|| কলকাতার আনাচ কানাচ ||
আজ আমরা চলে এসেছি কলকাতার অন্যতম পাইস হোটেল জগন্মাতা ভোজনালয় এ | উত্তর কলকাতার শ্রীমানী মার্কেট এ ৪০ নম্বর কৈলাশ বোস স্ট্রীট এ অবস্থিত জগন্মাতা ভোজনালয় | এসে পাত পেড়ে কাঁসার থালার ওপর শাল পাতা অথবা কলাপাতায় খাওয়া যাবে | আবার টেবিল এ বসেও খাওয়া যায় | ভাত , ডাল , হরেক রকমের মাছ , পাঁঠার মাংস , চাটনি , তরকারী পাওয়া যায় | আজ আমরা তিন জন ভাত , ডাল , আলুভাজা , চিংড়ির মাথা দিয়ে চচ্চরি , ভেটকি মাছ , পাবদা মাছ এবং কাতলা মাছ , চাটনি এবং এক্সট্রা চাটনী এবং ভাত সহযোগে মাত্র ৫৫০ টাকায় দুপুরের খাওয়া দাওয়া সেরেছি | তবে সব কিছু পেতে গেলে কিন্তু ১২ টার মধ্যে যেতে হবে | আমাদের মত ২ টোয় গেলে , ইলিশ , চিংড়ি এসব না পাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল |
0 Comments
কলকাতার আশুতোষ চৌধুরী অ্যাভিনিউ, বালিগঞ্জ ফাঁড়ির কাছে অবস্থিত মন্দিরটির নির্মাণকার্য ১৯৭০ সালে শুরু হয়। প্রায় ২৬ বছর সময় লাগে ৪৪ কাঠা জায়গা জুড়ে সম্পূর্ণ সাদা মার্বেল পাথর দিয়ে তৈরী এই মন্দিরের নির্মাণকার্য সম্পূর্ণ হতে। মূল মন্দিরে রয়েছে রাধাকৃষ্ণের পূর্ণাবয়ব মূর্তি। ১৯৯৬ সালে স্বামী চিদানন্দ মহারাজের হাতে রাধাকৃষ্ণের এই মন্দিরে প্রাণ প্রতিষ্ঠিত হয়। রাধাকৃষ্ণের মূর্তির দু'পাশে রয়েছে দুর্গা ও ধ্যানমগ্ন শিবের মূর্তি। মন্দিরপ্রাঙ্গণে এছাড়াও রয়েছে গণেশ ও হনুমান মূর্তি। মন্দিরের গায়ে রয়েছে অপরূপ সব কারুকার্য।
মন্দির খোলা থাকার সময়: ----------------------------------- সকাল ৫.৩০ থেকে ১১ টা বিকেল ৪.৩০ থেকে রাত ৯ টা পথনির্দেশ:- ------------------------------- গড়িয়াহাট ও পার্ক সার্কাস কলকাতার দুটি গুরুত্ত্বপূর্ণ জংশন। এই দুই জংশনের মাঝে বালিগঞ্জ ফাঁড়ির কাছে এই মন্দির। কলকাতার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সড়কপথে এখানে সহজেই আসা যায়।
প্ল্যান করেছিলাম রবিবার দিনই যাবো লঞ্চে গঙ্গা ভ্রমনে ...গিয়েছিলাম..কিন্তু সেদিন টিকিট না পাওয়ায় ফিরে এসেছিলাম....তাই আর রবিবারে যাওয়ার দুঃসাহসীকতা দেখাতে পারলাম না . . . বুধবারেই চলে গেলাম আর টিকিট পেয়েও গেলাম বিকেল 4টের রাইডের.... টিকিটের মুল্য ৩৯ টাকা ...মিলেনিয়াম পার্কে গিয়ে টিকিট কাটতে হয়... এখনো অনলাইনে টিকিট কাটার ব্যবস্থা হয়নি...
লঞ্চ টা মিলেনিয়াম পার্ক থেকে ছেড়ে প্রথমে হাওড়ার দিকে রওনা দেবে.. | নিমতলা ঘাট, বাগবাজার ঘাট, আর্মেনিয়ান ঘাট ছাড়িয়ে হাওড়া ব্রীজ ক্রস করে বেশ খানিকটা গিয়ে পুনরায় লঞ্চ U টার্ন নিয়ে ফিরে গিয়ে হাওড়া স্টেশন, মিলেনিয়াম পার্ক ছাড়িয়ে বাবুঘাট ,ইডেন গার্ডেন ছাড়িয়ে দ্বিতীয় হুগলী ব্রীজের নীচ থেকে লঞ্চ ঘুরিয়ে পুনরায় মিলেনিয়াম পার্কে এসে থামবে... এই পুরো যাত্রা পথের সময় ছিল ৯০ মিনিট ... সেই সঙ্গে সুর্যাস্ত যাত্রা পথের সৌন্দর্য আরও বৃদ্ধি করে ... লঞ্চের পুরো সময় টাই রবীন্দ্র সংগীত চলেছিল... একদিকে রবীন্দ্রসংগীত আর এক দিকে সুর্যাস্ত - এই কম্বিনেশন কে শব্দে প্রকাশ করা যায়না .... এর সঙ্গে লঞ্চের মধ্যেই ছিল হালকা স্ন্যাকসের আয়োজন... এক কথায় ৯০ মিনিট ছিল অনবদ্য.... ভ্রমণের দিন . - 14/10/2020 ....
