সেই রাজাও নেই, রানীও নেই, আরেবাবা রাজতন্ত্র ই তো নেই ।পড়ে আছে শুধু রাজ্যপাট । রাজবাড়ির অলিন্দে নানা ইতিহাস ।দিল্লী আগরা বা রাজপুতানা গিয়ে মুঘল বা রাজপুতদের যে বিলাসিতা আমরা দেখি,তার সঙ্গে আমরা নিজেদের মেলাতে পারিনা, বাংলাদেশে বেশিরভাগ রাজবাড়ি ও নবাবী মহলের থেকেও খানিকটা আলাদা এই ইটাচূনা রাজবাড়ি টি।
গাইড আপনাকে শোনাবে কুন্ডু রাজার রাজতন্ত্রর গল্প ।প্রশস্ত নাট মন্দির পেরিয়ে ক্রমশ যখন অন্দরে প্রবেশ করবেন, একটা হাড়হিম করা, পেট গুড়গুড় করা ভালোলাগা তৈরী হতে থাকে। রাজবাড়ির প্রতিটি কর্মচারি সর্বক্ষণ প্রস্তুত আপনাকে স্বাগত জানাতে ।তার প্রমান দেবে welcome drink নামে অতি সুস্বাদু এক পানীয়। সৌভাগক্রমে যদি বিলাসমঞ্জরী তে জায়গা পাওয়া যায় তবে রাজার জীবন উপভোগ কে আটকায়? কাঁশার থালায় সুন্দর করে সুস্বাদু খাবার খেতে খেতে সত্যি নিজেকে রাজা মনে হতে বাধ্য। হাতের ঘড়ি ঢুকিয়ে রাখুন, নাট মন্দির থেকে প্রতি ঘন্টায় ঢঙ ঢঙ করে সময় জানাচ্ছে ।বিকেলে একটু কেরাম বা টেবিল টেনিস বা ব্যাডমিনটন খেলে একে একে রাজবাড়ি ঘুরতে থাকুন গাইডের সাথে ।নাটমন্দিরে সনধা আরতির পর চা ঘরে চা খেতে খেতে সময় টাকে সপর্শ করুন ।রাতে আবার সেই অসাধারণ রন্ধন শিল্পের উপভোগ করুন সুন্দর পরিবেশনের সাথে । গা ছমছমে রাজবাড়ি কে একটু বেশী রাতে পরখ করার ইচ্ছে টা কেনো বাদ দেবেন ?আমরা কিন্তু কোনো ভুত দেখিনি, কিন্তু অসংখ্য ঝিঝি পোকার ডাক, নাম না জানা অনেক অদ্ভুত সব পশুদের ডাক, সবুজ বনানীর মাঝে গভীর রাতে একটু গায়ে শিহরণ তো জাগবেই। Mud house এই রাজবাড়ির এক অন্যতম আকর্ষণ, আপনার বাড়ির উঠোনে রাজহাঁস, খরগোশ চরে বেড়াচ্ছে, বারান্দায় ঝুমকো লতা, জবা ফুল ফুটে আছে ।এরই মাঝে রাজকর্মচারী হাতে সকালের চা ও সংবাদ পত্র নিয়ে হাজির । ঐতিহ্য, আধুনিকতা, গ্রামীণ সভ্যতা সর্বোপরি রাজকীয়তা আপনাকে স্বাগত জানাতে বর্ণিল সাজে উপস্থিত । খরচ হয়তো একটু বেশী, আসলে দৈনন্দিন জীবনের একটু কাটছাঁট করে একদিন এই আনন্দ নেওয়াই যায় ।আরেবাবা আমাদের মনের ভীতর রাজা সাজার একটা বাসনা তো থাকেই ।।।।।
Post By:- Krishna Deb Paul
0 Comments
