শুক্রবার, সন্ধ্যা ৭.৩০,বাড়িতে বসে কম্পিউটার এ প্রয়োজনীয় কিছু কাজ করছিলাম। হঠাৎ এক বহু পুরানো বন্ধুর ফোন,Facebook,Whats App এর যুগেও দীর্ঘ দিন যোগাযোগ এর বাইরে ছিলাম আমরা। যাইহোক ৫ -৭ মিনিট কথা বলার পর পর ই উঠে এলো পুরোনো নেশার কথা। হোতেপারে পারে টেলিপ্যাথি,বলতে পারবো না। কথা প্রসঙ্গে উপলব্ধি করলাম বিগত ১০-১৫ দিন যাবৎ আমরা উভয়েই পুরানো নেশার টানে আচ্ছন্ন হয়ে আছি।
ঠিক হলো আগামী কাল ম্যাসাঞ্জোরে (ঝাড়খন্ড) যাবো।তৎক্ষণাৎ youth hostel অনলাইন এ বুক করলাম প্রায় ৭০০ টাকার বিনিময়। কিন্তু সেই মুহর্তে বাবুঘাট পৌঁছে বাস ধরার সময় বা সুযোগ কোনোটাই নেই। ঠিক করে ফেললাম পরের দিন ভোর ৫ টার সময় দেখা করবো একটি নির্দিষ্ট জায়গায় ও যে যার বাইক নিয়ে যাব। ডানকুনি টোল প্লাজা পেরিয়ে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে ধরে যাত্রা শুরু করলাম। বাইকের গতি ৫০ থেকে বাড়তে বাড়তে ১০০ পেরিয়ে যাচ্ছে, রাস্তা শুধু রাস্তা নয় যেন হাতে বোনা নিখুঁত কার্পেট। google map অনুসারে কলকাতা থেকে দূরত্ব প্রায় ২৩৫ থেকে ২৫০ কিলোমিটার এর মতন। বর্ধমান থেকে বীরভূম ঢোকার রাস্তায় একটু বিরতি নিলাম আখের রস খাবো বলে, অসাধারণ তার মিষ্টি স্বাদ। প্রায় ৬ কিলোমিটার অতিক্রম করবার পর মনে হলো আরও এক গ্লাস করে খেলে ভালোহতো। আর তাই যেমন ভাবনা তেমনি কাজ। যাচ্ছি মঙ্গলকোট, পাড়ুই থানা পেরিয়ে , রাজ্য রাজনীতির বহু চর্চিত নাম। বীরভূম এর মহম্মদ বাজার থেকে বেশ কিছুটা এগোলে শুরু হলো দুমকা-সিউড়ি হাইওয়ে,অসাধারণ এক কথায়। ৪ বছর আগে এই রাস্তা হয়েই দেওঘর থেকে তারাপীঠ গেছিলাম, অসম্ভব বাজে খানাখন্দ পূর্ণ ছিল। যতো এগোচ্ছি প্রকৃতি ও পরিবেশের আকর্ষণ তত অনুভব করছি। অনুচ্চ পাহাড় ও তীব্র দাবদাহের মধ্যেও দূরে মেঘের ঘনঘটা শরীরের থেকে মন কে ছিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বেলা ১০.৩০ নাগাদ youth hostel এ পৌছালাম। একটি ছোট্ট টিলার উপরে অবস্থিত হোটেল, ভারি সুন্দর অবস্থানে অবস্থিত হোটেল টি। হোটেল থেকেই দৃশ্যমান অনুচ্চ বিস্তীর্ন টিলা ও দিগন্ত বিস্তৃত বিপুল জলরাশি। জামা কাপড় পরিবর্তন করেই দুজনে ছুট লাগলাম স্নান করবার জন্য। ঠান্ডা ও পরিষ্কার জলরাশি ক্লান্ত দেহে নতুন করে প্রাণের সঞ্চার করলো। ৩ ঘন্টা স্নান করার পর পেটের টানে হাজির হলাম স্থানীয় একটি হোটেলে। তৃপ্তি করে মাংস ভাত ও হোটেল মালিক নিজে ভ্রমণ প্রিয় তৎসহ বাইক প্রেমী হওয়াতে অতিরিক্ত আন্তরিকতা সাথে ঘরে পাতা টক দই পড়লো পাতে। বিকেল এর দিকে ড্যামের নিচে বশে চা পকোড়া সহযোগে আড্ডাটা বেশ জমে উঠেছিল বাধ সাধলো ড্যামের রক্ষীরা। যাইহোক একটু উপরে উঠে একটি পাথর খন্ডের উপর আমরা বসলাম ,কিছুক্ষন এর মধ্যে পাশে বসা এক আদিবাসী শিক্ষক ও তার পরিবার এর সাথে আমাদের বেশ ভাব জমে গেলো। কথা প্রসঙ্গে জানতে পারলাম এই ম্যাসাঞ্জোর ড্যামের গুরুত্ব ও তাদের জীবনে ড্যামের আর্থ-সামাজিক প্রভাব এর কথা। পরদিন রবিবার ওই একই হোটেল এ প্রাতঃরাশ সেরে হোটেল মালিক এর সাথে ঘন্টা দুয়েক নির্ভেজাল আড্ডা দিয়ে কলকাতার পথে যাত্রা শুরু করলাম।
0 Comments
Leave a Reply. |
Best Washing MachineCategories
All
Archives
November 2021
Best Autoclean Chimney |