এই গ্রুপে আমার প্রথম পোস্ট
আমার হানিমুনের গল্প আমি ভালো লিখতে পারি না। খারাপ লাগলে নিজ গুণে মার্জনা করে দেবেন। আজ থেকে প্রায় পঁচিশ বছর আগের কথা।গ্যাংটক গেছি হানিমুন করতে। প্রথম দুদিন তো হেসে খেলে ঘুরে বেরিয়ে ভালই কাটলো। বাবা মা ছাড়া প্রথম ঘুরতে যাওয়া, শাসন করার কেউ নেই।ফূর্তির প্রাণ গড়ের মাঠ। মনে হচ্ছে "এই হানিমুন যদি শেষ না হয় তবে কেমন হতো"। ভগবানের সহ্য হলো না আমার খুশি।তিনদিনের দিন থেকে পতি দেবতার প্রবল জ্বর। ১০৩° জ্বর উঠে যাচ্ছে।ফেব্রুয়ারির ঠান্ডায় সারারাত বসে বসে জলপট্টি দিচ্ছি আর ভেউ ভেউ করে কাঁদছি। তখন মনে হচ্ছে কি করতে মড়তে হানিমুনে এলাম। ঘরের ছেলেকে ভালোয় ভালোয় ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারলে বাঁচি। তখনও অবধি আমার জানা সব ঠাকুরের কাছে মানত করা হয়ে গেছে। তবে হোটেলের ম্যানেজার খুব সাহায্য করেছিলেন। ডাক্তার দেখানো, ওষুধ এনে দেওয়া, বারে বারে খোঁজ নেওয়া সবই করেছিলেন। জ্বর যেদিন কমলো সেদিন রাতেই ছিলো আমাদের ফেরার ট্রেন। এখানে চুপিচুপি একটা কথা বলি। পাহাড়ে বেরাতে যাওয়া ঠিক হয়েছে শুনেই আমার মনে হতো বর আমাকে পাহাড় থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে আবার একটা বিয়ে করবে। ও মা, উনি তো নিজেই কাত্। আমাকে আর ফেলবে কি। জ্বর আসাতে একদিক দিয়ে আমি নিশ্চিন্ত হয়েছিলাম। সেবার ভালো করে ঘোরা হয় নি বলে পাঁচ বছর বাদে আবার মেয়ে শুদ্ধু গ্যাংটক গেছিলাম ঘুরতে।এবার সুদে আসলে সব উশুল করেছি. . . . . এবার বরের ভয় ছিলো আমি না ওকে পাহাড় থেকে ধাক্কা মারি।
0 Comments
পুজো শেষ তাই বেরিয়ে পড়লাম সুন্দরী সিকিম এর পথে দশমীর দিন৷ দার্জিলিং মেইল ধরে পৌঁছে গেলাম নিউ জলপাইগুড়ি৷সেখান থেকে গাড়ি করে পৌঁছে গেলাম সিলেরি গাওঁ ,তখন বাজে ৩.৩০৷আঁকা বাঁকা চরাই উৎরাই পথ ধরে শেষ পর্যন্ত পৌছালাম মায়াবী সেই গ্রামে৷ ঠান্ডা হালকা বাতাস আমাদের স্বাগত জানালো.হালকা মেঘের ভেলা ভেসে বেড়াচ্ছে মায়াবী সেই গ্রামে ৷আমাদের জন্য হোমস্টে ব্যবস্থা ছিল আগেই,কলকাতা থেকে বুকিং করে ছিলাম ৷আস্তে আস্তে নেমে এলো আধার আর তার সাথে ঠান্ডার আমেজ.পরদিন সকালে হাটা দিলাম RAMITEY ভিউ পয়েন্ট এর দিকে ৷ চারিদিকে গাছের সারি তার মাঝে চলেছি আমরা ৪ জন.৩০ মিনিট পর পৌঁছে গেলাম সেই জায়গায় ,তবে চারিদিকে কুয়াশা তখন ঘিরে রেখেছে আমাদের ৷তিস্তা নদী আর কাঞ্চনজঙ্ঘা তখন দেখা যায়নি.তাই সময় নষ্ট না করে ফিরে এলাম ৷ খেয়ে দিয়ে রওনা হলাম জুলুক এর পথে.কিছুক্ষন পরে দেখ্লাম QKHOLA জলপ্রপাত ,তারপর আবার গাড়ি চললো আঁকা বাঁকা পাহাড়ি পথ ধরে ৷ জুলুক যখন পৌছালাম তখন বিকেল ৪ তে বেজে গেছে ৷আস্তে আস্তে ঠান্ডা বেড়ে গেলো এবং আমরা এক অপূর্ব সুন্দর HOMESTAY তে এসে পৌছালাম.
৷ সেখান থেকে দেখলাম জুলুক এর এক অপূর্ব রূপ৷ পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে গেছে সিঁড়ি!চারিদিকে শুধু সবুজ পাহাড়৷ রাত বাড়তেই ঠান্ডা নেমে এলো .ইলেকট্রিসিটি ছিলো না তখন, কিছুক্ষন পরে হটাৎ দেখা দিলো আলো.কারেন্ট চলে এলো ৷সন্ধেবেলা চা আর পাকোড়ার সাথে আড্ডা বেশ জমে উঠলো.ঠান্ডা আরো বাড়তে লাগলো তাই রুম হিটার এর বাব্যস্থা করা হলো .সেদিন রাত বেশ কেটে গেলো ৷ পরদিন সকাল বেলা সেই আঁকা বাঁকা সিঁড়ি বেয়ে নেমে গেলাম নিচে জুলুককে একটু ভালো করে চিনবো বলে.সামনেই আর্মি ক্যাম্প ছিল ওখানেই সকালের চা সেরে নিলাম.তারপর সকালের খাবার শেষ করে আমাদের আসল যাত্রা সূচনা হলো গ্যাংটক এর পথে.ZIGZAG জুলুক এর পথ পেরিয়ে আমরা এসে পৌছালাম থামবি ভিউ পয়েন্ট .কুয়াশা তখন বেশ আমাদের ঘিরে রেখেছে.তবু সেই ZIGZAG পথ আমরা দেখতে পেলাম.তারপর এক অপূর্ব জায়গায় পৌঁছে গেলাম নাম লুংথু .কাঞ্চনজঙ্ঘা এখনো অধরা.পাহাড়ের গায়ে লাল গোলাপি ফুল এর বাহার এ ঘেরা দারুন এক জায়গা.তারপর আমরা পৌঁছে গেলাম নাথাং ভ্যালি.মুগ্ধ হয়ে গেলাম প্রকৃতির সেই রূপ দেখে. আস্তে আস্তে পাহাড়ের পথ বেয়ে এগিয়ে চললো আমাদের গাড়ি.কিছুক্ষন পরে এলো পাহাড়ে ঘেরা মেমেঞ্চ লেক.তারপর এলো সেই বিখ্যাত বাবা মন্দির যেখানে কিছুক্ষন সময় কাটালাম আমরা.আবার চলতে শুরু করলো গাড়ি ,তারপর এসে পৌছালাম কুপুপ লেক যাকে দেখতে হাতির মতো তাই তার নাম এলিফ্যান্ট লেক ও বলে.ভীষণ ঠান্ডা সেই জায়গায়.চারিদিকে শুধু পাহাড় আর পাহাড় .যেন মনে হচ্ছে ভূস্বর্গ তে পৌঁছে গেছি আমরা.হটাৎ শুরু হয়ে গেলো বরফের বৃষ্টি. বড়ো বড়ো বরফের টুকরো গাড়ির উপর এসে পড়লো.আমরা তো ভীষণ খুশি..এরপর এগিয়ে গেলাম ছাঙ্গু লেক এর দিকে .চমরী গাই এর দল সারি সারি পথের ধরে দাঁড়িয়ে আছে. ঠিক 4 তে ১৫ তে এসে পৌঁছলাম গ্যাংটক.গাড়ি করে হোটেলে উঠলাম.কিছুক্ষন বিশ্রাম নিয়ে আমরা চলে এলাম এম .জি মার্গ .আলোয় আলোকিত লোকে লোকারণ্য সেই বিখ্যাত জায়গা.ফেরার টিকিট তখন আমাদের কনফার্ম হয়নি তাই অন্য ব্যবস্থা করতে হবে.রাতে একটি মনোরম রেস্তোরা তে ডিনার সেরে নিলাম.পরদিন গ্যাংটক শহর ভ্রমণ.সকাল বেলা বেরিয়ে পড়লাম .প্রথমে আমাদের স্বাগত জানালো বাকথাং জলপ্রপাত .সিকিম এর সাজসজ্জায় আমরা সেজে ছবি তুলতে লাগলাম..তারপর সকালের খাওয়া সব সেরে এসে এলাম এক মনাস্ট্রি দেখতে.একে একে তাশি ভিউ পয়েন্ট পেরিয়ে এলাম গণেশ টক যেখান থেকে গ্যাংটক শহর তাকে পুরোপুরি দেখা যায়. গণেশ জি কে প্রণাম জানিয়ে এগিয়ে চললাম হনুমান টক .ঘন্টা বাজিয়ে বাজিয়ে এগিয়ে চললাম.সবশেষে আমরা এসে পৌছালাম বনঝাঁকরি পার্ক এ.দুপুরের খাওয়া দাও সেরে আমরা সেখানে শোভা দর্শন করলাম.সুন্দর একটি জলপ্রপাত এর কাছে এসে পৌছালাম.বিকেলের আলো জানিয়ে দিলো এবার ফেরার পালা.থেকে গেলো শুধু আনন্দের রেশ সবার মনে.এবারের মতো গ্যাংটক কে বিদায় জানিয়ে ফিরে এলাম শিলিগুড়ি.সারা রাত বাসে করে এসে পৌছালাম কলকাতা. এবারের মতো ভ্রমণ শেষ ,শুধু স্মৃতি টুকু থেকে যাক সবার মনে চিরজীবণের মতো. 7 members ,Per head cost Rs 3300 .Total cost from NJP to Gangtok- Rs 3300* 7= 23100 (Gangtok hotel, food and sightseeing excluded)
