সৌন্দর্য্যের আর এক নাম , মাওলিননং
গতবছর পূজোর ছুটিতে মাওলিননং এ গিয়েছিলাম । যাবার পথে দেখে নিলাম এক প্রাকৃতিক আশ্চর্য সেতু ! যা লিভিং রুট ব্রীজ নামে পরিচিত । এখানকার এক ধরনের বট জাতীয় গাছের শিকড় ও ঝুরি নদী বা ঝোরার দুপাশ থেকে মিলে গিয়ে তৈরি হয়েছে এই বিস্ময়কর সেতু । মেঘালয় ও পূর্ব ভারতের অনেক জায়গাতেই এই সেতু দেখা যায় । স্থানীয় মানুষজন খুব সহজেই পাহাড়ী নদী বা ঝোরা পারাপার করেন । অনেক গুলো পাথর কেটে বানানো সিঁড়ি ভেঙে বেশ অনেকটা নীচে নেমে দেখে নিলাম এই সেতু । বেশ শক্তপোক্ত এবং চওড়া। অনেক মানুষই এপার ওপার করতে পারেন এই লিভিং রুট ব্রীজের ওপর দিয়ে । এরপর গেলাম মাওলিনং ।এশিয়ার সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন গ্রামের তকমা পেয়েছে এই গ্রাম । সত্যিই অসাধারণ ! গ্রামের প্রতিটি বাড়িতেই বাগান, এবং বিচিত্র তার সমাহার , নানা ধরনের ফুল , অর্কিড থেকে চোখ ফেরানো যাচ্ছিল না, আর একটা জিনিস দেখে একদম অভিভূত হয়ে গেছি, সেটা হল কলসপত্রী গাছ ! যার ছবি কেবল জীবনবিজ্ঞান বইয়ের পাতাতেই দেখেছি । প্রচুর প্রজাপতি ওড়াউড়ি করছিল এদিক ওদিক ।তাদের রঙের কী বাহার ! গ্রামের ভেতর দিয়ে যে পথ চলে গেছে সে পথের দুপাশে লতা পাতার সবুজ চাঁদোয়া... রোদেও যেন সবুজ রঙের ছটা ! আর এত গাছ তবু কোথাও পড়ে নেই একটিও শুকনো পাতা , চারদিক ঝকঝকে , তকতকে..... রাস্তার পাশে এবং প্রতিটি বাড়ির সামনে রাখা আছে বেতের ঝুড়ি.... আবর্জনা ফেলার জন্য । মাওলিননং এর সৌন্দর্য্য ক্যামেরায় ধরার চেষ্টা করেছি, পারিনি , সেখান থেকে কয়েকটি ছবি পাঠালাম..... প্রয়োজনীয় তথ্য - শিলং থেকে গাড়ীতে যেতে হয় , দিনে দিনে ঘুরে আসতে পারেন, তবে কেউ থাকতে চাইলে হোমস্টে রয়েছে মাওলিনং গ্রামে ।
1 Comment
জয় মা সিদ্ধেশ্বরী চন্ডী দেবীর জয়।।
শারদীয়ার শেষ উৎসব জগদ্ধাত্রী পুজোর পরে চলে এলাম আরো একটি অখ্যাত কিন্তু জাগ্রত কালীন্দিরের খোঁজ ও তথ্য নিয়ে।। চলুন,, তবে বেড়িয়ে পড়া যাক।। শিয়ালদহ / হাওড়া স্টেশন থেকে কাটোয়া গামী লোকাল ট্রেনে বসে চলে আসুন জিরাট রেলওয়ে স্টেশন।। রেলওয়ে স্টেশনের বিপরীত দিকে একটি সোজা রাস্তা চলে গেছে কালিয়াগড়ের দিকে।। টোটো করে চলে আসা যায় চন্ডী মায়ের মন্দিরের কাছে।। হুগলী জেলার কালিয়াগড় গ্রামের শেষ প্রান্তে তপোবন সাদৃশ্য এলাকায় আছে সিদ্ধেশ্বরী চন্ডী মায়ের মন্দির।। সমতলছাদ বিশিষ্ট দালান মন্দির।। গর্ভগৃহ সংলগ্ন নাটমন্দির।। গর্ভগৃহে পঞ্চমুন্ডীর বেদীতে অধিষ্ঠান করছেন চতুর্ভুজা, কৃষ্ণবর্ণা, করালবদনী, শিবোপরি, দিগম্বরী, লোলজিহ্বা, সিদ্ধেশ্বরী কালী মায়ের মুর্তি।। স্থানীয় লোকেরা মনে করেন যে-- সতী মায়ের বাম হাতের বালা এই স্থানে পড়েছিল,, তাই এটা নাকি একটা উপ-পীঠ।। তাই এই স্থানের অপর একটি নাম 'বলোয়পপীঠ'।। যদিও ঐতিহাসিক ও পন্ডিতগণ এই তথ্যকে মেনে নেয়নি।। প্রতি মঙ্গলবার ও শনিবার মায়ের মন্দিরে পূজা দেওয়ার জন্য ভক্তদের ঢল নামে।। তখন পূজা ও পুষ্পাঞ্জলি হয়।। মন্দিরের পাশেই রয়েছে একটি পুকুর।। পুকুরটির চারিদিকে বিভিন্ন গাছগাছালি রয়েছে।। মন্দিরের সামনে রয়েছে একটি যজ্ঞ মন্ডপ।। মন্দিরের উল্টো দিকে রয়েছে লাল রঙের আটচালা বিশিষ্ট মহাকাল ভৈরব মন্দির।। এই মন্দিরের গর্ভগৃহে মহাকাল ভৈরব শিবলিঙ্গ ছাড়াও আরো দুটি শিবলিঙ্গ রয়েছে।। এছাড়াও রয়েছে বাবার অস্ত্র ত্রিশূল ও বাবা মহাদেবের বাহন নন্দী ষাঁড়ের শ্বেতপাথরের মুর্তি।। মন্দিরের চারিদিক শুধু গাছগাছালিতে ভরপুর।। তাদের মধ্যে বাঁশঝাড় টাই বেশি।। এই পরিবেশে মায়ের পূজা ও পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে মন শান্ত হয়ে উঠবে।। এই মন্দির থেকে সামান্য কিছুটা দূরে হেঁটে গেলেই দেখা যাবে ছোট জগন্নাথ দেবের মন্দির।। রথের সময় এখানে মেলা বসে।। এই কালী দেবী আগে ডাকাতরা পুজো করত বলে আগে এই দেবীকে ডাকাত কালী বলা হতো।। কিন্তু এখন সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির নামেই এই মন্দিরের পরিচিতি।। এই এক কালীমন্দির বহু প্রাচীন।।
শুক্রবার, সন্ধ্যা ৭.৩০,বাড়িতে বসে কম্পিউটার এ প্রয়োজনীয় কিছু কাজ করছিলাম। হঠাৎ এক বহু পুরানো বন্ধুর ফোন,Facebook,Whats App এর যুগেও দীর্ঘ দিন যোগাযোগ এর বাইরে ছিলাম আমরা। যাইহোক ৫ -৭ মিনিট কথা বলার পর পর ই উঠে এলো পুরোনো নেশার কথা। হোতেপারে পারে টেলিপ্যাথি,বলতে পারবো না। কথা প্রসঙ্গে উপলব্ধি করলাম বিগত ১০-১৫ দিন যাবৎ আমরা উভয়েই পুরানো নেশার টানে আচ্ছন্ন হয়ে আছি।
