বেড়ানো টা আমার কাছে নেশা. ওটা আর এক প্রেমিকা. কাজ করতে করতে ক্লান্ত হলে,বেড়াতে গিয়ে সব ক্লান্তি নষ্ট করে ফেলি শুধু বেঁচে থাকার আনন্দে. তবে এখন নতুন সঙ্গী হয়েছে আমার বাইক টা.বাইক রাইডিং এর মজা হলো, প্রচন্ড মনোনিবেশ এর জন্য সমস্ত চাপ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে শুধু নষ্ট হয় না, নতুন এনার্জি তৈরি হয় খুব তাড়াতাড়ি. মরণ বাঁচন খেলায় এডভেঞ্চার সপ্নাতীত.
22 সে জুন 2019 এক মনে থাকার দিন আমার. একমাস ধরে কলকাতা থেকে বকখালি গ্রুপ রাইডিং এর রোমাঞ্চ চলছে আমার ভিতরে বাইরে. শেষের দিকে তো অধৈয্য হয়ে কোনো কাজ ই করছিলাম না. জীবন সঙ্গিনীও উত্তেজিত ছিল ভীষণ. আমি একা দূরে রাইডিং এ গেলেও ও কোনোদিন দূরে যায় নি. শুধু বাইকিং এডভেঞ্চার এর ভিডিও দেখেছে. সকাল 5 টাই আমি স্ত্রী আরঅন্য বাইক এ দেবজিৎ দা পাড়া থেকে বেরোলাম গন্তব্যের উদ্দেশে. শিয়ালদা জোড়া গির্জার কাছে নর্থ বাইক team টার মিটিং পয়েন্ট. ভয় শুরু হলো বৃষ্টির জন্য, যদি গাড়ির চাকা স্কিড্ করে !শিয়ালদা এ আরো 15 জন রাইডার একসঙ্গে হয়ে বৃষ্টি থামতে শুরু করলাম রাইড 6 টা 45 এ. এসপ্ল্যানেড হয়ে টালিগঞ্জ ধরে আমরা পৌঁছলাম ডায়মন্ড হারবার রোডে. চওড়া রাস্তা ধরে, গাছের মাঝ খান দিয়ে বেশ স্পীডে গাড়ি চালিয়ে আমরা আমতলা ছাড়িয়ে পৌঁছলাম শিরাকল. এখানে আমাদের মেন গ্রুপের মিটিং পয়েন্ট. 40 টা বাইক আর তিনটে ফোর হোইলার নিয়ে 70 জনের বিশাল টিম. ভাবতে অবাক লাগছে আর গর্ব ও লাগছে যে এতো বড় টিম এর মেম্বার আমি. শিরাকল এ সাউথ স্পেশাল ছেড়া পরোটা আর আলুরদম ডিমসেদ্ধ ব্রেকফাস্ট হলো পেটপুরে. তারপর শুরু হলো স্বপ্নের জার্নি. রাস্তার দুদিকে গাছের সারি, সবুজ ক্ষেত, মাটির বাড়ির মাঝে ফাঁকা রাস্তা ধরে ঘন্টায় 65-70 km বেগে আমরা গাড়ি ছুটিয়ে চলেছি 70 জন. স্পিড, প্রকৃতির মাঝে মনোনিবেশ কাজের ক্লান্তি কাটিয়ে ফুরফুরে করে দিলো মন কে অনায়াসে. অর্ধাঙ্গিনী গান ধরেছেন বাইকের পিছনে. দু হাত এক দুবার ছড়িয়ে মাথা আকাশের কাছে তিনি বিলীন করে দিলেন. ভাবতেও ভালো লাগে, তিনিও চাপ মুক্ত হচ্ছেন. মাঝে মাঝে স্পিড 80 ছাড়িয়ে যাচ্ছে আর হাত হ্যান্ডল থেকে ছেড়ে দিচ্ছি. কি অভূতপূর্ব আনন্দে মন হাল্কা হচ্ছে বলে বোজাতে পারবো না. হটুগঞ্জ থেকে আমরা উঠলাম কুলপি-নামখানা রোডে. দেখতে দেখতে পৌঁছে গেলাম নতুন হাতানিয়া-দোয়ানিয়া ব্রিজে. এর মাঝে দু তিন বার আমরা দাঁড়িয়েছি, কখনো পিছিয়ে পড়া মেম্বার দের খুঁজতে কখনো সিগারেট সুসু র ব্রেক নিতে. ব্রিজ পেরিয়ে 26km গিয়ে আমরা পৌঁছলাম ফ্রেজারগঞ্জ হোটেল দীপক এ.বিশাল বড় প্রপার্টি. সুইমিং পুলে তো পৌঁছেই ঝাঁপ. সঙ্গে ছিলো হার্ড ড্রিঙ্কস এর উন্মাদনা. 18 থেকে 55 বছর বয়স গুলো এই সময় টাতে একই লাগছিল. ইয়ং দের সঙ্গে মিশতে আমার বরাবরই অন্য রকম লাগে. কলেজ লাইফ এ ফিরে যাই. তাই ওয়াটার পোলো তে সেই বয়সেই ফিরে গেলাম. দুপুর তো মাছে ভাতে গেল. বিকালে গেলাম দু km দূরে বকখালি বিচ এ. মাজখানে চড়া তে হাঁটু ডুবিয়ে গেলাম বিচ এর জলের কাছে. এল বৃষ্টি. পলুটেড নয় বলে সমুদ্রের বৃষ্টিতে ভিজলাম জলে পা ডুবিয়ে. স্কুইড, লোটে, বাস পাতা মাছ ভাজা না খেলে বকখালি seabeach এ সন্ধ্যা টা অপূর্ন থেকে যেত. তারপরে রাত একটা অবধি হোটেলের ছাদে চললো তুমুল 29 খেলা. সঙ্গে বিয়ার এর তুফানী চুমুক. সকালে সকলে গেলো হেনরি আইল্যান্ড. নুইয়ে পড়া গাছের মাজখানে রাস্তা যেন ওক জঙ্গলের কথা আবার মনে করিয়ে দিলো. সুন্দন seabeach, মাছ চাষ, আর ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন সকাল টা অভিনব রোমান্টিক করে তুললো.