চেলেলা পাস (Chele la pass).. ভূটানের গপ্প বলছি আপনাদের ক'দিন ধরে।আজ বলব চেলেলা পাস-এর কথা।ভূটানের সর্বোচ্চ গাড়ি চলাচলযোগ্য রাস্তা এই চেলেলা পাস(highest motorable pass)।১৩০০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই রাস্তাটি সংযোগ ঘটিয়েছে পারো ভ্যালী ও হা'ভ্যালীর। আমরা পারো থেকে প্রায় সকাল ৮ টা নাগাদ যাত্রা শুরু করলাম চেলেলা পাসের উদ্দেশ্যে।আমাদের টুর অপারেটর দাদা বলেই দিয়েছিলেন যে আজ জ্যাকেট বা গরম মোটা সোয়েটার ও টুপি সাথে নিতে!কারন এই ক'দিন ভূটানে একমাত্র রাত্রে ছাড়া খুব বেশি ঠান্ডা পাইই নি আমরা। আঁকাবাঁকা পাহাড়ি রাস্তা ধরে আমাদের ছোট্ট জাপানি বাস চেলেলাতে পৌঁছল প্রায় ৩ ঘন্টা পরে।চেলেলার একদম হায়েস্ট পয়েন্টে পৌঁছে গেলাম।বাস থেকে নামতেই ঠান্ডার কামড় খেলাম।বেশ ভাল ঠান্ডা!প্রায় ৫-৬ ডিগ্রী হবে!জ্যাকেট আর টুপি পরে ফেলেছি,,,কিন্তু গ্লাভস পরতে মন চাইল না!কারন সাধের ক্যামেরার শাটার ঠিকঠাক কন্ট্রোল করতে পারব না যে! চারিদিকে নাম না জানা উঁচু উঁচু পাহাড়,,,দূরে দেখা যাচ্ছে ভূটানের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট জোমোলহারি।হঠাৎ কোথা থেকে চলে এল কালো কুচকুচে মেঘরাশি!ঢেকে গেল জোমোলহারি!হারিয়ে গেল মেঘের আড়ালে! অন্যদিকে দূর থেকে দেখা যাচ্ছে সুন্দরী হা'ভ্যালী!শুনেছি হা'ভ্যালী এক কথায় স্বর্গ!আমাদের ভ্রমণসূচীর মধ্যে হা'ভ্যালী ছিল না।তাই দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর মত দূর থেকে হাঁ করে হা'ভ্যালী দেখা ছাড়া আর উপায় ছিল না। চেলেলা'র ওই ২-৩ ঘন্টা ছিল স্বপ্নের মত!পাহাড় আর আকাশ যেন এসে গিয়েছিল আমাদের হাতের মুঠোয়! ©অরিন্দম Post By:- Arindam Patra মন্দির শহর বিষ্ণুপুর.... মুকুটমণিপুর থেকে ফেরার পথে খুব অল্প সময়ের জন্য বিষ্ণুপুর ঘুরে দেখার সুযোগ হয়েছিল।২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসের শুরুর দিকের কথা। কোলকাতা থেকে গাড়িতে এসেছিলাম মুকুটমণিপুর।দু'দিন বেশ ভাল করে ঘুরে তৃতীয় দিন ফিরে চলেছি কোলকাতা।ভোর ৬ টায় বেরোলাম।ঘন্টা তিনেকের দূরত্ব বিষ্ণুপুর। পথে চলতে চলতে একবারই দাঁড়াতে হয়েছিল,,,,রাস্তার পাশেই হঠাৎ দেখি টাটকা খেজুররস জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরি হচ্ছে!দেখেই আমরা গাড়ি থামিয়ে সেই গুড় কিনতে চলে এলাম।টাটকা খেজুরগুড় কেনা হল বেশ খানিকটা।আবার চলা শুরু হল তারপর.... ৯ টা নাগাদ বিষ্ণুপুর পৌঁছলাম।আমাদের বিষ্ণুপুরের মন্দির বলতে জানা ছিল শুধুমাত্র রাসমঞ্চ।