শ্রীলঙ্কা ভ্রমণ শেষ করে আমরা যাত্রা করলাম মালদ্বীপ। এখানে আমরা দুটো দ্বীপে ঘুরবো। প্রথম "Ukulhas" ও দ্বিতীয় "Maafushi"।
মালদ্বীপ বা মালদ্বীপ প্রজাতন্ত্র ভারত মহাসাগরের একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। এর রাজধানীর নাম মালে। দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক জোট সার্ক এর সদস্য। অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি এ দেশ বিশ্বের সবচেয়ে নিচু দেশ। পর্যটনের জন্য বিখ্যাত এই দেশ এক হাজার দুই শ’রও বেশি ছোট ছোট দ্বীপ নিয়ে গঠিত। আমরা শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে এসে পৌঁছলাম মালে এয়ারপোর্টে। উকুলহাসে যে ভিলাতে আমাদের বুকিং ছিল তারা আগেই জানিয়ে দিয়েছিল যে তারা কোন কাউন্টারে আমাদের জন্য অপেক্ষা করবে। এয়ারপোর্ট থেকে বেরলেই মালে বোট জেটি। ভিলার রিপ্রেজেন্টেটিভ আমাদের স্বাদর অভ্যর্থনা করে নিয়ে গেল স্পীড বোটে, যেটাতে করে আমাদের প্রায় দেড় ঘন্টা ভারত মহাসাগরের ওপর মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে করতে পৌঁছলাম Ukulhas দ্বীপে। Ukulhas তার পরিচ্ছন্নতা, ভাল রক্ষণাবেক্ষণ,বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সিস্টেমের জন্য সুপরিচিত এবং Republic of Maldives ইতিহাসে প্রথম পদ্ধতিগতভাবে পরিচালিত দ্বীপ হিসাবে পরিচিত হয়। Ukulhas প্রতি বছর বিভিন্ন পরিস্কার এবং রোপণ প্রোগ্রাম পরিচালনা করে এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র এবং জীববৈচিত্র্য সম্পর্কিত বিভিন্ন সচেতনতা প্রোগ্রাম আয়োজন করে। মালদ্বীপ প্রজাতন্ত্রের পরিবেশগত ভূমিকা মডেল দ্বীপ হিসাবে স্বীকৃত হওয়ার কারণে, ২018 সালে দ্বীপের পরিবেশ রক্ষা ও সংরক্ষণের জন্য অসামান্য পরিষেবাগুলির জন্য Ukulhas গ্রীন লিফ পুরস্কার অর্জন করেছিলেন। এই দ্বীপের আয়তন ১.০২৫কিমি * ০.২২৫কিমি এবং জনসংখ্যা বিদেশি সমেত ১০০০ এর একটু বেশি। দ্বীপের বীচ একেবারে সাদা বালিতে ঢাকা।
খুব কম ট্যুরিস্টের মুখেই শোনা যায় মালদ্বীপ দ্বীপপুঞ্জের মধ্যে উকুলহাস দ্বীপের কথা। কারণ এখানে ভারতীয় ট্যুরিস্টদের আনাগোনা খুবই নামমাত্র। আমরা এখানে যে ভিলাতে উঠেছিলাম সেখানে কর্মচারীদের মধ্যে বাংলাদেশের ছেলেদের সংখ্যাই বেশি। আমাদেরও বেশ ভালো লাগলো নিজেদের ভাষায় কথা বলতে পারায়, তবে ওদের যে আমাদের চেয়ে বেশি ভালো লেগেছে সেটা বুঝতে পারলাম আমাদের বিদায় পর্বে ওদের চোখগুলো চিকচিক করে ওখায়। বিদেশে একটি ছোট দ্বীপে মাত্র দু'দিনের মধ্যে এত আন্তরিকতা আমরাও বুঝে উঠতে পারিনি। ওরা বহুদিন পরে নিজেদের ভাষা জানা ট্যুরিস্ট পেয়ে ভীষনভাবে খুশী হয়েছিল।
যাক ওখান থেকে আমরা এলাম বহু পরিচিত "মাফুসী" দ্বীপে। এটা অনেকটাই শহরের মত। এখানে সব দেশের লোকেরা আসে, ভারতীয় ট্যুরিস্টও অনেক। উকুলহাসের য়ত শান্ত নির্জন একটা দ্বীপ থেকে যেন এসে পড়লাম পুরীর স্বর্গদ্বারে। মাফুসী দ্বীপ মালদ্বীপের বৃহত্তম দ্বীপপুঞ্জ। এটা অবশ্যই মালদ্বীপের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্থানীয় দ্বীপ। এটি ম্যাল থেকে 27 কিলোমিটার দূরে কাফু এটল এ অবস্থিত। আকার 1270 * 265 মি। দ্বীপ নিজেই একটি elongated ফর্ম আছে। দ্বীপে 2700 মানুষ বাস। ইহা সত্যিই আশ্চর্যজনক যে কিভাবে এই ক্ষুদ্র দ্বীপে এত মানুষ বাস করতে পারে, ঠিক সেইভাবেই অন্যান্য স্থানীয় দ্বীপগুলিতেও। কিন্তু কখনই মনে হয়না যে দ্বীপগুলোয় অধিক জনসংখ্যা।
আমাদের বিদেশ ভ্রমণের পর্ব এবার শেষ করছি। শুরু করেছিলাম শ্রীলঙ্কা দিয়ে আর শেষ করছি মালদ্বীপ ঘুরে। এই প্রথম সাহস করে প্রায় ১৫ দিনের বিদেশ ভ্রমণের মানে দুটি দেশের প্রোগ্রাম করলাম তাই একটু চিন্তায় ছিলাম। কিন্তু ভীষণ সুন্দর ভ্রমণ অভিজ্ঞতা নিয়ে আমাদের ভ্রমণ শেষ করছি।
আজ আমাদের দ্বিতীয় ও শেষ দিন "মাফুসী" দ্বীপে। এখানে অনেক বড় ছোট হোটেল/রিসর্ট আছে। বেশ শহরের মত। প্রচুর ট্যুরিস্টদের আনাগোনা এখানে। খাওয়া দাওয়ার রেস্টুরেন্টের অনেক অপশন আছে। বেশীরভাগ হোটেল/রিসর্টে কমপ্লিমেন্টারী ব্রেকফাস্ট থাকে। এখানে USD না ভাঙ্গালেও চলে। স্পীড বোটে মালে এয়ারপোর্ট থেকে দুরত্ব প্রায় ৩০-৩৫ মিনিট। কোন সিম কার্ড নেওয়ার দরকার পড়ে না। স্পীড বোট, হোটেল ও রেস্টুরেন্ট সব জায়গায় WiFi পাওয়া যায়।
0 Comments
Leave a Reply. |
Best Washing MachineCategories
All
Archives
November 2021
Best Autoclean Chimney |