ ( যেখানে ভোগ নিবেদন করা হয়)। মন্দিরটি পূর্বমুখী এবং বেলেপাথর ও ল্যাটেরাইট দিয়ে নির্মিত। ২০০৫ সালে মন্দিরটি সংস্কার হয়। বর্তমানে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার ভুবনেশ্বর শাখা এই মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে। বিমলা মন্দিরটি জগন্নাথ মন্দির চত্বরের একটি ছোটো মন্দির হলেও শাক্ত ও তান্ত্রিকদের কাছে একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ তীর্থ। তারা মূল জগন্নাথ মন্দিরের চেয়েও এই মন্দিরটিকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। তান্ত্রিক মতে, বিমলা জগন্নাথের শক্তি এবং মন্দির চত্বরের রক্ষয়িত্রী। ভক্তেরা মূল মন্দিরে জগন্নাথকে পূজা করার আগে বিমলাকে পূজা করেন। জগন্নাথের প্রসাদ বিমলাকে নিবেদন করার পরেই মহাপ্রসাদ হিসেবে গণ্য হয়। প্রতি বছর আশ্বিন মাসে (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর) উদযাপিত দুর্গাপূজা এই মন্দিরের প্রধান উৎসব।
হিন্দুপুরাণ অনুসারে, প্রজাপতি দক্ষের কন্যা সতী পিতার আপত্তি সত্ত্বেও দেবাদিদেব শিবকে বিবাহ করেছিলেন। দক্ষ শিবকে পছন্দ করতেন না ।শিবকে অপমান করার উদ্দেশ্যে তিনি এক বিরাট যজ্ঞের আয়োজন করেন। সেই যজ্ঞে দক্ষ শিব ও সতীকে আমন্ত্রণ জানাননি। তবুও সতী পিতার গৃহে যাবার জন্য শিবের নিষেধ সত্ত্বেও, যজ্ঞ স্থলে উপস্থিত হয়েছিলেন। দক্ষ সতীকে উপেক্ষা করেন এবং শিব নিন্দা করতে থাকেন। স্বামীর অপমান সহ্য করতে না পেরে সতী যজ্ঞের আগুনে আত্মাহুতি দেন। শিব তখন ক্রোধে উন্মত্ত হয়ে সতীর অর্ধদগ্ধ দেহ কাঁধে নিয়ে তাণ্ডব নৃত্য শুরু করেন। শিবকে শান্ত করতে বিষ্ণু সুদর্শন চক্র দিয়ে সতীর দেহ ৫১ খণ্ড করেন। এই টুকরোগুলি পৃথিবীর এক এক স্থানে পড়ে এক একটি শক্তিপীঠের জন্ম দেয়। আর শক্তিপীঠ গুলিতে দেবীর প্রস্তুরিভূত দেহাংশ গুলিকে রক্ষা করার জন্য তার সাথে থাকেন দেবীর ভৈরব।যিনি শিবের প্রতিরূপ।
শক্তিপীঠগুলির সংখ্যা নিয়ে ধর্মগ্রন্থগুলির মধ্যে মতভেদ আছে। কয়েকটি গ্রন্থে বিমলা মন্দিরকে শক্তিপীঠ বলা হয়েছে। আবার এই পীঠকে একাধিক নামেও চিহ্নিত করা হয়েছে। কালিকা পুরাণ গ্রন্থে তন্ত্র-সাধনার কেন্দ্র হিসেবে যে চারটি পীঠের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, সেগুলি চার দিকে অবস্থিত। এর মধ্যে পশ্চিম দিকের পীঠটি হল ওড্ডীয়ন বা উড্ডীয়ন (বর্তমান ওড়িশা) অঞ্চলের কাত্যায়নী (বিমলা)। এই পীঠের ভৈরব হলেন জগন্নাথ। হেবজ্র তন্ত্র গ্রন্থে অনুরূপ একটি তালিকায় উড্র (ওড্র বা ওড়িশা) পীঠের ভৈরবী কাত্যায়নী ও ভৈরব জগন্নাথের উল্লেখ পাওয়া যায়। তন্ত্রচূড়ামণি গ্রন্থের "পীঠনির্ণয়" বা "মহাপীঠনির্ণয়" অংশে উৎকলের (বর্তমান ওড়িশা) বিরজা ক্ষেত্রকে শক্তিপীঠ বলা হয়েছে। এই পীঠের প্রধান দেবী বিমলা ও ভৈরব জগন্নাথ। এই পীঠে সতীর নাভি পড়েছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এই বইটির অন্য একটি অংশে যদিও এই পীঠকে একটি উপপীঠ বা অপ্রধান পীঠ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এখানে সতীর "উচ্ছিষ্ট" বা খাদ্যের অবশিষ্টাংশ পড়েছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে। মন্দিরটির অবস্থান