Darjeeling কালিম্পং লাভা এবং lataguri এর কিছু চিত্র ....8th june বিকালে বেরিয়ে 14 th june সকালে ঘরে ফেরা । প্রকৃতির রূপ মন ছুয়ে যায় , কোথাও কোথাও মেঘেরা যেন কানে কানে কথা বলে । tour plan সংক্ষিপ্ত আকারে 8Th June train 9Th June ভোরে njp পৌঁছানো আর তারপর ওখান থেকে গাড়ি করে darjeeling পৌঁছানো । সেদিন ওখানেই পায়ে হেঁটে site scene mall এ ঘোরা আর marketing 10 th june 9 টার সময় sight scene এর উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়া গাড়িতে 7 point & 5 point দুপুর 3টের মধ্যে ফিরে আসা বিশ্রাম নিয়ে আবার সন্ধ্যা বেলায় mall আর marketing 11 th june bag pack করে গাড়িতে চাপিয়ে ভোর 3 টেই বেড়িয়ে পড়া tiger hill rock garden mamata park হয়ে kalimpong দুপুর 2tor সময় । বিকালে ওইখানেই বেড়ানো । 12th june সকাল 8 টায় bag pack করে বেড়িয়ে kalimpong site scene করে lava , আর ওখান থেকে বিকালে লাটাগুরি পৌঁছানো । লাটাগুরি তে সন্ধ্যের পর একটু ঘোরা । 13 th june সকাল 5:30 এ jungle safari তে যাওয়া আর 8টার মধ্যে hotel ফিরে আসা । তারপর brekfast করে bag নিয়ে lataguri station এ গিয়ে 9 টার সময় siliguri এর train ধরা । siliguri পৌঁছাতে প্রায় 12 টা । bag clock room রেখে lunch করে hongkong market । 5 টা পর্যন্ত কাটিয়ে 6 টার মধ্যে station তারপর 7:45 এ kanchankonya ধরে বাড়ি ফেরা । Post By:- Rakesh Kr Dutta
0 Comments
Long drive করতে আমার চিরকালই ভালো লাগে।এবারের গরমের ছুটিতে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম উড়িষ্যার পঞ্চলিঙ্গেশ্বরের উদ্দেশ্যে । Google Map-এর সৌজন্যে National highway, state highway, গ্রাম, শহর, জঙ্গল, পাহাড়ের অজানা রাস্তা দিয়ে চার দিনে একা হাতে drive করে অতিক্রম করলাম একহাজার কিলোমিটারেরও বেশি পথ। কোন নির্দিষ্ট destination নয়, পুরো journey টাই ছিল উপভোগ্য , পুরোটাই বেড়ানো। Weekend tour হিসেবে এটা বেশ লোভনীয় tour। বেড়ানোর ছকটা অবশ্য আমার সম্পূর্ণ নিজস্ব। বৃহষ্পতিবার সকালে কলকাতা থেকে যাত্রা করে রবিবার ফিরে আসা। অনেকের অনুরোধে আমাদের যাত্রাপথের একটা সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিলাম। পাঠকদের কাছে আমার একান্ত অনুরোধ রইল, এই বিবরণ পড়ার সময় Google Map বা Google Earth -এর সাহায্য নিলে জিনিসটা clearly বুঝতে পারবেন। প্রথম দিনে, কলকাতা থেকে পঞ্চলিঙ্গেশ্বরে পৌঁছে হোটেলেই লাঞ্চ সেরে বিশ্রাম করেছি।দূরত্ব প্রায় 270-75 Km। পরের দিন অর্থাৎ দ্বিতীয়দিন, সকালে বেরিয়ে পর পর গেছি সিমলিপালের দেবকুন্ড জলপ্রপাত (প্রায় 65 km), সেখান থেকে কালো/কালা ড্যাম( প্রায় 35 km), তারপর সুনেই ড্যাম (আবার প্রায় 35 km) , সুনেই থেকে সালান্ডি ড্যাম (প্রায় 55 km)। সেখান থেকে ভদ্রক হয়ে NH-16 ধরে back to পঞ্চলিঙ্গেশ্বর (প্রায় 110 km)। তবে আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, সালান্ডি গেলে journey টা বেশ hectic হয়ে যেতে পারে কারো কারো পক্ষে। তৃতীয় দিনে, নীলগিরি থেকে কুলডিহা ফরেস্ট। সেখান থেকে রিসিয়া ড্যাম। ফিরে এসে হোটেলে লাঞ্চ করে খুমকুট ড্যাম প্রোজেক্ট টাও দেখে নিতে পারেন। এবিষয় একটা সতর্কবার্তা দিয়ে রাখা জরুরী। যেহেতু আমরা কেবল Google Map এর ভরসায় destination ঠিক করেছিলাম সেক্ষেত্রে আমাদের একটা বড় ভুল হয়েছিল। পঞ্চলিঙ্গেশ্বরের কাছে 7-8 km দূরত্বে আছে "Khumkut Dam Project"। এখানে যাওয়ার উদ্দেশ্যে আমরা Google Map এ destination set করি "Khumkut Dam"। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশতঃ এই দুটি সম্পূর্ণ ভিন্ন দুটি জায়গা। খুমকুট ড্যামটি অবস্থিত পাহাড়ের বিপরীত দিকে যেখানকার দূরত্ব প্রায় 30 km এবং এখানে পৌঁছানোর গাড়ী যাবার মত রাস্তাও এক সময় আদিবাসীদের গ্রামে গিয়ে শেষ হয়ে গেছে।কাদামাখা মেঠো পথে গাড়ী ঘোরানোর মত জায়গাও পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়ে।এক কিলোমিটার আগে থেকে আমাদের বাধ্য হয়ে ফিরে আসতে হয়। চতুর্থ দিন, সকালে আমরা গেছিলাম পঞ্চলিঙ্গেশ্বর মন্দিরে। আরও এগিয়ে পাহাড় জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে হেঁটে গেলে পাবেন বনদেবীর মন্দির।ফিরে এসে হোটেলে খাওয়া দাওয়া করে ব্যাগ প্যাক করে পঞ্চলিঙ্গেশ্বরকে টাটা জানিয়ে রওনা দিলাম কলকাতার দিকে। এর মধ্যে NH-16 ধরে ফেরার পথে বালাসোর থেকে ডানদিকে প্রায় 27 km গিয়ে চাঁদিপুরের সমুদ্রে কিছুটা সময় কাটিয়ে তৃপ্ত মনে কলকাতার উদ্দেশ্যে finally Google Map set করে নিলাম। Post By:- Tanmay Kar
আমাদের মধ্যে যে সব খাদ্যরসিক বন্ধুরা বোলপুর আর শান্তিনিকেতন ঘুরেছেন তাঁদের মধ্যে এমন বোধহয় খুব কম আছেন যাঁরা একদিনও বনলক্ষী তে মধ্যাহ্নভোজন সারেন নি। ২০১২ সালে আমি একবার আত্মীয়দের সঙ্গে শান্তিনিকেতন গিয়ে মধ্যাহ্নভোজ সারতে বনলক্ষী তে যাই আর গিয়েই সে স্থানটির সম্পর্কে কৌতুহল বোধ করি। আমাদের নাম্বার আসার আগে হাতে একটু সময় থাকাতে একটু এদিক ওদিক ঘুরে দেখতে গিয়ে বুঝলাম যে যা সময় আছে তাতে এ স্থান পুরো ঘুরে দেখা সম্ভব না। বিশাল তার পরিসর। সেখান ইতস্তত ছড়ানো কিছু কুটির দেখতে পেয়ে এক কর্মচারী কে জিজ্ঞাসা করাতে তিনি জানালেন সেগুলি হল পর্যটকদের রাত্রিবাসের ব্যবস্থা। মনে একটা ইচ্ছা জন্ম নিল একবার এখানেই থাকতে হবে। আর পরেরবার যখন সহকর্মীরা প্রস্তাব দিল (২০১৫) সালে বোলপুর যাবার এবার আমিও শর্ত দিলাম যে বনলক্ষী তেই থাকতে হবে। একটা কথা বলে রাখি বনলক্ষী তে ডর্মিটরি ছাড়া যে ঘরেই থাকুন না কেন আপনার মনে হবে কোনো বনবাংলো তে আছেন। এত গাছপালার সমাহার তার পরিসরের মধ্যে, আর পরিসর এত বিস্তৃত আপনার ভ্রম হতে পারে যে আপনি কোনো অভয়ারণ্যের মধ্যে আছেন। পৌঁছেই অসমাপ্ত কাজে নেমে পড়া গেল। আগেরবারের অতৃপ্ত বাসনা মিটিয়ে বাগানটাকে ঘুরে দেখলাম। প্রচুর গাছের সমারোহ, তার মধ্যে আম আর পেয়ারা বেশি আর অগনিত নাম জানা ও না জানা ফুলের গাছ। এখানে একটা নার্সারিও আছে। আর এবার বর্ষাকাল বলে বন ঘন সবুজ। অনেক পাখির ডাক ও শুনলাম কিন্ত বন এত ঘণ যে পাখির দেখা পাওয়া বড়ই মুশকিল। প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা লেগে গেল খালি সেই বাগানের ভিতর ঘুরে দেখতে। ঠিক হল খাওয়া দাওয়া সেরে বের হওয়া যাবে। গন্তব্য হল "আমার কুটির" ও সোনাঝুরির হাট। আমার কুটিরে পণ্যের সম্ভার দেখে মহিলারা অত্যন্ত খুশি, তাঁরা আমাদের ধমক দিলেন যে যেন তাঁদের কেনাকাটার বাধা না দিই সময়ের অজুহাত দিয়ে। তাতে অবশ্য আমি খুশিই হলাম। কারণ আগের অভিজ্ঞতা বলে আমার কুটিরের পিছনে বাগান পের হলেই কোপাই এর তীর। চুপিসারে ক্যামেরা হাতে নিয়ে বের হলাম। আমার কুটিরের বাগান্ বেশ বড়, একখানা শ্মশান ও আছে আর তাতে এখনো কাঠের চুল্লি চলে, সেটা পেরিয়ে গেলাম কোপাই এর ধারে। এখান থেকে কোপাই এর ব্রিজ ও দেখা যায়। নদীর ধার ধরে ধরে একদিকে এগোতে এগোতে দেখতে পেলাম নদীর ভাঙনে ওপারে বেশ দৃশ্য তৈরী হয়েছে। নদীর ওপারে একখানা গ্রাম ও দেখা যাচ্ছে। যাবার ইচ্ছা হচ্ছিল কিন্ত আশেপাশে কোনো নৌকা না দেখে ক্ষান্ত দিলাম। বাগানটা ভালো করে ঘুরে আবার ফিরে এসে সবার সঙ্গে সোনাঝুরির হাটের দিকে এগোলাম। সোনাঝুরির হাটের বিবরণ আর দিলাম না। কারণ এ আপনাদের সবার খুব চেনা। এই ভ্রমনে আমার যেটা বড় পাওনা তা হল অজয়। আমার সামান্য ভৌগোলিক জ্ঞান বলে বনলক্ষীর থেকে অজয়ের