অনাঘ্রাতা দাড়িংবাড়ি : প্রথম পর্ব
--------------------------- এমন কিছু মানুষ আছেন বেড়ানো যাদের রক্তে। এক দেড় মাস কাটলেই শহর জীবনে হাঁপিয়ে ওঠেন। মনে হয় ছুটে যান় প্রকৃতির কোলে। প্রকৃতির রঙ রূপ গন্ধ স্বাদ আস্বাদন করে বেঁচে থাকবার কিছুটা অক্সিজেন সংগ্রহ করে নিয়ে আসেন। হ্যা। তাদের জন্যেই প্রকৃতি তার অপার রুপ মেলে ধরে বসে আছে উড়িষ্যার কাশ্মীর দারিংবাড়ি তে। আমাদের একটা ছোট্ট গ্রুপ বেড়াবার। যত রাজ্যের অফবিট জায়গা যেখানে কোন জনমুনিষ্ষির দেখা পাওয়া যায় না সেখানেই আমাদের আনাগোনা। অনেকদিন ধরেই নাম শুনেছিলাম দারিংবাড়ির। কুড়ি সেপ্টেম্বর বেরিয়ে পড়বার দিনক্ষণ ঠিক হল। একটা মজার বিষয় যখনই আমরা বেড়াতে যাই প্রকৃতি দেবী উত্তাল হয়ে ওঠেন। ঝড়-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে প্রবল সাইক্লোনের ভ্রুকুটি সঙ্গী করে রওনা দিলাম ম্যাড্রাস মেলে। গন্তব্য ব্রহ্মপুর বা বেহরামপুর। আমরা যে ডিজিটালাইজেশন যুগের মানুষ প্রমাণ পেলাম ট্রেন ছাড়বার মুহূর্তে। যে গাড়িতে আমরা গন্তব্যে পৌঁছাই সেই গাড়ির (বোলেরো) নাম্বার, ড্রাইভার এর নাম, ফোন নাম্বার সাধারণত আমরা আগে পেয়ে অভ্যস্ত। এবারে উপরিপাওনা ড্রাইভার এর সেলফি। মেঘে ঢাকা বৃষ্টিস্নাত সকালে চিলকা কে বা পাশে রেখে ট্রেন ছুটে চলল গন্তব্যের দিকে। নির্ধারিত সময়ের আগেই আমরা ব্রহ্মপুর এ ট্রেন থেকে নামলাম। স্টেশনের বাইরে বেরোতেই হাসিমুখে অভ্যর্থনা জানালেন শ্রী চিত্তরঞ্জন সাহু। আমাদের সারথি কাম গাইড (ফোন নাম্বার# 9090532252)। সদাহাস্যময় অত্যন্ত সদালাপী এবং সৎ চরিত্রের এই ভাইটি গোপালপুর অন সি পর্যন্ত আমাদের সঙ্গী ছিলেন। ব্রহ্মপুর থেকে দারিংবাড়ি (১২০ কি.মি.) এবং দারিংবাড়ি থেকে ব্রহ্মপুর গাড়ি ভাড়া ৫৪০০/। গাড়ি ছুটে চলল। এবারে আমাদের প্রথম লক্ষ প্রাতরাশ। চিত্তরঞ্জন আমাদের একটি দক্ষিণ ভারতীয় রেঁস্তোরার সামনে নামালেন। খুব সস্তায় অত্যন্ত উচ্চমানের দক্ষিণ ভারতীয় খাবার এখানে পাওয়া যায়। জানতে পারলাম গ্রামটি উড়িষ্যার মুখ্যমন্ত্রীর জন্ম গ্রাম। গ্রামের নাম মনে নেই এই মুহূর্তে। (এখানে একটি বলবার কথা আছে। যারা মদ্যপানে অভ্যস্ত দয়া করে ব্রহ্মপুর থেকে তাদের স্টক তুলে নেবেন। দারিংবাড়ি তে দাম অত্যন্ত বেশি।) প্রাতরাশ পর্ব শেষ হবার পর শুরু হল আমাদের আবার চলা। গাড়ি যতই এগোচ্ছে প্রকৃতি যেন একটু একটু করে হাসতে শুরু করেছেন। দু দিকে চোখ জুড়ানো সবুজের সমারোহ। কোথাও ধান কোথাও বা অন্যান্য সবজির খেত। আমাদের পরবর্তী গন্তব্য সোরাদা ড্যাম। ডান হাতে