হিসেবে নীলাচল নামটির উল্লেখ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, নীলাচল হল জগন্নাথ মন্দির চত্বরের প্রথাগত নাম। শিব চরিত গ্রন্থে, নীলাচল বা নীলপর্বতকে উপপীঠ এবং এই পীঠের দেবী বিমলা ও ভৈরব জগন্নাথ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তন্ত্রগ্রন্থ কুব্জিকাতন্ত্র মতে, বিমলা ৪২টি সিদ্ধপীঠের একটি। এখানে সাধনা করলে সিদ্ধি নামে একধরনের অলৌকিক ক্ষমতা লাভ করা যায় বলে তান্ত্রিকরা বিশ্বাস করেন।দেবীভাগবত পুরাণ, প্রাণতোষিণী তন্ত্র ও বৃহন্নীলতন্ত্র বিমলা মন্দিরকে ১০৮ পীঠের অন্যতম বলে উল্লেখ করেছে।মৎস্য পুরাণ গ্রন্থে পুরুষোত্তম ক্ষেত্রের বিমলাকে পীঠশক্তি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বামন পুরাণ মতে, এটি একটি পবিত্র তীর্থ। মহাপীঠ নিরুপণ গ্রন্থেও বিমলা ও জগন্নাথকে পীঠদেবতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। দেবীর ১০৮টি পৌরাণিক নামের তালিকা নামাষ্টোত্তরশত গ্রন্থেও পুরুষোত্তমের বিমলার নাম পাওয়া যায়।দেবী পুরাণ মতে, এই পীঠে সতীর পা পড়েছিল।অন্যমতে বলা হয় ,এখানে সতীর নাভি পড়েছিল। সাধারণত বিমলার জন্য আলাদা ভোগ রান্না করা হয় না। জগন্নাথ মন্দিরে নিবেদিত নিরামিশ ভোগই বিমলাকে নিবেদন করা হয়। জগন্নাথের প্রসাদ বিমলাকে নিবেদন করার পরই তা মহাপ্রসাদের মর্যাদা পায়। ভোগে নারকেল বাটা, চিজ ও মাখন সহ শুকনো ভাত দেওয়া হয়। বিমলাকে যখন আমিষ ভোগ নিবেদন করা হয়, তখন সেই ভোগ রান্নার ব্যবস্থা আলাদা করে করা হয়। দুর্গাপূজার সময় বিমলাকে আমিষ ভোগ দেওয়া হয়। সেই সময় বিমলা মন্দিরে পশুবলি হয়। হিন্দুরা বিশ্বাস করেন, দুর্গাপূজার সময় বিমলা ধ্বংসাত্মক রূপ ধারণ করেন; তাই সেই সময় তাকে শান্ত করতে আমিষ ভোগ নিবেদন করা উচিত। দুর্গাপূজার সময় খুব ভোরে গোপনে পাঁঠাবলি দেওয়া হয়। স্থানীয় মার্কণ্ড মন্দিরের পুকুর থেকে মাছ ধরে এনে তা রান্না করে তান্ত্রিক মতে বিমলাকে নিবেদন করা হয়। এই সব অনুষ্ঠান ভোরে জগন্নাথ মন্দিরের দরজা খোলার আগেই সেরে ফেলা হয়। জগন্নাথের বৈষ্ণব ভক্তদের এই সময় বিমলা মন্দিরে ঢুকতে দেওয়া হয় না। অনুষ্ঠানের অল্প কয়েকজন দর্শকই "বিমলা পারুষ" বা বিমলার আমিষ প্রসাদ পান। বিমলা মন্দিরে পশুবলি ও আমিষ ভোগ নিবেদন নিয়ে বৈষ্ণবরা একাধিকবার প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন।দুর্গাপূজার সময় দেবীকে মহিষাসুরমর্দিনী রূপে পূজা করা হয়। দ্য জগন্নাথ টেম্পল অ্যাট পুরী গ্রন্থের লেখক স্টারজার মতে, প্রাচীনকালে জগন্নাথ মন্দির ছিল ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিব–এই ত্রিমূর্তি পূজার কেন্দ্র। উক্ত তিন দেবতার শক্তিগণ তথা হিন্দু দেবমণ্ডলীর তিন প্রধান দেবী সরস্বতী, লক্ষ্মী ও পার্বতীও (বিমলার মূর্তিতে) এখানে পূজিত হতেন। খ্রিস্টীয় সপ্তদশ শতাব্দী পর্যন্ত এখানে শাক্ত শ্রীবিদ্যা-উপাসকদের ভাল প্রভাব ছিল। পরবর্তীকালে বৈষ্ণবধর্ম এই মন্দির চত্বরে প্রাধান্য অর্জন করলে শ্রীবিদ্যা ও শৈব-তান্ত্রিক প্রভাব কমে যায়। তবে এই প্রভাব একেবারে লুপ্ত হয়নি। তান্ত্রিক "পঞ্চমকার" উপচারের পরিবর্তে মন্দিরে নিরামিষ ভোগ ও দেবদাসী নৃত্যের প্রথা চালু হয়। অবশ্য মাছ ভোগ দেবার প্রথাও প্রচলিত ছিল। রাজা নরসিংহদেব (শাসনকাল ১৬৩২–৪৭ খ্রিষ্টাব্দ) মন্দিরে মাছ ও মাংস ভোগের প্রথা বন্ধ করে দেন।যদিও পরবর্তীকালে এই প্রথা আংশিকভাবে চালু করা হয়েছিল। বর্তমানে, বিশেষ বিশেষ দিনে বিমলাকে মাছ ও মাংস ভোগ দেওয়া হয়। তথ্যসূত্র : উইকিপিডিয়া ছবি পিন্টারেস্ট মৌমিতা মন্ডল