এবার নতুন খেলা. 12 টা নাগাদ গাড়ি নিয়ে আমরা রওনা হলাম বাড়ির উদ্দেশে. পথে হাতানিয়া-দোয়ানিয়ার নতুন ব্রিজে চললো ফটো শুট আর হেলমেট পরে ডান্স. সে এক অপূর্ব অভিজ্ঞতা. তারপর নামখানা তে মোটাদার হোটেল এ দ্বিপ্রহরের ভোজন. এল তুমুল বৃষ্টি. ভয়েতে আমার বুক শুকিয়ে গেলো, যখন শুনলাম এই বৃষ্টিতেই গাড়ি নিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে. আবারো 60-65km স্পীডে গাড়ি চললো. আধ ঘন্টা গাড়ি চালানোর পরে আত্মবিশ্বাস ফিরে পেলাম. সময় টা মনে হচ্ছিলো স্বর্গের রাস্তা দিয়ে এগিয়ে চলেছি. অকল্পনীয় আনন্দের চ্যালেঞ্জ. রাস্তা শেষ করতে ইচ্ছে করছিলো না. বৃষ্টির শেষে পৌঁছলাম জোকা. চা সিগারেটের সঙ্গে ব্রেকের আড্ডা জমিয়ে দিলো কিছুক্ষন. এরপর বাড়ির পথে পা বাড়ানো. 5:30 টার সময় বাড়ি পৌঁছলাম.
বাঙালি সংস্কৃতিতে গ্রুপ বাইক রাইডিং এতটা জনপ্রিয় নয়. কিন্তু যে ঘ্রান আমি গ্রূপে পেয়েছি তা অভূতপূর্ব. অসম্ভব এক এডভেঞ্চার মন কে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে জীবনের নতুন ছন্দে. ঘুমের মধ্যে বার বার বলেছি, এ পথ যেন না শেষ হয় আমৃত্যু. বেড়াতে গেলে গ্ৰুপ রাইডিং এর মজার কোনো তুলনা হয় না. ধন্যবাদ L2RnD গ্রুপ.
0 Comments
ঘুম স্টেশন থেকে দেড় দু কিলোমিটার দূরে, মিরিকের দিকের রাস্তায় এই গ্রাম. এর আগে এর বিবরণ কোথাও পাইনি. ছবির মতো গ্রাম ছবি দেখার জন্যই ছেড়ে দিলাম. হোমস্টে তে না খাবার খেলে, হেঁটে ঘুম আসতে হবে. অভূতপূর্ব আবহাওয়ায় যারা শুধু বসে থেকে রেস্ট নিতে চান, এ জায়গা তাঁদের জন্যই. 3 থেকে 5 দিনে রেস্ট হয়ে যাবে. তবে নিস্তব্ধে একা লাগতে পারে, তাই একা যাবেন না. আবার ইনোভা বুকড হয়ে অনেকে যাবেন না. ভিউ এতো সুন্দর যে, রোমান্টিজম এর নতুন সংজ্ঞা তৈরি করতে পারবেন. আর ঘুম স্টেশন এর কাছের বুদ্ধিস্ট রেস্টুরেন্ট থেকে বীফ, পর্ক, চাউমিন, থুকপা, মোমো, সসেজ, ব্ল্যাক টি, ফিলেই, নেপালি রাইস থালি, খেতে ভুললে বড় ভুল করবেন. হোমস্টের এড্রেস দিয়ে দিলাম. আমি চুপচাপ একা গেছিলাম, অল্প নেশা করবো বলে. এমন জায়গা আগে পাইনি. পাহাড়ের রানী. প্রথম পৌঁছেই সেটা মনে হয়েছিল বিকাল 3টা তে. ঘুম স্টেশন থেকে যখন নিচের দিকে হেঁটে হোমস্টে যাচ্ছিলাম, মাঝে মাঝেই থমকে দূরের পাহাড়ী ঢেউ দেখে আনন্দে দু পাঁচ মিনিট