বৃন্দাবন দর্শন। বৃন্দাবনের বাঁকেবিহারী মন্দির দর্শনের জন্য যেখানে আমরা নামলাম সেখান থেকে সুউচ্চ টিলার ওপর লালপাথরের যে মন্দির দেখতে পেলাম প্রথমে সেটাই ভেবেছিলাম বাঁকেবিহারী মন্দির। কিন্তু জানলাম তা নয়, এটি বিখ্যাত মদনমোহন মন্দির, বৃন্দাবনের প্রাচীন মন্দির গুলোর মধ্যে অন্যতম। মন্দিরটির যে বিষয়টি আমার দৃষ্টি আকর্ষন করল তা হল উঁচু টিলার ওপর যেভাবে মন্দিরটি নির্মান করা হয়েছে, ধাপে ধাপে সিঁড়ি ওপরে উঠে গেছে দুদিক দিয়েই, তারপর প্রশস্ত চাতাল ঘিরে মন্দির ও অন্যান্য ইমারত। পুরো মন্দির চত্বরটা দেখে মনে হচ্ছে যেন রাজস্থানের দুর্গচত্বরের কোন মন্দির দেখছি,অন্তত আমার তাই মনে হচ্ছিল। যাইহোক, একদিকের সিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠলাম। চাতাল চত্বর বেশ প্রশস্ত, মূল মন্দির ছাড়াও অন্যান্য ইমারত আছে। চাতালে একদল ভক্ত ও গুরুকে দেখতে পেলাম আলোচনায় মগ্ন। ওপর থেকে দূরে যমুনা নদীও দেখতে পেলাম। মন্দিরটি কিন্তু আমার খুব ভালো লাগল।।, লালপাথরে তৈরী, সুউচ্চ চূড়া, মন্দির গায়ে অপূর্ব কারুকাজ! তবে এই মন্দিরে যে বিগ্রহ আছেন সেটি মূল বিগ্রহ নয়। ধ্বংসের ভয়ে মূল বিগ্রহটি রাজস্থানের কারাউলিতে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। বেশ কিছু সময় মন্দির চত্বরে কাটিয়ে আমরা অন্যদিকের সিঁড়ি দিয়ে নীচে নামলাম, যে গলিতে পড়লাম তার মধ্য দিয়ে খানিকটা এগিয়ে যেতেই বাঁকেবিহারী মন্দির। কিন্তু একটু এগোতেই ভীড় মালুম হল! সামনে যত এগোচ্ছি ভীড় তত বাড়ছে, একসময় তো দমবন্ধ হওযার মতন অবস্থা হল! আমার এইভাবে মন্দির দর্শন মোটেই ভালো লাগে না। ভীড়ের ঠ্যালায় কি যে দেখলাম ভালোভাবে বলতে পারব না কিছুই! ছবি তোলাও ছিল একেবারে নিষিদ্ধ। যাইহোক দূর থেকে এক ঝলক বাঁকেবিহারী দর্শন হল! আবার ভীড়ের মধ্যে ঠ্যালাঠেলি করে বেড়িয়ে এলাম। বাইরে বেড়িয়ে এসে মনে হল এবার কিছু খেতে হবে, সকাল থেকে তেমন কিছু খাওয়া হয় নি। খাবার দোকান গুলোতে বেশ ভীড়, আমরা একটাতে ঢুকলাম,বুঝলাম খাবার পেতে দেরি হবে। তার আগে লস্যি খাওয়া যেতে পারে, চলে এল মালাই লস্যি। চুমুক দিতেই মনে হল অপূর্ব স্বাদ! আমি তো বেশ আনন্দ সহকারে ধীরে ধীরে খেতে লাগলাম। আমাদের উল্টোদিকে একটি পরিবার বসেছিল, তারাও লস্যি খাচ্ছিল, তবে ঢক ঢক করে। তাদের খাওয়া শেষ হতে দেখি কর্তাব্যক্তিটি সবার এঁটো ভাড় তুলছেন, সঙ্গে আমার আধখাওয়া ভাড়টাও তুলে নিলেন। আমি হা হা করে উঠতেই বললেন, ' কোই বাত নেহী বহেনজী!' হায় উনি তো তীর্থক্ষেত্রে এঁটো পাত কুড়িয়ে পুন্য অর্জন করলেন, কিন্তু আমার স্বাদের লস্যি যে পুরো খাওয়া হল না,আফসোস! এরপর আমরা গেলাম বৃন্দাবনের বিখ্যাত প্রেমমন্দিরে। প্রায় 54 একর জাযগা জুড়ে অপূর্ব সুন্দর এই মন্দির। এক আন্তর্জাতিক সংস্থা এই মন্দির পরিচালনা করেন। মূল মন্দির সম্পূর্ণ সাদা ইটালিয়ন পাথরে তৈরী। ভেতরে রয়েছেন রাধাকৃষ্ণ ও রামসীতার বিগ্রহ। মন্দির চত্বরে বিভিন্ন জায়গায় কৃষ্ণলীলার গল্পগুলি অপূর্ব সুন্দর সব মূর্তির মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে, দেখতে খুবই ভালো লাগে। বেশ কিছু সময় মন্দির চত্বরে কাটিয়ে আমরা বেড়িয়ে পড়লাম মথুরার উদ্দেশ্যে। Post by-Sutapa Dutta
0 Comments
Leave a Reply. |
Best Washing MachineCategories
All
Archives
November 2021
Best Autoclean Chimney |