0 Comments
আনলক পর্বে পুরী
প্রথম পর্ব: হাওড়া থেকে পুরী , ট্রেন যাত্রা আর কিছু গুরুত্বপূর্ন তথ্য অনেকে পুরী অনেকবার গেছেন তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই , কিন্তু আমার ক্ষেত্রে সেটা একদমই আলাদা। সেই কবে পুরী গেছি নিজের ও মনে নেই , তারপর কতবার যে প্ল্যান করেছি কিন্তু ততবারই ক্যানসেল হয়েছে। তবে এটা বুঝতে পারলাম , উনি না ডাকলে যাওয়া সম্ভবও না। নবমীতে প্ল্যান করেও ক্যানসেল করতে হলো , তবে শেষমেষ পৌঁছে গেলাম পুরী। টিকিট কাটা টিকিট কতবার কেটেছি কতবার ক্যানসেল করেছি সেটা আর বলার নয়। তবে আপনাদের সুবিদার্থে বলে রাখি ১) বর্তমানে টিকিট কাউন্টার খুললেও আপনারা খুব সহজে মোবাইল আপ থেকে ট্রেনের টিকিট কাটতে পারবেন। ২) এখন থেকে দ্বিতীয় রিজারভেশন চার্ট ট্রেন ছাড়ার ৩০ মিনিট আগে দেওয়া হবে। চাইলে অনলাইনে টিকিট ট্রেন ছাড়ার 30 মিনিট আগেও কাটতে পারবেন । ৩) আগের মতোই অনলাইন টিকিট বুকিং চার্ট তৈরির আগে করা যাবে। ৪) এখন সব ট্রেনই স্পেশাল ট্রেন , তাই কোনো কনসেশন প্রযোজ্য নয়। ৫) আর ট্রেনে ডাইনামিক ফেয়ার আছে , সময়ের সাথে ভাড়া বাড়তে পারে। যাত্রা শুরু ৩১/১০/২০২০ রাত ১০:৩০ উঠে পড়লাম হাওড়া পুরী স্পেশাল-এ। সেই মার্চে দূরে কোথাও গিয়েছিলাম , তারপর থেকে সেভাবে যাওয়া হয়নি কোথাও। করোনা আবহে এতদিনের লকডাউনে ট্রেন যাত্রা ভুলতেই বসেছিলাম। আনলক পর্বে যখন ট্রেন চলতে আরম্ভ করলো , তখন নিজেকে ধরে রাখতে পারা গেল না। টিকিট কাটলাম স্লিপার ক্লাসেই , তবে মনে একটা ভয়ও কাজ করছিলো , কিভাবে এই পরিস্থিতি থেকে নিজেকে সাবধানে রাখবো। হাওড়া স্টেশন ট্রেন তো রাত ১০:৩০ তে , তাই একটু সন্ধে হতে বেরিয়ে পড়লাম। বাসের সংখ্যা যেহেতু কম , তাই আর রিস্ক নিলাম না। উবেরে হাওড়া পৌঁছতে সেই চেনা হাওড়া স্টেশন এর চিত্র টা যেন অচেনা লাগলো। পুজোর আবহে হাওড়া স্টেশনকে বেশ সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। হুগলি নদীর তীরে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষন মনটাকে স্নাত করে নিয়ে ঢুকলাম স্টেশনের মধ্যে। পুজোয় কলকাতাকে দেখে সত্যিই কষ্ট হয়েছিল , সেই কলকাতা কোথায় ? আর আজকের হাওড়া স্টেশনকে দেখেও সেই কষ্ট টা হলো। যেখানে ট্রেনের হর্ন বাজে , লোকের আনাগোনা , হৈহুল্লোড় , কিচ্ছু নেই , সব নিস্তব্ধ। এখানে কিছু তথ্য দিয়ে রাখি ১) স্টেশনের মধ্যে এখন অহেতুক ঢোকা যাবে না , আর নির্ধারিত সময়ের কিছু পূর্বেই প্রবেশ করতে পারবেন। ২) স্টেশনে ঢোকার জন্য একটি গেটই খোলা থাকছে। আর টিকিট চেক করে তবেই ঢোকানো হচ্ছে। ৩) স্টেশনে প্রবেশ করতে হলে covid টেস্টের প্রয়োজন নেই। তবে thermal screening এর ব্যাবস্থা আছে । ৪) স্টেশনের মধ্যে খাবার দোকান গুলো কিছু কিছু এখন খুলেছে । ৫) স্টেশনের ভিতরে এখন অনেক সংখ্যায় RPF আছে , আর covid প্রটোকল