রুশিকুল্যা নদী বয়ে চলেছে। সেদিকে তাকালে শুধুই সাদা। ঘন সাদা কাশফুলের বন রুশিকুল্যা নদীকে অপরূপা করে তুলেছে। রুশিকুল্যার দুই পার এবং চড় শুধুই কাশবন। NH 59 ধরে বেশ কিছুটা চড়াই উঠবার পর নামলাম আমরা সোরাদা ড্যামে। কিছুক্ষণ সময় সেখানে অতিবাহিত করে আবার শুরু আমাদের চড়াই উঠবার পালা। উড়িষ্যার কন্ধমাল জেলা আমাদের চোখের সামনে ভেসে উঠতে লাগল একটু একটু করে। চকচকে পিচ রাস্তা ধরে গাড়ি কিছুটা উঠবার পর দেখা দিল মেঘের রাশি। মেঘের রাজ্য ভেদ করে অবর্ণনীয় নৈসর্গিক দৃশ্যের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে চললো আমাদের গাড়ি আরো ওপরে। একটা জায়গায় চিত্তরঞ্জন গাড়ি দাঁড় করিয়ে বলল একটু নেমে দেখুন। দাশিং নদী এখানে পাগলাঝোরা। এখানেই দেখা মিলল আমাদের পূর্বপুরুষদের। সন্তান সন্ততি নিয়ে অভ্যর্থনা জানালেন তারা আমাদের দারিংবাড়ির পথে। বহুচর্চিত deer's ইকো হোম এ আমরা ঘর পাইনি। Hotel Midtown (ফোন নাম্বার# 9337335835 )বুক করা ছিল। রিসেপশন এ দীপক আমাদের সমস্ত ফরমালিটি শেষ করে নিজেদের ঘরে পৌঁছে দেবার ব্যবস্থা করলেন। এই হোটেলে রান্নার কোনো ব্যবস্থা নেই। বাইরে থেকে খাবার এনে দেওয়া হয়। ডবল বেড ১০০০/ ট্রিপল বেড ১২০০/। বেশ বড় একটি ডরমিটরি আছে। ভাড়া জনপ্রতি ৪০০/।খাবার খরচ জনপ্রতি ৪০০/। হোটেলটি নতুন এবং ঝা চকচকে। এবারে দারিংবাড়ি। Coordinates: 19.9°N 84.133333°E উচ্চতা ৯১৪.৪ মিঃ.(৩০০০ ফুট). জেলা কন্ধমাল। পরাধীন ভারতে দারিং (Daring saheb)সাহেব এই জায়গাটি আবিস্কার করেন এবং ব্রিটিশ শাসন ব্যবস্থা তার হাতে এই জায়গার ভার অর্পণ করে। পরবর্তীকালে তাঁর নামানুসারেই এই জায়গার নাম হয় দারিংবাড়ি। অনেক চেষ্টা করেও এই দারিং সাহেবের প্রকৃত নাম অথবা তার বাড়ির কোন হদিস আমরা বের করতে পারিনি। মধ্যাহ্নভোজন শেষ করে কিছুটা বিশ্রাম এর পর সন্ধের সময় বেরোলাম পদব্রজে। হোটেলের উল্টোদিকে একটি পুরনো রাধাকৃষ্ণ মন্দির হয়েছে। মন্দিরটি ঘুরে দেখতে পারেন বেশ ভালো লাগবে। সামনে একটি বাঁধানো পুকুর। নৈসর্গিক দৃশ্য অসাধারণ। প্রধান পুরোহিতের সাথে আলাপ বেশ জমলো। সন্ধে ছটায় সন্ধ্যারতি দেখে চললাম দারিংবাড়ি কে আবিষ্কার এর আশায়। এখানে দোকানপাট খুব বেশি নেই। একটি খাবারের দোকানে আলুর চপ এবং ছানাপড়া এবং চা খেয়ে ফিরে আসলাম হোটেলে। সন্ধে সাড়ে সাতটাতেই দারিংবাড়ির রাস্তাঘাট জনশূন্য। তখনি বেশ ঠান্ডা।ভাগ্যিস গায় উইন্ডচিটার টা চড়িয়ে নিয়েছিলাম। পরবর্তী পর্বে ফিরে আসবো দারিংবাড়ির নাইন পয়েন্টস ভ্রমণ এবং আরও কিছু তথ্য ও ছবি নিয়ে। (বানান এবং লেখার ভুল মার্জনা করবেন) (ক্রমশ)
