আমার চোখে কুমোরটুলী- সলিল হোড় ছোটবেলা থেকেই শুনছি, কুমোরটুলী থেকে দূর্গাঠাকুর আসে। পালেদের বংশধরেরা বয়ে নিয়ে চলেছে এই ঐতিহ্য। বহু লোকের তোলা বহু ফটো আমি দেখেছি এই কুমোরটুলী নিয়ে। তাই আজ চাক্ষুষ দর্শন করতে আমি গেছিলাম ওই পাড়াতে। যতটা ফাঁকা আশা করেছিলাম, ততটা নয় কিন্তু! ফটোগ্রাফার, পূজো কমিটির লোকজন, আমার মতো এক্সপ্লোরার... এদের ভিড়ে জায়গাটা প্রায় নরক গুলজার হবার উপক্রম! এর মধ্যে গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়েছে, কিছু প্রেমে মুগ্ধ উঠতি ফটোগ্রাফাররা! এরা যে যার সাইজ জিরো বান্ধবীদের, দুর্গার সাজে সাজিয়ে নিয়ে মূর্তিগুলোর প্রায় গায়ে উঠে ফটো তুলছে! লালপেড়ে শাড়ি, আর নাকে বড়ো বড়ো নথ সবাই পড়েছে, আবার কয়েকজন আধুনিকতার প্রকাশের জন্য পড়েছে সুপারস্লিভলেস ব্লাউজ! কয়েকজন ফিচেল ছোকরাকে বলতে শুনলাম - "মর্ডান দুর্গার কি রূপ মাইরি! করিনার মতো জিরো ফিগার, আবার বিকিনি ব্লাউস! ভাই আমি অসুর হবো! এদের হাতে মরেও সুখ..!!" বাস্তবিক, শুম্ভ-নিশুম্ভকে একহাত নেওয়া মা দুর্গা, আর এই মর্ডান দুর্গা... এদের মেলাতে সত্যি কষ্ট হয়! ঝোপ বুঝে কোপ মারছে পাড়ার ক্লাবের লোকজন! প্রতি ফটোগ্রাফার দিনপ্রতি দশটাকার টিকিট, আর সিজন টিকিট পঞ্চাশ টাকা! তবেই বুঝুন, সিজন টিকিট কিন্তু এখন আর শুধু খেলার মাঠেই সীমাবদ্ধ নয়! তবে মুঠোফোন ফটোগ্রাফাররা এই নিয়মের বাইরে! তবে হ্যাঁ, খুব ভালো লাগলো মূর্তি বানানো দেখে। মানুষগুলো সত্যি দিনরাত অমানুষিক পরিশ্রম করে, সৃষ্টি করে চলেছেন এই অপূর্ব মূর্তিগুলো। মৃৎশিল্পকে ঠিক কোন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া যায়, সেটা এনাদের না দেখে বোঝা যাবে না। আর হ্যাঁ, অনেক মা বাবারাও এসেছেন, তাদের ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের নিয়ে। সেই কচিমুখগুলোতে, ঠাকুর তৈরি দেখে যে বিস্ময় ও আনন্দের অভিব্যক্তি ফুটে ওঠে, সেই দৃশ্যটা শুধু চোখের ক্যামেরাতেই ধরা পড়ে! বনমালী সরকার স্ট্রিট দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে, রেললাইন পেরিয়ে গেছিলাম গঙ্গার ঘাট পর্যন্ত। বেশ রিফ্রেসিং লাগলো! আমি সবাইকে সাজেস্ট করবো যে, পুজোর সময় তো সবাই ঠাকুর আর শো-বিজনেস দেখেন... এবার একটু এই শিল্পী মানুষগুলোকেও দেখে আসুন। খড়-মাটি-রং দিয়ে, চিন্ময়ী মাকে মৃন্ময়ীরূপে সৃষ্টি করার এই কর্মকান্ড না দেখলে, পূজোর একটা ভিত্তিমূলক অধ্যায় চাপা পড়ে যায়... Post By-Salil Hore
0 Comments
Leave a Reply. |
Best Washing MachineCategories
All
Archives
November 2021
Best Autoclean Chimney |