মেনে সেফ ডিসটেন্স মেন্টেন করে টিকিট চেকও হচ্ছে। ৬) মাস্ক ব্যবহার সবসময় করবেন। কতদিন পর ট্রেনে ট্রেন এসে দাঁড়িয়েছে ২৩ নম্বর প্লাটফর্মে। নেই কোনো তাড়াহুড়ো, নেই কোনো হুল্লোড় । জয় জগন্নাথ বলে চেপে পড়লাম ট্রেনে। মনে হচ্ছে যেন বহু দশক পরে চাপলাম ট। স্লিপার এই টিকিট আমাদের , কম খরচে ঘুরতে চাই। কোচ পড়েছে S4 আর দুজনেরই মিডল বার্থ। কু ঝিক ঝিক শব্দ যদিও নেই , কিন্তু ট্রেনের সেই হালকা দুলুনির আমেজটাই আলাদা। ট্রেন স্টেশন ছেড়ে চললো নীলাচল জগন্নাথধাম। আবার তথ্য সন্ধানে বেরিয়ে যা উপলব্ধি করলাম শেয়ার করে নিচ্ছি আপনাদের সাথে ১) ট্রেনে প্যান্ট্রি-কার সার্ভিস এখন বন্ধ আছে , তাই দীর্ঘ যাত্রাপথে পর্যাপ্ত খাবার সঙ্গে রাখবেন।। ২) তবে , যে স্টেশনে ট্রেন দাঁড়াবে সেখান থেকে খাবার সংগ্রহ করতে পারবেন। ৩) ট্রেনে স্টেশনে থামলে চা, জল, শুকনো খাবার নিয়ে হকারের আনাগোনা আছে। ৪) ট্রেনের মাঝের সিট্ টি কিন্তু আছে । তবে ট্রেন খুব ফাঁকা, অর্ধেক আসন যাত্রীশূন্য । আর ট্রেনগুলোতে জেনারেল কপার্টমেন্ট দেখলাম না । ৫) AC তে এখন বেডরোল দেওয়া বন্ধ আছে। পর্দাও খুলে রাখা আছে। ৬) ট্রেন আর তার বাথরুম গুলি পরিষ্কার আছে , সেরকম কোনো সম্যসা নেই। ৭) কোচগুলো নতুন আর পরিষ্কার । ৮) আরোগ্য সেতু আপ ইন্স্টল্ করে রাখুন , তবে এটা জরুরিও নয়। ৯) ই টিকিট সঙ্গে রাখলেই হবে , হার্ড কপি carry করার প্রয়োজন নেই। ১০) সঙ্গে আই কার্ড রাখবেন। ১১) স্যানিটাইজার , মাস্ক সঙ্গে রাখবেন। এটা অতি আবশ্যক। ১২) সানিটাইজেসন এর অভাব চোখে পড়লো, তাই বলছি, surface sanitizer রাখবেন সঙ্গে । ১৩) ট্রেনেও টিকিট চেক হচ্ছে, আর RPF এর সংখ্যা আগের থেকে অনেক বেশি ।
পুরী পৌঁছে
সকাল ৭ টায় পৌঁছে গেলাম পুরী, নির্ধারিত সময়ের থেকে আগে । স্টেশন চত্বর যেরকম ফাঁকা, বাইরে অটো স্ট্যান্ডও সেইরকমই ফাঁকা । একটা মাত্র গেট দিয়ে টিকিট চেক করে বেরোতে হলো আমাদের । ট্যুরিস্ট কম , তাই অটো পেতে সমস্যা হলো না । আমরা হোটেল বুক পর্যন্ত করে যাইনি । পৌঁছে গেলাম সর্গদ্বার । একটা sea facing হোটেল খুব সস্তায় পেয়ে গেলাম । তবে যদি আপনারা যান কিছু বিষয় জেনে রাখা ভালো ১) এখন ট্রেন টাইমএ ছেড়ে টাইম এর আগেই পৌঁছে যাচ্ছে গন্তব্যে। যেহেতু ট্রাফিক নেই বললেই চলে । ২) স্টেশনে টিকিট চেক করেই বেরোতে দিচ্ছে । ৩) আগে থেকে হোটেল বুকিং এর দরকার নেই, গিয়ে বুক করলেই হবে । সস্তায় ভালো হোটেল পাবেন । ৪) কোনো রকম কোভিড টেস্ট বা e-pass এর প্রয়োজন হচ্ছে না । এই ছিল আমার পুরী যাত্রার প্রথম পর্ব । এখানে আরো দু তিনটে বিষয় বলি ১) হোটেল রুম কিন্তু নিজের চোখে sanitise করতে দেখলাম না । তাই নিজেদের চাদর নিয়ে যাওয়া ভালো । আর সঙ্গে surface sanitiser । ২) জগন্নাথ দেবের মন্দির এখনো বন্ধ আছে । সামনে ২৭ শে নভেম্বর জগন্নাথ দেবের নাগার্জুন বেশ , যা ২৫ বছরে একবার হয় । কিন্তু এই বছর কেউ তা দেখতে পারবে না । মন্দির খোলা হবে এই পর্ব মিটে গেলে । ৩) যে মন্দির এ পুজো হয়, সেইসব মন্দির বাদে সব দর্শনীয় স্থান খোলা আছে । ৪) কিছু কিছু দোকান আর সমুদ্র তীরের কিছু দোকান খুলেছে । ৫) আর এই স্পেশাল ট্রেন চলবে ৩০ এ নভেম্বর অব্দি ।
গন্তব্য পুরী.....