ঠিক হলো আগামী কাল ম্যাসাঞ্জোরে (ঝাড়খন্ড) যাবো।তৎক্ষণাৎ youth hostel অনলাইন এ বুক করলাম প্রায় ৭০০ টাকার বিনিময়। কিন্তু সেই মুহর্তে বাবুঘাট পৌঁছে বাস ধরার সময় বা সুযোগ কোনোটাই নেই। ঠিক করে ফেললাম পরের দিন ভোর ৫ টার সময় দেখা করবো একটি নির্দিষ্ট জায়গায় ও যে যার বাইক নিয়ে যাব। ডানকুনি টোল প্লাজা পেরিয়ে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে ধরে যাত্রা শুরু করলাম। বাইকের গতি ৫০ থেকে বাড়তে বাড়তে ১০০ পেরিয়ে যাচ্ছে, রাস্তা শুধু রাস্তা নয় যেন হাতে বোনা নিখুঁত কার্পেট। google map অনুসারে কলকাতা থেকে দূরত্ব প্রায় ২৩৫ থেকে ২৫০ কিলোমিটার এর মতন। বর্ধমান থেকে বীরভূম ঢোকার রাস্তায় একটু বিরতি নিলাম আখের রস খাবো বলে, অসাধারণ তার মিষ্টি স্বাদ। প্রায় ৬ কিলোমিটার অতিক্রম করবার পর মনে হলো আরও এক গ্লাস করে খেলে ভালোহতো। আর তাই যেমন ভাবনা তেমনি কাজ। যাচ্ছি মঙ্গলকোট, পাড়ুই থানা পেরিয়ে , রাজ্য রাজনীতির বহু চর্চিত নাম। বীরভূম এর মহম্মদ বাজার থেকে বেশ কিছুটা এগোলে শুরু হলো দুমকা-সিউড়ি হাইওয়ে,অসাধারণ এক কথায়। ৪ বছর আগে এই রাস্তা হয়েই দেওঘর থেকে তারাপীঠ গেছিলাম, অসম্ভব বাজে খানাখন্দ পূর্ণ ছিল। যতো এগোচ্ছি প্রকৃতি ও পরিবেশের আকর্ষণ তত অনুভব করছি। অনুচ্চ পাহাড় ও তীব্র দাবদাহের মধ্যেও দূরে মেঘের ঘনঘটা শরীরের থেকে মন কে ছিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বেলা ১০.৩০ নাগাদ youth hostel এ পৌছালাম। একটি ছোট্ট টিলার উপরে অবস্থিত হোটেল, ভারি সুন্দর অবস্থানে অবস্থিত হোটেল টি। হোটেল থেকেই দৃশ্যমান অনুচ্চ বিস্তীর্ন টিলা ও দিগন্ত বিস্তৃত বিপুল জলরাশি। জামা কাপড় পরিবর্তন করেই দুজনে ছুট লাগলাম স্নান করবার জন্য। ঠান্ডা ও পরিষ্কার জলরাশি ক্লান্ত দেহে নতুন করে প্রাণের সঞ্চার করলো। ৩ ঘন্টা স্নান করার পর পেটের টানে হাজির হলাম স্থানীয় একটি হোটেলে। তৃপ্তি করে মাংস ভাত ও হোটেল মালিক নিজে ভ্রমণ প্রিয় তৎসহ বাইক প্রেমী হওয়াতে অতিরিক্ত আন্তরিকতা সাথে ঘরে পাতা টক দই পড়লো পাতে। বিকেল এর দিকে ড্যামের নিচে বশে চা পকোড়া সহযোগে আড্ডাটা বেশ জমে উঠেছিল বাধ সাধলো ড্যামের রক্ষীরা। যাইহোক একটু উপরে উঠে একটি পাথর খন্ডের উপর আমরা বসলাম ,কিছুক্ষন এর মধ্যে পাশে বসা এক আদিবাসী শিক্ষক ও তার পরিবার এর সাথে আমাদের বেশ ভাব জমে গেলো। কথা প্রসঙ্গে জানতে পারলাম এই ম্যাসাঞ্জোর ড্যামের গুরুত্ব ও তাদের জীবনে ড্যামের আর্থ-সামাজিক প্রভাব এর কথা। পরদিন রবিবার ওই একই হোটেল এ প্রাতঃরাশ সেরে হোটেল মালিক এর সাথে ঘন্টা দুয়েক নির্ভেজাল আড্ডা দিয়ে কলকাতার পথে যাত্রা শুরু করলাম।