দাঁড়িয়ে যাচ্ছিলাম. হোমস্টে পৌঁছে কমপ্লিমেন্টারি ব্ল্যাক টি খেয়ে একটু রেস্ট নিলাম. খেয়েই ঢুকেছিলাম, তাই দেরি করে বেরোলাম. ঘুম স্টেশন এলাম. পথে পাহাড়ের সবুজ ঢেউ, সাদা মেঘের ডানা মেলা পাখনা স্বপ্নের ভিতরে আমাকে ঢুকিয়ে দিলো অনায়াসে. ঘুম স্টেশন এ SBI, AXIS, আরো দুটো atm দেখলাম. ওষুধের dokan, আরো অনেক দোকান আর কয়েকটা রেস্টুরেন্ট পেলাম. নেপালী, হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, এবং ভেজিটেরিয়ান রেস্টুরেন্ট গুলোর মধ্যে বুদ্ধিস্ট রেস্টুরেন্ট বেস্ট. কি স্বাদ. সকালে মোমো, ব্ল্যাক দার্জিলিং টি তে অসাধারণ ব্রেকফাস্ট. দুপুরে নেপালী থালি, বিকালে চা, ফিলে বা সসেজ, রাতে থুকপা বা চাউমিন, অসাধারণ ভোজন. তবে বাঙালি খাবার খেতে হলে আট কিলোমিটার দূরে দার্জিলিং যেতে হবে. ফিরছিলাম যখন, রাতের আলোতে সমস্ত পাহাড় গুলো জোনাকির মতো আলোর রোশনাই তে ভোরে উঠেছে. অন্ধকারে পাহাড়ের রাস্তার ধারে, খাদের পাশে বসে পড়লাম. দুটো সিগারেট শেষ করে যখন উঠলাম, দৃশ্য সুখে চোখ ভিজে গেছে. ফিরে কম্বল চাপা দিয়ে ঘুম. সকালে হোমস্টের ছাদে নৈসর্গিক শোভা. কতক্ষন চুপচাপ বসে ছিলাম জানিনা. ব্রেকফাস্ট করে উপরের দিকে হেঁটে গেলাম. জোড়বাংলো ক্যান্টনমেন্ট এর রাস্তায় বড় বড় পাইন গাছের জঙ্গলে রাস্তার ধারে বসে পড়লাম. সবুজ গাছ, সাদা মেঘ পাগল করে দিলো. দুপুরের খাবার খেতে দেরি হলো. বিকালে দার্জিলিং mall এ গেলাম. আজ হোমস্টে তে ব্রেকফাস্ট করে লাঞ্চ অবধি ছাদে বসে রইলাম. ঘুমে গিয়ে লাঞ্চ করলাম. রাস্তাতে দাঁড়াচ্ছি বসছি, শুধুই অপরূপ দৃশ্য. লাঞ্চ সেরে রাস্তার ধারে বসে মানুষ জন, গাড়ি দেখলাম. স্নাক্স সেরে ডিনার নিয়ে হোমস্টে তে ফিরলাম. আজ ঠিক করে ছিলাম নিচের দিকে নামবো. খাবার খেয়ে লাঞ্চ নিয়ে নিচের দিকে হাঁটলাম. এক কিলোমিটার হাঁটতে দু ঘন্টা লেগে গেল. তারপর এক মন্দিরে গিয়ে বসলাম পাহাড়ের মাথায়. একদিকে অজানা পাহাড়ের সারি, অন্যদিকে কাঞ্চনজঙ্ঘা আর দার্জিলিং শহর. তিন ঘন্টা কেটে গেলো. এরপর ফিরলাম. পরের দিন গুলো শুধুই হারিয়ে যাবার পালা. 5 দিন স্বর্গে থেকে বাড়ি ফিরলাম. ফিরেই অর্ধাঙ্গিনী কে বললাম ওয়েস্টবেঙ্গল এর হিল স্টেশন এ বাড়ি করবো. রিটায়ারমেন্ট এর পর ওখানেই কাটাবো. এখনো স্বর্গের স্বপ্ন থেকে ফিরে আসিনি. গেলে ঠকবেন না.