পুরী নামের সাথে বাঙালীর হৃদয়ের যোগ আছে, যতবার যাই নাকেন মনে হয় আবার যাই ... তেমনই এবার হঠাৎই ঠিক করলাম 25th Decemberএর ছুটি টা পুরীতেই কাটাবো কিন্তু ভাবলেই তো হবে না কথায় অাছে যগন্নাথদেব না টানলে পুরী যাওয়া যায় না কিন্তু এই প্রচন্ড high time এও যখন ট্রেনের reservation , hotel booking সব সুন্দর ভাবে হয়ে গেল তখন নিশ্চিত হলাম যগন্নাথ দেব সত্যি টেনেছেন ? যাই হোক নির্দিষ্ট দিন 23rd Decemberএ খুব সকালে ধৌলী এক্সপ্রেস রওনা হয়ে নির্দিষ্ট সময়ের অনেক পরে পৌঁছলাম পুরী... চার দিন ছিলাম , পুরীতে গিয়ে সমুদ্র সৈকত , ঢেউয়ের সাথে মিলে অনাবিল আনন্দ , কোনারক, উদয়গিড়ি, খন্ডগিড়ি , ধবলগিড়ি দর্শন এই সব আর বাঙালী কে নতুন করে বলার কিছু নেই তবে একটা কথা বলার আছে দেব দর্শন মিলেছে মন ভোরে ... এটা আমার খুব শান্তির জায়গা কেন সেটা না বলাই থাক ... আজ পুরী সম্বন্ধে যেটা বলবো সেটা অনেকেরই হয়তো জানা আবার অনেকেই হয়তো জানেন না তাদের জন্য বলি Toshilla 5 star hotel এর একটি beach এ এবার গেছিলাম আমার অসাধারণ লেগেছে , নির্জনতা যাদের প্রিয় তাদের জন্য একেবারে আদর্শ হতে পারে , তার পাশেই রয়েছে অপুর্ব nature camp রয়েছে হরিণ পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে নাম না জানা নদী... সত্যি এ যেন এক অন্য পুরী ❤ সব শেষে বলি তার কথা যা না বললে বাঙালীর বেড়ানো সম্পুূর্ণ হয় না তাহোলো খাওয়া ?ভালো খাওয়া তো অনেক জায়গাতেই হয় এখন তো পুরীতে ভজোহরিমান্না ও হয়ে গেছে যদিও সেখানে আমার একদমই ভালো লাগেনি কারণ ব্যবসা হচ্ছে বেশি ... যাক্ সে কথা আমি এক মিষ্টির দোকানের কথা বলবো অনেকেই জানেন হয়তো মন্দিরের দক্ষিন দরজার বাঁ পাশের রাস্তা ধরে কিছুটা হেঁটে গেলেই মিলবে এই দোকান , দোকানটি দেখতে সুদৃশ্য নয় কিন্তু খেয়ে দেখবেন এখানকার মিষ্টি মূলত রাবড়ি কথা দিলাম মন ভোরে যাবেই যাবে.. ?শেষ করলাম লেখা রইল কিছু ছবি... ?❤
জুন ২০১৮
রঘুরাজপুর এর কথা আমি কখনো কারুর কাছে শুনিনি। পুরী এসে things to do করতে গিয়ে TripAdvisor এ প্রথম জানলাম। বাকিটা অনুভব করলাম গ্রামে পৌঁছে। পুরী থেকে আধঘণ্টার drive. গ্রামটিতে একশো চল্লিশ থেকে একশো পঞ্চাশটা ঘর অর্থাৎ পরিবার। প্রত্যেকেই পেশায় পটচিত্রকার। পটচিত্র যা কিনা পুরাণকথা বর্ণনা করে থাকে। শুনলাম গোড়ার দিকে গোটা কুড়ি ঘর ছিল আদতে এই শিল্পী, মূলত যাদের পদবী মহারাণা, মহাপাত্র, বারিকি। পরে যখন গ্রাম heritage village এর মর্যাদা পেল আরো কিছু ঘর এসে যোগ দিল। এভাবে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এরা পটচিত্রকে বাঁচিয়ে চলেছে। আমাদের সমস্ত গ্রামবাসী প্রায় ছেঁকে ধরেছে শুধু ওদের কাজ দেখানোর জন্য নয়...ওদের কথা সবার কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য কারণ সরকার ওদের জন্য সেভাবে কিছুই করেনি। প্রচারের আলো এসে না পৌঁছলেও ওরা আঁকড়ে ধরে আছে দেড়শো-দুশো বছর পুরনো ঠাকুর্দার করা কাজ, বিশেষত পারম্পরিক পটচিত্র যা দেখে বাবা শিখেছে, আবার বাবার কাছে ছেলের হাতেখড়ি। অনেকেই বিভিন্ন পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী। তারপরেও কী আকুতি...