রঙ্গলিতেও পারমিট করাতে হয়। এখানে একটি বাজারে আমরা থেমেছিলাম। প্রায় ৩০ মিনিটের বেশি সময় লেগে গেল। এই সময়টা আশেপাশের ছবি তুলে সময় কাটালাম। প্রায় ৩ঃ৩০ নাগাদ আমরা আমাদের পরবর্তী গন্তব্য কিউ খোলা জলপ্রপাতে পউছালাম। এখানে প্রায় আধা ঘণ্টা সময় কাটালাম। চারপাশের দৃশ্য ক্যামেরা বন্দী করলাম। প্রায় ৪ টে নাগাদ আমরা পদমচেন ঢুকলাম, পরের দিনের গন্তব্যর জন্য। পদমচেনে আমরা যেখানে ছিলাম সেটির নাম ‘Newar Home Stay’. এখানে এসে আমরা নিজেদের ঘর ঠিক করে চললাম খেতে। ডাল, পাঁপড় ভাজা, আলু ভাজা ও ডিমের ঝোল দিয়ে ভাত খেলাম। এরপর কয়েক জন মিলে হাঁটতে বেরলাম। সন্ধ্যা ৭ঃ১৫ নাগাদ গরম চা সহ পাকোড়া এলো টিফিন হিসাবে। রাত ৯ঃ৩০ টা নাগাদ রুটি, ফুলকপি, আলুর তরকারি ও মুরগির মাংস সহযোগে খেয়ে শুয়ে পড়লাম ।
তৃতীয় দিন (০৩/০৩/২০১৮) ঃ আজ সকাল সাতটা নাগাদ চা দিয়ে দিন শুরু হল । ৮ঃ৩০ টা নাগাদ লুচি তরকারি দিয়ে টিফিন করে ১০ঃ৩০ টা নাগাদ সিল্ক রুট এর উদ্দেশে রওনা হলাম। সিল্ক রুট পৌঁছাতে আমাদের প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়াল রাস্তায় জমা হওয়া বরফ। আমরা পদামচেন থেকে জুলুক হয়ে যখন উপরের দিকে উঠছিলাম তখন থেকে দেখলাম রাস্তার দুই ধারে বরফ জমে আছে। তার থেকেও যেটা মনে ধরল সেটা হচ্ছে রাস্তার থেকে ধোঁয়া উঠছে। বরফের জন্য আমাদের গাড়ী আর উপরে উঠতে চাইছিল না। কিন্তু অল্প কিছু সাবধানতা অবলম্বন করে ধীরে সুস্থে উপরে উঠতে থাকল। এই সময় আমরা কাঞ্ছনজঙ্ঘার অপূর্ব ভিউ দেখতে পেয়ে ক্যামেরা বন্দী করলাম। সিল্ক রুট ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করার জন্য যাত্রা পথে একজায়গায় আমাদের গাড়ী দাঁড়াল। আমরা যেখানে দাঁড়ালাম সেখান থেকে সিল্করুট / জিগজাগ রুটের দৃশ্য দারুন ভাবে দেখা যায়। যাত্রা পথের পুরোটাই বরফের চাদরে মোড়া । আমরা যাত উপরে উঠতে লাগলাম ততই মেঘ এসে আমাদের ঘিরে ফেলতে লাগল। তাই গাড়ী ধীরে ধীরে উপরে উঠছিল, মাঝে চলাই দুস্কর হয়ে উঠছিল। আরও কিছুটা উঠে যাওয়ার পর হঠাথ রোদ উঠে পড়ল, সঙ্গে সামনের পথ স্পষ্টই দেখা যাচ্ছিলো। আমরা এগিয়ে চললাম থাম্ভি ভিউ পয়েন্টএর দিকে। কিছুক্ষণ চলার পর আমরা পউছালাম থাম্ভি ভিউ পয়েন্টএ। এখানে কিছুক্ষণ থেকে চারপাশের দৃশ্য দেখে আমরা রওনা হলাম নাথাং ভ্যালির উদ্দেশে। যাত উপরে উঠতে লাগলাম তত বরফের চাদর আরও পুরু হতে লাগল। এখানে বরফ দিয়ে এগিয়ে যেতে গেলে পিছনের চাকায় চেন বেঁধে নিতে হয়। আমরা এগিয়ে যেতে যেতে রাস্তার এক ধারে কোন একটি জন্তুর পায়ের ছাপ দেখতে পেলাম। নাথাং ভ্যালীতে পৌঁছে দেখলাম চারপাশ বরফে ঢাকা। আমি এর আগে কখনো এত বরফ দেখিনি। সেই জন্য আনন্দে মনটা নেচে উঠল। ট্যুরিস্ট নিয়ে যে সব গাড়িগুলো এসেছিলো সেইগুলি ছাড়া দুটি আর্মির ট্রাক ও একটি বরফ কাটার ট্রাক দেখতে পেলাম। এখানে প্রায় ২০-২৫ মিনিট কাটানোর পর আমদেরই একজনের হথাত শ্বাসকষ্ট শুরু হল, যার জন্য চলে আসতে বাধ্য হলাম। এখানে চারপাশে বরফের দৃশ্য এতটাই ভালো লাগছিল যে এত তাড়াতাড়ি ফিরে আসতেও ইচ্ছে করছিল না। আমাদের এই পথেই কুপুপ লেক যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু বরফ কেটে এগোনো আর সম্ভব ছিল না। বাধ্য হয়েই আমরা জুলুকের home stay র দিকে এগিয়ে চললাম । ফেরার সময় দেখলাম বরফ গলা জল সারা রাস্তা ভিজিয়ে দিয়েছে আর মেঘের ঘন আস্তরন পুরো রাস্তাটাকেই যেন অদৃশ্য করে দিয়েছে। কাজেই গাড়ী ধীরে চলছিল।
গ্রুপ এর অনেকেই হয়তো এই জায়গায় গিয়াছেন, আমাদের ও North sikkim tour এর 2nd দিন এর destination এটাই ছিল। আমার জীবনের সবচেয়ে উঁচু জায়গায় ভ্রমন এটাই। height almost 5200 meter,
সারা রাত বৃষ্টির মধ্যে স্যাঁতসেঁতে অন্ধকার ঘরে রাত কাটাবার পর ভোর 4te বেশ কিছু গাড়ির ইঞ্জিন start করার আওয়াজ এ ঘুম ভেঙে গেল। বুঝলাম গাড়ি ছোটা শুরু করার আগে warmup সেরে নিচ্ছে,। আমরাও অতি উৎসাহে জানলা খুলে ভোরের আলোতে অসম্ভব সুন্দর গ্রাম lachen কে দেখলাম এবং নিজেরাও cofee এর সাথে warmup করে journy start করলাম। রাতের বর্ষা রাস্তায় কিছু জায়গায় জল জমিয়ে দিয়েছে এবং সাথে ল্যান্ডস্লাইড এ কিছু রাস্তা blocked।।। এ সব পর করে মনে অনেক exitment নিয়ে বেশ কিছু আর্মি ক্যাম্প পার করে পৌঁছালাম gurudongmar lake. Tree line অনেক আগেই end হয়েছে , এখন শুধু ন্যাড়া পাহাড় বরফ দ্বারা আবৃত,। খুব এ অবাক করা ব্যাপার লাস্ট 5km রাস্তা পুরো highway এর মত , পরে জানতে পারলাম ওই রাস্তা emergency যে যুদ্ধবিমান অবতরন এর জন্য উপযুক্ত এবং halicapter ও স্বাচ্ছন্দে নামতে পারে, । খুব কাছেই রয়েছে china border। উচ্চতা বাড়ায় বেশ কিছু জনের headache শুরু হলো, lake এ পৌঁছে অল্প এদিক ওদিক ঘুরে বাকি team mate সব গাড়িতে, । শেষে আমি একাই নেমে এগিয়ে গেলাম lake ঘুরে দেখতে, নিজের মত অনেক ছবি তোলার ফাঁকে বরফ জমা lake এর উপর দিয়ে হাঁটা শুরু করলাম।। মনে ভয় ও উত্তেজনা, কারণ বরফ গলছে april মাসে, যদি কোনওভাবে বরফ ভেঙে জলে পরে যাই, কেউ বাঁচাবার নেই। এরম করে বেশ অনেকটা এগোবার পর দেখলাম বরফ এর উপর একটা ফাটল, আর এগোলামনা খুব সাবধানে কিছুটা স্লিপ খেতে খেতে আবার lake এর ধরে ফিরে এলাম এবং সেই দিন এ গাড়ি ধরে একেবারে gantok,। ফেরার পথে শরীর এ অক্সিজেন এর এত ঘর্তি ছিল যে সবাই বেশ মাথা যন্ত্রনা নিয়ে চোখ বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম, ঘুম ভেঙেছিল প্রায় 4,5 ঘন্টা পর যখন ড্রাইভার lunch এর জন্য ডেকেছিল।।