বিভিন্ন মানুষ কে জিজ্ঞেস করতে হচ্ছিল।আর দেখলাম শহরের রাস্তাঘাটের অবস্থা খুব একটা ভাল নয়।খুব সরু সরু গলি রাস্তা,,,উলটো দিক থেকে গাড়ি চলে এলেই জ্যামে আটকানোর সমূহ সম্ভাবনা। যাই হোক,এভাবেই কষ্টেসৃষ্টে এসে পৌঁছলাম রাসমঞ্চে।গাড়ি সাইডে পার্ক করে টিকিট কেটে প্রবেশ করলাম রাসমঞ্চের অন্দরে।খুব সুন্দর লাগল রাসমঞ্চের নির্মাণশৈলী!এই বাংলার বুকেই যে এত সুন্দর স্থাপত্যশিল্পের নিদর্শন রয়েছে তা না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না! রাসমঞ্চ দেখে বেরিয়ে এসে মন্দির নগরী বিষ্ণুপুরের ওপরে ছাপা একখানি ট্র্যাভেল গাইড বুক কিনলাম।বইখানির পাতা উলটে আমাদের চক্ষু চড়কগাছ!শুধু রাসমঞ্চ নয় আরো অজস্র মন্দির ছড়িয়েছিটিয়ে রয়েছে গোটা বিষ্ণুপুর জুড়েই।সব দেখতে গেলে গোটা একটা দিন লেগে যাবে! কিন্তু আমাদের হাতে সময় খুব কম ছিল।তাড়াতাড়ি কোলকাতা ফিরতেই হত।তাই কাছেই রাধেশ্যাম মন্দির দর্শন করে ও বিষ্ণুপুরের বিখ্যাত পোড়ামাটির তৈরি পুতুল কয়েকটি কিনে এবারের মত ফিরে এলাম।তবে খুব ইচ্ছে রইল আবার একবার ফিরে আসার! ©অরিন্দম Post By:- Arindam Patra খোয়াই বনের অন্য হাট ছবি, লিখন ও তথ্যবিন্যাস : Samrat Ghosh শান্তিনিকেতন বীরভূম জেলার বোলপুর শহরের কাছে অবস্থিত একটি আশ্রম ও শিক্ষাকেন্দ্র। শান্তিনিকেতন একটি আবেগের নাম। ১৮৬৩ সালে আশ্রম হিসেবে এর যাত্রা শুরু। এই স্থানের ভূমিকা বাঙালী জীবন ও মননে অনস্বীকার্য। কলাভবন, সঙ্গীতভবন, মিউজিয়াম, নন্দন আর্টগ্যালারী, প্রতীচী ট্রাস্ট, সোনাঝুরি, খোয়াই, কিংবা কোপাই সবটাই বাঙালীর নখদর্পণে। তবে আজকের বিষয় “খোয়াই বনের অন্য হাট” । রবি ঠাকুরের বিশ্বভারতীর অদূরে খোয়াই ধারে এই হাটটি প্রতি শনিবার দুপুরের পর বসে, চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। শনিবার বসে বলে হাটটির চলতি নাম, শনিবারের হাট। শুনেছি ২০০৩ সাল থেকে এই হাট বসছে। এই হাটের মধ্যে রয়েছে সরল গ্রামীণ জীবনের এক টুকরো ছোঁয়া। আক্ষরিক অর্থেই এটি হাট। কোথাও কোনো স্থায়ী ঘর নেই। নেই অস্থায়ী ঘর কিংবা সামিয়ানাও। কেউ ত্রিপল, কেউ চট, কেউবা মাটিতে কাপড় বিছিয়ে পসরা সাজিয়ে বসেছেন। হাটটি পুরোপুরি মধ্যসসত্বভোগী মুক্ত। বিক্রেতারা সবাই প্রান্তিক উৎেপাদক। পার্শ্ববর্তী কোপাই, বোলপুর, গোয়ালপাড়া, পাটুলডাঙা, প্রান্তিক ও ভুবনডাঙা গ্রামের নারী-পুরুষরা