কিনতে হবেনা, একটু দেখে যান, আমাদের ভালো লাগবে, একটু বলবেন তো, পরের বার আসবেন তো..... বিশদে বলতে গেলে সত্যি কথা হল দেখতে হবে স্বচক্ষে। তবে হ্যাঁ গ্রামের শেষ ঘর, সেখানে অভিমন্যু বারিকি বলছিল ওদের পরিবার জগন্নাথ মন্দিরে সেবা করে। অর্থাৎ স্নানযাত্রার সময় যখন প্রভুর পনেরো দিন জ্বর থাকে তখন পটেই পুজো হয়। অভিমন্যু দেখাল কীভাবে দুটো কাপড় আঠা দিয়ে জুড়ে পাথরে ঘষে ঘষে পট তৈরি হয়। Acrylic নয়, ওরা natural colour ব্যবহার করে। খণ্ডনীল পাথর থেকে নীল রঙ, শঙ্খ থেকে শাদা, হেঙ্গুর পাথর থেকে লাল, হরিতার পাথর হলুদ, গেরিমাটি থেকে খয়েরি এবং কাজল থেকে কালো রঙ। পাথর grind করে হয় মণ্ড, মণ্ড থেকে রঙ। কৎবেল গাছের আঠা ব্যবহার করা হয় রঙ যাতে fade না হয়। অভিমন্যু দেখাল রাজবেশে জগন্নাথ সুভদ্রা বলরাম। বছরে চার বার রাজবেশ পরানো হয়। ওদের এই পটচিত্র হল চান্দুয়া style এ...মণ্ডলাও বলে কারণ গোল গোল করে এঁকে তার ভেতরে আবার কোনো কাহিনীবর্ণন। বৃত্তের ওপরে পাঁচ নিচে পাঁচ এভাবে দশাবতার থাকে চান্দুয়া পটচিত্রে। রঘুরাজপুর গ্রাম সম্পর্কে আরেকটি উল্লেখ্য বিষয় হল এটি ওডিসি নৃত্যগুরু কেলুচরণ মহাপাত্রের জন্মস্থান। দেখলাম তাঁর ভাইকে যিনি একমনে এঁকে চলেছেন গোবর থেকে বানানো বাঘ হাতি ঘোড়ার গায়ে। বৃদ্ধ কানে শোনেন না, প্রথমে খেয়ালও করেননি আমাদের। হঠাৎ দেখতে পেয়ে নিজের ভাষায় কথা বলে উঠলেন...ভাই এর ছবি আগলে রেখেছেন পরম যত্নে...সেও দেখালেন। অনুরোধ সবাইকে...পুরী বেড়াতে গেলে রঘুরাজপুর অবশ্যই যাবেন। কিছু না কিনলে ওরা জোর করবেনা, খুশি হবে শুধু গেলেই।
Nil sagor er par "PURI".... A jno ak onobodhyo rup sagor er .... Suriya jno sagor a gia mishe6....... Tar por to a6 Jagannath dev er mahatto.... Ager din rater train a uthe por din sokale pou6 gelam sargadwar er ka6.... Oi din somudro soikat er dheu a ki6u somoy katia akta auto vara kore beria porlam Jagannath dev er Masi, Pisi bari, Gupto Brindabon, Gourio Maha Padh, gundicha temple, 18 Nala, Naru Gopal, Sonar Gouranger uddeshey... Okhan thek fire ki6u khon somoy sea beach a katia fire alm amdr holiday home a..... Por din sokale vore abr sea beach a pou6 gelam sunrise dkhar jonno... Tar por beach dhore ki6u ta agia gia dkhlam noukay ma6 er bazaar.... A chara o sea beach er ka6 akta Jagannath dev er mondir, Iskon temple, Gour Nitai temple o dkhlam..... Oi din e Jagannath dev er mondir pujo dilam... Next din sokale 7tar modhey bus a kore rouna holam sight seeing dkhte.... Okhane gia dkhlam Chandrabhaga Seabeach, Konarak Suriya temple, Lingeswar temple, Udaygiri, Khandagiri, Nandan Kanan.... Dhoulgiri ta kaj ho6ilo bole bondho 6ilo... Sondhey 8 tar modhey pou6 gelam abr sea beach a ... Then abr holiday home a fera.... Por din sokale sea beach a ghure train a kore soja Howrah...
পুরী তো ?
