রিজার্ভ বাজার,শুভলং,লংগদু,দূপছড়ি,মারিশ্যা,বাঘাইছড়ি, মাদরাসা পাড়া,উগলছড়ি ||রাঙ্গামাটি - Faisal Mahmud12/10/2020
২ য় দিন
রিজার্ভ বাজার,শুভলং,লংগদু,দূপছড়ি,মারিশ্যা,বাঘাইছড়ি, মাদরাসা পাড়া,উগলছড়ি ||রাঙ্গামাটি|| তারিখ-২ ডিসেম্বর ২০২০ আমি পরবর্তী দিন কি করবো সেটা নিয়ে খুবই অস্হির থাকি, কি??কখন??কিভাবে?? এ প্রশ্ন গুলো তখন মাথায় ঘুরতে থাকে। রাঙ্গামাটি পাহাড়ে সমতলে সুনসান নিরব একটা শহর, রাত গভীর হওয়ার সাথে সবকিছু একদম নিরব নিস্তব্ধ। রাঙ্গুনিয়া ঘুরে শরীর কিছুটা দূর্বল হয়ে গেছিলো রাঙ্গামাটি শহরে এক রাত ঘুমিয়ে সেটা ঠিক করে নিলাম, আমি সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই খুব এক্সাইটেড ছিলাম, উদ্ভূত একটা কিছু অপেক্ষা করছে আমার জন্য যেটা দেখার জন্য আমার মন বেকুল হয়ে আছে সেই রাত থেকে। সকাল ৬ টার কিছুক্ষণ পর হোটেল থেকে বের হয়ে সরাসরি রিজার্ভ বাজারের উদ্দেশ্য একটা সিএনজি নিলাম, হালকা শীত চারদিকে ঘন কুয়াশা কি এক মনোরম পরিবেশ আহা সে কি যে পরিবেশ। সিএনজি শহর ছেড়ে এগিয়ে যাচ্ছে রিজার্ভ বাজারের দিকে, রিজার্ভ বাজারের আগ মূহুর্তে রাস্তার দু পাশের পরিবেশ আপনাকে বিমোহিত করে ছাড়বে খুব সকালে। রিজার্ভ বাজার পৌছে গেলাম তখনও আমি বুঝতে পারি নাই কি অপেক্ষা করতেছে আমার জন্য, রিজার্ভ বাজার সকালের নাস্তা করে নিলাম তারপর সোজা চলে গেলাম লঞ্চ ঘাটে, লঞ্চ ঘাটে এসেই দেখি কাপ্তাই হ্রদে এক অংশে এই রিজার্ভ বাজার, হ্রদের পানির ছুয়ে দাড়িয়ে আছে শত শত দোকান, হোটেল আমি এসব দেখে মনটা খারাপ করে ফেললাম হায়রে এখানে রাতে বারান্দায় এসে চা খাওয়ার ফিলটা কি যে মিছ করলাম আহারে। যাইহোক একটা বুকভরা আর্তনাদ নিয়ে লঞ্চের টিকেট কেটে ফেললাম বাঘাইছড়ির, ওখানের ঘাটের নাম সবাই মারিশ্যা নামে চিনে। আমি সিদ্ধান্ত নিছিলাম বাঘাইছড়ি হয়ে সরাসরি সাজেক যাবো যেটা হবে নৌপথে সাজেক ভ্রমণ, লঞ্চ ছাড়লো সকাল ৭ঃ৩০ মিনিটে,লঞ্চে যাত্রির ৭০% ছিলো পাহাড়ী উপজাতি বাকিরা বাঙালি টুরিস্ট বলতে আমি একজনই ছিলাম যা মনে হলো। লঞ্চ যখন ছাড়লো তখন রোদ উঠে উঠে ভাব সামনে কোন মেঘ নাই সবকিছু পরিষ্কার হয়ে গেছে আমি একটু মনোবল হারিয়ে ফেললাম, কিন্তু লঞ্চ যখন পাহাড়ের কাছাকাছি যেতে ছিলো মেঘ এবং কুয়াশা দুটাই বাড়তে ছিলো, এই সুন্দর মনোরম পরিবেশ শুধু শীতের সময় পাওয়া যায় এছাড়া আর কখনও পাওয়া যায় নাহ। আমি বহুবার পাহাড়ে গেছি কিন্তু এরকম ফিল কখনো