সংক্ষিপ্ত সফরে প্রাচীন রেশম পথ
এটা যদিও ঠিক weekend tour নয়, তবুও কেউ চাইলে পাঁচ দিনের মধ্যে ঘুরে আসা যায় আমাদের পাশের রাজ্য, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর সিকিম এর পূর্ব দিকের এই সুন্দর জায়গাটি থেকে। এখন খুবই জনপ্রিয় একটি বেড়ানোর জায়গা এই silk route. রাতের কোনো ট্রেন এ চেপে সকালে পৌঁছে যান NJP station. সেখান থেকে কোনো গাড়ী ভাড়া করে দুপুরের মধ্যে সিলারিগাঁও পৌঁছে বিশ্রাম নিন। পরের দিন সকালে ভাগ্য সুপ্রসন্ন থাকলে মেঘমুক্ত আকাশে কাঞ্চনজঙ্ঘার অসাধারণ সুন্দর view দেখতে পারেন পেতে পারেন। ওখান তেজে breakfast করে বেরিয়ে পড়ুন রিশিখোলা, রংলি হয়ে জুলুক এর উদ্দেশ্যে। silk route এ ভ্রমণ এর জন্যে permit রংলি থেকেই করাতে হয়, এর জন্যে লাগবে 2 copy voter card এর photocopy আর 1 copy photo. গাড়ীতে করে ঘুরতে ঘুরতে বিকালে পৌঁছে যান জুলুক। জুলুক হচ্ছে মেঘে দের রাজ্য, হটাৎ করে কখন যে মেঘ এসে আপনাকে ঘিরে ধরবে টের এ পাবেন না। ওই রাত টা জুলুকে কাটিয়ে পরের দিন সকালে বেরিয়ে পড়ুন silk route বলতে যে জায়গা তা আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে সেই zigzag way দেখতে। যদি পরিষ্কার আকাশ থাকে তো সব সময় আপনাকে সঙ্গ দেবে সুন্দর নীল আকাশে বরফাবৃত কাঞ্চনজংঘা। এই zigzag way দেখার সব থেকে সুন্দর জায়গা হলো Thambi view point। এখান থেকে আপনি দেখতে পাবেন three layer zigzag way. তার পর চলে যান Gnathang valley হয়ে পুরোনো বাবা মন্দির দেখে kupup lake বা elephant lake. এই পথে যাওয়ার সময় দূর থেকে দেখতে পাবেন ভারত চীন সীমান্তের দোকালম। সেনাবাহিনীর আপত্তির কারণের kupup lake এর একদম কাছে যাওয়া যায় না। দূর থেকেই দেখে নিতে হবে elephant আকৃতির এই নীল জলের হ্রদ টিকে। kupup দেখে এবার এগিয়ে যান ওই রাস্তা ধরেই ছ্যাঙ্গু lake এর দিকে। এই রাস্তায় আপনার চোখে পড়বে memencho lake, দূর থেকে দেখে মনে হবে পাইন বনে ঘেরা নীলকান্ত মণি। তার পর আরো এগিয়ে গিয়ে পাবেন নতুন বাবা মন্দির ও ছ্যাঙ্গু lake. হাতে সময় থাকলে ঘুরে আসতে পারেন nathula pass ও। ছ্যাঙ্গু দেখে ওই রাস্তা তেই ফিরে আসতে পারেন জুলুক হয়ে podomchen বা কেউ gangtok ও চলে যেতে পারেন। পদমচেন বা gangtok থেকে পরের দিন গাড়ী করে NjP ফিরে রাতের train এ ফিরে আসুন কলকাতা। এই route বরফ পড়লে তার সৌন্দর্য অতুলনীয়, তবে তখন পুরোপুরি silk route complete করা সম্ভব নাও হতে পারে। যাদের হাতে সময় আরো কম তারা চাইলে njp থেকে ওই দিন podomchen চলে যান পরের দিন সিল্ক route ঘুরে পদমচেন এই রাত কাটিয়ে পরের দিন NJP ফিরে রাতের কোনো train ধরতে পারেন। সব ছবি ক্যামেরা বন্দী করে আনা সম্ভব নয়, কিছু জিনিস শুধু চোখে আর মনেই থেকে যায়।
পাহাড়ে ঘোরার জায়গা গুলোর ২ রকমের রূপ । শীতে বরফ আর শরৎ এ নীল আকাশ এর সাথে রং এর খেলা । সেই রূপ এর টানেই আবার ও আমার ছুটে চলা সিকিম । ৬ মাস আগে দূর্গা পুজোর সময়ে একবার ঘুরে এসেছি সিল্ক রুট এ । দোল এর chute তে আবার ও প্ল্যান । কয়েকটা সঙ্গী পেয়ে গেলাম যে । দোটানা ছিল পয়সা নষ্ট করে এক জায়গা দুবার যাওয়ার মানে আছে কিনা কিন্তু যা দেখে এলাম তা সত্যি ই ভাবতে পারিনি ।
ট্রেন এ টিকেট পাইনি তাই অগত্যা বাস এর টিকেট । NBSTC এর বাস এর টিকেট কাটলাম কিন্তু যা শিক্ষা হলো আর কোনওদিন নাম ও মুখে আনব না । টিকেট ক্যানসেল এর টাকা আজ ও ফেরত পেলাম না ১৮ দিন পরেও । যাক প্রথম দিন শিলিগুড়ি থেকে চলে এলাম আরিতার । দুপুরে খাওয়া শেষ হতেই বেরিয়ে পড়লাম মানখিম ভিউ পয়েন্ট এর উদ্দেশে । বিকেল টা ওখানে সময় কাটিয়ে আরিতার মনাস্ট্রি দেখে সেদিন এর মতো ঘোরা শেষ ।
পরের দিন সকাল সকাল বেরিয়ে আরিতার লেক ঘুরে রঙলি এলাম । এখানে পার্মিট পাওয়া গেলো জুলুক এর ওপর অবধি । প্রবল তুষারপাত এর জন্য কুপুপ অবধি যাওয়া যাবে না । খারাপ লাগলেও কিছু করার নেই । কুইখোলা ফলস হয়ে এসে পৌছালাম ফাদমচেন এ ।
তৃতীয় দিন টা ভীষণ ই উত্তেজনা র । বরফ দেখবো বলে কথা । জুলুক হয়ে রাস্তা শুরু হতেই দুপাশে বরফ শুরু । জিগজ্যাগ ভিউ পয়েন্ট এ এ কিছুক্ষন ছবি তুলে আবার ওপরের দিকে এগোলাম । কিন্তু একটু গিয়েই গাড়ি আর রাজি নয় যেতে । কোনো গাড়ি যাচ্ছে না । যদিও বরফ ও অনেক এখানে । কিছুক্ষন পর কয়েকটা গাড়ি একসাথে থামবি এর দিকে ওঠা শুরু করলো । আমরাও পিছু নিলাম । থামবি পৌঁছে প্রচুর বরফ পেলাম আর দেখলাম বেলচা দিয়ে রাস্তা থেকে বরফ তোলার কাজ চলছে । কাজেই গাড়ি আর কিছু তাই যাবে না । সাহস করে এবার হাঁটা শুরু করলাম । প্রায় ২ কিলোমিটার মতো রাস্তা নিজেরা এলাম আর সাথে কেউ ই ছিল না । শুধু ৬ জন এ আর যাওয়া টা ঠিক হবে না ভেবে আবার থামবি ফিরে এলাম । যা বরফ দেখলাম এই টুকু সময়ে সারাজীবন মনে থাকবে । ভেবেই অবাক হচ্ছিলাম এই রাস্তা তাই ৬ মাস আগে কুপুপ অবধি ঘুরে এসেছি পুরো পরিষ্কার আর আজকে পুরো বরফ ঢাকা । থামবি তে গরম কফি খেয়ে ফিরে এলাম ফদমচেন । আর কি বেড়ানো শেষ । বাড়ি ফেরার পালা । আবার সেই বাস এর পুশব্যাক সিট্ এ গা এলিয়ে কলকাতা ফেরত ।
Bike e North & East Sikkim ghorar paln korchen, kivabe jaben bujhte parchen na? Tahole ei post ta apnar Jonno. Jodi sahos kore jete paren biswas korun osadharon oviggota, Sara jiboner sritir vandar e ekta asset of adventure hoye thakbe.