তাদের হাতে তৈরি বিভিন্ন দ্রবাদি নিয়ে হাজির হয়ে থাকেন হাটে। সওদার মধ্যে কাপড় ও সাজগোজের জিনিসের আধিক্য বেশি। তবে নান্দনিক শো-পিস, খেলনা, মনোহরি সামগ্রী রয়েছে। সূর্য যতো পশ্চিমে ঢলে পড়ে ততোই জমে ওঠে হাট। সোনাঝুরি ও শালবন ঘেরা প্রকৃতি সাথে ঢোল আর মাদলের শব্দ, সে এক অদ্ভুত মুগ্ধতা। হাটের একপাশে সাঁওতাল দল মাদলের তালে তালে নাচে মগ্ন। সাঁওতালী নাচ চলে বিকেল পর্যন্ত। সামান্য বাড়তি আয়ের জন্য তাদের এই আয়োজন। ট্রেনে হাওড়া থেকে বর্ধমান হয়ে বোলপুর-শান্তিনিকেতন ঘণ্টা তিনেকের পথ, তারপর টোটোয় করে পৌঁছে যেতে পারেন “খোয়াই বনের অন্য হাট”।। Post By:- Samrat Ghosh
জলদাপাড়ার অন্দরে.. ©অরিন্দম "জঙ্গল এর নাম জঙ্গল, জানোয়ার আছে এক দঙ্গল.." আজ থেকে দু'বছর আগের ডুয়ার্স ভ্রমণের কথা বলব।চাপড়ামারি-গোরুমারা সেরে এসেছি জলদাপাড়া।উঠলাম জলদাপাড়ার সরকারি টুরিস্ট লজে। বিকেল নাগাদ শুরু হল আমাদের সাফারি।যথাসময়ে টিকিট কেটে প্রবেশ করলাম জঙ্গলের ভেতর।উত্তেজনায় ফুটছিলাম আমরা সবাই।গোরুমারায় মেধলা টাওয়ারে খুব কাছ থেকে গণ্ডার দেখা গিয়েছিল!সেই স্মৃতি তখনো টাটকা।তাই খুব উৎসাহভরেই প্রবেশ করলাম জঙ্গলে। ওই সময় অর্থাৎ বিকেল নাগাদ জিপ সাফারিই হয়,হাতি সাফারি সাধারণত সকালের দিকে হয় শুনলাম।আমাদের ও হাতির পিঠে চাপার কোন শখ ছিল না।তাই হুডখোলা জিপেই সওয়ার হলাম।মোট ৫ জন সওয়ার হলাম আমরা,,,আমরা ৩ জন আর সাথে আমাদের সহযাত্রী সমীর দা আর সোনালী বৌদি। জঙ্গলের ভেতর দিয়ে ধুলো উড়িয়ে চলল জিপ।কৌতূহলী ৫ জোড়া চোখ সদাসন্ধানী হয়ে ইতিউতি দেখতে থাকল।আর মনে মনে গোনা শুরু হল....ওই তো হরিণ ১টা,২টো,,,,,,আরে ওই তো ময়ূর!এভাবেই চলতে চলতে এসে গেলাম জঙ্গলের ভেতর ওয়াচটাওয়ারের তলায়।এইবারে কিছুক্ষণ রেস্ট।ওয়াচটাওয়ারে উঠে জানোয়ার দেখার চেষ্টা চলল। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামার পথে তখন।আমাদের ড্রাইভার তাড়া দিল,,,শুরু হল আমাদের যাত্রা হলং বাংলোর উদ্দেশ্যে। হলং বাংলো চত্বরে পৌঁছলাম যখন তখন আলো বেশ কমে এসেছে।খুব সুন্দর সাজানো গোছানো বাংলো।চারপাশের পরিবেশ ও খুব সুন্দর।সামনেই বাগান,আর বাগান পেরিয়ে একটা ছোট্ট নালা পেরিয়ে জঙ্গল!জঙ্গল থেকে জন্তুজানোয়ার বেরিয়ে আসে ওই নালায় জল খাওয়ার জন্য। আমরাও অপেক্ষায় বসে রইলাম ওই নালার পাশেই বাগানে চুপচাপ।