দূরত্ব বেশি হবার কথা না। বনলক্ষীর এক প্রবীন কর্মচারীর কাছে জানতে পারলাম অজয় এখান থেকে দু কিমির মত। তাই আগের রাত্রে ঠিক হল প্রাতঃভ্রমনে যাব অজয়ের তীরে। কিন্তু দুঃখের কথা সকালে উঠে কেউ বিশেষ উৎসাহ না দেখানোতে আমরা চারজন মিলেই রওনা দিলাম। হেমন্তের সময় গ্রাম বাংলার এক সৌন্দর্য আর বর্ষাকালে অন্যরকম। চারপাশ এখন ঘন সবুজ। মাঠে এখন সবুজ গালিচা বিছানো। গ্রাম ছাড়িয়ে অজয়ের কাছে এসে পড়েছি এমন সময় কোথা থেকে উদয় হল জলের এক ধারা। সে আবার রাস্তার উপর দিয়ে বয়ে চলেছে। বোধহয় ক্ষেতে জলসেচের জন্য কাটা এক নালা। মাটি গোলা জল নিয়ে বয়ে চলেছে। সেই নালা পেরিয়ে একটু এগোতেই অজয়ের পাড়ে পোঁছোনো গেল। এখন নদীতে বেশ ভালই জল। ঘোলা জল পাক খেয়ে ছুটে চলেছে। ওপারে এক মাঝিকেও দেখা গেল নৌকা নিয়ে আর হাতে বিরাট লম্বা এক লগি। ডাকাডাকি করতে চলে এল। মাত্র ১০০ টাকার বিনিময়ে সে আমাদের এপার ওপার করাবে বলল। তা সে নৌবিহারও হল। এসব শেষ করতে করতে দেখি আমাদের বাকিরাও আমাদের খুঁজতে খুঁজতে চলে এসেছে নদীর পাড়ে। আবার একপ্রস্থ নৌবিহার, এবার আমরা আরো ২০০ দিলাম। লোক বেড়ে গেছে। বেলা বাড়তে থাকল আর এবার বনলক্ষী ফেরার পালা। স্নানখাওয়া সেরে ডাউন শান্তিনিকেতন এক্সপ্রেস ধরতে হবে যে। এবার কিছু তথ্য দিয়ে রাখি- বোলপুর-ইলামবাজার পথে বোলপুর ছাড়িয়ে কিছুদূর গেলে বাঁদিকে পড়ে দ্বারান্দা বাস স্টপেজ। মূল পথ থেকে বাঁদিকে লাল মাটির পথ ধরে কিছু এগিয়ে ডানদিকে ঘুরলেই পড়বে বনলক্ষী। আসলে এটি একটি সমবায় ধরণের সংস্থা।পুরো নাম বনলক্ষী ঊন্মেষ সমিতি। এদের সমস্ত খাবার নিজেদের চাষ থেকে তৈরী, মশলাও পেষাই করা হয় আর সে খাবারের স্বাদ... যাঁরা খেয়েছেন তাঁরাই জানেন আর যাঁরা খাননি একবার খেয়ে দেখুন। এছাড়া কিছু হস্তুশিল্পজাত দ্রব্য এবং জামাকাপড় ও বিক্রী হয়, তবে বনলক্ষীর বিখ্যাত হল ঘি। অনেক বিখ্যাত লোক কেনেন (আমি শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়কে নিজের চোখে ঘি কিনতে আসতে দেখেছি, জিজ্ঞাসা করায় তিনি বলেন এখানে তিনি মাঝেমাঝেই আসেন) আর একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হল এখানে কিন্ত বাতানুকুল ব্যবস্থা নেই। আর এখানে কুকুর ছাড়া থাকে তাই রাতে দশটার পর ঘর ছেড়ে পরিসরে বের হওয়া মানা। আর বাকি বিশদ জানতে ও বুকিং এর জন্য এই লিঙ্ক টি দেখুন https://en.wikipedia.org/wiki/Banalakshmi (03463) 271202 and 94344 46150. দুটোর যেকোন একটায় ফোন করুন, বুকিং পেয়ে যাবেন খালি থাকলে। আমিও একই ভাবে করেছিলাম Post By:- Rudrarup Mukhopadhyay
|| আমাদের শান্তিনিকেতন || মুহূর্তসঞ্চয়ন ও লিখন: শুভজিৎ দে শান্তিনিকেতন....কবিগুরুর স্মৃতি বিজরিত এই জায়গা, আমার কাছে বাড়ির দক্ষিণ খোলা জানলার মতো .. যেখানে বর্ষা আনে যেমন দুহাত মেলে ভিজতে থাকার নিরন্তর ভালোলাগা -বসন্তেও মন ভালো করে দখিনা হাওয়া l যেখানে একধারে কবিগুরুর আদর্শে গড়ে ওঠা বিশ্বভারতীতে এক অনন্য সংস্কৃতি, তেমনি কবির গানে মন ভেসে যায় খোয়াই কিংবা কোপাই এর তীরে l কোনো পরিধি দিয়েই বোলপুর এর ব্যাপ্তি বাঁধতে পারিনি আমি l এখানের মাটির ঘ্রাণ, সোনাঝুরির পাতার মাঝে রোদের লুকোচুরি, খোয়াইয়ের বাউলের একতারা , হাটের বেচা-কেনা , মানুষজন , কোপাইয়ের উদাস করা সকাল, উদাস মাঠে নেমে আসা বিকেলের আলো .....সব মিলিয়ে খুব কাছের,খুব আপন..যেন আত্মস্থ সবটা l মননে -আবেগে-ভালোলাগায়-ভালোবাসায় .... বোলপুর ....মৃত্যুর ১৩ দিন আগে এই স্টেশন থেকেই কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কবিগুরুকে চিকিৎসার জন্য। রবীন্দ্রনাথ যেতে চাননি। কেননা শান্তিনিকেতনে তিনি খুঁজে পেয়েছিলেন ‘প্রাণের আরাম, মনের আনন্দ ও আত্মার শান্তি’; ভয় ছিল যদি আর ফিরে না আসতে পারেন। তাঁর আশঙ্কাই সত্য হয়েছিল। তবে কিছু বলতে গেলে শুরু করতে হয়, ১৮৬৩ সাল থেকে..