Prothome apnader koekta tips dea rakhe. 1. Jkhn jaben tar agame 7 diner weather Google e check kore neben. 2. Porjapto & joto besi smvb siter posak nea jaben. Vlo gloves obossoe neben. Nahole thanday bike chalate osubidhar hbe. 3. Google map e sb route offline save kore neben age theke. Karon uporer dike kothao tower paben na & rastay sb smy lok paben na rasta jiggesh korar jnno. 4. Roj jotota parben sokale beronor chesta korben tahole apni bikaler modhe hotel e pouchote parben. Rater ondhokare pahari rastay chalano khub e osubidha jonok jodio Amra seta parene bole khub osubidhar sommukhin hote hoyechilo. Karon rat hole thanda jemn bare temn e Sikkim er rasta khub e baje abong puro tae bolte gele off road. Ebar mul porbe asa jak. Kolkata to Kolkata:2200 km avg. Day1(600 km): Kolkata theke khub vor e bike start dea chole jaben Siliguri. Apni bike train tule o nea jete paren NGP obdhi. Tahole apnar 600 km chalanor klantio hbena r opordike Kolkata theke Siliguri chalanor scenic beauty o serm kichu nei. Jodio amra chaleai gachilam. Amader 2 bar tyre punture hoye jawar jnno Amra Raygonj obdhie pouchate pare sedin. Jodi thik Moto chalano jay sndhe 8 tar modhe apni Siliguri pouche jaben. Then apnar budget onujae okhane hotel nea neben. Day2: Siliguri theke start dea chole jaben Gangtok. Khub vor e obossoe beroben. 1 tar modhe documents joma dite Hobe permit er jnno. Permit office M.G. merg er samnei. 200 taka Sikkim Govt. Charge. Bt broker dea korano better. Ekhan theke apnader east & north both Sikkim er permit e peye jaben. Tobe best hy apni Jodi age theke apnar garir documents WhatsApp ba mail kore den broker der, tahole Broker ra permit age theke ber kore rakhbe. Sedin Gangtok vlo kore ghure neben, side scene o kore neben. Day3: Permit hate peyei start kore deben jatra. Porjapto thandar jinis pore neben Prothome Tsmogo lake trpor soja Nathula pass, trpr neme ese new Baba Mandir, changu lake, old Baba Mandir hoye old silk route hoye zuluk e pouche jaben. Zuluk e kono hotel nei, sudhu home stay paben. 700-1000 per head fooding lodging. Zuluk e apni luxurious kichue paben na kin2 rate khub high. Amader budget fail hochilo bole Amra r o niche neme aslam Ronglite. Amra jekhane uthlam se ek osadharon home stay. Jemn vlo babohar temn sundor poribesh temn e luxury room. Day 4: Rongli theke start dea chole asben Mangan. Khub sundor jaiga. Hotel er window theke borof e mora pahar dekhte paben. Jodi mone koren Lachen porjonto o jete paren. Seta depend korche apnader capacity r timer upor. Bikaler por r na jawae vlo karon North Sikkim er rasta khub e baje. Mangan e Guddu Agarwal hotel ache. Rate high bt durdanto hotel. Kom damio peye jaben. Day 5: Mangan theke sokale start dea chole jaben Thangu. Mangan e last petrol pump paben. Full tank obossoe korben. Thagu te kono hotel nei sudhu e home stay. Current nei. Sudhu jhornar awaz r borofe mora pahar r temn e thanda. Amra chilam Yanki bhabir home stay te. Khub e vlo babohar abong babostha. Day 6. Thangu theke rowna dea chole jaben Gurudongmer lake. Dekha abong photo session hoye gele R apnake neme aste hbe Lachen ba Lachung e. Ekhaneo khub vlo home stay paben. Day 7. Lachen theke ba Lachung theke apni yumthang valley, zero point, katao ghure nite parben. 1 day te smvb na hole 2 days time nite paren. 2 dn time Nile apni rongpo obdhi neme jete parben. Day8: Siliguri ba Raiganj jotota parben chole asben. Amr mote best NGP obdhi ese bike train cargo te tule train e fire kawa. Karon ferar time e Siliguri to Kolkata chalate khub klanto lagbe. Jodio Amra chaleai fireche. Day 9: Siliguri or Raiganj theke soja chalea Kolkata. Kichu queries ba guidance er drkr hole inbox korte paren. Jotota smvb help korbo. R keu gele take advance best wishes.
Post By- Spandan RE
Post By-Sumon Dasgupta
উত্তর সিকিম, লাচেন, লাচুং, য়ুমথ্যাং উপত্যকা ও গুরুদঙ্গমার হ্রদ- ©শান্তম বিরুনী পঞ্চম এবং অন্তিম পর্ব । লাচুং, য়ুমথাং উপত্যকা ও গ্যাংটকে প্রত্যাবর্তন। 