গেলেই হলো। না । হয় নি । দীর্ঘ সময় বেড়াতে যাওয়াই হয়ে ওঠেনি। অবসরের দিন এক শুভানুধ্যায়ী বললেন একবার পুরী ঘুরে আসুন দিকি! জগন্নাথ দর্শন দিয়ে শুরু করুন বেড়ানো ~ সেই সূত্রপাত। সংশয়ের সমুদ্র পার করে পুরীর সমুদ্রে পৌঁছবো শেষ পর্যন্ত? দেখা যাক। আগের post এ অনেকে থাকার , খাওয়ার , ঘোরার খোঁজ দিয়েছেন। সেই খবরের পুঁটুলি সম্বল করে ১৭ তারিখে চেপে বসলাম ধৌলি expressএ। জীবনের প্রথম senior citizen concession পাওয়া seat এ বছর তিরিশের একজন চললো পুরী ~ রেল কোম্পানি জানতেই পারে নি। পর্দা সরিয়ে ঘষা কাঁচের ওপারে ছুটন্ত জনপদ , প্রান্তর বা নদী যাইই পেরোক ভালো লাগছে। কখনও seat এগুপেছু করার খেলায়, কখনও যা খাবার জিনিস আসছে স্বাদ নিতে নিতে সময় কাটতে লাগলো। সঠিক সময় পুরী পৌঁছে অটো ধরে সোজা থাকার জায়গায়। Bag নাবিয়েই একটা ছবি তোলা হয়ে গেলো। নেহাতই আবেগে। ঘরে গিয়ে ফ্রেশ হব একটু রেস্ট নিতে হবে। কিছু সময় পরেই unrest এর উচ্ছিংড়ে লাফালাফি শুরু করলো। ছবি তুললাম। না। জানলা পাইনি। বারান্দার গ্রীলে সমুদ্র আটকে ছবি নিলাম। বাঁদিকে একটু ঠেলা দিয়ে বললাম , বসবে না বেরোবে? = এই তোমার শুরু হলো তো? আঠাশ বছর ধরে যা শুনেছি তাই আবার.... সাড়ে পাঁচ মিনিটের মধ্যে আমরা মন্দিরের দিকে রওনা হলাম । এ ভাবেই শুরু হলো আমাদের পুরী ভ্রমণ .......... থেকেছি ~ বালা নন্দ তির্থাশ্রম এ খেয়েছি ~ নিরামিষ সিংহভাগ সময় চলে গেছে শ্রী জগন্নাথ দেব দর্শনে আর সমুদ্র দেখে। কোনারক ছাড়া আর কোথাও যাই নি। কেনাকাটা করেছি কলিংগ থেকে। খাজা কিনেছি নৃসিংহ থেকে। মাঝে মাঝে সন্ধ্যায় পুরী হোটেলের পাশের গলিতে চা ও snacks এর দোকান থেকে বড়া চপ ছানাভাজা , যা খুশী নিয়েছি। সমুদ্র বর্ডার দেওয়া নিচু পাঁচিলে বসে পা দোলাতে দোলাতে এন্তার খেয়েছি । সমুদ্র বারণ করেছে ~শুনিনি । তাই সমুদ্রও দুষ্টুমি করে দুরন্ত হাওয়ার বেগে পার করেছে সময়। খুব তাড়াতাড়ি এসে গিয়েছে ফেরার দিন। যাবার দিন dhauli exp ধরার আগে আর একবার মন্দির দেখার সুযোগ পেলাম। আর একটা জিনিস অদেখা থেকে যাচ্ছিল। আমার office এর পুরী শাখা। এ কদিন যাকে জিগ্গেস করেছি কেউ বলতে পারেনি। যে রিকশায় চেপেছিলাম সে দেখলাম চেনে। পুরো হলো বাকি থাকা ইচ্ছা টা। মনে হলো মন্দিরে না ঢুকেও সেই স্নেহমাখা হাসিমুখের স্পর্শ পেলাম যেন। ফিরতি ট্রেনে ধীরে বাইরের আলো কমে যায়। চলমান দৃশ্য বিসর্জিত হয় ঘনায়মান অন্ধকারে.... ট্রেন গন্তব্যে ছুটে চলার আওয়াজের সাথে মনের পর্দায় চলতে থাকে ফেলে আশা দৃশ্যের মিছিল। ~ বলে যে সমুদ্র ফিরিয়ে দেয় .... সত্যিই ফিরে পেলাম অনেক আনন্দ আবার। ~ আর যা কিছু পেলাম না? যেমন সেই অনেক আগে মন্দির চত্বরে এক সন্ধ্যায় এক শীর্ণ বৃদ্ধার আবেদন " গুঠে দিয়া নিয় বাবা" = বাবাকে লুকিয়ে মা টপ করে কিনে নিল গোটা কয়েক । বৃদ্ধার ফোগলা হাসিতে মন্দির চত্বরে দীপাবলি হয়ে উঠেছিল ..... জানি ফিরে পাওয়া যাবে না ! তবু চাইতে যাবো সমুদ্রের কাছে আবার ........ যে কোনও সময়েই যেতে পারি আবার কারণ চা দোকানের " টুটু " তো বলেই দিয়েছে ~ মু অছি না! জয় জগন্নাথ । কিছু দিন আগে আমরা গেছিলাম পুরী পূজো দিতে ।জগন্নাথ দেব দর্শন সমুদ্র স্নান সব সারা হল। তার পরে ও হাতে কটা দিন সময় ছিল । উদয় গিরি, খন্ড গিরি, ধবল গিরি, লিঙ্গরাজ মন্দির, নন্দন কানন, চিল্কাহ্রদ প্রভৃতি প্রভৃতি বহুবার দেখেছি। একঘেয়ে কাটাবার জন্য আমরা অটো বুক করে বিপত্তারিনী মন্দির, লাইটহাউস, গুপ্ত বৃন্দাবন, মাসির বাড়ি, পিসির বাড়ি, বিজয় কৃষ্ণ আশ্রম, লোকনাথ মন্দির( শিবের মন্দির) ঘুরলাম। খুব ভালো লাগলো গাছ গাছালি দিয়ে সাজানো গুপ্ত বৃন্দাবন ।। Post By-Itika Jana