এই সালেই মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর রায়পুরের জমিদারের কাছ থেকে ২০ বিঘা জমি বার্ষিক ৫ টাকা খাজনায় অধিগ্রহণ করার পর নির্জনে ঈশ্বরের উপাসনা করবেন বলে বোলপুরে এক দোতলা বাড়ি তৈরি করেছিলেন । এই বাড়িতে রবীন্দ্রনাথ প্রথম এসেছিলেন ১২ বছর বয়সে, উপনয়নের পর। সেই প্রথম দিন থেকেই প্রকৃতির সান্নিধ্যে , রবি জায়গাটাকে ভালোবেসেছিল।১৯০১ সালে কবিগুরু পাকাপাকি ভাবে চলে আসেন এই শান্তিনিকেতনে আর পিতার অনুমতিতে সেই বছরই ব্রম্ভচর্যাশ্রম বিদ্যালয় প্রতিষ্টা করেন,যদিও এর উদ্যোক্তা ছিলেন বলেন্দ্রনাথ ঠাকুর । কবিগুরুর এই আদর্শ বিদ্যালয়ে প্রথম ছাত্রদলের অন্তর্ভুক্ত চল তার নিজেই বড় ছেলে, রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর । সে সময়ে বিদ্যালয়ের পরিধি ছিল অনেক ছোট । ১৯০২এ স্ত্রী মৃণালিনী দেবী ও কন্যা রেণুকার অকাল প্রয়াণ, তার সাথে ১৯০৫-এ পিতৃবিয়োগ ,১৯০৭ এ পুত্র শমীন্দ্রনাথ এর মৃত্যু...এতো বিষাদ -বিচ্ছেদেও কবিগুরু তার স্বপ্নের শান্তিনিকেতন এর আদর্শ বিদ্যালয়ের পরিধি বৃদ্ধি করেছিলেন ধীরে ধীরে ।ধরে ধীরে পরে গড়ে ওঠে উদয়ন,উত্তরায়ণ, কোনার্ক, শ্যামলী, পুনশ্চ উদীচী,চিত্রভানু -গুহাঘর ,উপাসনা গৃহ ,কালো বাড়ি প্রভৃতি বাড়ি গুলি এক-এক টা গুরুত্বে । এছাড়াও ঘন্টাতলা ,গৌরপ্রাঙ্গন, পাঠাগার ,কলাভবন ,শালবীথি, ইত্যাদি এক এক করে রূপ লাভ করে। জ্যামিতিক গোলাপ বাগান, কবির নিজহাতে লাগানো নিমগাছের ছায়া আর মাটির দেয়াল মাটির ছাদের বাড়ি শ্যামলী যেখানে এসে গান্ধীজি বরাবর উঠতেন, তার মাঝে পাতা ঝরার গান আর মন কেমন করা বাউলি বাতাস—এখানেই রবীন্দ্রনাথকে অনেক বেশি করে পাওয়া যায়। ১৯২২ সালে ৬-ই ফেব্রুয়ারি সুরুলে গ্রাম পুনর্গঠন কেন্দ্র (শ্রীনিকেতন) স্থাপন করেন। ১৯২১ সালে সংগীত ও চিত্রকলা বিভাগ যোগ হয় শান্তিনিকেতন এ । ১৯২৬ সালে বিশ্বভারতী তে শিক্ষাভবন নাম নিয়ে কলেজের পঠন পাঠন শুরু হয় l শান্তিনিকেতনের প্রকৃতি মানেই লাল মাটির ঢাল আর ইউক্যালিপটাস বনের খোয়াই৷ প্রতি শনিবার সেই খোলা জায়গাতেই বসে হাট৷ নানাবিধ হস্তশিল্পের পসরা নিয়ে এই হাট এখন শান্তিনিকেতনের অন্যতম পর্যটক আকর্ষণ৷বিক্রেতারা সবাই প্রান্তিক উৎপাদক। পার্শ্ববর্তী কোপাই, বোলপুর, গোয়ালপাড়া, সিলিকেতুন, পাটুলডাঙা, চুরুল, প্রান্তিক ও ভুবনডাঙা গ্রামের নারী-পুরুষরা তাদের হাতে তৈরি বিভিন্ন দ্রবাদি নিয়ে হাজির হন হাটে।সূর্য যতো পশ্চিমে ঢলে পড়ে ততোই জমে ওঠে হাট। ঢোকার সময়ই কানে ভেসে আসবে ঢোল আর মাদলের শব্দ। হাটের একপাশে সাঁওতাল দল মাদলের তালে তালে নাচে থাকে মগ্ন l কেনা-বেচায়, নানা রঙে মন ভালো করার রসদ লুকিয়ে এখানে l Post By:-শুভজিৎ দে
আড়বেলিয়া, একটি ছোট্ট প্রাচীন গ্রাম।পাশ দিয়ে বয়ে গেছে বিদ্যাধরী নদী। নদীর ওপারের গ্রাম ধান্য কুড়িয়া। আড়বেলিয়া আর ধান্যকুড়িয়া জুড়ে আমার শৈশব কৈশোর । আর ছোট্ট একটি গেঁও নদী বিদ্যাধরী যার সাথে কথা বলে কেটেছে কত না দিন। আমার দেশ। আমার শিকড়। আমার আত্মপরিচয়। এই গ্রামের ইতিহাস নিয়ে বলতে বসব না। পরিচিত tourists spot গুলোর বাইরে যদি জলজঙ্লার বাংলা কে আবিষ্কার করতে মন চায় তো কলকাতার খুব কাছেই চট করে ঘুরে আসা যায়। ঘুরতে ঘুরতে আপনি পথের পাঁচালীর অপু দুর্গা কে হয়তো খুঁজে পাবেন। পড়ন্ত বিকেলে হয়তো শুনতে পাবেন করুন শানাই ।হয়তো দেখবেন পুরান কোন জমিদার বাড়ির ছাদে জলসাঘরের বিশ্বম্ভর রায় নিঃসঙ্গ বসে আছে। কিভাবে যাবেন: বারাসাত থেকে হাসনাবাদ গামী ট্রেন এ মালতিপুর। স্টেশন থেকে অটোতে সোজা আড়বেলিয়া । অথবা বারাসাত থেকে বসিরহাট যাওয়ার যে কোন বাসে মাটিয়া স্টপেজ সেখান থেকে অটোতে আড়বেলিয়া। কোলকাতা থেকে দুরত্ব মাত্র ৪৫ কিমি। Post By:- ইন্দ্রনীল বিশ্বাস