পরেশনাথ মন্দির....
(উত্তর কলকাতা) কলকাতার দর্শনীয় স্থান বা মনো মুদ্ধকর মন্দির গুলির মধ্যে একটি হলো উত্তর কলকাতার গৌরী বাড়ি পরেশনাথ মন্দির l যেমন সুন্দর শিল্পকলা ঠিক তেমনি সুন্দর পরিবেশ l যদিও এটা জৈন মন্দির তবুও সকল ধর্মের মানুষেরাই অগ্রগণ্য এই মন্দির দর্শনের জন্য l মার্বেল পাথর ও কাঁচ দিয়ে নিকাশি করা অপূর্ব সুন্দর l মন্দিরে ঢোকার মুখে চোখে পড়বে পৌরাণিক পটচিত্র l সুন্দর সুসজ্জিত এই মন্দিরটি উত্তর কলকাতার এক উল্লেখ যোগ্য মন্দির বলা যেতে পারে l যা দর্শনার্থীদের নজর কাড়ে l মূল মন্দির ছাড়া আসে পাশে রয়েছে আরো বেশ কয়েকটি মন্দির l সঙ্গে সেগুলো দেখে নেওয়া যেতে পারে l এগুলো দেখতে দেখতে দিব্য কাটিয়ে দেওয়া যায় একটি বেলা l
পৃথিবীর বড় অসুখ এখন। কারণে-অকারণে মন অশান্ত হয়ে থাকে। শান্ত করতে কখনো প্রকৃতি, কখনো বা ঈশ্বরই ভরসা। নিজেকে সেখানে সমর্পণ ছাড়া গতি নেই যেন।
কলকাতার মধ্যেই এই দুর্গা মন্দির। মেট্রোপলিটন বাইপাসের কাছেই একদম। খুব বেশি প্রচার পায় নি এখনো। তাই জানাতে এলাম মন্দির নিয়ে। মূল আরাধ্য দেবী মা দুর্গা। অপরূপ সুন্দর ধাতুর তৈরি মূর্তি। সাথে মায়ের সাঙ্গপাঙ্গরা তো রয়েছেই। এছাড়া চারিধারে হনুমান, কালি, শিব এবং রাধাকৃষ্ণের মন্দির রয়েছে। ঝাঁ চকচকে মন্দির চত্বর। ফুরফুরে হাওয়া ফাউ হিসেবে মন ভরিয়ে দেবে। সারাদিনে চারবার মায়ের পুজো হয়, সাথে আরতি। ভোর 6.30, সকাল 9.30, দুপুর 12.30 এবং সন্ধ্যা 7 টা। সন্ধ্যার আরতি দেখতে বেশ লাগে। যেকোন দিন একটিবার গিয়ে দেখে আসতে পারেন। কথা হচ্ছিল মন্দিরের প্রধান পুরোহিত বিশ্বরঞ্জন চক্রবর্তীর সাথে। সকালে সবে তিনি পুজোতে বসেছেন। প্রসাদ দিলেন নিজে হাতে করে, সাথে লাড্ডুও পেলাম একটা ঘিয়ে ভাজা। বলছিলেন- "বিশেষ বিশেষ দিনে ভোগের ব্যবস্থা থাকে এখানে। সেদিন সবাই প্রসাদ পায় পেট ভরে। ভোর 5.30 থেকে দুপুর 1 টা পর্যন্ত খোলা। আবার বিকেল 4 টে থেকে রাত 10 টা।" মন্দিরের চারিধারে পরিবেশটাও বেশ মুগ্ধ করার মত। দুই দিকে দুটো পুকুর রয়েছে বিশালাকার। পন্ডিত মশাই বলছিলেন, ওই পুকুর দুটোর নাকি নামও রয়েছে। একটি রাধকুন্ড, অন্যটি শ্যামকুন্ড। সন্ধ্যায় বেশি মনোরম লাগে পরিবেশ আরো। আর পুজো শেষে মায়ের ভোগ তো রয়েছেই। কখনো অন্য ভোগ, কখনো লুচি হালুয়া। তবে আর দেরি না করে একবার চলেই যান এই দুর্গাবাড়িতে। মনে এক প্রসন্নতা নিয়ে ফিরে আসবেন, গ্যারান্টি।
