আজ ২য় পর্ব অর্থাৎ 2nd দিনের ভ্রমন আজ আমাদের গন্তব্য হোলো দারিংবারি, এই নিয়ে দু একটা কথা বোলে নি যেটা না বোল্লে বোধহয় কিছু টা বাকি থেকে যাবে, মোটামুটি পুরী ঘোরা নেই এইরকম বাঙ্গালী খুব কম পাওয়া যাবে, আমিও গোটা ৬/৭ বার ঘুরেছি কিন্তু শেষের বছর তিনেক ধরে আমার ওয়াইফ এর বায়না হলো দারিংবারি যাবে, তাই আমার বন্ধু,দাদা,ভাই সবার সঙ্গে মানে আমার গ্রুপের সঙ্গে আলোচনা শুরু হলো, সবার ই দেখলাম খুব আগ্রহ, তাই আমিও গররাজি হওয়ার কোনো কারণ দেখলাম না, আসলে দারিংবারি নামে একটা আলাদা টান আছে,তার উপর গাড়ি চালিয়ে পাহাড়ে যাওয়া- সেটার তো একটা আলাদা আকর্ষন তো আছেই, এর আগে আমার অযোধ্যা পাহাড়ে গাড়ি চালিয়েছি আর সমতলের মানুষ তো আমরা তাই ওই কথা আর বোললাম না, এর মধ্যে আমার এক দাদা দীপক দা, তার প্রচুর অভিজ্ঞতা, এর আগে লে, লাদাক ছোটো গাড়ি নিয়ে ঘুরে এসেছেন তাই উনি আমাদের এই যাত্রায় লিডার, তাই ওনাকে ভরসা করে আর বাদবাকি ৪টে গাড়ি রাজি হলাম, সেই মতো সবাই রেডিও হোচ্ছিলাম কিন্তু দীপক দা হটাৎ বোললেন 'যে ভাই তোমাদের সঙ্গে আমার যাওয়া হবে না,আমি বোললাম কেন দাদা কি হোলো?' দীপক দা বোললেন, 'তোমরা যা দিন ঠিক করেছো তাতেকোরে এতো কম সময় এতোগুলো জায়গা হবে না, তাই আমি তোমার বৌদিকে নিয়ে একাই চোলেযাব ঠিক কোরলাম।' আসলে আমার ছেলেদের স্কুল, আর এক দাদার অফিস এই সব ব্যাপার নানান ঝামেলায় সময় টা ম্যাচ করল না, তাই অগোত্যা আমাকেই লিডারশীপ নিতে হলো, পাহাড়ে গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতা কারোর ই নেই তাই, আমি বোল্লাম ওকে; বেড়িয়ে তো পরি, তারপর দেখা যাবে। কোলাঘাট থেকে আমাদের যাত্রা শুরু করে আগের দিন দাসপাল্লায় রাত্রি যাপন করি, যেহেতু দারিংবারি তে আমরা হোটেল পাইনি তাই তার কাছাকাছি থাকা, সেইমত দাসপাল্লা থেকে পরের দিন সকালে উঠে আমাদের গন্তব্য দারিংবারির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলাম, দাসপাল্লা বাজার পেরিয়ে ডান দিকের রাস্তা ধরলাম, এই শুরু হোলো ছোটো পাহাড়ি রাস্তায় চলা, আমি সবার আগে, দারুন সিনিক বিউটি ছোটো ছোটো পাহাড় কত অজানা পাখির ডাক সে এক স্বর্গীয় ব্যাপার আর তার সঙ্গে পাহাড়ে গাড়ি চালানোর রোমাঞ্চ, এখানে খুব একটা চরাই উৎরাই নেই তাই কারোর ই সেরকম কোনো অসুবিধা হোলো না, এবার আমরা একটা ছোটো শহরে এসে পরলাম, ভঞ্জনাগর: এবার ওই শহরের ঘিঞ্জি পেরিয়ে আমরা আমাদের মূল গন্তব্য দারিংবারি পাহাড়ি রাস্তায় পড়লাম এবার কিন্তু ভালোই চরাই উৎরাই পেলাম, কিন্তু আমি আমার অভিজ্ঞতা কে সঞ্চয় করে এগিয়ে চোল্লাম, কিন্তু আমার বাকি তিনটে গাড়ি গেল কই! কারোর তো দেখা নেই! দাড়াতেও পারছি না একে তো সরু রাস্তা তার উপর বিশাল ঢাল, বেশ চিন্তায় পরে গেলাম, মাম মানে আমার ওয়াইফ বোলেই যাচ্ছে তোমাকে দাড়াতে বোলছি তুমি দাড়াচ্ছ না কেন! ওকে বোঝাবো কি করে যে দাড়ানোর সেরকম সুইটেবেল যায়গা না পেলে দাড় করাবো কি করে গাড়ি গড়িয়ে যাবে নীচের দিকে, অগোত্যা একটা যায়গা পেলাম যাতে একটা গাড়ি অনায়াসে পেরোতে পাড়ে, মিনিট ১৫/২০ পর একেক কোরে এসে হাজির হোলো ৩টে গাড়ি, এবার নিশ্চিন্ত হোলাম, আর ওদের সঙ্গে কথা বোলে বুঝলাম প্রথমটায় একটু অসুবিধা হচ্ছিলো এখন ঠিক হয়ে গেছে, আসলে আমরা যারা সমতলে গাড়ি চালাই তাদের কাছে ১নং / ২ন নং গিয়ারের তেমন ভুমিকা ঠিক নেই,পাহাড়ে ছোটো গাড়ির