Lampokhri, Aritar Lampokri or Aritar lake Kalimpong theke Renock hoye Nathula rd a pore. Prakritik Sobha du chokh bhore dekhar moto. Okhane besh kichu resort achey thakar jonno. Reshikhola thekeo ghure asa jai Lampokhri. Saw poribar ba bondhu bandhob der sathe 2 raat katabar adorsho jaiga. Okhan theke din a din a 7-8 hrs a Zuluk, Gnathang(old silk route) ghure asa jai jodio ektu hectic hobe. Post By:- Mitil Samanta Chaudhury
0 Comments
East Sikkim এর পরিচিত একটি গ্রাম আরিটার, ইতিহাসে উল্লেখিত রেশম পথ এর মধ্যেই পরে ছবির মত সাজানো এই ছোট গ্রাম। প্রাকৃতিক সুন্দরতায় ভরা, চারিদিক এ পাইন সমারহ ও সবুজ এর আবরন দিয়ে মোরা এই গ্রাম। এখান কার বিখ্যাত আরিটার লেক ভ্রমন পিপাসু দের কাছে খুবি পরিচিত। তবে আজ আলচনা করছি এই গ্রামের একটি সন্দর গুম্ফা নিয়ে, যেটা আরিটার গুম্ফা নামে পরিচিত। তিব্বতীয় ধর্মাবলব্মী এই পবিত্র গুম্ফায় দেখতে পাবেন অসাধারন কারিগরীর সব নকশা ও খোদাই করা সব কারুকাজ। Weekend এর ছুটিতে কাটিয়ে আসতেই পারেন এখানে দুটো দিনের জন্য। এই গুম্ফার কিছু সুন্দর মুহুরত শেয়ার করলাম আপনাদের সাথে।। Post By:- Avijit Maity
নামথাং দক্ষিণ_সিকিম সূর্যদয়ের_দেশ সিকিমের প্রবেশপথ রংপো থেকে মাত্র ২৫ কি.মি দূরে প্রায় ৪০৮৮ ফুট উচ্চতায় পাহাড়ের কোলে দক্ষিণ সিকিমের ছোট্ট গ্রাম নামথাং। স্থানীয়দের কথায় নাম কথার অর্থ 'সূর্য' আর থাং কথার অর্থ 'স্থান'। এখান থেকেই দিনের প্রথম সূর্যোদয় দেখা যায় তাই এটিকে সূর্যোদয়ের দেশও বলা হয়। অপূর্ব সুন্দর এই জায়গাটিতে এখনো সে ভাবে পা পড়েনি পর্যটকদের। এখানে নেপালী, ভুটিয়া ও লেপচা জন জাতির বাস। টেনগং হিলে ট্রেকিং রুট ছাড়াও রিভার রাফটিং,প্যারাগ্লাইডিং করার সুযোগ রয়েছে। যারা পাখি ভালোবাসেন তাদের কাছে এটি স্বর্গরাজ্য। এখানকার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ 'নাগি পোখরি' উৎসব। প্রতি বছর ৩১শে ডিসেম্বর থেকে ২রা জানুয়ারি তিন দিন ধরে অনুষ্ঠিত হয়। রাজধানী শহর গ্যাংটক থেকে দূরত্ব ৬৫ কি.মি। নামচি থেকে দূরত্ব ২৪ কি.মি। শিলিগুড়ি থেকে দূরত্ব মাত্র ৯৮ কি.মি। আপনি গাড়ি ভাড়া করে ( ২৫০০-৩০০০ টাকা ) অনায়াসে পৌঁছে যেতে পারেন। এখানে রয়েছে সাধ্যের মধ্যে হোমস্টে-র ব্যবস্থা ( জন প্রতি ১২০০ টাকা )। Post By:- D Sarkar
ভ্রমণ শুধু ভ্রমন ই নয়:- """"""""""""""""""""""""""""""""" এবারের ভ্রমণ সিকিম~~~~ পশ্চিম সিকিমের পেলিং শহর ভ্রমণ বিলাসী মানুষ দের অন্যতম আকর্ষণে র কেন্দ্রবিন্দু। সমুদ্র তলথেকে প্রায় ৭০০০ ফুট উচ্চতায় এই শহরের অবস্হান। ছবির মত সুন্দর শহর এই পেলিং। ভ্রমনার্থীরা মূলত দুটি জায়গা, ১ -আপার পেলিং ,২-লোয়ার পেলিং এ বিভিন্ন হোটেলে থাকেন,সিজিনে হোটেল আগে থেকে বুকিং করে রাখলে ই ভালো। আমার ভ্রমন জানুয়ারি মাসে,মানে প্রচন্ড ঠান্ডার মধ্যেই,যখন ভ্রমণ বিলাসী মানুষ দের আনাগোনা অনেক কম। পেলিং এর দুটি উল্লেখ যোগ্য জায়গা আজকে আমার লেখায় অন্তর্ভুক্ত করলাম। **১~খেচিপেরি লেক:-চারিধার "খেচোড পালড্রি হিল " নামে পাহাড় ঘেরা এক অদ্ভুত সুন্দর জলাশয়। খেচিপের গ্রামের নাম অনুসারে আমরা একে চিনি ঐ নামে।স্হানীয় ভাষায় এর নাম "শো-জো-শো"। বিস্তৃতি ১২কি.