আমার রিনচেনপং (ওয়েস্ট সিকিম) বেড়ানোর গল্প সিকিম মানেই কি গ্যাংটক, ছাঙ্গু, ইয়ুমথাং, পেলিং ? সব জায়গাতেই টুরিস্ট গিজগিজ করছে। চারদিকে এখানে এতো কংক্রিটের জঙ্গল হয়ে গেছে যে সবুজ পাহাড় কে এখন খুঁজতে হয়. এগুলো ছাড়া সিকিমের চারদিকে লুকোনো এতো সুন্দর সুন্দর ছোট্ট ছোট্ট জায়গা আছে, আমরা জানি না. রিনচেনপং হলো সেরকমই পশ্চিম সিকিমের এক ছোট্ট লুকোনো শান্ত পাহাড়ী গ্রাম। এই জায়গাটা এখনো টুরিস্ট র হোটেল র ভিড়ে এখনো তার আদি অকৃত্তিম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য হারায়নি। তাই এই জায়গাটার খবর পেতে আগের মে মাসের ছুটিতে বেরিয়ে পড়েছিলাম কয়েকদিনের জন্য। কলকাতার নাগরিক চাপ আর গরম থেকে কিছুদিনের মুক্তি পাওয়ার আশায়। এন জে পি থেকে জীপ্ আর ওখানে হোটেল আগে থেকেই বুক করা ছিল পুরো ট্রিপ টার জন্য। ওখান থেকে আমরা রাবাংলা, কালুক, নামচি, পেলিং গিয়েছিলাম। আমরা ছিলাম হোটেল রিনচেনপং এ। পরিষ্কার, সুন্দর হোটেল। খোলা জানালার দিয়েই দেখা যাই পাশেই পাহাড়ে ওঠার রাস্তা। পাহাড়ি মেয়েরা সেজেগুজে স্কুলে যাচ্ছে। ..মাথায় কাঠের বোঁচকা নিয়ে স্থানীয় লোকেদের আনাগোনা।দেখলেই মন কেমন হয়ে যায়. খাবার ও খুব ভালো ওখানে। একদিন হঠাৎ করে ভোরবেলা হোটেলের জানলা দিয়ে সামনাসামনি দেখা কাঞ্চনজঙ্ঘা কে। .সে কি রোমাঞ্চ ! একদিন হঠাৎ বৃষ্টি। .আরো কনকনে ঠান্ডা। .রাস্তায় ঝর্ণার জলে ভিজে যাওয়া। ..পাহাড়ি সোঁদা ঠান্ডা গন্ধ। ..কি দারুন।..মনটা আবার ফিরে যেতে ইচ্ছে করে। ওখানে সপ্তাহে একদিন হাট বসে. আমরা সেখান থেকে লোকাল মোমো, থুকপা খেয়েছিলাম।..সেকি স্বাদ ! পাহাড়ি শান্ত গ্রাম, ছোট ছোট কত ঝর্নার কলতান , মনাস্ট্রি ,সবুজ আর সবুজ পাহাড়, নদী , কুয়াশা , ঠান্ডা, মিষ্টি পাখির ডাকে , পাহাড়ি আঁকাবাঁকা রাস্তায় চলে ঐকদিন কিভাবে যে কেটে গেলো জানতেই পারলাম না. তোমাদের জন্য কিছু ছবি শেয়ার করলাম। Post By:- Kaushik Das
এই গ্রুপে এটাই আমার প্রথম লেখা। এতা সত্যি যাওয়ার আগে অনেকেই আমাদের মানা করেছে।।।তবে ইচ্ছা থাকলে জা হয়,,,বেরিয়ে পরলাম পুরুলিয়ার উদ্দেশ্যে।।। সংগে ছিল লিডার ওরফে মাষ্টার, গুরু আর লিটন ভাই। ভোমরা কবি মাষ্টারের কিছুটা ভুলে আমাদের পৌছতে একটু দেরি হলো।। পুরুলিয়া ঢুকতেই ভোর হল,,,একটা চায়ের দোকানে বসলাম,, কলকাতা থেকে এসেছি শুনে তার আথিতিয়তায় আমরা মুগ্ধ হলাম।এরপর সূয্যি মামাকে উপেক্ষা করে শুরু হলো আমাদের পথ চলা। শুরু করলাম পুরুলিয়া থেকে,,, সেখান থেকে ঝারখন্ড হয়ে মুকুটমনিপূর,,,,যারা মনে করেন এই গরমে পুরুলিয়া,,,বাকুরা,,,ঝারখন্ড (ওরে বাবা) তাদের উদ্দেশ্যে বলছি একবার ঘুরে আসুন প্রকৃতি এতটাও রুষ্ট নয় যে আপনাকে খালি হাতে ফেরাবে,,,,,চেষ্টা করেছিলাম প্রকৃতির খন্ড খন্ড চিত্র ক্যামেরা বন্ধি করতে।সেগুলিকেই তুলে ধরলাম... Post By:- Partha Chakraborty
উত্তরাখন্ডের রাজধানী দেরাদুন এ গেছিলাম 7Th মার্চ 2018.অধ্যক্ষ মহারাজ (সুদর্শন মহারাজ )কে টিকিট কাটার আগেই বলেছিলাম আমরা দেরাদুন RKM যেতে চাই . মহারাজ বলেছিলেন টিকিট কেটে জানিয়ে দেবেন কবে আসছেন আর কিছু ভাবতে হবেনা আপনাদের .সেই মতো নির্ধারিত দিনে দেরাদুন পৌঁছলাম .সত্যি আমরা পৌঁছানোর পর আর ভাবতে হইনি .আমাদের সুবিধা অসুবিধা আমরা কোথায় কখন যাব কি দেখবো সব মহারাজ ব্যবস্থা করে দিয়েছেন . এবার আসি আশ্রমের কথায় .2007সালে প্রথম বার দেরাদুন গেছিলাম .আর এইবার গিয়ে দেখলাম শুধু মন্দির আর পুরোনো অফিস ঘর ছাড়া আর কিছুই চিনতে পারছিনা .