ক্ষেত্রে যেটার বিশেষ প্রয়োজন। যাক এবার আর আমি কাউকে ছাড়ছি না,আমি বোললাম আমি আস্তে চালাচ্ছি, সবাই ঠিক আমার পিছনেই থাকবে, ওই মত সবাই আমার সাথে সাথেই চলতে শুরু করলো আর এই ভাবেই আমাদের দারিংবারির প্রথম দ্রষ্টব্য হিলভিউপার্ক পৌছে গেলাম, দারিংবারির এই পার্ক আমরা কোলকাতার মানুষ যারা তাদের কাছে বিশেষ কোনো মানে রাখে না, তবে এই পার্ক থেকে দাড়িয়ে পূর্বঘাট পর্বতের যে মনোরোম দৃশ্য, সত্যি মনকে ভাল করে দেয়, এর পর আমাদের গন্তব্য এমুর্পাক,সেটাও ওই একি ব্যাপার, সেরকম কিছু না, আর রাস্তায় ওখানকার মানুষের সহজ সরল কথা আর চাউনি এটাও বাড়তি পাওনা, এর পর আমাদের গন্তব্য লার্ভাস পয়েন্ট, পৌছে গেলাম, কিন্তু একটা প্রবলেম হোলো, মেন রোড থেকে কিছুটা ভিতরে ঢুকতে হবে, কিছু মানুষ বোল্লো যে ছোটো গাড়ি ভিতরে যাবে না, এদিকে বোর্ডে দেখাচ্ছে ৫ কি.মি. আমাদের আর ৩টে গাড়ি বোল্লো আমরা কেউ যাব না,কিন্তুএই ৫কি.মি. যদি হেটে যেতে হয়,ফিরে আসতে সন্ধ্যে হোয়ে যাবে, কিন্তু মাম মানে আমার ওয়াইফ বোল্লো এতদূর যখন এসেছি আমি যাব, মাম আমার দুই ছেলেকে আর আমার এক বন্ধু আর দাদার মেয়েকে নিয়ে হাটা শুরু করলো, আমি দেখলাম যদি ৫কিমি হেটে যায় আবার ফিরে আসে তাহোলে অনেক দেরী হয়ে যাবে, তাই আমি কিছুক্ষন দাড়িয়ে দেখলাম এস ইউ ভি গাড়ি গুলো দিব্যি যাচ্ছে আসচ্ছে, ওকে; আমিও রওনা দিলাম আমার হ্যাচব্যাক মানে ছোটো গাড়ি নিয়েই, কারন আমার গাড়ি,আর আমার অভিজ্ঞতার উপর আমার অঘাত বিশ্বাস আছে,তাই সেই বিশ্বাস কে ভর কোরেই এগিয়ে যাওয়া, কারণ আর আমাদের এই দারিংবারিতে কোনো হোটেল বুক করা নেই,মানে পাইনি, আজ আমাদের যেতে হবে ভবানিপাটনা কালাহান্ডির জঙ্গল পেরিয়ে, তাই আমার হাতে সময় খুবই কম,তাই লার্ভাস পয়েন্ট এর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলাম একাই কারন ওদের ফিরিয়ে নিয়ে এসে আবার অনেকটা পথ আজ পাড়ি দিতে হবে, একটু এগিয়েই ওদের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল, ওদের গাড়িতে তুলে লার্ভাস পয়েন্ট এ পৌছে গেলাম মাত্র ১.৫ কি.মি. রাস্তা মেন রোড থেকে। (,রাস্তায় যে বোর্ড এ ৫কি.মি. উল্লেখ আছে তা সম্পূর্ণ ভূল লেখা) অনেক ছবি তুল্লাম ফিরে আসলাম এরপর আমাদের আরেকটা গাড়ি আমাকে ভালভাবে ফিরে আসতে দেখে সে আবার গেল মাত্র ১.৫ কি.মি. রাস্তা তাই বোল্লাম দেখে এস, দেখে এসে বোল্লো খুব সুন্দর লাগলো এর পর আমাদের যাত্রা মন্দাসুরু, দারুন সুন্দর সিনিক বিউটি গাড়ি চালিয়ে খুবই খুশী হোলাম। এবার আমাদের আজকের রাত্রিযাপন ভবানিপাটনার উদ্দ্যেশে যাত্রা শুরু, সমতল রাস্তা গাড়ি ১০০/১২০ তে চলা শুরু। বাই বাই দারিংবারি, মাম আগেই দেখে রেখেছিল যে দারিংবারি তে সেরকম দেখার কিছু নেই, কিন্তু পূর্বঘাট পর্বত মালার সৌন্দর্য আমাদের মনের ভিতরে থেকে গেল। আমরা যারা এই বাংলায় থাকি সবারি প্রায় দর্জিলিং পাহাড় ঘোরা, তাই সবাই কে অনুরোধ করবো কেউ দার্জিলিং পাহাড়ের সংগে এই পাহাড়ের তুলনা কোরবেন না, কারণ ভুলে যাবেন না দার্জিলিং হলো হিমালয়া পাহাড়ের রানী আর দারিংবারি হলো পূর্বঘাট পাহাড়ের আদিবাসী মেয়ে,তাই সেই মানসিকতা নিয়েই এই ভ্রমন করবেন, কারণ রানীর সংগে আদিবাসী মেয়ের কোনো তুলনাই হয় না। Post By:- Chakraborty Sukhendu
0 Comments
Leave a Reply. |
Best Washing MachineCategories
All
Archives
November 2021
Best Autoclean Chimney |