0 Comments
মনে হয় অলৌকিক ...! ! ! উড়িষ্যা চন্দ্রভাগাসী বীচ কোনারক আন্তর্জাতিক বালু শিল্প উত্সব (International Sand Art Festival) সত্যি কথা বলবো , বেলন চাকী নিয়ে একদম ঠিকঠাক একটা গোল রুটিও আমি বেলে উঠতে পারিনা - হয়তো আমি কেন , আপনাদের মধ্যেও অনেকে তা পারেন না - সেখানে এরকম দুঃসাহস ? ভাবা যায় ? আজ্ঞে হ্যাঁ , আমি কথা বলছি বালু-শিল্পীদের - অজানা অচেনা কিছু বিভিন্ন বয়সী মানুষ , যাঁরা তাঁদের কল্পনা কে এঁকে ফেলেন বালি দিয়ে । উড়িষ্যার চন্দ্রভাগা সী-বীচে কোনারক আন্তর্জাতিক বালু শিল্প উত্সবে যাঁরা চুপচাপ তামাম দুনিয়াকে দেখিয়ে দিলেন আজকের যুগের কিছু পাগল (?) এখনো আছেন , যাঁরা সমকালীন সেলফি, সারকাজম আর শো-অফের বাইরে বেরিয়ে কিভাবে শুধুমাত্র নিজেদের প্যাশনকে আঁকড়ে ধরে কল্পনা কে শিল্পের মধ্যে দিয়ে প্রকাশ করেন । অতি সাধারণ অতি সামান্য কিছু হাতিয়ার - গোটা কতক খুরপি , কয়েকটি ব্রাশ আর ওয়াটার স্প্রেয়ার - ব্যস ; সমুদ্রের ধারের ঝুরঝুরে বালি কয়েক ঘন্টায় বেঁচে ওঠে গৌতম বুদ্ধ এর রূপ নিয়ে , গড়ে ওঠে তাজমহল , গড়ে ওঠে স্ট্যাচু অফ লিবার্টি । পাঁচ দিন ব্যাপী এই উত্সবে রোজ আলাদা আলাদা থিম । সকাল থেকে শুরু করে শেষ দুপুরের মধ্যে এনারা গড়ে ফেলেন দুরন্ত কিছু মূর্তি - রাত অবধি চলে দর্শকদের আনাগোনা । পরের দিন ঐ স্থানেই শুরু হয় নতুন সকালে নতুন ভাবে শুরু হয় নতুন থিমের নতুন মূর্তি তৈরী । না , সেভাবে লোকের ভিড় নেই । ঢালাও প্রশংসা নেই - না আছে অতি উচ্চ অর্থ-মূল্য , বা বিখ্যাত সেলিব্রটি হওয়ার চটজলদি সুযোগ । শুধু আছে একটু প্যাশন আর সেটাকে বাস্তব রূপ দেওয়ার অনেকটা ইচ্ছে । সমুদ্রের হু হু হাওয়া তে যখন চুল সামলানো মুশকিল , তখনই এঁরা এক মনে ইঞ্চি ইঞ্চি বালি সাজিয়ে এঁকে চলেছেন মনের ভেতরে থাকা ছবিটি । চার পাঁচটি স্থানীয় মেয়েদের একটি দলও ছিল । মন দিয়ে বালি ঘাঁটতে থাকা একটি মেয়েকে ডেকে জিজ্ঞাসা করলাম , "এটা কি নেশা না পেশা ?" মিস্টি হেসে মেয়েটি উড়িয়াতে উত্তর দিল , "ভালো লাগে তাই করি..." আর কি জিজ্ঞাসা করবো ? আমার সব প্রশ্নের উত্তর তো এক বাক্যেই দিয়ে দিলো ... শুধু এদেশের নয় , বিদেশীও ছিলেন বেশকিছু । এক জার্মান শিল্পীর সাথে কথা বলতে উনি জানালেন , বিগত তিন বছর ধরে নিয়মিত আসছেন । ওঁদের দেশে নাকি সুযোগ আছে , অর্থ আছে কিন্তু এত সুন্দর পরিবেশ নেই । মেক্সিকোর টাক মাথা ভদ্রলোক কে যখন জিজ্ঞাসা করলাম , কেন আসেন ঐদেশের নীল বালির বীচ্ ছেড়ে ? হেসে বালি মাখা হাত মাথায় বুলিয়ে বললেন , "ইউ আর লাকি টু বি অ্যান ইন্ডিয়ান ..." মনে মনে ভাবলাম, হায় ! আমরাও যদি সে কথা সত্যিই বুঝতাম ...! ! ! প্রতি বছর সপরিবারে নিয়ম করে পুরী ঘুরতে তো যানই নিশ্চয় ; এবছর যদি পারেন তো দেখে আসবেন - পৃথিবীর থেকে হারিয়ে গিয়ে কিছু মানুষ কি সুন্দর পৃথিবীর ছবি আঁকছেন । Post By-Pavel Sen
DAY-TRIP to Chandipur, Odisha by CAR form HOWRAH …. এক সপ্তাহ খুব শরীর খারাপ হওয়াতে, মনটাও কেমন পালাই পালাই করছিল মানে আরো বেশি করে claustrophobic লাগছিল। এরপর হঠাৎ করে পেট্রোলের গন্ধটা খুব বেশী করে নাকে আসতে লাগলো। সটান করে ওড়িশার ম্যাপ টা খুলে বসে গেলাম। অনেক দিন ধরে ইচ্ছা হচ্ছিল ওড়িশার আনাচে কানাচে , মানে, কলকাতা শহর থেকে একটু দূরে চাঁদিপুরে বেড়াতে গেলে কেমন হয় ? বিস্তৃত, শান্ত ,নির্জন সমুদ্র সৈকত, আর জোয়ার ভাটার খেলায় আপনি মুগ্ধ হবেনই। আর যারা লোকজন এর ভীড় এড়াতে চান তাদের জন্য এ এক উত্তম জায়গা। এছাড়া পার্শ্ববর্তী স্থান হিসাবে আছে গোপীনাথ মন্দির, পুরীর আদলে তৈরি জগন্নাথ মন্দির, নীলগিরি তে রাজার বাড়ি, বুড়িবালাম নদীর তীর, পঞ্চলিঙ্গেশ্বরের মন্দির ,সর্বোপরি নীলগিরি র প্রাকৃতিক সৌন্দর্য । ১৪-৭-২০১৮ আজ সকাল ৫টা নাগাদ, শিবপুর মন্দিরতলা থেকে গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে ৮-৮;৩০টা নাগাদ বেলদার একটু আগে ব্রেকফাস্ট খেয়ে বালেশ্বর টাউনে গিয়ে প্রথমে দেখলাম গোপীনাথ মন্দির, তারপর আর একটু গিয়ে দেখলাম ইমামি জগন্নাথ মন্দির, সেখানে তখন উতসবের মেজাজ, রথ সাজানো হয়ে গেছে, সুধু মন্দির থেকে ঠাকুরের আসা বাকি, কিছুখন সেখানে থেকে আমরা দুপুর ১২টা নাগাদ এলাম চাদিপুর, আসার পথে দেখলাম প্রচুর রথ সেজে আছে বিকেল হবার অপেক্ষা। চাদিপুরে শুভম হটেলে ৪ঘন্টার জন্য একটা রুম নিয়ে বাবা মা কে রেখে মেয়েকে নিয়ে গেলাম Sea Beach. তে চান করতে!!! আমার ৬বছরের মেয়ে জানে, সমুদ্র মানে তাতে চান করা জায়, যেমন দীঘা, পুরী, গোপালপুরে হয়, কিন্তু Not always, everything happens as per your expected line... এই lesson টা দেবার জন্য আমরা বলি নি যে ওখানে জল থাকে কেবল জোয়ার এর সময়, এরপর আমরা লাঞ্চ করে একটু বিশ্রাম নিয়ে বিকেল ৪টানাগদ বুড়িবালাম হয়ে বাড়ি ফেরার পথ ধরলাম। এরপর ৭টা নাগাদ খরগপুরের একটু আগে টিফিন করে নিয়ে, বাগনান থেকে রাতের খাবার নিয়ে বাড়ি ফিরলাম রাত১১টা নাগাদ, এত সময় লাগল কারন, আমার মতে, Monday প্রধানমন্ত্রি আসবে তাইরাস্তার প্রতি ১০মিনিট অন্তর পুলিশ চেকিং করছ, parsonal গাড়ি নয়, ভাড়ার গাড়ি আর ট্রাক, কিন্তু তার জন্য প্রচুর জ্যাম। Toral Km Travelled in a single day=619km. Pos By:- Sukanta Banerjee