28.09.2018 "সক্কাল সক্কাল অমন দাঁত কেলিয়ে সেলফি তুলিস না। মোটেও ভাল্লাগছে না। আজ আমাদের ফেরার দিন। সেটা মনে করে একটু দুঃখু দুঃখু মুখ করে সেলফি তুলি চল।" সকাল ৭টা । স্থান লাচুং এ একটি সুন্দর হোটেল এর ব্যালকনি। পেছনে পাহাড় দেখা যাচ্ছে। পাহাড়ের গা বেয়ে ঝর্ণা। কাল সারারাত ঝর্ণার ডাক শুনেছি। একটা নাম না জানা পাখি টি টি করে ডেকে চলেছে। যেখানে দাঁড়িয়ে আছি, তার ওপরে হোটেল এর তিনতলা থেকে টুংটাং করে বাসন এর আওয়াজ হচ্ছে। কাল রাত্রে সেই ভয়াবহ মুলো কাণ্ডের পরেই হোটেল এর একজন দায়িত্ববান ব্যবস্থাপক আমাদের বলেছিলেন আজ সকালে প্রাতরাশ এর জন্যে পোহা বানিয়ে দেবেন। আর গাড়ি ছাড়ার আগে আমরা গরম গরম কফি খেয়ে নেবো। সে দুটো বানানোর শব্দ আসছে বোধহয়। দেরি হচ্ছে দেখে, আমি একটু হাঁটাহাঁটি করবো বলে বেরিয়ে এলাম হোটেল চত্ত্বর থেকে। লাচেন গ্রামের সাথে লাচুং গ্রামের বেশ তফাৎ। লাচেনে একটাই রাস্তা, যার নাম গুরুদংমার রোড। তার দুপাশে গজিয়ে উঠেছে বাড়ি, দোকান, হোটেল, হোমস্টে। আর কোনো রাস্তা চোখে পড়ে নি। অবশ্যি আমরা ছিলামই একটা রাত্রের জন্যে। তার সাথে লাচুং এর তফাৎ এখানেই। এর ব্যাপ্তি অনেক খানি। লাচুং এর দুটো ভাগ। ওল্ড লাচুং আর নিউ লাচুং। এখানে ট্যুরিজম আসার আগে নিউ লাচুং গড়ে ওঠে নি। ছোট একটা জনপদ। ঘোরানো রাস্তা। ইতি উতি বেড়ে ওঠা দোকান, পসার সাজিয়ে দোকানি। অর্গানিক সিকিম এর দৌলতে বাড়ির বাগানের আলুটা, মুলোটা , বাঁধাকপিটা- এসব নিয়ে বসেছে কেউ কেউ রাস্তার মোড়ে ।বাড়ি ঘর গুলোতেও দারিদ্রতার ছাপ স্পষ্ট। অন্যদিকে, নিউ লাচুং ঢোকার মুখেই একটা ব্রিজ আছে। তার তলা দিয়ে কোনো এক পাহাড়ি নদী নাচতে নাচতে বইছে । প্রণয় কে জিজ্ঞেস করে জানতে পারলাম, এখানে সব ছোট বড়ো স্রোতই তিস্তায় গিয়ে মিশবে। ব্রিজ থেকে এগিয়ে এসে দুদিকে রাস্তা ভাগ হয়ে গেছে। দুদিক দিয়েই উঁচু রাস্তা উঠে গাছে পাহাড়ের ওপর অবধি। পাশে সারি সারি দোকান, হোটেল, বেশ দামি হোটেল ও আছে, আবার সস্তার হোটেল ও পাওয়া যায়। ওল্ড লাচুং এর একটা জায়গায় রাস্তা দুটো ভাগ এ ভাগ হয়ে গেছে। একটা গেছে ওপর দিকে, যেটা আজ আমাদের গন্তব্য। য়ুমথাং উপত্যকা ও জিরো পয়েন্ট। আর একটা গ্রামে ঢুকেছে। কাল রাত্রে বিপজ্জনক ভাবে গাড়ি চালিয়ে প্রণয় নিয়ে এসেছিলো এই নিচের রাস্তা দিয়ে। আজ ওই বাঁকে ঘুরেই ওপরে উঠতে হবে। গাড়ি ছাড়ার আগে প্রণয় কে বেশ চিন্তিত দেখলাম। দু চারবার কাউকে ফোন করলো, নেপালি ভাষায় উত্তেজিত হয়ে কিসব বললো। আমাদের সামনে দেখে আবার সেই নিপাট নিরীহ ছেলে। জিজ্ঞেস করলাম, "ব্যাপার কি? এতো হৈচৈ কিসের?" বললো দুটো জিনিস। প্রথমত, গাড়ির তেল নিয়ে চাপে আছে ও। আজ গ্যাংটক ফিরতে অনেক খানি রাস্তা। তেল শেষ হয়ে গেলে আরেক ভোগান্তি। আর দ্বিতীয়ত, জিরো পয়েন্ট যাওয়া নিয়ে। এখানে আপনাদের একটি বিশেষ ব্যাপার জানিয়ে রাখি। প্রায় ৯৯% টুর এজেন্সী য়ুমথাং ভ্যালি পর্যন্ত আপনাদের প্যাকেজ দেবে। কারণ এটাই এখানকার নিয়ম। য়ুমথাং ভ্যালি থেকে জিরো পয়েন্ট মোটামুটি ২৫ কিমি দূরে। ওখান থেকে লাগবে দেড় ঘন্টা মতো। সেটার জন্যে এজেন্সী আলাদা চার্জ করবে। এই তথ্য টি য়ুমথাং ভ্যালি তে যে সাইনবোর্ড আছে তাতেও লেখা আছে। লাক্সারি গাড়ি হলে ৩০০০ টাকা মতো নেবে য়ুমথাং ভ্যালি থেকে জিরো পয়েন্ট। আমাদের এজেন্সির সাথে আমার যখন কথা হয়েছিল, জিরো পয়েন্ট প্যাকেজেই ধরা ছিল। (আপনারা আমাকে এর আগে অনেকজন জিজ্ঞেস করেছিলেন আমার প্যাকেজের ব্যাপারে। সবাইকে যা বলেছি এখানে খোলাখুলি বলি। আমি যে এজেন্সির সাথে গেছিলাম, তার সাথে আমার বন্ধুর সম্পর্ক। আমার অন্যরকম প্যাকেজ ছিল এবং বিশেষ কারণে কিছু ছাড় পেয়েছিলাম। কিন্তু যদি আপনারা ইচ্ছুক হন, আমার সাথে আলাদা ভাবে যোগাযোগ করবেন, আমি ওদের ফোন নম্বর দিয়ে দেব।) প্রণয়ের সাথে এই জায়গায় একটু মিস কমিউনিকেশন হয়ে ছিল অবিনাশের। আমরা বার বার বলছি জিরো পয়েন্ট ধরা আছে। কিন্তু সে মানতে নারাজ। শেষে আমি আমার কলকাতার ব্যবস্থাপক কে ফোন করে বলার পরে সে আবার অবিনাশ ও প্রণয় কে জানায়। অতঃপর গাড়ি স্টার্ট দিলো প্রণয়। মুখে ছুরপি। চোখে রোদচশমা । আমাকে সামনে বসতে দেখে বললো, "স্যার আপ বুরা তো নাহি মানা ?" আমি হাসি মুখে উত্তর দিলাম, "না ভাই, তোমার কাজ তুমি করেছো। তোমাকে যা বলা হয়েছিল তুমি সেটাই করবে, এর ওপর খারাপ লাগার জায়গা নেই।" উত্তর শুনে প্রণয় খুশি হলো। হাসি দেখে বুঝলাম, বেচারা খুব ই চাপ এ পড়েছিল। প্রণয় লাচুং থেকে বেরোনোর সময় একটা দোকানের সামনে দাঁড়ালো। দেখেই বোঝা যাচ্ছে দোকানের কেউ এখনো ঘুম থেকে ওঠেন নি। প্রণয় এদিক ওদিক দৌড়াদৌড়ি করলো খানিকক্ষণ । তার পর ফিরে এলো। সে তেল এর সন্ধান করছিলো। পায় নি। জিজ্ঞেস করে জানলাম, চুমথাং এর পরে আর তেল ভরার জায়গা নেই। দেরি হচ্ছে দেখে গাড়ি স্টার্ট করে আমরা এগিয়ে চললাম য়ুমথাং উপত্যকার দিকে। আজ ফেরার জন্যেই বোধহয় গাড়ির ঝাঁকুনি টা বেশি লাগছে। কেমন একটা তিতকুটে ভাব আমাদের তিনজনের ই। ঘুরে ঘুরে পাহাড়ে ওঠা আর ভালোলাগছে না যেন। এখানেও একটা সেনা ছাউনির চেক পয়েন্ট। পারমিট দেখিয়ে আবার চললাম। এই সেনা ছাউনি আমাদের ফেরার পথে অনেক সাহায্য করেছিল। লাচুং এর ওপর দিকের রাস্তা গুরুদংমারের থেকেও খারাপ কয়েক জায়গায়। একজায়গায় তো রীতিমতো নদী বইছে ।রাস্তার ওপরে বিশাল বিশাল পাথরের চাঁই । এদিক সেদিক স্টিয়ারিং ঘুরিয়ে প্রণয় আর তার জাইলো দুলতে দুলতে চলল। পিঠে অসহ্য ব্যথা। তিনজনেরই। খানিক টা গিয়ে একটা ভয়ানক ব্যাপার ঘটলো। প্রণয় রাস্তা চেনে হাতের তালুর মতো। একটা ঘোরানো পথে উঠতে গিয়ে গতি একটু বাড়ালো সে। উঠেই আবার বাঁ দিকে ওঠা আছে। সেরকমই তার জানা আছে। প্রথম বাঁক টা নিয়ে বাঁ দিকে ঘুরতেই সশব্দে ব্রেক কষতে হলো তাকে। পাথর। একটা একতলা বাড়ির সমান। ভ্রূ কুঁচকে গেলো এতো অভিজ্ঞ চালকের। এতো টাটকা ধস। আমাদের দিকে ঘুরে যেটা বোঝালো সেটা হলো, ধস নামার সময় কখনো পাথর শেষে পড়ে না। শেষে পড়ে বালি, আর ছোট পাথর। এখানে সেটা নেই। অর্থাৎ ধস আবার নামতে পারে। আমরা ভয়ে ভয়ে ওপর দিকে তাকালাম। আলাদা করে কিছু বোঝা যাচ্ছে না।