এবার পূজোর পর গেছিলাম হিমাচল প্রদেশ,দুরাত ট্রেনের পর গাড়িতে সিমলা পৌঁছলাম,সিমলায় এক রাত ,সারাহানে একরাত,সাংলা একরাত,ছিটকুল একরাত,ও কল্পা দুরাত , রামপুর একরাত ,এইছিল আমাদের বেড়ানোর(রাত কাটানোর) থাকার জায়গা,
কিছু ছবি আমার পছন্দের যা আপনাদের জন্য দিলামা হয়তো আপনাদের ভালো লাগতে পারে, **************************** ট্রেনে চলে যান কালকা ,চন্ডিগড়, বা আম্বালা , আমরা আম্বালা থেকে সিমলা গেছিলাম 120 কিঃমিঃ 5-6 ঘন্ঠা,একরাত সিমলা ,পরের দিন জলখাবার খেয়ে কুফরি দেখে সারাহান গেলাম , সিমলা থেকে সারাহান 175 কিঃমিঃ সাত ঘন্টার একটু বেশি,পরের দিন সারাহানে ভিমকালি মন্দির দেখে দুপুরে খাবার খেয়ে বের হলাম সাংলার পথে ,সংলা 95কিঃমিঃ প্রায় পাঁচ ঘন্টা, অনেকেই সাংলা থেকে ছিটকুল দেখে আসেন ,(আমরা ছিটকুলে একরাত ছিলাম)আমরা পরের দিন সাংলা থেকে দুপুরের খাবার খেয়ে চললাম ছিটকুল ,দুঘন্টা মত সময় লাগল,(ছিটকুলে সবাইকে থাকার অনুরোধ করবো,না থাকলে ছিটকুলকে উপভোগ করতে পারবেন না ),পরের দিন সকালটা ছিটকুলেই কাটালাম ,ঘুরে দেখলাম সেখানকার গ্ৰাম ,এক কথায় অসাধারন ছিটকুল , ছিটকুল থেকে এবার যাব কল্পা,কল্পার 75 কিঃমিঃ 3 ঘন্টার একটু বেশি সময় লাগলো, কল্লায় দুরাত থাকবো তাই বিকালটা হটেলের বাইরে বসেই কাটালাম ,পরের দিন সকালে গেলাম নারয়ন মন্দির ও সুসাইট পয়েন্ট দেখে হটেলে আসার পর হটেলের পেছনে আপেল বাগানে ,যদিও বাগনে প্রবেশ করা নিষেধ ,পথেই কত আপেল পড়ে আছে যা আমরা কুড়িয়ে নিলাম কযেকটা, সন্ধ্যা থেকেই শুরুহল বৃষ্টি ম্যানেজর দাদা বললো রাতেই বরফ পড়বে,(Snow Fall) ,শুনে খুব ভালো লাগলো ,সত্যিই রাত তিনটে থেকে বরফ পড়া শুরু হলো ( দাদর কথা অনুযাই ), ভোর পাঁচটায় জানালা দিয়ে বাইরে তাকাতেই চারিদিক সাদা বরফে মোড়া পেলাম ,আর কি ঘরে থাকা যায় ,সবাই মিলে বের হলাম বাইরে ,মেতে গেলাম বরফ নিয়ে খেলা ,তবে বেশি সময় পারলাম না ,কারন প্রচন্ড ঠান্ডা , আজ নিচে নামবো ,থাকবো রামপুরে 140 কিঃমিঃ ,সাত ঘন্টা লাগলো ,রামপুররে রাত কাটিয়ে পরের দিন 240 কিঃমিঃ এসে আম্বালা থেকে ট্রেন ধরে বাড়ির পথে, হিমাচল মন ভরিয়ে দিয়েছে , আপনাদের ও মন ভরিয়ে দেবে , (শেষে একটা ভিডিও আছে দেখুন ভালো লাগবে,) ছবির পাশে কোনটা কোথায় জায়গার নাম লেখা আছে,