শ্রীলঙ্কা ভ্রমণ শেষ করে আমরা যাত্রা করলাম মালদ্বীপ। এখানে আমরা দুটো দ্বীপে ঘুরবো। প্রথম "Ukulhas" ও দ্বিতীয় "Maafushi"।
মালদ্বীপ বা মালদ্বীপ প্রজাতন্ত্র ভারত মহাসাগরের একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। এর রাজধানীর নাম মালে। দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক জোট সার্ক এর সদস্য। অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি এ দেশ বিশ্বের সবচেয়ে নিচু দেশ। পর্যটনের জন্য বিখ্যাত এই দেশ এক হাজার দুই শ’রও বেশি ছোট ছোট দ্বীপ নিয়ে গঠিত। আমরা শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে এসে পৌঁছলাম মালে এয়ারপোর্টে। উকুলহাসে যে ভিলাতে আমাদের বুকিং ছিল তারা আগেই জানিয়ে দিয়েছিল যে তারা কোন কাউন্টারে আমাদের জন্য অপেক্ষা করবে। এয়ারপোর্ট থেকে বেরলেই মালে বোট জেটি। ভিলার রিপ্রেজেন্টেটিভ আমাদের স্বাদর অভ্যর্থনা করে নিয়ে গেল স্পীড বোটে, যেটাতে করে আমাদের প্রায় দেড় ঘন্টা ভারত মহাসাগরের ওপর মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে করতে পৌঁছলাম Ukulhas দ্বীপে। Ukulhas তার পরিচ্ছন্নতা, ভাল রক্ষণাবেক্ষণ,বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সিস্টেমের জন্য সুপরিচিত এবং Republic of Maldives ইতিহাসে প্রথম পদ্ধতিগতভাবে পরিচালিত দ্বীপ হিসাবে পরিচিত হয়। Ukulhas প্রতি বছর বিভিন্ন পরিস্কার এবং রোপণ প্রোগ্রাম পরিচালনা করে এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র এবং জীববৈচিত্র্য সম্পর্কিত বিভিন্ন সচেতনতা প্রোগ্রাম আয়োজন করে। মালদ্বীপ প্রজাতন্ত্রের পরিবেশগত ভূমিকা মডেল দ্বীপ হিসাবে স্বীকৃত হওয়ার কারণে, ২018 সালে দ্বীপের পরিবেশ রক্ষা ও সংরক্ষণের জন্য অসামান্য পরিষেবাগুলির জন্য Ukulhas গ্রীন লিফ পুরস্কার অর্জন করেছিলেন। এই দ্বীপের আয়তন ১.০২৫কিমি * ০.২২৫কিমি এবং জনসংখ্যা বিদেশি সমেত ১০০০ এর একটু বেশি। দ্বীপের বীচ একেবারে সাদা বালিতে ঢাকা।
খুব কম ট্যুরিস্টের মুখেই শোনা যায় মালদ্বীপ দ্বীপপুঞ্জের মধ্যে উকুলহাস দ্বীপের কথা। কারণ এখানে ভারতীয় ট্যুরিস্টদের আনাগোনা খুবই নামমাত্র। আমরা এখানে যে ভিলাতে উঠেছিলাম সেখানে কর্মচারীদের মধ্যে বাংলাদেশের ছেলেদের সংখ্যাই বেশি। আমাদেরও বেশ ভালো লাগলো নিজেদের ভাষায় কথা বলতে পারায়, তবে ওদের যে আমাদের চেয়ে বেশি ভালো লেগেছে সেটা বুঝতে পারলাম আমাদের বিদায় পর্বে ওদের চোখগুলো চিকচিক করে ওখায়। বিদেশে একটি ছোট দ্বীপে মাত্র দু'দিনের মধ্যে এত আন্তরিকতা আমরাও বুঝে উঠতে পারিনি। ওরা বহুদিন পরে নিজেদের ভাষা জানা ট্যুরিস্ট পেয়ে ভীষনভাবে খুশী হয়েছিল।
যাক ওখান থেকে আমরা এলাম বহু পরিচিত "মাফুসী" দ্বীপে। এটা অনেকটাই শহরের মত। এখানে সব দেশের লোকেরা আসে, ভারতীয় ট্যুরিস্টও অনেক। উকুলহাসের য়ত শান্ত নির্জন একটা দ্বীপ থেকে যেন এসে পড়লাম পুরীর স্বর্গদ্বারে। মাফুসী দ্বীপ মালদ্বীপের বৃহত্তম দ্বীপপুঞ্জ। এটা অবশ্যই মালদ্বীপের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্থানীয় দ্বীপ। এটি ম্যাল থেকে 27 কিলোমিটার দূরে কাফু এটল এ অবস্থিত। আকার 1270 * 265 মি। দ্বীপ নিজেই একটি elongated ফর্ম আছে। দ্বীপে 2700 মানুষ বাস। ইহা সত্যিই আশ্চর্যজনক যে কিভাবে এই ক্ষুদ্র দ্বীপে এত মানুষ বাস করতে পারে, ঠিক সেইভাবেই অন্যান্য স্থানীয় দ্বীপগুলিতেও। কিন্তু কখনই মনে হয়না যে দ্বীপগুলোয় অধিক জনসংখ্যা।