পাথরের ঢল নেমেছে পাহাড়ের গা বেয়ে। কিন্তু যাবো কিভাবে। ঘুরে গিয়ে একটা রাস্তা দেখা যাচ্ছে। কিন্তু সেই রাস্তা গাড়ির নয়। পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে লাচুং নদী । এটি তিস্তার প্রধান উপনদী। সেই লাচুং নদীর তীরের ওপর এবড়োখেবড়ো রাস্তা একটি আছে। প্রণয় আমার দিকে তাকালো। মুখে হাসি। "মজা আয়েগা স্যার!!" চোখের নিমেষে গাড়ি ঘুরিয়ে লাচুং নদীর তীরে আমরা। কোনো পথ নেই। পাথরের ওপর দিয়ে গাড়ি গড়াচ্ছে। জল পড়ছে এদিক ওদিক থেকে রাস্তার ওপরে। এভাবে যাওয়ার কোনো মানে খুঁজে পাচ্ছিলাম না। শরীর খারাপ করছিলো। কোনোক্রমে ওই রাস্তা টা পেরোতে আমাদের সময় লাগলো কুড়ি মিনিট। পেছনে তাকিয়ে দেখি, আমাদের এক সঙ্গীর মুখ চুন। জিজ্ঞেস করতে জানলাম, পেটে ব্যাথা তার। বেগ আসছে। প্রণয় বললো, য়ুমথাংএর ওখানে পাবলিক টয়লেট আছে। কোনো চিন্তা নেই। খানিকটা ওপরে উঠে দৃশ্য বদলে গেলো। দুপাশে রোডোডেন্ড্রনের বন । কেমন একটা মিষ্টি গন্ধ বাতাসে। এদিক ওদিক সাইনবোর্ড। গাছ থেকে ফুল ছিড়বেন না, জন্তু জানোয়ার কে বিরক্ত করবেন না এইসব। কি মুশকিল বলুন তো। চারদিকে একটা দৈবিক পরিবেশ। উঁচু উঁচু গাছ। মাঝখান দিয়ে ছোট্ট ছোট্ট ঝর্ণা, সেই ঝর্ণা ঘোরানো পথের ওপর বার বার এসে যেন পা ধুইয়ে দেয়, এরকম একটা পরিবেশে কোন সুস্থ মানুষের মনে হয় ফুল ছেঁড়ার কথা? জন্তু জানোয়ার পাখি কে বিরক্ত করার কথা? অথচ এমন হয় বলেই না সাইনবোর্ড লাগানো আছে!! যাইহোক, এগিয়ে চলেছি ঘোরানো রাস্তা দিয়ে। এই উপত্যকা ন্যাড়া নয়। পাশ দিয়ে লাচুং নদি বইছে। তার তীর বরাবর অনেক খানি ফাঁকা জায়গা। মেঘ ভিড় করেছে তার ওপর। বড় বড় পাথর ছড়িয়ে আছে নদীখাতের চার পাশে। কেমন একটা মায়াবী পরিবেশ। দূর থেকে দেখলে সবুজ আর বাদামি রং মেশানো এক জলাভূমির মতন লাগছে। পাখি উড়ছে ইতি উতি। নদি এখানে বেশ খরস্রোতা। তার এপাশে পাতলা বন। ওপাশে ঘন জঙ্গল। প্রণয় এর থেকে জানলাম এখানে "ভালু " থাকে। প্রণয় গাড়ি চালানো ছাড়াও ট্রেকিং এর ব্যবস্থাও করে। সে নিজে ট্রেক করতে পছন্দ করে। এসব কথা বলতে বলতেই আমরা এগিয়ে গেলাম য়ুমথাং উপত্যকার দিকে। রাস্তার ডান দিকে একটা ছোট রাস্তা বেঁকে নিচের দিকে নেমে গেছে। প্রণয় বললো উষ্ণ প্রসবন। চামড়ার রোগ সারানোর জন্যে এই প্রসবন নাকি বিখ্যাত। খানিক দূর গিয়ে গাড়ি থামালো প্রণয়। আমরা পৌঁছে গেছি য়ুমথাং উপত্যকা। এখানে রাস্তার চারিধারে দোকানপাট। এখন অফ সিজন।তাই লোক জন কম। এই দোকান গুলোয় গামবুট, জ্যাকেট, গ্লাভস ভাড়া পাওয়া যায়। ম্যাগি পাওয়া যায় গরম গরম। চামরিগাইয়ের মাংস, কফি, চা। আর পাওয়া যায় আগুন। একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম পুরো উত্তর সিক্কিমে। গাড়ির চালকদের কোনো টাকা লাগে না খেতে গিয়ে। এখানেও তাই। আমরা পৌঁছানোর আগে অন্তত ১০টা গাড়ি এসে পড়েছিল এখানে। একটা দোকানে আমাদের প্রণয় নিয়ে গেলো। সেখানে গাড়ির চালকেরা বসেছে আগুনের পাশে। সবাই গোল হয়ে বসে ম্যাগি খাচ্ছে। সাথে চামরিগাইয়ের মাংস। আমরা বসলাম না ওখানে। প্রণয় এর থেকে বাথরুম এর সন্ধান নিয়ে এগিয়ে গেলাম সেদিকে। আমাদের তিনজনের মধ্যে একজনের অবস্থা করুন। সে পেট চেপে বসে আছে। আমাদের বাকি দুজনের অবস্থা অনেকটা ভালো। বেশি জল খেয়েছিলাম বলে আমারো ছোট বাইরের বেগ আসছিলো। কিন্তু বিপদ টাএলো অন্যদিক দিয়ে। বাথরুম এর কাছাকাছি পৌঁছতেই বুঝতে পারলাম সেটি বন্ধ। তালা দেওয়া। এদিক ওদিক জিজ্ঞেস করে জানলাম অফ সিজন তাই। ছেলেদের অসুবিধা নেই। ঝোপ ঝড়ের আড়ালে দাঁড়িয়ে গেলেই হলো। সমস্যা বড় বাইরে আর মহিলাদের নিয়ে। আমার সামনেই দুজন ভদ্রমহিলা চিন্তিত মুখে আবার তাদের গাড়িতেই উঠে বসে পড়লেন। আমাদের সাথে যে বন্ধু ছিল, তার চোখ ছল ছল করছে। এমনকি প্রণয় ও এদিক ওদিক থেকেও ম্যানেজ করতে পারলো না। কোনো দোকানেও ব্যবস্থা নেই। এরপর আমাদের জিরো পয়েন্ট যাওয়ার পালা। তবে আমাদের সঙ্গীটির পক্ষে আর গাড়িতে বসে ওই ঝাঁকুনি সহ্য করা সম্ভব হচ্ছিলো না। আমি প্রণয়কে কাছে ডাকলাম। জিজ্ঞেস করে জানলাম, জিরো পয়েন্ট এ এখন গিয়ে লাভ হবে না। তাছাড়া আমাদের সঙ্গীটির যা অবস্থা, সে রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে কাজ সারবে না। কারণটিও যুক্তিযুক্ত। মাটিতে জোঁকের ভয়। তাই সে পেট চেপে বসে আছে। অগত্যা জিরোপয়েন্ট বাদ দেওয়া হলো প্ল্যান থেকে। আজ্ঞে হ্যাঁ। আমাদের প্যাকেজ এ থাকলেও আমরা যেতে পারি নি। কারণ ওই রাস্তার ঝাকুনি আর ভালোলাগছিলো না। তাছাড়া গুরুদংমার দেখার পর আর সব কিছুই ফিকে লাগছে। গাড়ি ঘুরিয়ে প্রণয় গতি বাড়িয়ে দিলো। সাবধানে অথচ দুরন্ত গতিতে অভিজ্ঞ চোখে রাস্তা মেপে প্রণয় গাড়ি ছোটাচ্ছে। আমি বাইরে তাকিয়ে আছি। বিশাল বিশাল রোডোডেন্ড্রন, তাদের গায়ে সবুজ শ্যাওলা, কাঠঠোকরা পাখি, মাছরাঙা, আরো কত নাম জানা, না জানা পাখি, প্রজাপতি, সব কিছু পেছনে ফেলে আমি এগিয়ে চলেছি সমতলের দিকে। আর একদিন পরেই আমার কাছ থেকে হারিয়ে যাবে এই সজীব বনলতার স্নিগ্ধ হাওয়া, দূষণ হীন প্রকৃতি, পাহাড়ি খেয়ালে চলা লাচুং নদী , তিস্তা,আঁকাবাঁকা রাস্তা, বৌদ্ধ গুম্ফা , সব কিছুই। আবার আসবো।কথা দিলাম নিজেকে। ফেরার পথে ওই সেনা ছাউনি তে আমাদের সঙ্গীর বেগ হালকা হলো। বেচারার চোখে জল এসে গিয়েছিলো। সে দু বার দুঃখ প্রকাশ করলো যে তার জন্যে আমরা যেতে পারলাম না জিরো পয়েন্ট। প্রণয় সেটা শুনে বললো, এখন ওখানে কিছুই দেখার নেই। শুধু হাওয়া খেতে ওখানে যাওয়ার মানে নেই কোনো। আমার কানে এসব কিছুই ঢুকছিল না। আমি তখন গাড়ির জানলা দিয়ে মাথা বাড়িয়ে চেষ্টা করছি প্রকৃতির নির্যাস যেটুকু শুষে নেওয়া যায় সেটুকুর খোঁজ করতে।