Mahal Diram ,Namta ki kau sunechen ? Jak sonen ni tahole ?.Ata Mahananda Wild Life Sanctuary ar Moddhe e Pore ,Ucchota Motamuti 4880 ft Somudratal theke .Sittong ar khub kache Kurseong ar Moddhe e pore .Ase paser ghure dekhar Sthan Latpancchar,Mongpu ,Bagora . R sathe ache Mt.Kanchangha ke khub kach theke upolobdhi korar Hatchani . Charidike Tea Garden nia satti e ak monomugdhokor poribes a Apnar Monpran Sob kichu harate baddho
গত ৩১শে আগষ্ট ঠিক সন্ধ্যে ৭টার সময় আমার ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়া পুরানো বন্ধু সুকান্ত হঠাৎ ফোন করে অনুরোধ করলো, ৩দিনের ছুটিতে কোথাও থেকে ঘুরে আসার জন্য। আমি সেই মুহূর্তে কোন decision না জানিয়ে কয়েক ঘণ্টা সময় চেয়ে নিলাম। কিন্তু আমার ভব ঘুরে মন কি এই সুযোগ ছাড়তে চায়? তাই ঘন্টা দুয়েক "যাব কি যাবনা" এই দ্বৈতমানষিকতার ঘোর কাটিয়ে finally যাওয়ার green signal দিয়ে location জানিয়ে দিলাম। এই location নিয়ে কিছুটা আপত্তি থাকলেও পরে অবশ্য রাজি হয়ে যায়।
পরদিন অর্থাৎ ১লা সেপ্টেম্বর পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সকাল ৭টাতে হাওড়ার মন্দিরতলা থেকে গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম জঙ্গল মহলের উদ্দেশ্যে। মাঝে কোলাঘাটে প্রাত:রাশ করার জন্য আধঘন্টার বিরতি নিলাম। তারপর সোজা খরগপুর হয়ে ঢুকে গেলাম লোধাশুলি জঙ্গলের মধ্যে। বর্ষার জলে জঙ্গলের গাছগুলো নিজেদের নতুন করে রাঙিয়ে নিয়ে পূর্ণ যৌবনা হয়ে উঠেছে। এই লাবন্য রূপ দেখতে অপূর্ব লাগছিলো। বর্ষাকাল ছাড়া এদের এই যৌবন রূপ দেখতে পাওয়া যায় না। গাড়ি জঙ্গলের ভিতর দিয়ে আঁকা বাঁকা পথ ধরে এগিয়ে চললো আর আমরা দুপাশের অপূর্ব সুন্দর দৃশ্য দেখতে দেখতে নয়ন সার্থক করতে লাগলাম। মাঝে কয়েকটি ফটো সেশন করে নিলাম। এভাবে কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে এলাম ঝাড়গ্রামের সেই বিখ্যাত কনক দূর্গা মন্দিরে। জায়গাটির নাম চিলকিগড়। চারিদিকে বিরাজ করছে ঘন সবুজ জঙ্গল এরই পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে বর্ষার জলে পরিপূর্ণ ডুলু্্ নদী। এ রকমই গা ছমছম করা প্রকৃতির কেন্দ্র স্থলে অবস্থান করছে শ্রদ্ধাময়ী মা দূর্গার মন্দিরটি। প্রকৃতি এখানে এক অদ্ভুত অনুভূতিতে ভরিয়ে তুলেছে পরিবেশটিকে।