আমাদের বিদেশ ভ্রমণের পর্ব এবার শেষ করছি। শুরু করেছিলাম শ্রীলঙ্কা দিয়ে আর শেষ করছি মালদ্বীপ ঘুরে। এই প্রথম সাহস করে প্রায় ১৫ দিনের বিদেশ ভ্রমণের মানে দুটি দেশের প্রোগ্রাম করলাম তাই একটু চিন্তায় ছিলাম। কিন্তু ভীষণ সুন্দর ভ্রমণ অভিজ্ঞতা নিয়ে আমাদের ভ্রমণ শেষ করছি।
আজ আমাদের দ্বিতীয় ও শেষ দিন "মাফুসী" দ্বীপে। এখানে অনেক বড় ছোট হোটেল/রিসর্ট আছে। বেশ শহরের মত। প্রচুর ট্যুরিস্টদের আনাগোনা এখানে। খাওয়া দাওয়ার রেস্টুরেন্টের অনেক অপশন আছে। বেশীরভাগ হোটেল/রিসর্টে কমপ্লিমেন্টারী ব্রেকফাস্ট থাকে। এখানে USD না ভাঙ্গালেও চলে। স্পীড বোটে মালে এয়ারপোর্ট থেকে দুরত্ব প্রায় ৩০-৩৫ মিনিট। কোন সিম কার্ড নেওয়ার দরকার পড়ে না। স্পীড বোট, হোটেল ও রেস্টুরেন্ট সব জায়গায় WiFi পাওয়া যায়।
অনেকদিনের ইচ্ছে কোন এক রাজবাড়ীতে কয়েকদিন এসে থাকবো….খোঁজাখুজির পর ইটাচূনা রাজরাড়ীর সন্ধান পেলাম। যথারীতি কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করলাম এবং ওদের কথামতো দুটো ঘর বুক করলাম। আমরা পাশাপাশি ঘর পেলাম- বড়মা ও মেজমা.... ওদের ঘরের নামকরন দেখে বেশ মজা লেগেছিল। পরে অবশ্য খোঁজ নিয়ে জেনেছিলাম অতীতে যে বা যারা যে ঘরে থাকতো সেইহিসেবে নাম রেখেছে। বেশ একটু রোমাঞ্চকর ব্যাপার হাজার হউক ৩০০ বছরের পুরানো রাজবাড়ী কেমন যেন একটা গা ছমছম ভাব।
আমরা চারজন দুই রাত্রির (২১/২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮)জন্য বুক করেছিলাম। যতটুকু আশা নিয়ে গিয়েছিলাম তার তুলনায় অনেক বেশিই পেয়েছিলাম। যাদের যাবার ইচ্ছে চলে যেতে পারেন আমার মনেহয় নিরাশ হবেন না। তবে ঘর অনেক আগে থেকে বুক করার চেষ্টা করবেন। ঘর পাওয়া মনেহয় একটু কঠিন হয়। খরচ ও সাধ্যের মধ্যে আর বেশী দূরও নয় ....গ্রাম - ইটাচূনা,পুলিস ষ্টেশন পান্ডুয়া, জিলা হুগলী। ফটোর সাথে আরো দুটো ফটো কপি দিয়েছি যা আপনাদের যত জিজ্ঞাসার সব উওর পেয়ে যাবেন আশাকরি।
এর আগে অনেক বন্ধু ইটাচুনা রাজবাড়ী নিয়ে পোস্টিং করেছেন তবু আমি আমার কিছু ছবি ও অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম। আজ সকালে হাওড়া স্টেশন থেকে হাওড়া বর্ধমান লোকাল ধরে খন্যান স্টেশন নেমে টোটো করে ১০ মিনিটের পথ ইটাচুনা রাজবাড়ী এলাম। প্রথমেই আমাদের অভ্যর্থনা করা হল একটা সুন্দর পানীয় দিয়ে। আমরা ১২ জন সদস্য ছিলাম, যার জন্য ৬ বেডের "বিলাস মঞ্জরী", ৪ বেডের "জ্যেঠা মশাই ও কাকা বাবু" এবং ২ বেডের মাটির ঘর "অপরাজিতা" বুক করেছিলাম। খাওয়া দাওয়ার কোনো তুলনা নেই। এটা হোটেল নয়, তাদের অতিথি হিসেবে আমাদের আপ্যায়ন করা হল।
আজ আমি যে ভ্রমণ কাহিনী শুরু করছি, সেই জায়গাটার নাম অনেকেই শুনেছেন, আবার অনেকের কাছে এটা OFF-BEAT. কোন জায়গা? ওড়িশার ভিতরকণিকা। সময়টা ছিল ২৬ থেকে ২৯ শে ডিসেম্বর ২০০৮।আমাদের এই ভ্রমণটি ছিল ৪দিন ৩ রাতের। এবং সেই আমার ডায়েরি থেকে। তবে একটা কথা বলি, এই ভ্রমন কাহিনীটি আমি ছোট ছোট পর্বে ভাগ করেছি, যাতে পড়তে সময় লাগবে খুব অল্প এবং অবশ্যই ভালো লাগবে ......