একদিনের জন্য ঘুরে আসুন বেলুড় মঠ দক্ষিণেশ্বর . শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ দেবের উপাসনা গৃহ আর শ্রী বিবেকানন্দ নির্মীত মঠ . আমাদের প্রথম গন্তব্য ছিল বেলুড় মঠ. গাড়ি পার্ক করে গিয়ে দেখি গেট বন্ধ. খুলবে বিকাল 4 টে. লঞ্চে করে পৌঁছে গেলাম দখিণেস্র. আগের মোটর চালিত বোট বদলে এখন আধুনিকতার ছোঁয়া . পৌঁছে দেখি কালি মন্দির পুরোপুরি কর্পোরেট. ঝাঁ চকচকে skywalk. লাইন দিয়ে কাউন্টার. মোবাইল ব্যাগ জুতা সব জমা দিয়ে ঢুকতে হবে. সময় কম থাকার কারণে বাইরে থেকেই প্রণাম জানালাম মা কে . একে আজ কালীপুজা তায় বেজার ভীড়. পাশের পুকুর টা মনোরম. টিফিন করে আবার লঞ্চে ফিরে গেলাম বেলুড় মঠ . বেলুড় মঠ কিন্তু খুব বেশি পরিবর্তিত হয় নি . মাতৃ মন্দির, মূল মন্দির একই আছে . গঙ্গা পারে মনোরম পরিবেশে বসে থেকে সব মন্দিরে প্রণাম সেরে হাজির হলাম মূল মন্দিরে. বিকাল 5:35 থেকে আরতি শুরু. আত্মার সাথে মিলন ওই খণ্ডন ভব-বন্ধন জগ-বন্দন বন্দি তোমায় সোনায়. গায়ের রোম খাঁড়া হয়ে যায় , সময় শেষ হয়ে যায় . এবার ফেরার পালা. তোমার চরণে মাথা ঠেকাতে আবার যেন আসি প্রভূ.
গোধূলির রঙ দেখা..প্রিন্সেপ ঘাট থেকে
দিনের শেষের রবি দেখতে দুই বন্ধু মিলে চলে গেছিলাম গঙ্গার ধারে প্রিন্সেপ ঘাটে। যখন পৌঁছলাম তখন সূর্যটা সোনালী রঙ্গের বড় থালা হয়ে পশ্চিমে হেলে পড়ার তোড়জোড় শুরু করেছে। গঙ্গার বুকে সেই কাঁচা সোনার রঙ এক মোহময় দৃশ্যের সৃষ্টি করেছে। বেশ কিছু নৌকা দেখলাম সেই গলিত সোনার মধ্য দিয়ে গঙ্গার বুকে ভেষে বেড়াচ্ছে! আস্তে আস্তে সূর্যটা হলুদ রঙ বদলে লাল হতে লাগল!আর গঙ্গার জলও হয়ে গেল ঈষদ লালচে সোনালী। গঙ্গার বুকে গোধূলির এই আশ্চর্য রূপের দিকে তাকিয়ে থাকি, পাখীরা উড়তে থাকে। ধীরে ধীরে লাল সূর্যটা দিগন্ত পাড়ে অদৃশ্য হতে থাকে! আরও কিছুক্ষন গঙ্গার ধারে কাটিয়ে আমরা প্রিন্সেপ ঘাট সৌধের দিকে যাই।আলোকিত সৌধটিকে দেখতে বেশ লাগে। ইতিহাস বলছে ভারতত্ত্ববিদ জেমস প্রিন্সেপ এর স্মরণে ১৮৪১ সালে কলকাতা নাগরিকদের দানে ১২০০০ টাকায় এই দৃষ্টিনন্দন সৌধটি তৈরী হয়। বর্তমানে পঃবঃ সরকার এর স্থাপত্য রীতি ও নান্দনিক চরিত্র গঠনের নিরাপত্তা পূর্ণ মাত্রায় বজায় রেখে আমূল সংস্কার করেন।
কোলকাতার জোকার খুব কাছাকাছি (ভাসা) আছে বিখ্যাত স্বামী নারায়ণ মন্দির। ১৪ নং ডায়মন্ড হারবার রোড। আই. আই. এম (কোলকাতা) র কিছু টা পরে। বিশাল এলাকা জুড়ে এই মন্দির। খুব সুন্দর খোলা মেলা পরিবেশ ।এখানে কোন প্রবেশ মূল্য নেই। পূজো র জন্য ধার্য ৫০টাকা(দুজনের) ।এখানে পূজো বলতে ঠাকুর কে স্নান করানো। সবশেষে এই পূজো র প্রসাদ পাওয়া যায়।পূজো দিতে হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই। মন্দির খোলা থাকে সকাল সাড়ে সাতটা থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত। তবে মাঝে মাঝে ঠাকুর কে ভোগ দেওয়ার জন্য মন্দির বন্ধ থাকে। মন্দির দর্শনের সেরা সময় সকাল আটটা থেকে দশটা পর্যন্ত। আরতি র সময় সন্ধ্যা সাড়ে ছটা থেকে। এখানে বিশাল নিরামিষ খাবারের ক্যান্টিন আছে। একটা গোটা দিন কাটানোর জন্য আদর্শ জায়গা।