মি, গভীরতা গড়ে ২৪ফুট,প্রায় ৩লক্ষ কিউসেক জল ধারণ করে। চারধারে বনাঞ্চলের ঘেরাটোপে স্হির জলাশয়।এত যখন গাছ গাছালি তখন তার ডাল থেকে পাতাও নিশ্চয়ই ঝোরে পরে,এবং তা নিশ্চয় ঐ জলাশয়ের মধ্যে ই পরে, কিন্তু আপনি তা দেখতে পাবেন না। টলটলে জলে একটা পাতাও দেখতে পেলাম না। স্হানীয় ভাবে বলা হয় জলে পরা পাতা প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই পাখিরা তুলে নেয়। খেচিপেরি লেক ও তার সংলগ্ন এলাকাটি "ভ্যালি অফ রাইস"নামেও পরিচিত। পেলিং শহর থেকে ৩৪কিলোমিটার দূরে খেচিপেরি লেক এক পুন্য ভূমি।মাঘী পূর্ণীমায়(মার্চ-এপ্রিল)বহু ধর্মপ্রাণ মানুষের আগমন(নেপাল,ভূটান,আমাদের দেশ)হয় এই খেচিপেরি লেকে। ধর্ম প্রান মানুষের বিশ্বাস ~"লর্ড শিবা এই লেকের গভীরে অবস্হান করে"।তাই এ হচ্ছে"ইচ্ছে পুরনের লেক"। """""""" ***সিংসোর ব্রীজ~ এশিয়ার মধ্যে দ্বিতীয় উচ্চতম "সাসপেনশন" ব্রীজ এই সিংসোর। প্রায়২০০ মিটার লম্বা ১০০ মিটার উচ্চতার এই ব্রীজের একধারে ডেনটাম অন্য ধারে উত্তর গ্রাম।মাঝে গভীর খাদের মধ্যে দিয়ে বলে চলেছে সিংসোর নদী বা খাল। দুধারে র পাহাড়ের গা থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় আছে এই অসাধারণ কারিগরী বিদ্যার নির্দশন।পেলিং শহর থেকে দুরত্ব মাত্র ৫কিলোমিটার। যখন আপনি এই সেতুর মাঝে,তখন অনন্য সাধারণ এক অনুভূতি আপনাকে আচ্ছন্ন করবেই করবে। দুধারে ঘন সবূজ বনানী,তার মাঝে পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে জমা মেঘের দেখা পেলে তো কথাই নেই, মধ্যে গভীর খাদের মধ্যে দিয়ে খরস্রোতা নদী,তার কলতান ,সব মিলিয়ে আপনাকে অন্য এক জগতে নিয়ে যাবে। আর তার সাথে যদি যুক্ত হয় গতিশীল বাতাস তাহলে তো আহাঃ! আপনি বুঝতে পারবেন আপনি দুলছেন "তালে তালে"ব্রীজের সঙ্গে, আর সঙ্গতে বাতাস ও নদী।এক নৈসর্গিক অনুভূতি। """""""''''"'"""""""""" Post By:- Chandan Dutta Roy
জুলুক দূরত্ব-এন জে পি থেকে প্রায় 6 ঘন্টা ঋষিখোলা থেকে প্রায় এক ঘন্টা কিন্তু রংলীতে পারমিট করাতে হয় বলে ওখানে দু তিন ঘন্টা সময় বেশি লাগে থাকার জায়গা-স্কাই হাই রিসর্ট ঘোরার জায়গা-নাথাং ভ্যালী,বাবা মন্দির,কুপুক লেক Post By:- Sudipta Nandy Mondal
রেশম পথের রেশমি বহেন .. আমরা ৮ জনের টীম, ১৭ থেকে ৭০, কিশোর থেকে প্রবীণ, ঠিক করলাম এবার পুজোয় সিল্ক রুট যাবো সালটা 2015 . ৮ জন থাকলে গাড়িতে কোনো অসুবিধা হয় না. দার্জিলিং মেলে njp পৌঁছে সোজা লিনথাম রওনা হলাম হোটেল থেকে টিটো বাবু একটা bolero গাড়ি পাঠিয়ে ছিল . সিল্করুট যেতে গেলে লোকাল ট্যুর অপেরাটারদের সাথেই যাওয়া উচিত কারণ কিছু কিছু জায়গাতে হোটেল নেই , হোম stay তেই থাকতে হয় তাই কলকাতার লালবাজার স্ট্রিটের উপর প্রচুর ট্যুর অপারেটরদের মধ্যেথেকে কোনো নির্ভরযোগ্য সংস্থাকে বেছে নিতে হয়. আমরাও তাই করেছিলাম এবং টিটো বাবু ছিল সেই সংস্থার দায়িত্ব প্রাপ্ত লোক ও একটা হোটেলের ও মালিক. খুব ভালো মানুষ ও টুরিস্ট দের চাহিদা বোঝে. ৬ ঘন্টায় ১৩৮ কি মি জার্নি করে দুপুরের দিকে লিনথাম হোটেলে পৌছালাম . দুপুরে ভালোই বাঙালি খাবার খেয়ে কাছেই একটা পাহাড়ি ঝর্ণা হেটে দেখতে গেলাম . লিনথাম সিকিম রাজ্যে পরে, কথিত আছে বহু আগে যখন চায়না থেকে ভারতে সিল্ক সুতো এই পথেই খচ্চরের পিঠে করে আসতো আর এই লিনথাম ছিল ওদের