আমাদের কপাল ভাল!কিছুক্ষণ পরেই জল খেতে এল একটা বুনো বাইসন বা ইন্ডিয়ান গৌর!সে কিছুক্ষণ ওই নালার আশেপাশে ঘোরাঘুরি করল জল খাওয়ার পরে।আমাদের ক্যামেরা তখন বিনা ফ্ল্যাশে ক্লিক করা শুরু করে দিয়েছে।সাথে ওয়াইল্ড লাইফের জন্য প্রয়োজনীয় টেলিফোটো লেন্স ছিল না!পাতি ১৮-৫৫ মিমি লেন্সে কিছু ছবি তুললাম,,,,সেগুলোই ক্রপ করে আজ পোস্ট করছি।পছন্দ হবে না আপনাদের হয়তো..! ©অরিন্দম Post By:-Arindam Patra
"একহি বার হর্ণ বাজানেসে আপলৌগ যিতনা জলদী হৌ স্যাকে নিকল কর আইয়েগা, নেহি তো গড়বড় হো যায়েগা" ব্যাস রাতের ঘুমের বাড়োটা বেজে গেল, ঠিক রাত তিনটের একটু পরেই সেই নিশির ডাক, কম্বল টা ভালো করে গায়ে জড়িয়ে আমরা সাকুল্যে পাঁচজন চেপে বসলাম নিষিদ্ধ রাত সাফারিতে। সে এক অসাধারণ অনুভূতি,রাতের অন্ধকারে গাড়ির হেডলাইটের আলো সামনের অন্ধকার কে ফালা ফালা করে চিড়ে দিচ্ছে। একদল হাতি ছোট্ট ডোবার মত জায়গায় জল কাদায় মাখামাখি হয়ে আছে,কটা ঠিক বোঝা র উপায় নেই ,খুব একটা কাছে যাবো তার ও উপায় নেই,ছবি তোলা যাবে না,ফ্লাসের আলোয় ওদের বিঘ্ন ঘটলে আমাদের বিপদ অনিবার্য,হাতির থেকে না হলেও রেন্ঞ্জার দের থেকে অবশ্য ই হবে,অতএব মন ক্যামেরায় ছবি তুলে সামনে এগিয়ে চলো। সামনের এক বাকের পর গাড়ি আবার থামলো, সামনে সোজা রাস্তা দুপাশে ঘন জঙ্গল,লাইট নাক বড়াবড়। রাস্তার বা পাশ দিয়ে একটা পগমার্ক সামনের দিকে এগিয়ে গেছে, বালির সোতার ওপর খুব স্পষ্ট সেই ছাপ, হয়তো বা ??,না বলা যাবে না কতক্ষণ আগেকার, তবে খুবই স্পষ্ট। আস্তে আস্তে সে ছাপ বাঁদিক থেকে রাস্তা পেড়িয়ে ডান দিকে একটা ঝোপের ভেতর চলে গেছে। অনেকক্ষন আমরা এক অজানা অনুভূতিতে নিজেদের মধ্যে কথাই বলতে পারিনি। চমকে উঠলাম তার কথাতেই"চালিয়ে আভি যানা হ্যায়,সুবা হোনে মে দ্যের নেহি হ্যায়"। কোন দিক দিয়ে যে সে আমাদের জঙ্গলে নিয়ে গেল তা পরের দিন তাকে জানতে চাইলে সে শুধু হাসলো। অনেক দিন আগের কথা কিন্তু এই রকম রোমাঞ্চ কর ভ্রমনের অভিজ্ঞতা কোন দিন ই ভোলার নয়। তার সাথেই আমাদের ঐ পর্বের ঘোরা,নামটা নয় নাই বললাম, ওখানে খুবই পরিচিত নাম,এর পরে গিয়েও তার সাথে যোগাযোগ হয়েছিল। "বেতলা , কেচকি,মেদিনির দূর্গ,মিরচাইয়া ফলস,সূগাবান্ধ,মারোমার"। আর এই জায়গা গুলোর বিবরণ বিস্তৃত ভাবে না দিয়ে এক কথায় বললাম অসাধারণ। Post By:- Chandan Dutta Roy