আজ ২য় পর্ব অর্থাৎ 2nd দিনের ভ্রমন আজ আমাদের গন্তব্য হোলো দারিংবারি, এই নিয়ে দু একটা কথা বোলে নি যেটা না বোল্লে বোধহয় কিছু টা বাকি থেকে যাবে, মোটামুটি পুরী ঘোরা নেই এইরকম বাঙ্গালী খুব কম পাওয়া যাবে, আমিও গোটা ৬/৭ বার ঘুরেছি কিন্তু শেষের বছর তিনেক ধরে আমার ওয়াইফ এর বায়না হলো দারিংবারি যাবে, তাই আমার বন্ধু,দাদা,ভাই সবার সঙ্গে মানে আমার গ্রুপের সঙ্গে আলোচনা শুরু হলো, সবার ই দেখলাম খুব আগ্রহ, তাই আমিও গররাজি হওয়ার কোনো কারণ দেখলাম না, আসলে দারিংবারি নামে একটা আলাদা টান আছে,তার উপর গাড়ি চালিয়ে পাহাড়ে যাওয়া- সেটার তো একটা আলাদা আকর্ষন তো আছেই, এর আগে আমার অযোধ্যা পাহাড়ে গাড়ি চালিয়েছি আর সমতলের মানুষ তো আমরা তাই ওই কথা আর বোললাম না, এর মধ্যে আমার এক দাদা দীপক দা, তার প্রচুর অভিজ্ঞতা, এর আগে লে, লাদাক ছোটো গাড়ি নিয়ে ঘুরে এসেছেন তাই উনি আমাদের এই যাত্রায় লিডার, তাই ওনাকে ভরসা করে আর বাদবাকি ৪টে গাড়ি রাজি হলাম, সেই মতো সবাই রেডিও হোচ্ছিলাম কিন্তু দীপক দা হটাৎ বোললেন 'যে ভাই তোমাদের সঙ্গে আমার যাওয়া হবে না,আমি বোললাম কেন দাদা কি হোলো?' দীপক দা বোললেন, 'তোমরা যা দিন ঠিক করেছো তাতেকোরে এতো কম সময় এতোগুলো জায়গা হবে না, তাই আমি তোমার বৌদিকে নিয়ে একাই চোলেযাব ঠিক কোরলাম।' আসলে আমার ছেলেদের স্কুল, আর এক দাদার অফিস এই সব ব্যাপার নানান ঝামেলায় সময় টা ম্যাচ করল না, তাই অগোত্যা আমাকেই লিডারশীপ নিতে হলো, পাহাড়ে গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতা কারোর ই নেই তাই, আমি বোল্লাম ওকে; বেড়িয়ে তো পরি, তারপর দেখা যাবে। কোলাঘাট থেকে আমাদের যাত্রা শুরু করে আগের দিন দাসপাল্লায় রাত্রি যাপন করি, যেহেতু দারিংবারি তে আমরা হোটেল পাইনি তাই তার কাছাকাছি থাকা, সেইমত দাসপাল্লা থেকে পরের দিন সকালে উঠে আমাদের গন্তব্য দারিংবারির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলাম, দাসপাল্লা বাজার পেরিয়ে ডান দিকের রাস্তা ধরলাম, এই শুরু হোলো ছোটো পাহাড়ি রাস্তায় চলা, আমি সবার আগে, দারুন সিনিক বিউটি ছোটো ছোটো পাহাড় কত অজানা পাখির ডাক সে এক স্বর্গীয় ব্যাপার আর তার সঙ্গে পাহাড়ে গাড়ি চালানোর রোমাঞ্চ, এখানে খুব একটা চরাই উৎরাই নেই তাই কারোর ই সেরকম কোনো অসুবিধা হোলো না, এবার আমরা একটা ছোটো শহরে এসে পরলাম, ভঞ্জনাগর: এবার ওই শহরের ঘিঞ্জি পেরিয়ে আমরা আমাদের মূল গন্তব্য দারিংবারি পাহাড়ি রাস্তায় পড়লাম এবার কিন্তু ভালোই চরাই উৎরাই পেলাম, কিন্তু আমি আমার অভিজ্ঞতা কে সঞ্চয় করে এগিয়ে চোল্লাম, কিন্তু আমার বাকি তিনটে গাড়ি গেল কই! কারোর তো দেখা নেই! দাড়াতেও পারছি না একে তো সরু রাস্তা তার উপর বিশাল ঢাল, বেশ চিন্তায় পরে গেলাম, মাম মানে আমার ওয়াইফ বোলেই যাচ্ছে তোমাকে দাড়াতে বোলছি তুমি দাড়াচ্ছ না কেন! ওকে বোঝাবো কি করে যে দাড়ানোর সেরকম সুইটেবেল যায়গা না পেলে দাড় করাবো কি করে গাড়ি গড়িয়ে যাবে নীচের দিকে, অগোত্যা একটা যায়গা পেলাম যাতে একটা গাড়ি অনায়াসে পেরোতে পাড়ে, মিনিট ১৫/২০ পর একেক কোরে এসে হাজির হোলো ৩টে গাড়ি, এবার নিশ্চিন্ত হোলাম, আর ওদের সঙ্গে কথা বোলে বুঝলাম প্রথমটায় একটু অসুবিধা হচ্ছিলো এখন ঠিক হয়ে গেছে, আসলে আমরা যারা সমতলে গাড়ি চালাই তাদের কাছে ১নং / ২ন নং গিয়ারের তেমন ভুমিকা ঠিক নেই,পাহাড়ে ছোটো গাড়ির ক্ষেত্রে যেটার বিশেষ প্রয়োজন। যাক এবার আর আমি কাউকে ছাড়ছি না,আমি বোললাম আমি আস্তে চালাচ্ছি, সবাই ঠিক আমার পিছনেই থাকবে, ওই মত সবাই আমার সাথে সাথেই চলতে শুরু করলো আর এই ভাবেই আমাদের দারিংবারির প্রথম দ্রষ্টব্য হিলভিউপার্ক পৌছে গেলাম, দারিংবারির এই পার্ক আমরা কোলকাতার মানুষ যারা তাদের কাছে বিশেষ কোনো মানে রাখে না, তবে এই পার্ক থেকে দাড়িয়ে পূর্বঘাট পর্বতের যে মনোরোম দৃশ্য, সত্যি মনকে ভাল করে দেয়, এর পর আমাদের গন্তব্য এমুর্পাক,সেটাও ওই একি ব্যাপার, সেরকম কিছু না, আর রাস্তায় ওখানকার মানুষের সহজ সরল কথা আর চাউনি এটাও বাড়তি পাওনা, এর পর আমাদের গন্তব্য লার্ভাস পয়েন্ট, পৌছে গেলাম, কিন্তু একটা প্রবলেম হোলো, মেন রোড থেকে কিছুটা ভিতরে ঢুকতে হবে, কিছু মানুষ বোল্লো যে ছোটো গাড়ি ভিতরে যাবে না, এদিকে বোর্ডে দেখাচ্ছে ৫ কি.মি. আমাদের আর ৩টে গাড়ি বোল্লো আমরা কেউ যাব না,কিন্তুএই ৫কি.মি. যদি হেটে যেতে হয়,ফিরে আসতে সন্ধ্যে হোয়ে যাবে, কিন্তু মাম মানে আমার ওয়াইফ বোল্লো এতদূর যখন এসেছি আমি যাব, মাম আমার দুই ছেলেকে আর আমার এক বন্ধু আর দাদার মেয়েকে নিয়ে হাটা শুরু করলো, আমি দেখলাম যদি ৫কিমি হেটে যায় আবার ফিরে আসে তাহোলে অনেক দেরী হয়ে যাবে, তাই আমি কিছুক্ষন দাড়িয়ে দেখলাম এস ইউ ভি গাড়ি গুলো দিব্যি যাচ্ছে আসচ্ছে, ওকে; আমিও রওনা দিলাম আমার হ্যাচব্যাক মানে ছোটো গাড়ি নিয়েই, কারন আমার গাড়ি,আর আমার অভিজ্ঞতার উপর আমার অঘাত বিশ্বাস আছে,তাই সেই বিশ্বাস কে ভর কোরেই এগিয়ে যাওয়া, কারণ আর আমাদের এই দারিংবারিতে কোনো হোটেল বুক করা নেই,মানে পাইনি, আজ আমাদের যেতে হবে ভবানিপাটনা কালাহান্ডির জঙ্গল পেরিয়ে, তাই আমার হাতে সময় খুবই কম,তাই লার্ভাস পয়েন্ট এর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলাম একাই কারন ওদের ফিরিয়ে নিয়ে এসে আবার অনেকটা পথ আজ পাড়ি দিতে হবে, একটু এগিয়েই ওদের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল, ওদের গাড়িতে তুলে লার্ভাস পয়েন্ট এ পৌছে গেলাম মাত্র ১.৫ কি.মি. রাস্তা মেন রোড থেকে। (,রাস্তায় যে বোর্ড এ ৫কি.মি. উল্লেখ আছে তা সম্পূর্ণ ভূল লেখা) অনেক ছবি তুল্লাম ফিরে আসলাম এরপর আমাদের আরেকটা গাড়ি আমাকে ভালভাবে ফিরে আসতে দেখে সে আবার গেল মাত্র ১.৫ কি.মি. রাস্তা তাই বোল্লাম দেখে এস, দেখে এসে বোল্লো খুব সুন্দর লাগলো এর পর আমাদের যাত্রা মন্দাসুরু, দারুন সুন্দর সিনিক বিউটি গাড়ি চালিয়ে খুবই খুশী হোলাম। এবার আমাদের আজকের রাত্রিযাপন ভবানিপাটনার উদ্দ্যেশে যাত্রা শুরু, সমতল রাস্তা গাড়ি ১০০/১২০ তে চলা শুরু। বাই বাই দারিংবারি, মাম আগেই দেখে রেখেছিল যে দারিংবারি তে সেরকম দেখার কিছু নেই, কিন্তু পূর্বঘাট পর্বত মালার সৌন্দর্য আমাদের মনের ভিতরে থেকে গেল। আমরা যারা এই বাংলায় থাকি সবারি প্রায় দর্জিলিং পাহাড় ঘোরা, তাই সবাই কে অনুরোধ করবো কেউ দার্জিলিং পাহাড়ের সংগে এই পাহাড়ের তুলনা কোরবেন না, কারণ ভুলে যাবেন না দার্জিলিং হলো হিমালয়া পাহাড়ের রানী আর দারিংবারি হলো পূর্বঘাট পাহাড়ের আদিবাসী মেয়ে,তাই সেই মানসিকতা নিয়েই এই ভ্রমন করবেন, কারণ রানীর সংগে আদিবাসী মেয়ের কোনো তুলনাই হয় না। Post By:- Chakraborty Sukhendu
Bangriposi. Come back to nature. Thakurani hills, Buribalam river, tribal haat, dokra village, the forest, the waterfall and many more.... Post By-Subhrangshu Bhandary
কোলকাতা কে বাই বাই জানিয়ে বেরিয়ে পোরলাম দারিংবারির উদ্দ্যেশে, বন্ধুদের নিয়ে আর নিজের সেই দুধ সাদা পঙ্ক্ষীরাজ কে সাথী কোরে,সবার সাথে দেখা হোলো সেই আমাদের চিরপরিচিত কোলাঘাট এর সেই শেরিপাঞ্জাবের লনে, তারপর আমাদের প্রথমদিনের গন্তব্য দাসপাল্লা, সেই মত আমাদের ৪টে গাড়ি ছুটতে শুরু কোরলো আর তার সাথে শুরু হোলো আমাদের ছোটো ছোটো পিকনিক আর আর পথ চলতি আড্ডা, সত্তি এ এক স্বর্গিও সুখ। কাল দারিংবারির ছবি সহ আপডেট। এবারে আমরা ৩০০০ কিমি ৪টে গাড়ি নিয়ে ঘুরবো, আমাদের সদস্য সংখ্যা হোলো ১৮ জোন। আমাদের ঘোরার তালিকায় আছে দারিংবারি,চিত্রকুট,আরাকু,ভাইজাগ, গোপালপুর,আর পুরী, আমি আগে কোনোদিন ভ্রমন কাহিনী লিখিনি, তাই হয়তো সেরকম রসবোধ আমার লেখায় পাবেন না, তবে কিছু তথ্য দিতে পারব এই আশাকরি। Post By-Chakraborty Sukhendu