রেস্ট এর জায়গা. লিনথাম দুদিন থাকতে হয় কারণ এইখানে রঙ্গোলি অফিস থেকে সিল্করুটের গাড়ির ও যাত্রীদের যাবার পারমিট নিতে হয়, তাই id কার্ড অবশ্যই সাথে রাখতে হয় . আরিতাল বা আরিতার লেক এখlন থেকেই যেতে হয় পথে দেখা যাবে দূরের বরফে মোড়া পাহাড়. আরিতাল লেক খুব সুন্দর জায়গা. সকালে বেরিয়ে দূপুরের মধ্যে ফিরে আসা যায়. এখানে অক্টোবর মাসে ঠান্ডা ভালোই পরে. পরের দিন সকালে ব্রেকফাস্ট সেরে বেরিয়ে পড়লাম . আমাদের সারথী R R মানে রতন রাই ভীষণ মজার সারাক্ষন হাসে ও হাসায়. লিনথাম থেকে জুলুক ৬৪ কি মি , সময় লাগলো তিন ঘন্টা.জুলুক ১১০০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এক পাহাড়ি গ্রাম বা শহর বলা যায় . সাধারণ মানুষের থেকে ভারতীয় সৈন্য বেশি বসবাস করে কারণ এটা চায়না বর্ডার এর কাছে সাধারণ জনসংখ্যা বড়জোর ১০০০ হবে. জুলুক যাবার পথে আমার ঈশ্বর দর্শন হয়ে ছিল , সেই ঘটনাটাই ছোট্ট করে বলছি . জুলুকের আগে কেউখোলা ওয়াটার ফলস বলে একটা ছোট্ট হল্ট আছে. এতটাই সুন্দর এই কেউখোলা ফলস যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না , অনেক উঁচু থেকে বিশাল জলধারা আছড়ে পুড়ছে নিচের বড় বড় বোল্ডারের ওপর তার পর তীব্র গতিতে একটা ছোট লোহার ব্রিজের তলা দিয়ে বয়ে যাচ্ছে কিছুটা দূরে গিয়ে পাহাড়ে বাঁকে হারিয়ে গেছে এই নদী এখানকার রূপে মুগ্ধ হয়ে আমি একটু দূরেই নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলাম আর পাহাড়ের এই ঝর্ণাটাকে দেখে সবাই যখন আনন্দ ধারায় ভেসে চলেছে, তখনি আমি নিজেকে প্রশ্ন করলাম " যদি চোখের জল কে বলা হয় অশ্রুজল, পাঁজরের বেদনার দীর্ঘশ্বাসটার নাম কান্না l তবে কেন মেঘের কান্নাকে বলি বৃষ্টিজল, তবে কেন পাহাড়ের কান্নাটার নাম হয় ঝর্ণা, ?? চারি ধlরে জলকণা থেকে রামধনু উঠে আছে. সবাই যার যার অনুভূতি নিয়ে যখন মেতে আছে তখন হঠাৎ চোখে পড়লো আমার ব্রাম্হনি একটা পাথরের উপর দাঁড়িয়ে ওই পাহাড়ি ঝর্ণার ছবি আরও ক্লোসে তোলার চেষ্টা করছে , আমি চোখের সামনেই দূরথেকে দেখলাম ব্রাম্হনি স্পোর্টস সু টা স্কিট করে ওই প্রায় দশ ফুট ওপর থেকে নিচে পড়ছে আর তখন নিচের পাথরে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ছেলে কোনো ভাবে ব্রাহ্মণী কে ধরে ফেললো কিন্তু ছেড়েও দিলো , নিচে বরফ ঠান্ডা জলের তোর কিন্তু ও একটা পাথরের পকেটের মধ্যে পরাতে ভেসে যাবার বিপদ থেকে রক্ষা পেলো l যা পরেছিলো সব কিছু ভিজে চারগুন ওজন হয়ে গেছে. সবাই মিলে ওনাকে তুললাম এবং ট্যুরটা যে এখানেই ইতি টানতে হবে তা ভেবেছিলাম কিন্তু কি আশ্চর্য ওনার কিচ্ছু হয়নি কোনো জায়গা ফাটেনি কাটেনি ভাঙেনি, শুধু ভিজে গেছে সারা শরীর. যিনি ব্রাম্হনি কে বাঁচালেন তাকে সবাই মিলে অনেক খুজলাম এমিনকী ততক্ষনে কোনো গাড়িও ওই জায়গাটা ছেড়ে যায় নি তবুও তাকে আর দেখা গেলোনা.আমার কাছে ওই মহান ব্যক্তি টিকে পাওয়া খুবই জরুরি ছিল কারণ যার জন্যে আমার ব্রাহ্মণী একটা বড় বিপদ থেকে বেঁচে গেলো তাকেতো একটা ধন্যবাদ জানানো উচিত. কিন্তু না সে নেই. কে ছিল উনি? আজও প্রশ্নটার উত্তর খুঁজি . ১২ তা নাগাদ জুলুক পৌঁছে রেশমি দিদির হোমস্টে তে সব লাগেজ রেখে আমরা সেই বরফের রাজ্যে রওনা দিলাম. এদিকে ব্রাম্হনীর ড্রেস পালটিয়ে নিলেও কিছু ভেজা ড্রেস তখন পরতে হয়ে ছিল. দুই কিলোমিটার যাবার পরে সেই ছবিতে দেখা জিগজ্যাগ রাস্তা বা ভুলবুলাইয়া শুরু হলো কি অপূর্ব এই জার্নিটা 12000 ফুট উপর থেকে নিচের পাহাড়ের ঢেউ গুলো যেন কোনো শিল্পীর নিপুন হাতে আঁকা ক্যাভাসের ছবি যার উপর আমি লিখে দিলাম "কুয়াশার চাদরে ঢেকে আছো, তুমি অপরূপা l তম রূপ ও লাবণ্যে দিগন্ত হয়েছে পাগলপনা" l ১৫ কি ১৬ কি মি চলার পরে পৌছালাম থামবি ভিউ পয়েন্ট. এখান থেকে আমি দেখে ছিলাম মহাদেবের জটা, খুঁজে ছিলাম এই পাহাড়ি পথের ৯২ টা বাঁক l সেখানে দু একটা অস্থায়ী দোকান ছিল,তাদের হাতের কফি ও গরম মোমও খাওয়া হলো. থামবি পয়েন্ট এ খুব হাওয়া ও ভীষণ ঠান্ডা , ওপর থেকে সেই জিগ জাগ রাস্তাটা ভালো দেখা যায়, কিছুক্ষনের মধ্যে বরফ পড়া শুরু হলো . গত দুদিন এখানকার ওয়েদার খুব খারাপ ছিল.বৃষ্টি হয়েছে আর পাহাড়ে এতো বরফ পড়েছে যে রাস্তা বন্ধ ছিল , দুদিন পর আজই প্রথম মাত্র ২২ টা গাড়ি রংলি থেকে সিল্ক রুটের পার্মিট পেয়েছে. এখনো ওপরে নাকি ১৪ টা গাড়ি বরফে আটকে আছে. মিলিটারি গাড়ি একটা উপর থেকে নাম ছিল এবং সব ড্রাইভারদের নির্দেশ দিলো আর যেন আগে কেউ না যায়. মন খারাপ হয়ে গেলো কিন্তু যাদের সাথে রতন রাই দেড় মতো মানুষ থাকে তাদের আবার কিসের সমস্যা . সব গাড়ি আস্তে আস্তে ফিরতে লাগলো শুধু আমরা আর আরেকটা গাড়ি তখন ও দাঁড়িয়ে , ওপরে তক্ষণও কালো মেঘে ঢেকে আছে. ভয় যে লাগছিলো না তা নয় তবে কেউ কাউকে লজ্জায় হোক বা ভীতু আখ্যা জোটার ভয়ে হোক মুখে কিছু বলতে পারলাম না . টিমে ১৭ থেকে ৭০ আছি তাই ছোটদের কাছে লজ্জা আর বড়দের কাছে ভরসা দুটোই আমাদের এগিয়ে দিলো কোনো এক ভয়ঙ্কর সুন্দরের দিকে. রতন ভাই শর্ত দিলো যতদূর যাওয়া যাবে ও চালাবে এবং ওকে যেন কেউ অনুরোধ না করে . আস্থে আস্থে এগোচ্ছি আর তত মেঘের মধ্যে ঢুকে যাচ্ছি. চারি দিকে বরফ আর বরফ l গাড়ির চাকা হড়কে যাচ্ছে রাস্তার পlশে চমরী গাই বসে ও দাঁড়িয়ে আছে . এতো গায়ে লোম যে ঠান্ডা শরীরে প্রবেশ করতে পারেনা . এতক্ষন R R চুপ ছিল আমরা সব দুর্যোগ আতঙ্ক কাটিয়ে স্বাভাবিক হচ্ছিলাম , ও বললো খুব বেশি যেতে পারবোনা আর পারলো ও না ১৩ কি মি রাস্তা এক ঘন্টা লাগলো . আমরা গাড়ি থেকে নামলাম যেখানে সেখান থেকে বহু নিচে নাথাং ভ্যালি দেখা যাচ্ছিলো কখন জানে ১৩৫০০ ফুট নাথাং পেরিয়ে গেছিলাম তখন হয়তো ১৪০০০ ফুটের ওপরেই ছিলাম. সামনের রাস্তায় কম করে দেড় দু ফুট বরফ, গাড়ি কোনো ভাবেই যাবেনা. কি আর বলবো চারধার শুধু সাদা আর সাদা. নেই কোনো গাছ, কোনো ঘরবাড়ি l পাহাড়ের অস্তিত্ব সবই সাদা. "জনম আমার সাদা চাদরে, মৃত্যুও আমার সাদা চাদরে সাদা ফুলে ঢাকা" হাটতে পা পিছ্লাচ্ছিলো . শুধু আমরা নয়জন আর ওই থামবি পয়েন্টে দেখা সেই গাড়ি সবাই বাঙালি. ধন্য বাঙালি. বেশিক্ষন থাকতে পারলামনা একটাই প্লাষ্টিক দিয়ে ঘেরা অস্থায়ী কফি ও মোমোর দোকান , অবশ্যই আরেক রাউন্ড হয়ে ছিল. আর যায় কোথায়, সেই যমদূত রুপী মিলিটারির গাড়ি ওরা আমাদের তখুনি গাড়িতে উঠিয়ে থামবি পয়েন্ট অবধি আমাদের গাড়ির পেছন পেছন এসে আমাদের ছেড়েদিয়ে গেলো আর আধ ঘন্টার মধ্যে জুলুক পৌঁছলাম . বাঙালির আর ভাত খাবার সাহস নেই কারণ হিমাঙ্ক তখন ৪ কি ৫ হবে, ছিলাম মাইনাসে তাই এটা তখন আমাদের কাছে উষ্ণতা. খাবার খেয়ে বাড়ির সামনে একটা শিব মন্দির আছে দেখতে গেলাম , এ ছাড়া জুলুকে আর কিছুই নেই. সন্ধ্যা থেকে আমাদের তিনটে ঘরের সামনে টানা বারান্দাতে বসে আমরা বাঁধাকপির পকোড়া আর চা কফি যত খুশি খেয়ে যাচ্ছি পাশের কিচেন থেকে রেশমি বহীন ও ওনার লোকজন সমানে আমাদের স্ন্যাক দিয়ে যাচ্ছিলো. জুলুকে বিদ্যুৎ একটা সমস্যা রাত ৯ টা অবধি বাতি ছিল তারপর সব অন্ধকার . হোমস্টে এর বারান্দায় বসে আড্ডা চলছিল . আকাশ তখন মেঘ মুক্ত. তাপ মাত্রা ২ কি ৩ হবে. বাঙালি আড্ডা ছাড়া বাঁচে না. তাই ওই ব্যালকনিতে তখন ৮ হিন্দুস্থানি গল্পে মশগুল. এমন সময় নিচে রাস্তায় একটা হট্টগোলের আওয়াজ পেলাম , আমাদের হোমস্টে টা একদম মোড়ের মাথায় ছিল , একটু উপরে . আমাদের ছোটু মানে হোমস্টে এর কর্মচারী খবর আনলো যে নিচে একটা পরিবার কলকাতা থেকে এসেছিলো. ওনাদের মধ্যে একজনের বয়স ৭০ এর কাছ কাছি উনি অসুস্থ হওয়াতে সবাই গাড়ি খুঁজছে ওনাকে হাসপাতাল নিতে হবে . আমরা কজন নিচে গিয়ে ওনাদের পাশে দাঁড়ালাম, ভদ্রলোকের খুব শ্বাস কষ্ট হচ্ছিলো. আমি আমাদের ড্রাইভার কে ফোন করতে যাবো এমন সময় দেখলাম কয়েকজন ভারতীয় সেনা একটা জীপ্ করে ওখানে এলো এবং সব শুনে ওনারা ওই ভদ্রলোক ও আরও দুজন কে নিয়ে নিচে নেমেগেলো হয় পাদামচাইন না হয় কালিংপংয়ের দিকে . পরে খবর নিয়েছিলাম ভদ্রলোক ভালো আছেন. এবার এলো আমার পালা , রাত তখন ১২ টা ১ টা হবে আমি বাথরুম করে একটু জল ঘেটে ছিলাম ( বিদ্যুৎ না থাকতে গিজার নেই ) আর যাই কোথায় মাইনাস ডিগ্রি ঠান্ডা তখন আমার শরীরে থাবা বসিয়েছে l কি প্রচন্ড কাঁপুনি শুরুহলো যে চারটে কম্বল শরীরে inner warmer সোয়েটোর জ্যাকেট জড়িয়েও কাঁপুনি কমছিলোনা একটা সময় হাঁপিয়ে গিয়ে নিঃস্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছিলো , এমন সময় রেশমি বহেন উপস্থিত এক হাতে গ্লাস এ করে চিনি ছাড়া এক বিশেষ ধরণের চা আর এক হাতে হট ব্যাগ. আমায় জোর করে চা টা খাওয়ালো আর হট ব্যাগ টা পায়ের পাতায় চেপে ধরতে বললো. চা খাওয়ার পর চার পাঁচ তা গোটা গোল মরিচ মুখে না চিবিয়ে রাখতে বললো. ১০ মিনিটের মধ্যেই স্বাভাবিক হতে লাগলাম. আমাদের গ্রুপের তিন চারজন ৬০ উর্ধ ছিল তাই নাথlনভ্যালি তে বুকিং থাকা সত্ত্বেও আমরা রিস্ক নিইনি আর আমি এদের থেকে ছোট হয়ে এদের ভরসা হয়েও নিজেই কাত হলাম. খুব সকালে ওঠা অভ্যাস আমার তাই ঘুম ভেঙে বিছানায় না থেকে বারান্দায় গিয়ে বসলাম , শরীরে কটা জড়িয়ে ছিলাম জানিনা. হঠাৎ দেখলাম সেই রেশমি বাহিনী , হাতে দুটো বড় কাপে ব্ল্যাক কফি , এটারই প্রয়োজন ছিল . দুজনে ওই বারান্দায় বসে গল্প করছিলাম , ওর স্বামী সেনা বাহিনীতেই ছিল আসামে পোস্টিং ছিল , ফেরেনি শুধু কফিনটা এসেছিলো যাক সকালটা ভারী করবোনা. এদিকের পাহাড়টা অনেক দূরে ও অনেক নিচে তাই সূর্যকে দেখলাম নিচ থেকে যেন উঠছিলো. দূরের শিব মন্দিরে গান হচ্ছিলো. আর আমরা যেন বারান্দায় বসে সোনার জলে স্নান করছিলাম . সকালে লুচি আলুর দাম র কফি খেয়ে আমাদের বরাদ্দ প্যাকেজ খতম হলো. ৮০০ টাকা জন প্রতি দিন প্রতি মিটিয়ে সকলকে শুভেছা জানিয়ে গাড়িতে উঠলাম. এবার শুরু হলো আমার গত রাত্রের ঘটনা নিয়ে আমায় খোরাক করা. গাড়ি এগিয়ে চললো সেলেরিগাঁও এর দিকে. ডেকে তখন বাজছিলো "মুছে যাওয়া দিনগুলি আমায় যে পিছু ডাকে, স্মৃতি যেন আমার এ হৃদয়ে বেদনার রঙ্গে রঙ্গে ছবি আঁকে। Post By:- Parthamoy Chatterjee