বাদশাহি কেল্লা.......আগ্রা ফোর্ট!! আগ্রার তাজমহল থেকে মাত্র ২.৫ কিমি. দূরত্বে যমুনা নদীর তিরে অবস্থিত এই কেল্লাটি মুঘল স্থাপত্যের এক অনন্য নিদর্শন। মুঘল রাজবংশের রাজকীয় আবাসস্থল ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসাবে ১৯৮২ সালে এটি UNESCO World Heritage Sight এর সম্মান পায়। লাল বেলেপাথরে তৈরী আগ্রা ফোর্টটির সম্প্রসারিত নির্মানকার্য ১৬শ শতকে আকবরের আমলে শুরু হয়। তারও অনেক পূর্বে, ১১ শতকে এই স্থানে রাজা বাদল সিং এর অধীনে একটি সামরিক দূর্গ ছিল বলে জানা যায়। সেইসময় স্থানটির নাম ছিল বাদলগড়। মুঘল সাম্রাজ্যের পূর্বে গজনীর সুলতান সিকান্দার লোদির রাজধানী ছিল আগ্রা। পাণিপথের যুদ্ধে আকবরের হাতে নিহত হয়ে তিনি সাম্রাজ্য হারান। ১৫২৬ সালে দিল্লি জয়ের পরে বাবর এখানে অবস্থান করেন। পরবর্তীকালে হুমায়ুনের রাজ্যাভিষেক হয় পুরানো দূর্গে। ১৫৪০ থেকে ১৫৫৫ পর্যন্ত এই দূর্গ শের শাহ এর দখলে থাকে। পরে হুমায়ুন পুনরায় দূর্গ পুনরুদ্ধার করেন। এরপরে বিভিন্ন সময়ে আগ্রা ফোর্ট বিভিন্ন শাসকের হস্তান্তর হয়.....! সম্রাট আকবরের পরে জাহাঙ্গীর, শাহজাহান ও ঔরঙ্গজেব এর আমলে ফোর্টে বহু নতুন স্থাপনা নির্মিত হয়। প্রায় ২.৫ কিমি আয়তনের এই বৃহৎ প্রাঙ্গণের উত্তর দিকের বেশ কিছুটা অংশ ভারতীয় সেনাবাহিনীর তত্বাবধানে থাকলেও প্রধান দর্শনীয় স্থানগুলি পর্যটকদের জন্য প্রতিদিনই খোলা থাকে। (এই পোষ্টে আগ্রা ফোর্ট ও তার প্রধান দর্শনীয় স্থানগুলির ছবি দেওয়া হল। নাগিনা মসজিদের প্রবেশ পথ বন্ধ থাকায় ছবি দেওয়া সম্ভব হল না....) Post By:-সংহত সাঁতরা
Sacred Khecheopalri Lake (পবিত্র খেচিপেরি লেক).... পেলিং এ দেখার জায়গা অনেক রয়েছে,,,তারই মধ্যে অন্যতম হল পবিত্র খেচিপেরি লেক।এই লেকটি পেলিং টাউনের প্রায় ৩৪ কিমি উত্তর পশ্চিমে খেচিপেরি গ্রামে অবস্থিত। এই লেকটিকে বৌদ্ধ আর হিন্দু দুই ধর্মের মানুষের কাছেই অত্যন্ত পবিত্র বলে পরিচিত।এটিকে "ইচ্ছাপূরণের লেক" ও বলা হয়ে থাকে।শোনা যায় এটি এতটাই পবিত্র যে আশেপাশের গাছ থেকে শুকনো পাতা লেকের জলে পড়লেও পাখীরা তা ঠোঁটে করে তুলে জল পরিষ্কার করে দেয়! আজ পেলিং এর সাইট সিয়িং এ বেরিয়ে প্রথমেই এসেছি এখানে।গাড়ি থেকে নেমে বেশ কিছুটা হেঁটে লেকের পাশে পৌঁছনো যায়।ছবির মত সুন্দর পরিবেশ চারিদিকে।