লাল লাল ফোলা ফোলা গালের বাচ্চা গুলোর দিকে তাকিয়ে হাত নাড়তে নাড়তে আমার মন টা প্রতিবারের মতো খারাপ হয়ে গেলো। ক্যামেরায় তোলা ফটো গুলো দেখতে দেখতে মনের ভেতরে উঁকি মারলাম। প্রথম দিন থেকে কিছু সুন্দর মুহূর্ত তুলে রাখা আছে মনের দেওয়ালে। তাতে প্রণয় এর সাথে আমাদের খুনসুটি, তাকে রাগানো, তার হাসি, তার আত্মবিশ্বাসী গাড়ি চালানো, আমাদের কত স্মৃতি , তিস্তা কে পাশে নিয়ে, সেই কির্নে বাজারের খাসির মাংস থেকে শুরু করে গ্যাংটক এ সেই সুস্বাদু খাবার, লাচেন এ রিনঝিং কাজির গল্প, লাচুং এর মুলো কান্ড , সব কিছুই বাঁধানো আছে মনের মনিকোঠায়। অবাক লাগছিলো প্রণয় কে দেখে। সে প্রায় প্রতিদিনই প্রকৃতির সাথে লড়াই করে বাঁচে। রাস্তার ধস, পাহাড়ী নদীর জল, সব কিছুকেই জয় করার জন্যে সে দুর্বার গতিতে চুটিয়ে দেয় তার প্রিয় জাইলো। সাথে থাকে একটি শিব ঠাকুরের ছবি। বড় ভক্ত সে শিব এর। আবার সে গোর্খা। তার কাজে সে তার পরিচয় দেয়। বড্ডো প্রণয়-ময় হয়ে গেছিলো চিন্তা গুলো। ঘোরানো রাস্তা দিয়ে নামতে নামতে পেরিয়ে যাচ্ছি সেই প্রথম দিনের ধস এর জায়গা গুলো। ফেরার পথে একটা ঝর্ণায় থেমেছিলাম। ঝর্ণার একদম কাছে গিয়েছিলাম আমরা। সে ঝর্ণার নাম অমিতাভ বচ্চন ফলস। কারণ এখানে অমিতাভ অভিনীত আঁখে সিনেমাটির একটি দৃশ্য শ্যুটিং হয়েছিল।আরেকটি নাম ও আছে। ভীম নালা ফলস। আমাদের জোর করে ফলস এর একদম কাছে নিয়ে এলো প্রণয়। প্রবল জলোচ্ছাস দেখতে গিয়ে বিন্দু বিন্দু জলের ছিটায় আমাদের মাথা থেকে পা অবধি ভিজে গেলো। ক্লান্তি দূর হলো সারাদিনের। ওখানেই একটা হোটেলে গিয়ে জামাকাপড় পাল্টে আবার শুরু হলো আমাদের ফেরার যাত্রা। রংরাং-এ থামলাম। Chirag Da Dhabaতে আর যাই নি। তার উল্টো দিকে আরেকটা হোটেল এ ডিম্ ভাজা সহযোগে ভাত খেলাম। গ্যাংটক ফিরতে ফিরতে বিকেল ৫টা। রাস্তায় উল্লেখ্য একটাই জিনিস ছিল। সেই বিখ্যাত চড়াই উৎরাই এর জায়গায় দেখলাম, একটি সেনা বাহিনীর বাস উল্টে গেছে। প্রণয় মুখ টা আমাদের দিকে ঘুরিয়ে হাসতে হাসতে বললো, "স্যার , ইয়ে লোগ ভি মজা নাহি লে পায়া !!" আজ লিখতে লিখেত ভাবছি, প্রণয় ছেলেটা আমার কাছে অন্তত, "মজা" কথাটার অর্থটাই পাল্টে ফেলেছে যেন। "দুর্গম গিরি কান্তার মরু দুস্তর পারাবার" এর সাথে চ্যালেঞ্জ নিয়ে লড়াই করা কেই পাহাড়ের প্রণয়রা মজা আখ্যা দেয়। হোটেল এ ফিরে অবিনাশ এর সাথে দেখা। তার সাথে ইচ্ছে না থাকলেও MG MARG যেতে হলো। এদিক ওদিক হেঁটে, ফিরে এলাম হোটেলে আবার। পরেরদিনের জন্যে গোছানো শুরু করলাম। রাত্রে গ্যাংটক এর হোটেলে শুয়ে কল্পনা করার চেষ্টা করছিলাম গত তিনদিনের স্মৃতি রোমন্থনের। দেখলাম, নিজের স্বত্বা কে দুভাগে ভাগ করে ফেলেছি যেন। কিছুতেই বেরিয়ে আসতে পারছি না সেই নীল আকাশের তলায় নীল হ্রদ এর ঘোর থেকে। আমি চলে এলেও, আমার আত্মা যেন আটকে পড়েছে সেই জলের মধ্যে। অথবা লাচেনের সেই মায়াবী রাতে পাশের পাহাড়ের ঝর্ণার শব্দ, অত্যন্ত ঠান্ডায় হোমস্টের ঘষা কাছে বায়বীয় বাষ্পের প্রলেপ, দূর থেকে ভেসে আসা বৌদ্ধ গুম্ফা থেকে সেই বিষাদকাতর বাঁশির সুর, পাহাড়ি ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক যা অবিকল ঘন্টা বাজানোর মতো শোনায়, বিছানায় শুয়ে চোখ বুজলেই মনে হচ্ছে পাহাড়ি এবড়োখেবড়ো রাস্তায় আমরা চার জন গাড়ির মধ্যে বসে দুলে দুলে চলছি । নেপালি গান চলছে মিউজিক সিস্টেম এ। কানে আসছে প্রণয়ের আমাদের মতো মুখ গোল করে রসগোল্লা উচ্চারণ করা বাঙালি কে নেপালি ভাষা শেখানোর প্রবল চেষ্টা- "মেরো নাম প্রনয়। "তেমেরো নাম কিও?" অথবা বিশ্বের সর্বভাষায় অন্যতম প্রচলিত বাক্য "আমি তোমায় ভালোবাসি"-র নেপালি উচ্চারণে "মো তিমিলাই মায়া গারচু"।।। -সমাপ্ত- ***************************************** লেখা চলাকালীন আমি অনেক বন্ধুদের ইনবক্সে বলেছিলাম কিছু টিপস দেব যেগুলো আমার দরকারি মনে হয়েছে। নিচের কথা গুলি নিয়ে কারো কিছু বলার থাকলে আমাকে ইনবক্স করতে পারেন। ১. গুরুদংমার যেতে গেলে অবশ্যই ডাক্তার এর সাথে একবার পরামর্শ করে নিন। ওখানে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠলে ভালোই শাসকষ্ট হয়। . ২. amazon e commerce site এ ছয় লিটার বা দশ লিটার এর অক্সিজেন সিলিন্ডার পাওয়া যায়। দশ লিটার এর সিলিন্ডার এ আনুমানিক দেড়শোবার আপনি শ্বাস নিতে পারেন। যদি পারেন প্রতি তিনজনের জন্যে একটি সিলিন্ডার কিনে নিয়ে যান। আমি কিনতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ডেলিভারি ডেট দেরি করে ছিল বলে নিতে পারিনি সাথে। ৩. coca ওষুধ টি 6 এবং 30 এই দুটো dose এ পাওয়া যায়। আমরা গ্যাংটক এ পৌঁছানোর দিন থেকে গ্যাংটক ফায়ার আসার দিন অবধি খেয়েছি। এই ওষুধ সাথে সাথেই কাজ করে না। সময় নেয় । তাই আগে থেকে খান। coca30 বড়দের জন্যে ৫-৬ টা গুলি, এবং বাচ্চাদের জন্যে ৩-৪টি গুলি খেলেই চলে। এটি আমি হোমিওপ্যাথি ডাক্তারের সাথে কথা বলে জেনেছি। ৪. সাথে কর্পূর রাখুন। শুধু গুরুদংমার না। যেকোনো পাহাড়ে বেড়াতে গেলে সাথে কর্পূর রাখুন। শ্বাস কষ্ট হলে, বা গা গোলালে কর্পূর শুকলে অনেক কাজে দেয়। ৫. এই কথা টি মহিলাদের জন্যে। amazon e commerce site এ একটি জিনিস পাওয়া যায়, peebuddy নামে। বাড়ির বাইরে