মেঘের মধ্য দিয়ে আমরা জুলুকে পৌঁছলাম।চারদিকে ঘনমেঘ,পাহাড়ের চূড়াগুলো মেঘে এমন আবৃত যে কিছুই দেখা যায় না। জুলুকে আমাদের থাকার ব্যবস্থা গোপাল প্রধানের হোমস্টে 'দিলমায়া'। হোমস্টে তে আমাদের যে দুটো ঘর দেওয়া হোল সেগুলো পুরনো,অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। পাশে দেখলাম নতুন বিল্ডিং তৈরী হচ্ছে,দোতলা। গোপাল প্রধান জানালেন অক্টোবরে পুরোপুরি তৈরী হয়ে যাবে,যদিও নীচের তলায় লোকজন থাকা শুরু হয়ে গেছে। গরমজলে স্নান সারলাম, গীজার থাকায় গরম জল পেতে অসুবিধা হয় নি। সবাই মিলে এলাম খাবার ঘরে, এদের রান্না বেশ সুস্বাদু, বিশেষ করে রুটিটা দারুন বানাচ্ছিলেন। খেতে খেতেই আকাশভাঙা বৃষ্টি শুরু হোল,চারদিক সাদা হয়ে বৃষ্টি পড়ে চলেছে।খাওয়া হয়ে গেলেও ঘরে যেতে পারছিলাম না। খাবার ঘরে বসে বসেই জানলা দিয়ে বৃষ্টি দেখতে লাগলাম।বেশ খানিক পর বৃষ্টি থামতে দেখলাম চারদিক বেশ পরিস্কার হয়ে গেছে। ঠিক করলাম হাঁটতে বেড়োবো। আমাদের হোমস্টে থেকে দেখা যাচ্ছিল ওপরে একটা শিব মন্দির, সেখানে যাবো ঠিক করলাম। বেড়িয়ে পড়লাম,পাহাড়ের গায়ে সরু পাথরকাটা রাস্তা দিয়ে ওপরে উঠতে লাগলাম। বেশ খানিক চলার পর পৌঁছলাম 'শিবালয়া বাবামন্দির'।কিছুসময় বসে থাকলাম সেখানে,খুব ভালো লাগছিল। ওপর থেকে বৃষ্টিস্নাত জুলুক দেখছিলাম। নামার সময় একটা ছোট দোকানের গায়ে লেখা দেখি Coffee Shop। তার সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই একজন ভদ্রলোক বেড়িয়ে এসে আমাদের বিশেষ আপ্যায়ন করে ভেতরে নিয়ে গেলেন। ভেতরে ছোট ঘরটিতে এককোনে তিনচারজনের বসার ব্যবস্থা, একটা টেবিল এবং অন্যদিকে কফি বানানোর ব্যবস্থা,লজেন্স ইত্যাদি বিক্রির ব্যবস্থা। বেশ ঠান্ডা এখানে,আমরা কফির অর্ডার দিলাম। দেখলাম আমূল তাজা আর নেসকাফে দিয়ে কফি বানালেন। তারপর সুন্দর কফিমাগে আমাদের পরিবেশন করলেন। কফিমাগে চুমুক দিতেই মনে হোল অতুনীয় স্বাদ, যা কলকাতার অনেক নামী কফিশপের কফিতে পাই নি। ভদ্রলোকের সাথে গল্প করতে করতে কফি খাচ্ছিলাম..বললেন এখানেই বসবাস..একমাত্র ছেলে ইন্জিনিয়ার, চাকরী করে। বাবা হরভজন সিং এর ভক্ত উনি,জানালেন বাবা মন্দিরে গিয়ে ছেলের জন্য প্রার্থনা করেছিলেন,তাই ছেলে ইন্জিনিয়র হয়ে চাকরী করছে। ফেরার সময় দেখলাম একটা মাঠে কয়েকজন মহিলা শাকজাতীয় কিছু তুলছেন। হোমস্টে তে ফিরে চা-পকোড়া খেলাম। ধীরে ধীরে জুলুকের বুকে অন্ধকার নেমে এলো। সবাই মিলে ভূতের গল্প করে 8-30 নাগাদ রাতের খাবার খেয়ে ঘুমোতে গেলাম। পরদিন সকালবেলা দেখলাম ঝকঝক করছে চারদিক,মেঘের চিহ্ন নেই কোথাও, নাম না জানা পাখীরা ডাকছে..দারুন সুন্দর একটা সকাল! সামনেটা দেখলাম ধাপে ধাপে নীচে নেমে গেছে,নীচে গ্রাম রয়েছে। একদিকে জুম চাষের ব্যবস্খা,আর একদিকে ট্রাউট মাছ চাষের ব্যবস্থা। গোপাল প্রধান জানালেন উনি জম্মু কাশ্মীর থেকে ট্রাউট মাছ চাষের ট্রেনিং নিয়ে এসেছেন। বললেন ট্রাউট মাছের জন্য রানিং ওয়াটার প্রয়োজন এবং সেইমত ব্যবস্থা করেছেন। আমরা প্রাতঃরাশ সারতে সারতে দেখলাম মেঘেরা আবার ভীড় জমাতে শুরু করেছে। খাবার ঘরে প্রধান পরিবারের একজন মহিলা উলের কিছু জিনিষ এবং কিছু প্রসাধন সামগ্রী নিয়ে এনে দেখালো,যদি আমরা কিছু কিনি..আমি দু একটা জিনিষ কিনলাম।এরপর আমাদের বেড়িয়ে পড়ার পালা,আবার মেঘ জমতে শুরু করেছে। আমরা জুলুককে বিদায় জানিয়ে মেঘের মধ্যে বেড়িয়ে পড়লাম। Post By:- Sutapa Dutta
