পুরী তো ?
গেলেই হলো। না । হয় নি । দীর্ঘ সময় বেড়াতে যাওয়াই হয়ে ওঠেনি। অবসরের দিন এক শুভানুধ্যায়ী বললেন একবার পুরী ঘুরে আসুন দিকি! জগন্নাথ দর্শন দিয়ে শুরু করুন বেড়ানো ~ সেই সূত্রপাত। সংশয়ের সমুদ্র পার করে পুরীর সমুদ্রে পৌঁছবো শেষ পর্যন্ত? দেখা যাক। আগের post এ অনেকে থাকার , খাওয়ার , ঘোরার খোঁজ দিয়েছেন। সেই খবরের পুঁটুলি সম্বল করে ১৭ তারিখে চেপে বসলাম ধৌলি expressএ। জীবনের প্রথম senior citizen concession পাওয়া seat এ বছর তিরিশের একজন চললো পুরী ~ রেল কোম্পানি জানতেই পারে নি। পর্দা সরিয়ে ঘষা কাঁচের ওপারে ছুটন্ত জনপদ , প্রান্তর বা নদী যাইই পেরোক ভালো লাগছে। কখনও seat এগুপেছু করার খেলায়, কখনও যা খাবার জিনিস আসছে স্বাদ নিতে নিতে সময় কাটতে লাগলো। সঠিক সময় পুরী পৌঁছে অটো ধরে সোজা থাকার জায়গায়। Bag নাবিয়েই একটা ছবি তোলা হয়ে গেলো। নেহাতই আবেগে। ঘরে গিয়ে ফ্রেশ হব একটু রেস্ট নিতে হবে। কিছু সময় পরেই unrest এর উচ্ছিংড়ে লাফালাফি শুরু করলো। ছবি তুললাম। না। জানলা পাইনি। বারান্দার গ্রীলে সমুদ্র আটকে ছবি নিলাম। বাঁদিকে একটু ঠেলা দিয়ে বললাম , বসবে না বেরোবে? = এই তোমার শুরু হলো তো? আঠাশ বছর ধরে যা শুনেছি তাই আবার.... সাড়ে পাঁচ মিনিটের মধ্যে আমরা মন্দিরের দিকে রওনা হলাম । এ ভাবেই শুরু হলো আমাদের পুরী ভ্রমণ .......... থেকেছি ~ বালা নন্দ তির্থাশ্রম এ খেয়েছি ~ নিরামিষ সিংহভাগ সময় চলে গেছে শ্রী জগন্নাথ দেব দর্শনে আর সমুদ্র দেখে। কোনারক ছাড়া আর কোথাও যাই নি। কেনাকাটা করেছি কলিংগ থেকে। খাজা কিনেছি নৃসিংহ থেকে। মাঝে মাঝে সন্ধ্যায় পুরী হোটেলের পাশের গলিতে চা ও snacks এর দোকান থেকে বড়া চপ ছানাভাজা , যা খুশী নিয়েছি। সমুদ্র বর্ডার দেওয়া নিচু পাঁচিলে বসে পা দোলাতে দোলাতে এন্তার খেয়েছি । সমুদ্র বারণ করেছে ~শুনিনি । তাই সমুদ্রও দুষ্টুমি করে দুরন্ত হাওয়ার বেগে পার করেছে সময়। খুব তাড়াতাড়ি এসে গিয়েছে ফেরার দিন। যাবার দিন dhauli exp ধরার আগে আর একবার মন্দির দেখার সুযোগ পেলাম। আর একটা জিনিস অদেখা থেকে যাচ্ছিল। আমার office এর পুরী শাখা। এ কদিন যাকে জিগ্গেস করেছি কেউ বলতে পারেনি। যে রিকশায় চেপেছিলাম সে দেখলাম চেনে। পুরো হলো বাকি থাকা ইচ্ছা টা। মনে হলো মন্দিরে না ঢুকেও সেই স্নেহমাখা হাসিমুখের স্পর্শ পেলাম যেন। ফিরতি ট্রেনে ধীরে বাইরের আলো কমে যায়। চলমান দৃশ্য বিসর্জিত হয় ঘনায়মান অন্ধকারে.... ট্রেন গন্তব্যে ছুটে চলার আওয়াজের সাথে মনের পর্দায় চলতে থাকে ফেলে আশা দৃশ্যের মিছিল। ~ বলে যে সমুদ্র ফিরিয়ে দেয় .... সত্যিই ফিরে পেলাম অনেক আনন্দ আবার। ~ আর যা কিছু পেলাম না? যেমন সেই অনেক আগে মন্দির চত্বরে এক সন্ধ্যায় এক শীর্ণ বৃদ্ধার আবেদন " গুঠে দিয়া নিয় বাবা" = বাবাকে লুকিয়ে মা টপ করে কিনে নিল গোটা কয়েক । বৃদ্ধার ফোগলা হাসিতে মন্দির চত্বরে দীপাবলি হয়ে উঠেছিল ..... জানি ফিরে পাওয়া যাবে না ! তবু চাইতে যাবো সমুদ্রের কাছে আবার ........ যে কোনও সময়েই যেতে পারি আবার কারণ চা দোকানের " টুটু " তো বলেই দিয়েছে ~ মু অছি না! জয় জগন্নাথ ।
0 Comments
Leave a Reply. |
Best Washing MachineCategories
All
Archives
November 2021
Best Autoclean Chimney |