লোক মুখে শোনা যায় এককালে এখানে নাকি নর বলি দেওয়া হত, জানিনা কতটা সত্যি। এখানে কিছুটা সময় কাটিয়ে আবার যাত্রা শুরু করলাম আমাদের আজকের গন্তব্য স্থল জঙ্গল মহলে রানিবাঁধের অন্তর্গত ঝিলিমিলির উদ্দেশ্যে। এখানেই আছে একমাত্র থাকার জায়গা "রিমিল লজ" টি। আমরা নেট্ ঘেঁটে পাওয়া ফোন নং দেখে ফোন করে বলে দিলাম আমাদের জন্য একটি ঘর ও দুপুরের খাবার বানিয়ে রাখতে। এরপর ঝাড়গ্রাম কে পিছনে ফেলে এগিয়ে চললাম জঙ্গল মহলের অন্তর্গত অতিপরিচিত সেই জনপদ গুলোর মধ্যে দিয়ে যেমন- বেলপাহাড়ি, বাঁশ পাহাড়ি, ভোলাবেদা ও কাঁকড়াঝোড় ইত্যাদি। এ পথের যাত্রা ভীষণ বৈচিত্র্যপূর্ন, কোথাও আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ সাঁওতাল ও মুন্ডা দের ছোট ছোট জনপদ আবার কোথাও শাল, পিয়াল, মহুয়া,পলাশ ও ইউক্যালিপটাসে ভরা ঘন জঙ্গল। এখানের ভূমি খানিকটা অসমতল তাই রাস্তা কোথাও চড়াই কোথাও উৎরাই। চারিদিকে দিগন্ত বিস্তৃত ঘন সবুজ জঙ্গল, তার মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া পীচের চড়াই উৎরাই রাস্তায় গাড়ি চালানোর যে কি মজা, তাহা কেবল যাহারা উপলব্ধি করছেন তারাই বুঝতে পারবেন। এমনি ভাবে রোমাঞ্চকর অনুভূতির মধ্যে দিয়ে আমারা বেলা আড়াইটার সময় পৌঁছে গেলাম "রিমিল লজে"। এরপর স্নান সেরে খাওয়া দাওয়া করে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে নিলাম। ক্রমশঃ প্রকাশিত হবে।***** পুনশ্চ: বানান ভুলের জন্য ত্রুটি মার্জনীয়।
বেলা তখন প্রায় ২-৩০মি.পেটে তখন একটু টান পড়েছে অনুভব করলাম। বন্ধু সুকান্ত বললো জামশেদপুরে গিয়ে খাওয়া দাওয়া করে আজকের দিনটা ওখানেই কাটিয়ে দিতে। কিন্তু আমার মন তাতে সাধ দিলা না কারণ প্রকৃতির হাতছানি উপেক্ষা করে,জনকোলাহল মূখর ব্যাস্ততার বাতাবরণে থেকে আত্মাকে অপরিতৃপ্ত করাটা আমার ঠিক পছন্দ নয়। তাই বদ্ধ পরিকর হয়ে যাই অয্যোধা পাহাড়ের কোলে প্রকৃতির আপন আলয়ে একটি রাত কাটাতে। 'যথা আজ্ঞা শিরোধার্য" বলে সুকান্ত গাড়ির সম্মুখ পুরুলিয়ার অভিমুখে রেখে গাড়িটা দ্রুত গতিতে ছোটাতে লাগল। ঘন্টা খানেকের মধ্যেই চলে এলাম অযোধ্যা পাহাড়ের নিকটবর্তী পুরুলিয়ার অন্য আরো একটি ছোট শহর বলরামপুরে। পাহাড়ের কোলে এই ছোট্ট শহরটি বেশ সুন্দর। এখানেই একটি হোটেলে আমরা দুপুরের খাবার খেয়ে নিলাম।
এরপর একটু বিশ্রাম নিয়ে আবার চলা শুরু করলাম। আমাদের গাড়ি ট্রেনের লেবেল ক্রসিং পার হয়ে পাহাড়ের কোল ঘেঁষে চলতে থাকলো। এখানে প্রকৃতি যেন তার রূপের ডালি সাজিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। একদিকে গেরুয়া ও সবুজের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা সুদীর্ঘ মনমুগ্ধকর পাহাড় আর অন্য দিকে দিগন্ত জোড়া ঘন সবুজে ভরা সমতল ভূমি। এরই মাঝ খান দিয়ে গড়ে ওঠা আঁকা বাঁকা পীচের রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে আমারা মুগ্ধ দৃষ্টিতে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের স্বাদ উপভোগ করতে থাকলাম। কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে এলাম বাঘ মুন্ডির অন্তর্গত সোনকুপি কাফে ও লজ্ এর সামনে। এই লজ্টির অবস্থান আমাদের খুব পছন্দ হয় তাই ম্যানেজার কে বলে একটা এসি রুম বুক করে সমস্ত মালপত্র নিয়ে রুমের ভেতর চলে গেলাম। একটু fresh হয়ে কয়েক ঘণ্টা আশপাশটা ঘুরে ফিরে কাটিয়ে দিয়ে তাড়াতাড়ি রাতের খাবার খেয়ে শুয়ে পড়লাম। পরের দিন পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সকাল সকাল জলখাবার খেয়ে বেড়িয়ে পড়লাম 'খয়েরাবেরা' ড্যামের পথে।২৫মি.টে পৌঁছে গেলাম ড্যামের ধারে। অসাধারণ সৌন্দর্যে ভরপুর এই স্থানের দৃশ্য। বহু জনপ্রিয় বাংলা ছবির শুটিং হয়েছে এই স্থানে। এখানে খুব সুন্দর Eco Adventure Resort টি আছে।নানা ধরনের Adventure Event এখানে উপভোগ করা যায়। এখানে কিছুটা সময় কাটিয়ে ফিরতি পথে চলে এলাম এখানকার ঐতিহ্য মণ্ডিত মুখোশ তৈরির গ্রাম "চড়িদা" তে। পুরুলিয়ার বিখ্যাত 'ছৌ' নাচে এর ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। এরপর যতটা সম্ভব এখানকার বিভিন্ন দ্রষ্টব্য স্থান গুলো - পাখি পাহাড়, অযোধ্যা পাম্পিং স্টোরেজ প্রোজেক্ট,লোয়ার ড্যাম,আপার ড্যাম,বামনি ফলস্,তুরগা ফলস্ ও ময়ূর পাহাড় প্রভৃতি দেখে নিলাম। প্রত্যেকটা জায়গার বর্ণনা করা সম্ভব নয়, তাই এগুলি আপনারা কল্পনা করে উপলব্ধি করুন। তবে একথা অনস্বীকার্য যে হিল টপের আপার ড্যাম আপনাদের সকল ক্লান্তির অবসান ঘটাবে। বিকাল সাড়ে চার টে তে অনন্যা সুন্দরী অযোধ্যা পাহাড় কে বিদায় জানিয়ে কলকাতা অভিমুখে যাত্রা করি। ভোরের আলো ফোটার আগেই আমরা আপন আলয়ে পৌঁছে যাই শুধু ফেলে আসি ভালো লাগা ও ভালবাসার কিছু স্বরনীয় মূহূর্তের স্মৃতি। *********** সমাপ্ত ******** যোগাযোগ তথ্য: ট্রেনে এখানে আসতে হলে - বরাভূম, পুরুলিয়া অথবা ঝালদা হয়ে আসা যায়।অন্যথায় গাড়ি নিয়ে সরাসরি আসতে পারেন। থাকার জন্য উপরে ও নিচে কিছু মাঝারি ধরনের হোটেল ও রিসোর্ট পাওয়া যায়। |
Best Washing MachineCategories
All
Archives
November 2021
Best Autoclean Chimney |