আমাদের আকাশ্চুম্বী অহংকার।। কাঞ্চনজঙ্ঘা।। জানুয়ারির ২৪ তারিখ২০১৮ সাল। প্রচন্ড ঠান্ডায় হাত পা সব অবশ হয়ে আসছে। দস্তানা পড়েও আঙুলে সাড় পাচ্ছিনা। একে প্রবল ঠান্ডা, তাপমাত্রা শূন্যের কাছাকাছি বা তার নীচে, তার সাথে যোগ্য সঙ্গত করে যাচ্ছে হাঁড়কাপানো ঠান্ডা বাতাস। পুরো শরীরটাই সাধ্যমত গরম জামাকাপড়ে ঢাকা। শুধু চোখ দুটোই যা বাইরে। নাকটা মাঝেমাঝে মাঙ্কিক্যাপের নীচের অংশ সরিয়ে বার করছি। কিছুক্ষণ পরেই মনে হচ্ছে আমার নাকটা আর নেই। আশেপাশে প্রচুর লোক জড়ো হয়েছে। এরমধ্যে স্থানীয় নেপালি মহিলারা কফির ফ্লাস্ক নিয়ে ঘোরাঘুরি করছেন ভীড়ের মধ্যে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গীতে। এত মানুষ এখানে এসেছেন, অথচ শব্দদূষণের মাত্রা নেই বললেই চলে। এটা যদি জুলুক না হয়ে অন্য কোথাও হত তাহলেই বোঝা যেত পার্থক্যটা। যাইহোক কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রাকৃতিক বিশাল পর্দায় শুরু হয়ে গেল বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় সবচেয়ে সুপারহিট ছবি, যে ছবিতে নায়ক ছাড়া আর কেউ নেই। হটাত আমাদের গাড়ি চালক তথা গাইড তেঞ্জিং লাম্বা কাকু গাড়ি টিকে একটি জাগায় দার করিয়ে বলিলেন বায়রের দৃশ্য টি দেখার জন্য জা দেদেখিলাম হহয়ত জিবনে কোনদিন সেটি ভুলে জাওয়া সম্ভব নয় কবে যে এই ছবি রিলিজ করেছিল, কে জানে। মানে কে যে প্রথম আবিষ্কার করেছিল এই ছবিটা কে জানে! তারপর আজ পর্যন্ত এছবি দেখার জন্য দর্শকের অভাব হয়না। আর হবেও না কোনোদিন। ছবি চলাকালীন শুধু মুগ্ধ বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকা আর সমস্ত ইন্দ্রিয় দিয়ে তাকে উপভোগ করা ছাড়া দর্শকদের আর কিছুই করার থাকে না। অতি সাধারণ ক্যামেরায় তোলা। আর আমিও ফটোগ্রাফার নই। তেমন কোনো বৈশিষ্ট্যও নেই। শুধু বন্ধুদের সাথে অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়া।আশা রাখছি সকলের ভালো লাগিবে........ বানান ভুল হইলে ক্ষমা করিয়া দিবেন Post By:- Ritam Dev Roy
'পাহাড়' - তিন অক্ষরের এই শব্দটার একটা অমোঘ আকর্ষণ নিশ্চই আছে | তাইতো বার বার করে ফিরে যেতে ইচ্ছা করে সেই পাহাড়ের কোলে, যেখানে বুক ভরা অক্সিজেন আর অনাবিল শান্তি ভুলিয়ে দেয় প্রাত্যহিক ক্লান্তিকর নাগরিক জীবনকে | চারমাস আগে টিকেট কেটে অপেক্ষা করে থাকি মেয়ের স্কুলের গরমের ছুটি পরার দিনটির জন্য | তা এবারে আমরা সিকিমের সিল্ক রুট কে আমাদের ভ্রমন সূচীর অন্তর্গত করেছিলাম | নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে দার্জিলিং মেল ঢুকতেই চাপা উত্তেজনায় মনটা ভরে উঠলো | স্টেশনের বাইরে গাড়ি তৈরিই ছিল | সেবক রোড ধরে গাড়ি ছুটে চলল | কিছুক্ষণ চলার পরেই একটা ঘোর ধরানো ঠান্ডা হাওয়ার ছোঁয়া ঘিরে ধরতে শুরু করলো আর সেই ঠান্ডা হাওয়ার ছোঁয়া গায়ে মেখেই পৌঁছে গেলাম আমাদের প্রথম দিনের গন্তব্য ঋষি-তে | ঋষিখোলা নদীর ধারে বসে আড্ডা মেরে আর নদীর অবিরাম বয়ে চলা দেখতে দেখতে দুদিন যে কখন ফুরিয়ে গেল টেরই পেলাম না | আমাদের পরের গন্তব্য ছিল Rongli বাজার হয়ে রোলেপ | এখানে ঝুলন্ত সেতু (hanging ব্রিজ)-র ওপর দাঁড়িয়ে নিচে