আমাদেরই লোকাল একজন ট্যুর অপারেটর এর উদ্যোগে হাওড়া থেকে ১ঃ৪০ টার হাওড়া-ভূবণেশ্বর জন শতাবদি এক্সপ্রেস ধড়ার জন্য ১২ জনের একটি দল টাটা সুমতে করে ঠিক একটায় গিয়ে হাজির হলাম। ট্রেন ছাড়লো ঠিক সময়ে। প্রথম দিনঃ-হাওড়া থেকে ছাড়ার পর ট্রেনের প্রথম দাঁড়াল খড়গপুরে। তারপর আরও কয়েকটি station যাওয়ার পর পড়ল কেলেঘাই নদী, যেটা কয়েকদিন আগে বন্যায় ভেসে গিয়েছিল। এবার ট্রেন ঢুকে পড়ল ওড়িশাতে। ওড়িশাতে ঢুকে প্রথম দাঁড়াল ‘জলেশ্বর’ station এ। সিগন্যাল না পাওয়ার জন্য কয়েকটি station এ দাঁড়ালেও শেষে চলে এলাম station বালাসর এ। না এটা আমাদের গন্তব্য station নয়, আমরা চলে এলাম ‘ভদ্রক’ station এ। এখানে সবাই নেমে পড়ার পর আমদের ট্যুর operator সুমন দা গেল গাড়ী ঠিক করতে। আমরা ঠিক সন্ধ্যা ৬ঃ৩০ টা নাগাদ station থেকে আমাদের গন্তব্য ‘চাঁদবালি’। চাঁদবালি থেকে ভিতরকনিকা কাছে পরে। ভদ্রক থেকে চাঁদবালির দূরত্ব ৫৩ কিমি। সময় লাগে প্রায় দেড় ঘণ্টার কাছাকাছি। চাঁদবালি যেতে যেতে আমরা ইছাপুর নামক একটি জায়গায় থামলাম, টিফিন করার জন্য। চা ও ফুলকপি দিয়ে টিফিন করে রওনা দিলাম চাঁদবালির উদ্দেশে। ট্রেনে আসার পথে সুমন দা আমাদের একটা বাক্সে কমলালেবু, মোয়া ও চিড়ে ভাজার প্যাকেট এনে দিল। একজন কাকিমা বাড়ী থেকে সকলের জন্য লুচি ও আলুর দম করে এনেছিলেন। আমি বাড়ী থেকে পারোটা আর আলুর দম দিয়ে দিয়েছিল, তাই দিয়ে সকলে মিলে ভাগযোগ করে খাওয়া হয়েছিল। আমরা চাঁদবালি এসে পউছালাম রাত ৮ঃ৩০ টায়। এরপর হাত মুখ ধুয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম করে নিলাম। আমরা উঠেছিলাম বৈতরণী নদীর একদম ধারে ‘সুরয গেস্ট হাউস’এ। রাত ১০ঃ৩০ টা নাগাদ আমরা রুটির সঙ্গে মাংস সহযোগে রাতের খাবার খেলাম। সঙ্গে ছিল আলু ভাজা ও আলু ফুলকপির তরকারি। এরপর ১১ টা নাগাদ শোয়া হল, সঙ্গে শেষ হল ২৬ শে ডিসেম্বরের যাত্রা পথ।
কলকাতার আশুতোষ চৌধুরী অ্যাভিনিউ, বালিগঞ্জ ফাঁড়ির কাছে অবস্থিত মন্দিরটির নির্মাণকার্য ১৯৭০ সালে শুরু হয়। প্রায় ২৬ বছর সময় লাগে ৪৪ কাঠা জায়গা জুড়ে সম্পূর্ণ সাদা মার্বেল পাথর দিয়ে তৈরী এই মন্দিরের নির্মাণকার্য সম্পূর্ণ হতে। মূল মন্দিরে রয়েছে রাধাকৃষ্ণের পূর্ণাবয়ব মূর্তি। ১৯৯৬ সালে স্বামী চিদানন্দ মহারাজের হাতে রাধাকৃষ্ণের এই মন্দিরে প্রাণ প্রতিষ্ঠিত হয়। রাধাকৃষ্ণের মূর্তির দু'পাশে রয়েছে দুর্গা ও ধ্যানমগ্ন শিবের মূর্তি। মন্দিরপ্রাঙ্গণে এছাড়াও রয়েছে গণেশ ও হনুমান মূর্তি। মন্দিরের গায়ে রয়েছে অপরূপ সব কারুকার্য।
মন্দির খোলা থাকার সময়: ----------------------------------- সকাল ৫.৩০ থেকে ১১ টা বিকেল ৪.৩০ থেকে রাত ৯ টা পথনির্দেশ:- ------------------------------- গড়িয়াহাট ও পার্ক সার্কাস কলকাতার দুটি গুরুত্ত্বপূর্ণ জংশন। এই দুই জংশনের মাঝে বালিগঞ্জ ফাঁড়ির কাছে এই মন্দির। কলকাতার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সড়কপথে এখানে সহজেই আসা যায়।
নদীয়া জেলার ধানতলা থানার অন্তর্গত এবং রানাঘাট-বনগাঁ রেলপথের গাংনাপুর স্টেশন থেকে আনুমানিক দশ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত একটি সুপ্রাচীন ও একদা সমৃদ্ধ জনপদ হল আঁইশমালি। বহুকাল পূর্বে এখানে প্রসিদ্ধ পন্ডিত সমাজের বসবাস ছিল এবং তাঁদের বেশিরভাগ ছিলেন নদীয়ার রাজাদের বেতনভোগী। মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের সময়ে, সংস্কৃত চর্চ্চা ও শাস্ত্র চর্চ্চার অন্যতম প্রধান কেন্দ্রে পরিণত হয় এই আঁইশমালি গ্রামটি। এখানকার গোপালচন্দ্র সমাজপতি'র সঙ্গে পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়ের জ্যেষ্ঠ কন্যা হেমলতা'র বিবাহ হয়, সেই সূত্রে বিদ্যাসাগর কয়েকবার আঁইশমালি গ্রামে তাঁর মেয়ে-জামাইয়ের বাড়িতে এসেছিলেন। অতীতের সেই সমৃদ্ধির চিহ্ন স্বরূপ আজও এখানে বেশ কিছু জীর্ণ অট্টালিকা, মন্দির ইত্যাদি দেখতে পাওয়া যায়।