লেকের আশেপাশে প্রচুর রঙবেরঙের নিশান দিয়ে সাজানো,,,, এক জায়গায় জুতো খুলে রেখে খালি পায়ে এগিয়ে যাওয়া যায় লেকের জলের দিকে।প্রচুর মানুষ এই সকালেও এসেছেন,,,,জল ছুঁয়ে নিজের মনোকামনা পূরণের জন্য প্রার্থনা করছেন সবাই! লেকের জল একদম পরিষ্কার টলটলে,,,,প্রচুর মাছ খেলে বেড়াচ্ছে জলে,,,,সবাই খাবার দিচ্ছেন মাছগুলিকে।এত সুন্দর শান্ত পরিবেশ যে মন ভাল হয়ে যায়।এরপর পায়ে পায়ে ফিরে চলা,,,,পরের গন্তব্য কাঞ্চনজঙ্ঘা ফলস.... ©অরিন্দম Post By:- Arindam Patra
নথুলার_পথে_ পূর্ব ভারতের রানী সিকিমে সেবার প্রথমবার যাওয়া...বছরদুয়েক আগে গরমের ছুটিতে লাভা ঘুরে, কলিংপং হয়ে ,দুরাতের জন্য গ্যংটক গেলাম...দুপুরে যখন পৌঁছলাম গরমে হাঁসফাঁস দশা...মন বলে হায় ! এ কোথায় এলি , গরম থেকে পালাতে আবার গরমের দেশে....তারে বলি রোশ বৎস, রোশ , একটু শুধু অপেক্ষা মাত্র.... ওই দিন নথুলা যাওয়ার পারমিট করতে দেওয়া হল তবে কপাল মন্দ শুনলাম নাথুলা বন্ধ আছে গাড়ি যাবে ওল্ড বাবামন্দির পর্যন্ত....শুনে বেশ দমে গেলাম...তবে ঘুরতে এসে যতটুকু পাওয়া যায় তাতেই আমি খুশি...সন্ধ্যেবেলায় একটু আরাম দিতে ঝমঝমিয়ে তিনি এলেন...বৃষ্টি আসায় রাতে জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়ল ঘুমটাও বেশ জোরদার হল... পরদিন খুব সকালে গাড়ি এসে গেলো ,আমরাও তৈরি ...আমাদের সঙ্গী এক শিখ পরিবার , হরভজনবাবার মন্দির দেখার জন্য সুদূর মহারাষ্ট্র থেকে ওরা এসেছে...আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথে গাড়ি ছুটলো ...মেঘের চাদরে মোড়া পাহাড় , অজস্র ছোট ছোট ঝোরা , গিরিখাদের রূপে মুগ্ধ আমরা চলতি পথের প্রতিটি বাঁকে প্রকৃতিরানীকে নতুন নতুন রূপে আবিষ্কার করতে করতে চললাম...রাস্তা কিছু জায়গায় খারাপ হলেও বেশিটাই ভাল...কোথাও রোদ ঝলমলে আকাশ তো কোথাও ঝিরঝিরে বৃষ্টি নিয়েই এগোতে থাকলাম...পাহাড়ের এত্ত উপরে নির্জনতার কোলে একএকটা গ্রাম ঘুমিয়ে আছে, ভাবতেই পারিনা এভাবে মানুষ কী করে বাঁচে...উপরে যতই উঠছি ঠান্ডা ততই আমাদের কাবু করে ফেলছে...ঠান্ডায় কাঁপতে কাঁপতেই ছাঙ্গু লেক এসে পড়েছি, রাস্তার ধারে পাহাড় ঘেরা ছোট্ট একটি লেক , তবে গাড়ি থেকে নামলাম না , ঠিক হল ফেরার পথে কিছু সময় কাটান যাবে... আরও কয়েক কিলোমিটার দূরে হরভজন বাবার মন্দির , এখন আমরা সেইদিকেই চলেছি...