সেই চেনা মন্দিরও আরো সুন্দর হয়ে উঠেছে মার্বেল আর রং এর মেলবন্ধন এ . গোধূলি বেলার আলো পড়ে মন্দিরের চূড়া পুরো সোনা দিয়ে বাঁধানো মনে হচ্ছে . এবার মহারাজ আমাদের সাথে নিয়ে সব নির্মাণ কাজ ঘুরে দেখাতে শুরু করলেন . মন্দির থেকে নেমেই বাঁ দিকে পুরো কাঁচের একটা BOOK STALL হচ্ছে .ঠিক তার উল্টো দিকে নতুন করে main gate করা হয়েছে মন্দির থেকে পুরো রাস্তা TILES দিয়ে বাঁধানো হচ্ছে . একটা guest house করা হয়েছে 5তলা . একদম ground floor guest দের জন্যে .বাকী floor guest সাধু দের জন্যে . মহারাজ বললেন এই টার নাম হবে " স্বামী রঙ্গনাথানন্দ মেমোরিয়াল ভবন " এর পাশেই হয়েছে ভক্তদের খাবার ঘর যেখানে প্রায় 200জন একসাথে বসতে পারবে . খাবার ঘর টা আমার খুব পছন্দ হয়েছে .পুরো কাঁচের জানালা দিয়ে ঘর টা ঘেরা সেই জানালা দিয়ে দিগন্ত বিস্তৃত পাহাড় আর সবুজের সমারোহ দেখা যাচ্ছে . ঠিক তার উল্টো দিকে সাধু দের খাবার ঘর আর আধুনিক রান্না ঘর . রান্না ঘরের কিছুটা আগে Auditorium . এর পর সোজা খানিকটা গেলেই 5 তলা Super speciality Eye hospital .যার নাম "বিবেকানন্দ নেত্রIলয় ."সেই Hospital টা কেউ নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করতে পারবেনা কতো চিন্তা কতো স্বপ্ন কতো পরিশ্রম এর ফসল এটা . আগামী 19th april উদ্বোধন হবে .তাই কাজ শেষ করার জন্যে অনেক মিস্ত্রী একসাথে কাজ করছে সব মিলিয়ে 70/80জন কাজ করছে . 5তলা উঠতে চাইছিলাম না কিন্তু মহারাজ উৎসাহ দিয়ে বললেন চলুন ধীরে ধীরে কোথায় কি কি হবে দেখে আসবেন .অগত্যা উঠতেই হলো .সব ঘুরিয়ে দেখালেন কোথায় OT হবে কোথায় changing room হবে .কোথায়patients room কোথায়patient dinning room কোথায়opd কোথায়medicine store কোথায়ramp ;lift কোথায়pathology department ...board meeting room.OT start করার আগে Doctor nurse রা নিজেদের ড্রেস sterilized করবে কোথায় ICU সব --সব. আমি জানতে চাইলাম চোখের জন্যে ICU কেনো ? মহারাজ বললেন কোনো patient এর চোখ যদি infectious হয় .সে থাকবে ICU তে . দুটো OT তে একসাথে জন এর আট জনের operation করা যাবে . উনি বললেন আশা করছি প্রতিদিন 30/40জনের operation সম্ভব হবে .এতো আধুনিক এতো সুন্দর ব্যবস্থা সম্পন্ন হাসপাতাল মাত্র দেড় বছরে বানানো হয়েছে .এই হাসপাতাল এর কথা যত বলি মনে হই কম বলা হচ্ছে . এর পর আমাদের নিয়ে গেলেন গদাধর প্রকল্পের school এ . নতুন বানানো school .marbel ; Tiles দিয়ে বানানো ঝকঝকে class room .smart class (audio visual )চালু করছেন .পাশের ফাঁকা জায়গাই ছোটোদের পার্ক করা হয়েছে . বাচ্ছা দের আনা আর রাত্রে খাবার পর ফেরৎ দিয়ে আসা হয় আশ্রমের বড় গাড়ী করে . এর পর এলাম দাতব্য চিকিৎসালয় এ .সেখানে দূর দূর গ্রাম থেকে চিকিৎসার জন্যে ও ঔষধ নিতে আসে রুগীরা . মাসে একবার (সোমবার )গর্ভবতী মা ও সদ্য প্রসূতি মা রা তাদের বাচ্ছা নিয়ে আসেন check up করাতে ও প্রোটিন ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার নিতে .(Mother and child care program ) মহারাজ আমাদের ওখানে নিয়ে গিয়ে বললেন আজ আপনার নিজেরা Distribute করুন . দেখলাম স্বামীজি র স্বপ্ন যা যা ছিল সেই মতো মহারাজ কাজ করে চলেছেন . আমরা অবাক হয়ে ভাবছি এসব সামলানো মুখের কথা নই .সত্যি অবাক হবার মতোই ব্যাপার . সুদর্শন মহারাজ কে আমার শ্রদ্ধা ভক্তি পূুর্ণ প্রনাম জানিয়ে বলতে চাই মহারাজ আপনি সুস্থ থাকুন আর মা এর কৃপায় এরকম আরো আরো কাজ করে স্বামীজি র কাজ কে এগিয়ে নিয়ে চলুন . পুনশ্চঃ আমি অনেক RKM দেখেছি কিন্তু দেরাদুন এ যা দেখে এলাম শুধু অবাক হয়ে ভেবেছি কতো স্বপ্ন কতো আশা কতো নিরলস পরিশ্রম কতো ধৈর্য্য ধরে হাসি মুখে এই ফসল বোনা হয়েছে . Post By:- Suparna Roy