আমার চোখে কুমোরটুলী- সলিল হোড় ছোটবেলা থেকেই শুনছি, কুমোরটুলী থেকে দূর্গাঠাকুর আসে। পালেদের বংশধরেরা বয়ে নিয়ে চলেছে এই ঐতিহ্য। বহু লোকের তোলা বহু ফটো আমি দেখেছি এই কুমোরটুলী নিয়ে। তাই আজ চাক্ষুষ দর্শন করতে আমি গেছিলাম ওই পাড়াতে। যতটা ফাঁকা আশা করেছিলাম, ততটা নয় কিন্তু! ফটোগ্রাফার, পূজো কমিটির লোকজন, আমার মতো এক্সপ্লোরার... এদের ভিড়ে জায়গাটা প্রায় নরক গুলজার হবার উপক্রম! এর মধ্যে গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়েছে, কিছু প্রেমে মুগ্ধ উঠতি ফটোগ্রাফাররা! এরা যে যার সাইজ জিরো বান্ধবীদের, দুর্গার সাজে সাজিয়ে নিয়ে মূর্তিগুলোর প্রায় গায়ে উঠে ফটো তুলছে! লালপেড়ে শাড়ি, আর নাকে বড়ো বড়ো নথ সবাই পড়েছে, আবার কয়েকজন আধুনিকতার প্রকাশের জন্য পড়েছে সুপারস্লিভলেস ব্লাউজ! কয়েকজন ফিচেল ছোকরাকে বলতে শুনলাম - "মর্ডান দুর্গার কি রূপ মাইরি! করিনার মতো জিরো ফিগার, আবার বিকিনি ব্লাউস! ভাই আমি অসুর হবো! এদের হাতে মরেও সুখ..!!" বাস্তবিক, শুম্ভ-নিশুম্ভকে একহাত নেওয়া মা দুর্গা, আর এই মর্ডান দুর্গা... এদের মেলাতে সত্যি কষ্ট হয়! ঝোপ বুঝে কোপ মারছে পাড়ার ক্লাবের লোকজন! প্রতি ফটোগ্রাফার দিনপ্রতি দশটাকার টিকিট, আর সিজন টিকিট পঞ্চাশ টাকা! তবেই বুঝুন, সিজন টিকিট কিন্তু এখন আর শুধু খেলার মাঠেই সীমাবদ্ধ নয়! তবে মুঠোফোন ফটোগ্রাফাররা এই নিয়মের বাইরে! তবে হ্যাঁ, খুব ভালো লাগলো মূর্তি বানানো দেখে। মানুষগুলো সত্যি দিনরাত অমানুষিক পরিশ্রম করে, সৃষ্টি করে চলেছেন এই অপূর্ব মূর্তিগুলো। মৃৎশিল্পকে ঠিক কোন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া যায়, সেটা এনাদের না দেখে বোঝা যাবে না। আর হ্যাঁ, অনেক মা বাবারাও এসেছেন, তাদের ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের নিয়ে। সেই কচিমুখগুলোতে, ঠাকুর তৈরি দেখে যে বিস্ময় ও আনন্দের অভিব্যক্তি ফুটে ওঠে, সেই দৃশ্যটা শুধু চোখের ক্যামেরাতেই ধরা পড়ে! বনমালী সরকার স্ট্রিট দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে, রেললাইন পেরিয়ে গেছিলাম গঙ্গার ঘাট পর্যন্ত। বেশ রিফ্রেসিং লাগলো! আমি সবাইকে সাজেস্ট করবো যে, পুজোর সময় তো সবাই ঠাকুর আর শো-বিজনেস দেখেন... এবার একটু এই শিল্পী মানুষগুলোকেও দেখে আসুন। খড়-মাটি-রং দিয়ে, চিন্ময়ী মাকে মৃন্ময়ীরূপে সৃষ্টি করার এই কর্মকান্ড না দেখলে, পূজোর একটা ভিত্তিমূলক অধ্যায় চাপা পড়ে যায়... Post By-Salil Hore
|
Best Washing MachineCategories
All
Archives
November 2021
Best Autoclean Chimney |