বয়ে যাওয়া উচ্ছল Shokey Khola নদীর দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে সময় কেটে যাবে | চাইলে প্রায় 45 ফুট উঁচু বুদ্ধ জলপ্রপাত-এ শরীর ভিজিযেও নেওয়া যেতে পারে | তবে Rolep-এর প্রকৃত সৌন্দর্য উপভোগ করতে হলে এখানে অন্তত একটা রাত থাকতেই হবে | এরপরের গন্তব্য পদমচেন | পদমচেন জলুক-এর একটু নিচে | পাহাড়ের নিস্তব্ধতা আর প্রকৃতির মাঝে থাকতে চাইলে এখানেও অন্তত একটা রাত কাটাতেই হবে | এখান থেকে সূর্যাস্ত-এর শোভা এককথায় বলে বোঝানো মুশকিল | বাংলা ব্যাকরণ বই ঘাঁটতে হবে বিশেষণ প্রয়োগ করার জন্য |পদমচেন-এর পরে জলুক | জলুক ৯৪০০ ফুট উঁচু | এখানে কিন্তু খুব ঠান্ডা আর সেই ঠান্ডায় গরম কফি....সে এক অন্য অনুভূতি | জলুক-এ পাহাড়ের মাথায় একটি সুন্দর শিব মন্দির আছে | আর আছে মিলিটারি ছাউনি | এখানে একটি helipad-ও আছে কিন্তু সবই মিলিটারি তত্বাবধানে | সময় যেন এখানে থেমে থেমে চলে | এরপর আমরা ওল্ড সিল্ক রুটের zigzag পয়েন্ট, Gnathang ভ্যালি, ওল্ড বাবা মন্দির হয়ে কুপুপ পৌছলাম | zigzag পয়েন্ট থেকে অসংখ্য হেয়ার পিন বেন্ড-এর সিল্ক রুটের দৃশ্য এককথায় অসাধারণ | আর এখান থেকেই মেঘের অবগুন্ঠন সরিয়ে দেখা দিল সেই চেনা রুপোলি ঝিলিক ...... স্বর্ণ শিখর কাঞ্চনজঙ্ঘা | Ladakh of East India -- নাথাং ভ্যালির উচ্চতা ১৩৫০০ ফুট | বাতাসে অক্সিজেন কম বলে উচ্চতাজনিত কিছু অসুবিধা হতে পারে তাই কিছু সতর্কতা নেওয়া প্রয়োজন | নাথাং ভ্যালিতে একটা রাত কাটানোর ইচ্ছা সময়াভাবের জন্য বরফেই সমাধিস্ত করলাম | এখান থেকে যত ওপরের দিকে এগোচ্ছি, পথের দুপাশে স্বাগত জানানোর জন্য হাজির শুধু বরফ আর বরফ | এরপর ওল্ড বাবা মন্দির হয়ে আমরা পৌঁছলাম ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকা কুপুপ | ওপারেই চিন | কুপুপের উচ্চতা প্রায় ১৪০০০ ফুট | আর এখানেই আছে সেই বিখ্যাত প্রাকৃতিক হ্রদ --- মনে হয় যেন এক বিরাট হস্তী অবিকল শুঁড় মেলে শুয়ে রয়েছে | নামকরণটিও তাই হয়েছে elephant lake | ঠান্ডার কামড় এখানে বেশ ভালোরকমই টের পাওয়া যায় | কুপুপ থেকে, New Baba Mandir, Chhangu Lake হয়ে সোজা Gangtok চলে যাওয়া যায় | কিন্তু আমরা ফিরতি পথে কিছুক্ষণ বরফে লুটোপুটি করে ফিরলাম Lingtam | Lingtam-এ এক রাত কাটিয়ে চলে এলাম একটা সুন্দর পাহাড়ি গ্রাম Sillery Gaon | আমাদের উপস্থিতি কে বিন্দুমাত্র গুরুত্ব না দিয়ে মেঘ, বৃষ্টি আর রোদ এখানে নিজেদের মধ্যে লুকোচুরি খেলেই চলেছে | মেঘমুক্ত Sillery Gaon থেকে ঝকঝকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার অভিজ্ঞতাই নাকি আলাদা | যদিও সেই অভিজ্ঞতার থেকে এবারের মত বঞ্চিত হয়েছি আমরা | Sillery Gaon তে দুদিন ছিলাম আমরা | Sillery Gaon-এর home stay-এর কমল তামাঙ্গের আতিথেয়তা আর মুখে জল এনে দেওয়া খাবার খেয়ে বেড়িয়ে এলাম সুন্দর সাজানো গোছানো ডেলো পাহাড়, রাম্ধুরা, জলসা বাংলো | পরেরদিন একটা মন খারাপ করা কুয়াশা বুকে নিয়ে তিস্তাকে আবার ফিরে আসার আশ্বাস দিয়ে ফিরে এলাম নিউ জলপাইগুড়িতে | ওখান থেকে ফের সেই দার্জিলিং মেলে ফিরে এলাম আমার ধুলোমাখা কিন্তু প্রাণের শহর কলকাতায় | Post By:- Soumen Sanyal
|
Best Washing MachineCategories
All
Archives
November 2021
Best Autoclean Chimney |