"নদিয়া(কৃষ্ণনগর) রাজকাহিনী" -----------পৃথ্বীশরাজ কুন্তী গত ২৯ শে এপ্রিল প্রভু নরসিংহ দেবের আবির্ভাব তিথিতে যোগ দিতে হাজির হয়েছিলাম শ্রীচৈতন্যদেব ও পরম গুরু প্রভুপাদের পাদস্পর্শে ধন্য পুণ্যভূমি মায়াপুরে।ঐদিন সন্ধ্যায় ইসকন মন্দির প্রাঙ্গণে বসে ম্যাপ সার্চ করতে গিয়ে হঠাৎই দেখতে পেলাম খুব কাছেই রাজার শহর 'কৃষ্ণনগর' অবস্থিত। ব্যস! আর দেরি করলাম না।পরদিন তথা ৩০ শে এপ্রিল খুব ভোরেই মঙ্গল আরতি দেখেই বন্ধু ঋতম ও ভাই সৌম্যদীপকে নিয়ে ভাগিরথীর স্নিগ্ধ পরিবেশে সকালের নিষ্কলুষ,পবিত্র হাওয়া উপভোগ করতে করতে অজানা-অদেখা ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে চাক্ষুষ করার অনুসন্ধিৎসা নিয়ে রওনা দিলাম কৃষ্ণনগরের উদ্দেশ্যে।রাজবাটীতে গিয়ে বাইরে থেকে রাজবাড়ির অতুলনীয়া স্থাপত্য ও অসাধারণ শিল্পকর্মকে চাক্ষুষ করলাম।আমার অভ্যাসবশত সেখানে গিয়ে স্থানীয় কিছু মানুষ ও রাজদরবারের প্রহরীদের থেকে রাজবাটীর ইতিহাস সম্পর্কে একটু জানার চেষ্টা করলাম।সেই সামান্য অনুসন্ধান থেকে যা কিছু খুঁজে পেলাম তাই আপন মনের মাধুকী মিশিয়ে এই লেখায় উপস্থাপন করার চেষ্টা করলাম। ইতিহাসের তথ্য অনুযায়ী,নদিয়া রাজ বংশের আদিপুরুষ ভবানন্দ মজুমদার মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের দেওয়া ফরমানে নদিয়ার রাজ সিংহাসন অলংকৃত করেন।তাই নদিয়ার এই রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে রাজা ভবানন্দ মজুমদারকেই ধরা হয়।রাজা ভবানন্দ মজুমদারের পৌত্র রাজা রাঘব রায় তার জমিদারির প্রায় মাঝখানে জলংগী নদী তীরবর্তী 'রেউই' নামক গ্রামের চারিদিকে পরিখা খনন করে নদিয়া রাজের রাজধানী স্থাপন করেন।রাজা রাঘব রায়ের পুত্র রাজা রুদ্র রায় 'রেউই'-এর নাম পরিবর্তন করে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ-এর নামানুসারে 'কৃষ্ণনগর' নামকরণ করেন।রাজা রুদ্র রায় তার স্বপ্নের রাজধানীকে সাজিয়ে তুলতে বিশেষভাবে সচেষ্ট হন।সেকারণে তিনি দিল্লীর বাদশাহ জাহাঙ্গীরের কাছ থেকে 'আলাল বক্স' নামক এক প্রখ্যাত স্থপতিকে এনে কৃষ্ণনগর শহরের রাজবাটী সংলগ্ন অঞ্চলে চকবাড়ি,কাছারিবাড়ি,হাতিশালা,আস্তাবল,নহবতখানা নির্মাণ করেন।মুসলিম স্থাপাত্যানুগ চারমিনার সদৃশ তোরণ আজও স্বমহিমায় দণ্ডায়মান হয়ে যে কোনো দর্শকের মনকে জয় করে নেয়। রাজা রুদ্র রায়ের উত্তর পুরুষ রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় (১৭১০খ্রি;–১৭৮২খ্রি;)নদিয়া রাজপরিবারের সর্বশ্রেষ্ঠ মহারাজা হিসাবে পরিগণিত।বাংলা সাহিত্য, বাংলার সংস্কৃতি ও বাঙালি হিন্দুসমাজের ইতিহাসে তাঁর ভূমিকা অবিস্মরণীয়।তিনি বিদ্বানসংস্কৃত ও ফার্সিভাষায় শিক্ষিত, সংগীতরসিক ছিলেন। তীব্র রক্ষণশীল রাজা কৃষ্ণচন্দ্র ছিলেন শাক্তপদাবলিকার রামপ্রসাদ সেন, অন্নদামঙ্গল কাব্য প্রণেতা ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর, বিদূষক গোপাল ভাঁড় প্রমুখ বাংলার প্রবাদপ্রতিম গুণী ও জ্ঞানী ব্যক্তিদের পৃষ্ঠপোষক। অন্নদামঙ্গলকাব্য তারই রাজসভার ফরমাসে রচিত হয়। কৃষ্ণনগরের জগদ্বিখ্যাত মৃৎশিল্পের সূত্রপাত তার সময়ে তারই উদ্যোগে ঘটে।বাংলায় জগদ্ধাত্রী পুজো ও নবদ্বীপ ধামে শাক্তরস প্রচলন কৃষ্ণচন্দ্র রায়েরই কৃতিত্ব।তিনিই ১৭৫৪ খ্রিস্টাব্দে প্রথম দেবীর স্বপ্নাদেশে কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী প্রতিমার পূজার প্রচলন করেন।এর পরের বছর তথা ১৭৫৫ খ্রিস্টাব্দে তার সুহৃদ ইন্দ্রনারায়ন চৌধুরী চন্দননগরে বিশ্ববিশ্রুত জগদ্ধাত্রী পূজার প্রচলন করেন।এছাড়াও রাজবাটী সংলগ্ন স্থানে পংখ অলংকৃত দুর্গাদালান নির্মান করেন।এর বিচিত্র কারুকার্য যেকোনো ব্যক্তির মনকে আচ্ছন্ন করে রাখে।