নন্দনকানন ভ্রমণ পূরী স্টেশন থেকে মাত্র ১৫ টাকা টিকিট কেটে সারাঙ স্টেশনে নেমে অটোতে ১০টাকা /হেড দিয়ে সোজা ওড়িশার নন্দনকানন zoo প্রবেশ মূল্য ৫০টাকা /হেড গাইড ২০০ টাকা তিন ঘণ্টার জন্য জুর বিশেষ বিশেষ জায়গায় ভ্রমণ। বেটারি চালিত গাড়ি নিয়ে ৭০০ টিকায় পুরো টা বেড়ানো। তবে আমার মনে হয় পায়ে হেঁটে হেঁটে বেড়ানোটা ই বেশী ভালো । বহ্ন নতুন নতুন জিনিস আছে যা কোলকাতায় zoo তে নেই । পরীক্ষার পরিচ্ছন্ন পরিবেশ, নিরিবিলি পরিবেশ।জঙলি পশু পাখি র জন্য খুবই উপযোগী পরিবেশ। এককথায় অসাধারণ ভালো । বাইরে বেরিয়ে রাস্তার পাশে হোটেল এ ৫০ টাকা /প্লেট মাছ ভাত সবজি , এককথায় অসাধারণ ভালো বাঙালি খানা । প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে হাওড়া স্টেশন থেকে অনেক ট্রেন সারাঙ স্টেশনে র উপর দিয়ে যায় , কিন্তু দাঁড়ায় না । যখন ভুবনেশ্বর নেমে ভাড়ার গাড়িতে করে আস্তে হয় zoo তে , অটোতে ৩০০টাকা /ছয় জনের জন্য । Post By:- মুস্তাক আলি
লোক মুখে বহুবার শুনেছি যে বর্ষায় সমুদ্র নাকি এক অন্য রুপ ধারন করে। ছোট থেকে দীঘা কুড়ি বার আর পুরী ছ-ছ'বার গেলেও বর্ষায়! না যাইনি একবারের জন্যও। তাই গত বছর জুন মাস নাগাদ ঠিক করলাম যে,স্ব-পরিবার পুরী যাবো আগষ্ট মাসে। পনেরই আগষ্টের আগে পেছনের ছুটি মাথায় রেখে কেটে ফেললাম ট্রেনের যাওয়া আসার টিকিট,বাঙালি স্বভাব সিদ্ধ হলিডে হোমও বুকিং হলো সমুদ্র আর বাজার থেকে যথাক্রমে তিন মিনিট আর সাত মিনিটের হাঁটা পথে। পুরী পৌঁছে সমুদ্র,পুরী মন্দির এসব তো আছেই,আছে নন্দনকানন,কোনারকের সূর্য মন্দির ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু এইবার কোলকাতা থেকে যাওয়ার সময়েই ঠিক করেছিলাম সমুদ্র,মন্দির ছাড়া একটি মাত্র জায়গা দেখব। এক দিন সকালবেলা জলখাবার খেয়ে সকলকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম,বললাম চলো এক নতুন গ্রামে যাবো। সকলে বেশ খুশি হয়েছে একথা বলতে পারবো না। কিন্তু পুরী এসে একটা গ্রাম,ঠিক আছে যাওয়াই যায় বলে বেড়িয়ে পড়লো সকলে। এমন একটা মনোভাব সকলেরই চোখে -মুখে। হলিডে হোম থেকে বেড়িয়ে আমি একটা অটো কে বললাম "রঘুরাজপুর"যাবেন?উত্তর এলো হ্যাঁ। পুরী থেকে "রঘুরাজপুর" এগারো কিলোমিটার,অটোতে সময় লাগে তিরিশ থেকে পঁয়ত্রিশ মিনিট। পাঁচশো টাকার বিনিময়ে যখন "রঘুরাজপুর" পৌঁছালাম চোখ জুরিয়ে গেলো। মনে হলো এই গ্রামের নাম "রঘুরাজপুর" না হয়ে শিল্পী গ্রাম হওয়া উচিত ছিল। দু-ধারের ছোট ছোট কুটির থেকে বেড়িয়ে আসছিল শিল্পীর শিল্পের ছোঁয়া। অবাক হলাম তাঁদের সৃষ্টিতে। সামান্য কিছু কেনাকাটা করতে করতে শুনলাম ওনাদের জীবন যাপন,জীবন যাত্রার কিছু কাহিনি। তাল পাতা,ছেঁড়া কাপরকে ক্যানভাস করে রঙতুলি দিয়ে তৈরী হচ্ছে অনবদ্য এক শিল্প। যা সভ্য সমাজ থেকে একদম অন্য রুপ ধারন করে। Post By:- Suranjit Ghosh
|
Best Washing MachineCategories
All
Archives
November 2021
Best Autoclean Chimney |