আঁইশমালি বাজারের কাছে আনুমানিক তিরিশ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট দুটি পঞ্চরত্ন শিবমন্দির কালের করাল ভ্রুকুটি উপেক্ষা করে আজও অক্ষত অবস্থায় রয়েছে। এর মধ্যে একটি মন্দির অপেক্ষাকৃত প্রাচীন। পূর্বমুখী মন্দিরটির প্রবেশপথের ওপরে একটি পোড়ামাটির প্রতিষ্ঠা ফলক ছিল, যাতে খোদিত ছিল: "শকাব্দাঃ ১৭৫৯ ৩১ বৈশাখ" অর্থাৎ, মন্দিরটি ১৮৩৭ খ্রীষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়। অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে প্রতিষ্ঠা ফলকটি বর্তমানে নিখোঁজ হয়েছে। জনশ্রুতি অনুযায়ী এই মন্দিরটি এখানকার মুখোপাধ্যায় বংশের শ্রী যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত। পঞ্চরত্ন মন্দিরটির মাঝের চূড়াটি দেউল শ্রেণীর। মন্দিরে টেরাকোটার অলঙ্করণ না থাকলেও কিছু পঙ্খের কাজ ও ফুলকারি নকশা দেখা যায়। গর্ভগৃহে কষ্টিপাথরে নির্মিত শিবলিঙ্গ নিত্য পূজিত। একটি বিশাল বটগাছ মন্দিরটির ওপর থেকে শিকড় বিস্তৃত করেছে এবং মন্দিরটিকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরেছে। সাধারণত এই পরিস্থিতিতে কোন মন্দিরই বেশিদিন টিঁকে থাকতে পারে না, অতএব এই মন্দিরটিও যে খুব শীঘ্রই বিলুপ্ত হতে চলেছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আঁইশমালি গ্রামের প্রখ্যাত মুখোপাধ্যায় বংশের ভদ্রাসনের ভগ্নাবশেষ মন্দিরটির পাশেই অবস্থিত। সুবৃহৎ অট্টালিকাটির অধিকাংশই বর্তমানে বিনষ্ট হলেও পাঁচটি খিলান বিশিষ্ট ঠাকুর দালান সহ কিছুটা অংশ আজও অক্ষত অবস্থায় রয়েছে। মুখোপাধ্যায় বংশের উত্তরসূরীরা আজও এখানে বসবাস করেন এবং জরাজীর্ণ মন্দিরটির দেখভাল এবং মন্দির স্থিত শিবলিঙ্গের পূজার ব্যবস্থাও তারাই করে থাকেন। Best Home Appliances (As per Top reviews from India)
তখনও ভোরের আলো ফোটেনি ভালো করে। আধো আলো আধো অন্ধকার। বাপি এসে ডাক দিলো "দাদা রেডি? " আমরা তৈরিই ছিলাম, বেড়িয়ে এলাম টেন্টের বাইরে। বাপির পেছন পেছন মিনিট পাঁচেক হেঁটে চড়ে বসলাম ওর ছোট্ট ডিঙি নৌকায়। সেই ভোরের বেলা নিঃস্তব্ধতা ভেঙে আমাদের নৌকায় দাঁড় টানার ছলাৎ ছলাৎ শব্দ। নৌকাগুলো এমনই, মনে হয় জলের উপরেই বসে আছি। ইচ্ছে হলেই হাত দিয়ে জল ছুঁয়ে দেওয়া যায়। ভোরের আকাশ, নদীর জল সবই তখন এক অদ্ভুত রকমের সাদাটে নীল। ভোরের বাতাস এসে মুখে চোখে লাগছে। যেন কতদিন পরে এই সুখস্পর্শ!
উড়িষ্যার সাতকোশিয়া টাইগার রিজার্ভের টিকরপাড়া রেঞ্জে গেছি। পাশেই লবঙ্গীর জঙ্গল। সাতকোশিয়া মানে সাত ক্রোশ, চোদ্দো মাইল, প্রায় বাইশ কিলোমিটার। মহানদীর এই চোদ্দো মাইল এপারে ওপারে আদিম জংলী পাহাড়। টুরিস্ট খুব কম যায় বলে এখনো সেই আদিমতা রয়ে গেছে। কত জায়গায় মানুষের পদচিহ্নই পরেনি। সারাদিন ডিঙি নৌকায় ভেসে বেড়াও আর যে কোনো পাহাড় পছন্দ করে মহানদীর নদীখাতের বিস্তীর্ণ বালুচরে নৌকা ভেড়াও! সেখানে জঙ্গলের গভীরে এমন কিছু লুকিয়ে থাকা পুকুর আছে, দেখলেই মনে হয় এখানে বাঘ জল খেতে আসে!