হরভজন বাবা ভারতীয় সেনাবাহিনীর একজন সৈনিক , নথুলাই ওনার কর্মস্থল , এখানেই দেশের জন্য প্রাণ দেন , স্থানীয় মানুষের উপকারী বন্ধু ছিলেন তিনি , রোগেভোগে ওষুধ দিয়ে খাবার দিয়ে তাদের পাশে থাকতেন তিনি ,শোনা যায় মৃত্যুর পরও নাকি রাতে এই পথে চলা মানুষের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন বাবা... মন্দিরে পৌঁছলাম যখন হাতের ঘড়িতে তখন বেলা বারোটা...বাবার দর্শন হল ,চারপাশ তখনও কুয়াশার চাদরে ঢাকা... মন্দির থেকে বেরোনোর আগেই শুরু হল তুষারপাত...এ যেন মেঘ না চাইতেই জল...কী যে ভাল লাগছিলো , অবাক বিস্ময়ে শুধু তাকিয়ে থাকা ,সে অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা বড় কঠিন...মেঘশিশুদের হাতের আইসক্রিম যেন গোলে গোলে টুপটাপ করে পড়তে লেগেছে... এই বাবামন্দিরটি সেনাবহিনীর তরফে পরে বানানো হয়েছে ...হরভজন বাবার আসল ডেরা আরও ওপরে ওল্ড বাবামন্দির , আমরা কুপুপ হয়ে সেখানে যাব....কুপুপে যেতে যেতে আকাশ এক্কেবারে ঝকঝকে আয়নার রূপ নিয়েছে...চরাচর আলোয় আলোয় ঝলমলে...ছোট্ট ছোট্ট সেনাছাউনি , নীলমেঘেদের হাতছানি , ন্যাড়া পাহাড়ে পাহাড়ি হ্রদের টিপ , ইতিউতি চরে বেড়ানো ইয়াক দেখতে দেখতে সামনে হঠাৎ রাস্তার বাঁকে দেখলাম সেই সুন্দরী পাহাড়ি মেয়েটিকে যাকে আগে বহুবার ছবিতেই দেখা , কুপুপ সুন্দরী , এলিফ্যান্টা লেক....ঝলমলে রোদ্দুরে এই লেক যারা দেখেছে তারাই শুধু মানে এখানে যেতে বার বার মন টানে.... কুপুপ থেকে পারমিশন নিয়ে চোদ্দ হাজার ফুট ওপরে ওল্ড বাবামন্দির আমাদের শেষ গন্তব্য...গাড়ি থেকে নেমে বরফঠান্ডা হাওয়ায় হিহি করে কাঁপতে কাঁপতে মানুষরূপী দেবতার বাসভূমি দর্শন করে ফেরার তোড়জোড় শুরু হল...ফিরতি পথে বৃষ্টি আবার আমাদের পিছু নিল...তুষারপাতের ফলে দেখলাম রাস্তার দুধারে বেশ বরফ জমেছে , লোভ সামলাতে না পেরে একজায়গায় নেমে মনের সুখে খানিক গড়াগড়ি খেলাম....এরপর ছাঙ্গু যখন ফিরলাম সকালের সেই রোদঝলমল রূপ তার আর নেই সেখানে তুষারপাত শুরু হয়েছে , এও এক অপূর্ব দৃশ্য যা ভোলবার নয়.... এই একদিনের সিকিম সফর আমাদের ঝুলি পূর্ণতায় ভরে দিয়েছিল... এই মুহূর্তে ছবি বেশি নেই, মোবাইলে যা আছে তাই দিয়েই কাজ চালালাম.... Post By:- Prity Roy
|
Best Washing MachineCategories
All
Archives
November 2021
Best Autoclean Chimney |