দুর্ভাগ্যবশত নবাব মীর কাশেমের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র। এই দ্বন্দ্বের রেশ ধরেই কৃষ্ণচন্দ্র রায়কে মৃত্যুদণ্ড দেন মীর কাশেম। রাজবাটীর সুবিশাল পূজামণ্ডপ সত্যিই এক দর্শনীয় পুরা সম্পদ।পূজামণ্ডপের থাম,খিলান প্রভৃতিতেও আজও রাজকীয়তার ছাপ স্পষ্ট।বিভিন্ন পূজাপার্বণ ও উৎসব উপলক্ষে যাত্রা,গান,কথকতা,তর্জাগানের আসর বসত রাজবাড়ি সংলগ্ন ময়দানে।কিন্তু অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয় যে,পশ্চিমবঙ্গ-এর অন্যতম প্রাচীন ও বৃহত্তম পূজামণ্ডপ হওয়া সত্ত্বেও সংস্কার ও সঠিক রক্ষণাবেক্ষনের অভাবে এই ঐতিহ্যবাহী পূজামণ্ডপের অবস্থা খুবই করুণ।বলাবাহুল্য,রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ই সর্বপ্রথম সর্বসাধারণের মধ্যে দুর্গোৎসবের প্রচলন করেছিলেন যা আজ সমগ্র বাংলাব্যাপী 'সর্বজনীন' রূপে পরিচিতি লাভ করেছে।এই রাজবংশের আরাধ্য দেবতা হলেন 'বড়োনারায়ন'।দোলপূর্ণিমার পর দ্বিতীয় একাদশী তিথিতে কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির প্রাঙ্গণে এক বিশাল মেলা বসে।মেলাটি 'বারোদোলের মেলা' নামে প্রখ্যাত।বরনারায়ণের সাথে বারোটি কৃষ্ণমূর্তি সমম্বিত রাজবাড়ির মন্দির প্রাঙ্গণ সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় এই সময়।তাই এই মেলা 'বারোদোলের মেলা' নামে পরিচিত।দোলযাত্রা ছাড়াও দুর্গাপূজা,ঝুলন উৎসব,জন্মাষ্টমী উৎসব সহ বিভিন্ন তিথি পূর্বরীতি অনুযায়ী রাজবাড়িতে আজও সাড়ম্বরে পালিত হয়।তখন রাজবাড়ির পুজোর ঠাঁটবাট ছিলই আলাদা৷ হাতিশালে হাতি, ঘোড়াশালে ঘোড়া৷ ছাগবলি, নানা আয়োজনে এলাহি ব্যাপার থাকত৷ ঠাঁটের বাইরে ছিল মানুষের মঙ্গল কামনা৷ যাত্রামঙ্গলে তারই প্রতিফলন ঘটেছে৷ কী ছিল সেই প্রথার বিশেষত্ব? দশমীর দিন পুজো শেষে মহারাজারা ঠাকুরদালান থেকে শুভদৃষ্টি সেরে রাজপ্রাসাদে ঢুকতেন৷ শুভদৃষ্টির তালিকায় ছিল মোষ, ঘোড়া, হাতি, জ্যান্ত মাছ, সদ্য কাটা মাংস, দক্ষিণাবর্ত অগ্নি, গণিকা, ঘি, দই, ধান, আরও কত কী৷ দেবীর সামনে দাঁড়িয়ে মহারাজকে দেখাতেন রাজপুরোহিত৷ বিশ্বাস ছিল, রাজপ্রাসাদে ঢোকার আগে এদের দর্শন রাজ্যের মঙ্গলবার্তা বয়ে আনবে৷ সেই যাত্রামঙ্গল এখনও টিকে আছে৷ কালের নিয়মে তার ভোলবদল হয়েছে৷ রাজতন্ত্র বহুদিনই অতীত।বহু প্রাচীন এই রাজবংশ বহু উত্থান-পতনের মধ্যদিয়ে আজ একবিংশ শতকের দ্বিতীয় দশকে এসে উপনীত হয়েছে।বর্তমানে এই রাজবংশের সিংহভাগ প্রতিনিধিই ব্যবসায়ীক কারণে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকেন।দুর্গা পুজোয় ও দোলযাত্রা উৎসবে সকলে মিলিত হন। আজও রাজবাড়ির প্রতিটি কণায় লুকিয়ে আছে কতশত ইতিহাসের গল্প,আজও রাজবাটীর প্রবেশপথে স্বমহিমায় দণ্ডায়মান তোরণ শত শত বছরের কতশত ইতিহাসের সাক্ষ্য বহনকরে আসছে,আজও প্রবেশদ্বারের মুখে অবস্থিত সুগভীর গড় কিমবা রাজপ্রাসাদ সংলগ্ন আমবাগান ইতিহাস সচেতন মানুষের হৃদয়কে আচ্ছন্ন করে রেখেছে।আজও কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির বুকে তৈরি হয় হাজারো নিত্যনতুন গল্প।কৃষ্ণনগরের ঐতিহ্য-সংস্কৃতি-ইতিহাস সমৃদ্ধ সেইসব গল্প হারমানায় সহস্র আরব্য রজনীকে।এর কোনো অতীত নেই।নিজেই নিজের চিরপ্রবাহিত গল্পকথা। ।।ইতিহাস নয়,এখানেই শেষ হল নদিয়ার কৃষ্ণনগর রাজের কাহিনী।। ★যেহেতু তথ্য সংগৃহীত তাই ত্রুটি মার্জনীয়। ★তথ্য সহায়তাঃ- ১)স্থানীয় মানুষজন, ২)নদীয়ার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস গ্রন্থ। ★চিত্র সহায়তাঃ- ১)পৃথ্বীশরাজ কুন্তী, ২)ঋতম প্রামাণিক, ৩)সৌম্যদীপ পাল। Post By:- Prithishraj Kunti
|
Best Washing MachineCategories
All
Archives
November 2021
Best Autoclean Chimney |