সূর্যাস্তের সময় রাঙা হয়ে ওঠে মহানদীর জল। ওপারের পাহাড়ের পিছনে তখন সূর্য্য ডোবে। আর সূর্য্য ডুবে গেলে সবুজ পাহাড়গুলো নীলচে হয়ে ওঠে আবার। তারপর অন্ধকার নেমে আসে মহানদীর বুকে। জঙ্গলে পাহাড়ে।
সেদিন ছিল পুর্নিমার চাঁদ। অন্ধকার নামার আগেই চাঁদ উঠে গেছে আকাশে। তারপর অন্ধকার গভীর হতেই চাঁদের আলো ঠিকরে পরলো নদীর জলে। সমস্ত আলো নিভিয়ে দেওয়ায় এক আশ্চর্যরূপ খুলেছে জঙ্গলের। জ্যোৎস্নায় ধুয়ে যাচ্ছে রাতের অন্ধকার। নদীর ওপারের পাহাড়্গুলো কেমন যেন মায়াবী হয়ে ওঠে তখন। টেন্টের বাইরে বসে আমি দেখি রাতের জল-জঙ্গল। সাতকোশিয়া টাইগার রিজার্ভ প্রায় ১০০০ স্কোয়ার কিলোমিটার বিস্তৃত, তার মধ্যে প্রায় ৫০০ স্কোয়ার কিলোমিটার হল কোর এরিয়া। মূলত শাল, শিশু, অর্জুন, হিঞ্জলা, মহুয়া, চম্পার জঙ্গল এই টিকরপাড়া। মাইলের পর মাইল জঙ্গল, পাহাড় আর তার মধ্যে দিয়ে বয়ে গেছে মহানদী। হাতী, বাঘ, সম্বর, স্পটেড ডিয়ার, চৌশিঙা, বার্কিং ডিয়ার, লেপার্ড এদের বাসভূমি এই জঙ্গল। কলকাতা থেকে ডাইরেক্ট ট্রেনে আঙ্গুল স্টেশনে নেমে গাড়ি নিয়ে ঘন্টা দেড়েক বা দুয়েক লাগে টিকরপাড়ার ইকো টুরিজম ক্যাম্পে পৌঁছাতে। কলকাতা থেকে আঙ্গুলের ডাইরেক্ট ট্রেন না পেলে কটক স্টেশনে নেমে বাস বা ট্রেনে আঙ্গুল এসেও যাওয়া যায় টিকরপাড়ায়। ওড়িশা ফরেস্ট ডিপার্টমেন্ট এর ইকো টুরিজম ক্যাম্পের বুকিং করতে লগ ইন করুনঃ www.ecotourodisha.com এই সাইটে। কয়েকটি ছবি দিলাম সেই টিকরপাড়া ভ্রমণের। অক্টোবর' ২০১৮।
মায়াপুর আমাদের কাছে অতিপরিচিত একটি স্থান। কমবেশি আমরা প্রায় সকলেই মায়াপুর ঘুরে এসেছি।কিন্তু এই মায়াপুরের খুব কাছেই একটা ইতিহাস প্রসিদ্ধ স্থান আছে যা আমরা অনেকেই জানিনা। বল্লাল ঢিপি নদিয়ার অন্যতম প্রত্নস্থল। এই ঢিপির নিচে বল্লাল সেনের আমলে নির্মিত প্রাসাদ ছিল বলে অনুমান করা হয়। তবে বর্তমানে এটি সংরক্ষিত করা হয়েছে। ঢিপিটি সবুজ ঘাসে মোড়া, আর চারিদিক প্রাচীর দিয়ে ঘেরা রয়েছে। সেন বংশের রাজা বল্লাল সেনের নামানুসারে এই ঢিপিটির নামকরণ করা হয়েছিল। এটি উচ্চতায় পঁচিশ থেকে ত্রিশ ফুট এবং চওড়ায় প্রায় চারশো ফুট।সেন রাজাদের রাজা বল্লাল সেনের নামাঙ্কিত এই বৃহদাকার ঢিপিতে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব ১৯৮২-৮৩ এবং ১৯৮৮-৮৯ খ্রীষ্টাব্দের মধ্যে দুই বার খননকার্য পরিচালনা করে।খননের ফলে এখানে আবিষ্কৃত হয়েছে বিস্তৃত প্রাঙ্গনের মধ্যে অবস্থিত বৃহদায়তন ইটের ইমারত যার চারিদিকে ছিল উচ্চ প্রাচীর। খননে প্রাপ্ত প্রত্নবস্তুগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল পোড়ামাটির মানুষ, জীবজন্তুর মূর্তি, তামা ও লোহার তৈরি নানান জিনিসপত্র। প্রাপ্ত বস্তুগুলি এখান থেকে সরিয়ে সংরক্ষণের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখন শুধু ধ্বংস প্রাপ্ত ইমারতটিই চোখে পড়ে। বর্তমানে এটি খুবই অবহেলিত অবস্থায় আছে। নির্মানকার্য দেখলে অবাক হয়ে যেতে হয়। এটি দ্বাদশ শতকের তৈরি বলে মনে করা হয়। এটা আসলে কী তা নিয়েও বিপুল মতোভেদ আছে কেউ কেউ এটাকে শিব মন্দির, কেউ রাজপ্রাসাদ, কেউ পাল আমলের বৌদ্ধ বিহারও বলেছেন।তবে এই বল্লাল ঢিপি প্রাচীন কালে যাই হয়ে থাকুকনা কেন এর নির্মাণশৈলী যে আমাদের অবাক করবে তাতে সন্দেহ নেই।
|
Best Washing MachineCategories
All
Archives
November 2021
Best Autoclean Chimney |