মহিলাদের টয়লেট ব্যবহার করতে গিয়ে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। ফলে নানা রোগ, ইনফেকশন এসব হয়ে থাকে প্রায় ই। এই peebuddy জিনিস টি একটি ফানেল এর মতো। এটি দু ধরণের হয়, use and throw এবং reusable । এটি ব্যবহার করে মহিলারাও দাঁড়িয়ে, অথবা অর্ধেক বসে অথবা ঝোপ ঝড়ের আড়ালে ছেলেদের মতোই টয়লেট করতে পারবেন। এটি হাইজেনিক ও নিজস্ব ব্যবহারের জন্যে। তবে বেড়াতে যাওয়ার দিন ই কিনে ব্যবহার করতে অসুবিধে হতে পারে। তাই কিছুদিন আগে থেকে কিনে ব্যবহার করে দেখুন। ৬. উত্তর সিকিম বেড়াতে গেলে পারমিট পেতে একটা নিয়ম আছে। ওখানকার লোকাল ড্রাইভার থাকতেই হবে। আপনি নিজে ড্রাইভ করলেও একটি লোকাল ড্রাইভার আপনাকে সাথে রাখতে হবে। এই নিয়ম বোধহয় বেশিদিন হয় নি। এ ব্যাপারে কিছু জানতে আপনি পারমিট অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন। ৭. একটি হাওয়া ভরা বালিশ বা neck rest অবশ্যই নেবেন। রাস্তা খারাপএর জন্যে ঝাঁকুনির জন্যে পিঠের আর কোমরের ব্যাথা হয়ে থেকে খানিকটা উপশম হবে। ৮. নিজস্ব ফ্লাস্ক বা বোতল রাখুন। টুং এর পর থেকে প্লাষ্টিক বোতল পাওয়া যায় না। পাহাড় কে পরিচ্ছন্ন রাখুন। ৯. টর্চ রাখবেন সাথে। লাচেনে লোডশেডিং বেশি হয়। মোবাইল টর্চ এর ভরসায় থাকবেন না। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন। মন ভরে ভ্রমণ করুন। অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিন আমাদের সবার সাথে। ইচ্ছা আছে কিছুদিন পর ফিরে আসবো মেঘালয়-শিলং-চেরাপুঞ্জীর গল্প নিয়ে। আবার দেখা হবে বন্ধু!!! Post By-Santam Biruni
কালাপাথর, সাদায় মোড়া ** কালা পাথর, বা কালা পাহাড় , উত্তর সিকিমে অবস্থিত একটি অতি উত্তম স্থান, (হলফ করে বলতে পারি), কিন্তু বেশিরভাগ ট্যুরিস্ট রাই জানেন না, ইন ফ্যাক্ট, যারা "গুগুলোচিত হননা" তাদের না জানাটাই স্বাভাবিক। তবে আমার গিন্নি জেনেছিল, জুকারবার্গ এর থেকে, "ফেসবুকিত" হয়ে, বেড়াতে যাওয়ার আগে। আমাকে অনেকবার বলেছিল, "ওগো, ইয়ামথাং, গুরুদংমার এর সাথে কালাপাথর/কালাপাহাড় ও নিয়ে যেও। খুব ভাল স্পট, আমি FB তে দেখেছি। আমাকে সিকিম বেড়াতে যাওয়ার আগে অনেকবার বলেছিল।কিন্তু বাজার যাওয়ার সময়, পাঠার মাংস, পানতুয়ার সাথে 50 gm পোস্ত আনতে ভুলে যাই, তেমনি, পথের গ্লানি, আর আমার পাহাড় ও বরফ প্রিয়তার মধ্যে, ওই পোস্ত, sorry, "কালাপাহাড়" ও ভুলে গিয়েছিলাম। সুভাষগ্রাম এ সুভাষচন্দ্র বসুর পৈতৃক বাড়ির কাছেই আমার বাড়ি। একই পাড়াতে আমার থেকে জুনিয়র একটি মেয়ে থাকে। তার সবে মাত্র বিয়ে হয়েছে। ঘটনা চক্রে, তার সাথে, গুরুদংমার লেক এ দেখা। আমার সাথে তার কলেজ সূত্রে আলাপ, কিন্তু এক পাড়ার। আমার নির্দয় প্রশ্ন, "বোন, তুমি এখানে?" বেচারির, ওই ঠান্ডায়, গ্লাভস খোলা হাতের থেকেও বেশি লাল হয়ে যাওয়া মুখে বলল, "হ্যাঁ দাদা, হনিমুন এ এসেছি"। আমার আবার সেই "নির্দয় প্রশ্ন", দুজন এসেছো, না আর কেউ? অবাক করে দিয়ে, নিজের মা, আর বোন কেও নিয়ে এসে দেখিয়ে গেল। আর খুব লজ্জিত হয়ে বলছিল, আসলে, মায়ের বয়স হয়েছে, বোন ও আসতে চাইল.... আমি বললাম, ধুস, এতে এত কিন্তু কিন্তুর কিছু নেই, "ওরম হয়, সবার ক্ষেত্রে". ছাড়ো, লেক তো ঘোরা হল, এবার কি লাচেন/লাচুং? বলল, না। এবার কালাপাহাড়...... আমার তো শোনার পরই, মাথার ভিতর আইনস্টাইন, নিউটন অঙ্ক/ফিজিক্স, ইত্যাদি ঘুরতে লেগে গেছে। এই সেই কালাপাহাড়, যার কথা আমি "50 gm পোস্তর মতোই" ভুলে গিয়েছিলাম। সঙ্গে সঙ্গে প্রোগ্রামে chanege। ড্রাইভার কে বললাম, ভাই, কালাপাহাড় লে জাওগে? ও বলল, হ্যা, লেকিন 3500 রুপিয়া লাগেগা। আপ share মে, 10 আদমি লগ হ্যে। এখানে, আমার গিন্নির একটা দুর্বলতার কথা না বললেই নয়, উনি, আমার সাথে 12 বছর প্রেম করে, এবং 10 বছর ঘর করে নাকি এটাই বুঝেছেন, আমার burgaining এর quality এর কাছে, আমার অন্য এর quality নাকি "তুচ্ছ"। অগত্যা.... বাকি গাড়ির share মেম্বার্স দের সেই অর্থে চিনিনা। একটি ফ্যামিলি, বর্ধমানের, দুই ছেলে, স্বামী স্ত্রী, খুব familiar, helpful। বাকি একটি couple, কলেজে tracher এবং স্ত্রী নার্স, খুব মিশুকে, ও ভদ্র। তবে, ওনাদের মতো "ভদ্র" ফ্যামিলি, share tour এ পাবো, ভাবিনি। infact আমার 4 & 8 বছরের বাচ্ছাদের innocent behavior ওনাদের বা ওনাদের বাচ্ছাদের ব্যবহারের কাছে, "নিতান্ত অভদ্র" বলেই মনে হচ্ছিল। বরফ দেখলে আমার মত হয়ত "পাগল" হয়ে গিয়েছিল। actually ফ্রিজের বরফ cube, আর পাহাড়ের গায়ে হাত দিয়ে তোলা বরফ তো আর এক নয়, পাগলামি quite natural. যাই হোক, ওনাদের বললাম, ড্রাইভার 3500 টাকা চাইছে, আপনারা কি বলেন? ওনারাও লাচেন, লাচুং এ আমার/আমাদের সাথে থেকেছেন, জানেন, আমার burgaining এর ক্ষমতা। তাই এক কথায় বললেন, আপনি যা করবেন, সেটাই ফাইনাল। কিন্তু, গুরুদংমার এ ATM নেই। আর পকেট খালি। এটা মনে রাখবেন। অগত্যা burgaining। "পেম্বা" আমাদের গাড়ির ড্রাইভার, কিন্তু শুধু ড্রাইভার নয়, "লাচেন"এ আমাদের "প্রাণ বাঁচানেওলা" (গুরুদঙ্গমার পর্বে বলেছি)। পেম্বার মাথা, অনেকবার white wash করে, 1500 এ রাজি। সারা রাস্তা একটাই কথা বলে গিয়েছে, (যখন আমরা হাসাহাসি করছিলাম) সাড়ে 3 কা জায়গা 1.5 মে দ্বিখনে পর, ইতনাই হাসি আয়েগা। আগ্রহীদের জন্য একটি ভিডিও লিঙ্ক দিলাম। Post By:- Santanu Basu
|
Best Washing MachineCategories
All
Archives
November 2021
Best Autoclean Chimney |