ঘুম স্টেশন থেকে দেড় দু কিলোমিটার দূরে, মিরিকের দিকের রাস্তায় এই গ্রাম. এর আগে এর বিবরণ কোথাও পাইনি. ছবির মতো গ্রাম ছবি দেখার জন্যই ছেড়ে দিলাম. হোমস্টে তে না খাবার খেলে, হেঁটে ঘুম আসতে হবে. অভূতপূর্ব আবহাওয়ায় যারা শুধু বসে থেকে রেস্ট নিতে চান, এ জায়গা তাঁদের জন্যই. 3 থেকে 5 দিনে রেস্ট হয়ে যাবে. তবে নিস্তব্ধে একা লাগতে পারে, তাই একা যাবেন না. আবার ইনোভা বুকড হয়ে অনেকে যাবেন না. ভিউ এতো সুন্দর যে, রোমান্টিজম এর নতুন সংজ্ঞা তৈরি করতে পারবেন. আর ঘুম স্টেশন এর কাছের বুদ্ধিস্ট রেস্টুরেন্ট থেকে বীফ, পর্ক, চাউমিন, থুকপা, মোমো, সসেজ, ব্ল্যাক টি, ফিলেই, নেপালি রাইস থালি, খেতে ভুললে বড় ভুল করবেন. হোমস্টের এড্রেস দিয়ে দিলাম. আমি চুপচাপ একা গেছিলাম, অল্প নেশা করবো বলে. এমন জায়গা আগে পাইনি. পাহাড়ের রানী. প্রথম পৌঁছেই সেটা মনে হয়েছিল বিকাল 3টা তে. ঘুম স্টেশন থেকে যখন নিচের দিকে হেঁটে হোমস্টে যাচ্ছিলাম, মাঝে মাঝেই থমকে দূরের পাহাড়ী ঢেউ দেখে আনন্দে দু পাঁচ মিনিট দাঁড়িয়ে যাচ্ছিলাম. হোমস্টে পৌঁছে কমপ্লিমেন্টারি ব্ল্যাক টি খেয়ে একটু রেস্ট নিলাম. খেয়েই ঢুকেছিলাম, তাই দেরি করে বেরোলাম. ঘুম স্টেশন এলাম. পথে পাহাড়ের সবুজ ঢেউ, সাদা মেঘের ডানা মেলা পাখনা স্বপ্নের ভিতরে আমাকে ঢুকিয়ে দিলো অনায়াসে. ঘুম স্টেশন এ SBI, AXIS, আরো দুটো atm দেখলাম. ওষুধের dokan, আরো অনেক দোকান আর কয়েকটা রেস্টুরেন্ট পেলাম. নেপালী, হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, এবং ভেজিটেরিয়ান রেস্টুরেন্ট গুলোর মধ্যে বুদ্ধিস্ট রেস্টুরেন্ট বেস্ট. কি স্বাদ. সকালে মোমো, ব্ল্যাক দার্জিলিং টি তে অসাধারণ ব্রেকফাস্ট. দুপুরে নেপালী থালি, বিকালে চা, ফিলে বা সসেজ, রাতে থুকপা বা চাউমিন, অসাধারণ ভোজন. তবে বাঙালি খাবার খেতে হলে আট কিলোমিটার দূরে দার্জিলিং যেতে হবে. ফিরছিলাম যখন, রাতের আলোতে সমস্ত পাহাড় গুলো জোনাকির মতো আলোর রোশনাই তে ভোরে উঠেছে. অন্ধকারে পাহাড়ের রাস্তার ধারে, খাদের পাশে বসে পড়লাম. দুটো সিগারেট শেষ করে যখন উঠলাম, দৃশ্য সুখে চোখ ভিজে গেছে. ফিরে কম্বল চাপা দিয়ে ঘুম. সকালে হোমস্টের ছাদে নৈসর্গিক শোভা. কতক্ষন চুপচাপ বসে ছিলাম জানিনা. ব্রেকফাস্ট করে উপরের দিকে হেঁটে গেলাম. জোড়বাংলো ক্যান্টনমেন্ট এর রাস্তায় বড় বড় পাইন গাছের জঙ্গলে রাস্তার ধারে বসে পড়লাম. সবুজ গাছ, সাদা মেঘ পাগল করে দিলো. দুপুরের খাবার খেতে দেরি হলো. বিকালে দার্জিলিং mall এ গেলাম. আজ হোমস্টে তে ব্রেকফাস্ট করে লাঞ্চ অবধি ছাদে বসে রইলাম. ঘুমে গিয়ে লাঞ্চ করলাম. রাস্তাতে দাঁড়াচ্ছি বসছি, শুধুই অপরূপ দৃশ্য. লাঞ্চ সেরে রাস্তার ধারে বসে মানুষ জন, গাড়ি দেখলাম. স্নাক্স সেরে ডিনার নিয়ে হোমস্টে তে ফিরলাম. আজ ঠিক করে ছিলাম নিচের দিকে নামবো. খাবার খেয়ে লাঞ্চ নিয়ে নিচের দিকে হাঁটলাম. এক কিলোমিটার হাঁটতে দু ঘন্টা লেগে গেল. তারপর এক মন্দিরে গিয়ে বসলাম পাহাড়ের মাথায়. একদিকে অজানা পাহাড়ের সারি, অন্যদিকে কাঞ্চনজঙ্ঘা আর দার্জিলিং শহর. তিন ঘন্টা কেটে গেলো. এরপর ফিরলাম. পরের দিন গুলো শুধুই হারিয়ে যাবার পালা. 5 দিন স্বর্গে থেকে বাড়ি ফিরলাম. ফিরেই অর্ধাঙ্গিনী কে বললাম ওয়েস্টবেঙ্গল এর হিল স্টেশন এ বাড়ি করবো. রিটায়ারমেন্ট এর পর ওখানেই কাটাবো. এখনো স্বর্গের স্বপ্ন থেকে ফিরে আসিনি. গেলে ঠকবেন না.
0 Comments
Leave a Reply. |
Best Washing MachineCategories
All
Archives
November 2021
Best Autoclean Chimney |