রম্ভা চিলকা অভিযান প্রকৃতির সৃষ্ট এশিয়ার বৃহত্তম হ্রদ (লেগুন) হলো চিলকা । পুরী, গঞ্জাম, খুরদা জেলাকে ছুঁয়ে এই চিলকার বিস্তৃতি । চিলকার মূল তিনটি গেটওয়ে । ১) পুরীর সাতপাড়া (ডলফিনের জন্য বিখ্যাত) ২) বালুগাঁওয়ের বড়কুল ৩) বালুগাঁওয়ের রম্ভা বালুগাঁও আর ব্রহ্মপুর স্টেশনের মাঝে রম্ভার অবস্থান । বালুগাঁও স্টেশন থেকে ৩৫ কিমি দূরে রম্ভা জেটিঘাট এবং পান্থনিবাস । বালুগাঁও স্টেশন থেকে ৪০০/৫০০ টাকায় অটোতে ৩৫ কিমি দূরে রম্ভাতে পৌঁছানো যায় । থাকার জন্য ওড়িশা OTDC পান্থনিবাস । রম্ভার জেটিঘাটের পাশে সাজানো বাগানের মধ্যে এক অপরূপ সুন্দর থাকার ঠিকানা । ঘরের রুম থেকেই চিলকার সৌন্দর্য্য উপভোগ করা যায় । সকালের চা ব্রেকফাস্ট ফ্রী । অনলাইন বুকিংয়ের জন্য OTDC ওয়েবসাইট এবং অফলাইনে বুকিংয়ের জন্য কলকাতা লেনিন সরনীতে উৎকল ভবন অফিসে বুক করা যায় । সিনিয়র সিটিজেন, শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য দশ শতাংশ ছাড় পাওয়া যায় । চেক ইন/আউট টাইম দুপুর ১২ টা । রম্ভা পান্থনিবাসের খাওয়াদাওয়া খুবই সুন্দর । এরপর চিলকা ভ্রমণ । রম্ভাতে চিলকার বুকে বিভিন্ন আইল্যান্ড আছে। ১) ব্রেকফাস্ট আইল্যান্ড (৩ কিমি), ২) ঘন্টাশিলা হিল আইল্যান্ড (২ কিমি), ৩) বার্ডস (ডাইনোসরস পার্ক) আইল্যান্ড (৫ কিমি), ৪) হানিমুন আইল্যান্ড (৮ কিমি), ৫) সানাকুডা আইল্যান্ড (৭ কিমি) রম্ভা পান্থনিবাস থেকে বিভিন্ন প্যাকেজে পাঁচ সিটার (স্পীড বোট) বা দশ সিটার (মোটর বোট) ভাড়া নিয়ে ঘন্টা তিনেকের মধ্যে এই আইল্যান্ড গুলো ঘুরে নেওয়া যায় । রম্ভা পান্থ নিবাসের বোটিংয়ের তিন রকম প্যাকেজ আছে । পাঁচটা আইল্যান্ডের জন্য খরচ ২৭৩০ টাকা প্রথম তিনটি আইল্যান্ডে যাওয়ার খরচ ১৭০০ টাকা এবং প্রথম দুটো আইল্যান্ড ঘোরার খরচ ১০০০ টাকা । এছাড়াও প্রাইভেট অনেক নৌকা আছে জেটিঘাটে । পুরী, গোপালপুর, ডারিংবাডি ট্রিপের সাথে একদিন এক্সটা যোগ করে নেওয়া যায় রম্ভা ট্রিপকে । রম্ভা থেকে ঘুরে নেওয়া যায় ৫১ পীঠের এক পীঠ তারাতরিনী মন্দির, তামপাড়া লেক হয়ে গোপালপুর কিম্বা বড়কুল । দক্ষিণে চেন্নাইগামী সব ট্রেনেই বালুগাঁও স্টেশনে নেমে রম্ভা পৌঁছানো যায় । Post By:- Subhojit Tokdar
Post By:- Suman Roy Chowdhury
|
Best Washing MachineCategories
All
Archives
November 2021
Best Autoclean Chimney |