মেঘের চোখ রাঙানী কে উপেক্ষা করেই বেড়িয়ে পড়লাম। নাঃ সত্যিই আর পারছিলাম না। এই দীর্ঘদিনের বন্দীদশা থেকে মুক্তি নিয়ে একটুখানি খেলা হাওয়ায় উড়ে এলাম, থুড়ি ঘুরে এলাম। খুব একটা বেশি দূরে নয় মাজদিয়া শিবনিবাস মন্দির আর পাগলাখালি পাগলা বাবার মন্দির থেকে। না ভগবানে বিশ্বাসী নই তাই কোনো পুজোও দিইনি শুধু মাত্র ঘোরার উদ্দেশ্যেই গেছিলাম। বগুলা ছেড়ে গিয়ে সরু গ্রামীণ পীচ রাস্তা দিয়ে যত এগোলাম এক সুন্দর মনোমুগ্ধকর গ্রামীণ পরিবেশ ও প্রকৃতি আমাদের সম্মুখে উন্মোচিত হতেথাকল। বর্ষাস্নাত সবুজ প্রকৃতি চোখকে প্রশান্তি দিচ্ছিল, আর বিশুদ্ধ অক্সিজেন প্রানভরে টেনে নিচ্ছিলাম। এক অভাবনীয় ভালোলাগা শরীর ও মনে উপলব্ধি করছিলাম। রাস্তা ছায়া পূর্ণ এবং নানা ধরনের চেনা অচেনা এবং আমাদের চারপাশ থেকে হারিয়ে যাওয়া গাছপালা, চাষের ক্ষেতে সাজানো। এছাড়াও রাস্তার পাশে মাঝে-মাঝে বড়ো বড়ো এবং বহু দিনের পুরনো বট ও অশ্বত্থ গাছ আমাদেরকে বিশ্রাম নিতে হাতছানি দিয়ে ডাকছিল। সেই ডাক উপেক্ষা করা আমার পক্ষে সম্ভব হলনা, তাই সল্পক্ষন হলেও আমরা দাঁড়িয়ে তার শীতল আতিথ্য গ্রহণ করে আবার গন্তব্যে এগিয়ে গেলাম। রাস্তার দুই ধারে ছোটো বড়ো পুকুর প্রস্ফুটিত শালুকের সম্ভার নিয়ে আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছিল।
এরই মাঝে শিবনিবাস মন্দিরের কাছেই একটা দোকানে পেটাই পরোটা রসগোল্লা ও ছানার জিলিপী দিয়ে জলযোগ সেরে নিলাম, অসাধারণ তার স্বাদ। আবার চলতে শুরু করলাম গন্তব্য পাগলা বাবার মন্দির যা এখনো ২০কিমি।পুরো রাস্তাতে লাইন দিয়ে রাখা শুকোতে দেওয়া পাটকাঠি যেন অতন্দ্র পহরি। গ্রামের মানুষ সত্যিই অসাধারণ এবং অতিথি বৎসল। মাঠে কাজকরা একজন কে রাস্তা জিজ্ঞেস করতে তিনি রাস্তা তো বলেদিলেনই সেই সঙ্গে উপরি পাওনা হলো তার জমির টাটকা এবং সুমিষ্ট আঁখ। অবশেষে পৌঁছলাম গন্তব্যে, অবাক কান্ড!! এযে মেলা বসেছে। নেই কোনো করনাতঙ্ক মানুষ মিলেমিশে এক চলছে পুজো, কীর্তন,রান্না হচ্ছে সকলের জন্য। ভক্তিতে মাথা নোয়াছে অজস্র মানুষ। বিশাল এক ঝিলের পাড়ে (অনেকে আবার বলেছেন ওটা ঝিল নয় পলদা নদী।) এক বটগাছের নীচে এই মন্দির,নাকি বাবা খুবই জাগ্রত সকলের ইচ্ছে পূর্ণ করেন।আমরাও পেলাম ভোগের প্রসাদ খিচুড়ি এক অনবদ্য স্বাদ, আর পায়েস এ যেন সমুদ্র মন্থন জাত অমৃত। মন্দির কমিটির লোকজন বেশিরভাগই বয়স্ক এবং প্রত্যেকেই অত্যন্ত আন্তরিক ও বিনয়ী। এবার ফেরার পালা মনটা যেন খারাপ হয়েগেল। কিন্তু ফিরতেই হবে তবে পাগলা বাবা কে কথা দিয়ে এলাম আবার আসব ভক্তি নয় প্রকৃতির টানে। ধরলাম বাড়ি ফেরার পথ বহুদূর থেকেও কানে আসছে মন্দিরের মাইকে বেজেচলাগান- "ভবের এ দুনিয়ায় সব ভবেরই খেলা গুরু বুঝবে তুমি যাবার বেলা...."
0 Comments
Leave a Reply. |
Best Washing MachineCategories
All
Archives
November 2021
Best Autoclean Chimney |