পাই নাই, নদী পথে পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ তার উপর শীতের সকাল। মনে মনে ভাবতেছিলাম একদিন অনেক টাকা হবে আমি পাহাড়ের চূড়ায় একটা জুম ঘর বানাবো সেখানে মাসে ২/১ বার এসে থাকবো আমি রং চা বানিয়ে খাবো এখানে বসে আমি বূহ্য রচনা করবো। যাইহোক এসব অসম্ভব কল্পনা করতে করতে পৌছে গেলাম শুভলং সেনাবাহিনী ক্যাম্পে, তখনও পাহাড় মেঘে আচ্ছন্ন কি এক উদ্ভূত পরিবেশ। শুভলং অতিক্রম করার পর আস্তে আস্তে পাহাড় সড়ে যাচ্ছিলো দূর থেকে বহুদূর, হ্রদের পরিধি বাড়তেছিলো নদী থেকে সাগরের মত, সূর্য়ের আলো ছড়িয়ে যাচ্ছিলো লঞ্চের আনাচে কানাচে তখন মনে হবে আপনি এখন টাঙ্গুয়ার অথবা নিকলী হাওরে আছেন , পাহাড়,হ্রদ, হাওর,স্হল সবকিছুর ফিল আমি একসাথে উপভোগ করতেছিলাম। ৩/৪ ঘন্টা এভাবে নিজের মনকে উপভোগ করার পর একটু বিশ্রামের খোজে চলে গেলাম, এভাবে করতে করতে প্রায় ৭ ঘন্টা পর লন্চ এসে পৌছালো মারিশ্যা ঘাটে। বসু ভাই আগে থেকেই তার এক বন্ধুকে ফোন দিয়ে বলে রাখছিলো আমি আসবো, সেই বন্ধুর নাম ইমন পরবর্তীতে সেও আমার বন্ধু হয়ে গেছিলো। ইমন ভাই আমাকে রিসিভ করে তার বাসায় নিয়ে গেলো আমি ফ্রেশ হয়ে তার বাসায় দুপুরের খাবার খেয়ে নিলাম তারপর কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে তার সাথে হাটতে বের হলাম। আরেকটা বিষয় জানিয়ে রাখি আমি যে জায়গাটায় ছিলাম এটার নাম হলো মাদরাসা ব্লক এ জায়গা থেকে মাত্র ২০/২৫ মিনিটের পথ পের হলেই জেএসএস,জেএসএস সংস্কার,ইউপিডিএফ,গনতান্ত্রিক এর ঘাটি প্রায় সময়ই এখানে দুপক্ষের গোলাগুলি হয়। যাইহোক এসব পাহাড়ী ইতিহাস নিয়ে আরেকদিন বলবো। ইমন ভাইয়ের সাথে হাটা শুরু করলাম ভাই পারবেন তো হাটতে এত পথ??আমি বললাম আমার অভ্যাস আছে সমস্যা নাই। আমরা হাটতে হাটতে লাম্বাছড়া বাজারে গেলাম যাওয়ার পথে আরো ৩/৪ টা চাকমা পাড়া অতিক্রম করলাম। পাহাড়িদের জীবনযাত্রা সম্পূর্ণ আলাদা তাদের মধ্যে এখনো সামাজিক ঐক্যের একটা বন্ড আছে যেটা এখন অন্য সমাজ ব্যবস্হায় পাওয়া যায় নাহ। পাহাড়িরা সাধারণ চুপচাপ স্বভাবের তারা অতিরিক্ত কথা বলে নাহ। আমরা হাটতে হাটতে ইমন ভাইয়ের পরিচিত কিছু চাকমা বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিলাম, তারপর দার্জিলিং পাড়া নামাক একটা জায়গায় আসলাম তখন মাগরিবের সময় হয়ে গেছে, এ জায়গায়টা দু পাহাড়ের সমতলে অবস্হিত একটা খোলা জায়গা, বৃষ্টির সিজনে চারিপাশ পানিতে থৈথৈ করে। দার্জিলিং পাড়া হয়ে আমরা সরাসরি চলে আসলাম ইমন ভাইয়ের বাসায় ওখান থেকে আমি ব্যাগ নিয়ে বের হয়ে পরলাম এবার আমার রাত্রি যাপনের পালা, বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদের পাশেই অবস্হিত পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের রেস্ট হাউজ, ইমন ভাই আামর জন্য আগে থেকেই ওটার ১ টা বিশাল রুম রেডি করে রাখলেন, আমি ওখানে গেলাম গিয়ে প্রথমে গোসল করে নিলাম তখন রাত ৯ টা বাজে গোসল করে ইমন ভাইরে কল দিলাম ওনি আসলো তারপর জসিম ভাই নামে আরেকজন আসলো তারে নিয়ে রাতে আবার বের হলাম পাহাড় দর্শনের। রাত বাজে ১১ টা আমরা তখন ফিরলাম রেস্ট হাউজে, তারাও আমার সাথে আসলো রেস্ট হাউজে, গল্প করতে করতে সময় কাটিয়ে দিলাম তারপর ২ টার কিছুক্ষণ পর সবাই ঘুমিয়ে পরলাম।
0 Comments
চলুন ঘুরে আসি বাংলাদেশ এর তৃতীয় সর্ববৃহত পর্বতশৃঙ্গ(৩,২৩৫ ফুট) "কেওক্রাডং" থেকে!
প্রকৃতির অদ্ভুত রোমাঞ্চকর এক জায়গা!সর্বপ্রথম বান্দরবান থেকে রুমা সেখান থেকে বগালেক,বগালেক থেকে ট্রেক করে দার্জিলিং পাড়া আর দার্জিলিং পাড়া থেকে কেওক্রাডং বগালেক থেকে কেওক্রাডং ট্রেক করার পথে লতা ঝর্ণা আর চিংড়ী ঝর্ণা স্বাগতম জানাবে। যদিও যাতায়াত পথ ও ট্রেকিং একটু বেশি কিন্তু কেওক্রাডং এর চূড়ায় উঠার পর সব ক্লান্তি হার মেনে যায়। ট্রেক করার সময় পাহাড়ি লেবুর শরবত,পাহাড়ি কমলা,ক্যালসিয়াম টি,পাহাড়ি কলা এই ঠান্ডার মধ্যে পাহাড়ের সৌন্দর্য আর একটু বাড়িয়ে দেয়। কেওক্রাডং এ থাকার ব্যাপার এ বলি কটেজ যাবার আগে বুকিং দিয়ে তারপর যাওয়া ভালো নাহলে দার্জিলিং পাড়ায় থাকা লাগে যেখান থেকে কেওক্রাডং এর চূড়া ট্রেক দূরত্ব ৩০ মিনিট। শীতটাকে আর একটু প্রাণবন্ত করতে আর যান্ত্রিক গতিময়তা কাটিয়ে কেওক্রাডং এ সূর্যদয় ও সূর্যাস্ত দেখে আসুন।।
জায়গাটার নাম সাজেক। অবস্থান বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্ব দিকে পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে। এর পূর্ব দিকে ভারতের মিজোরাম রাজ্য।
গত মাসে ঘুরে আসলাম। আপনাদের সাথে কিছু ছবি আর ভিডিও শেয়ার করলাম। বর্ষাকালে মেঘ আরো বেশী থাকে আর অনেক নীচে নেমে আসে। নিমন্ত্রণ থাকল সু্যোগ হলে কখনো ঘুরে যাবার ভবিষ্যতে বাংলাদেশের আরো কিছু জায়গার সাথে পরিচয় করিয়ে দিব। ছবিগুলো আমার মোবাইল ফোনে তোলা। |
Best Washing MachineCategories
All
Archives
November 2021
Best Autoclean Chimney |