২০১৯ এর অক্টোবর মাসে পুজোর ছুটিতে 14 দিনের লাহুল স্পিতি বেড়ানোর গল্প নিয়ে আমার প্রথম নিবেদন।
(চন্ডিগড় - সিমলা - কুফরি - ফাগু - সারাহান - সাংলা - ছিটকুল - কল্পা - খাব - হাংরাং ভ্যালি ও পু ব্লক - নাকো - টাবো - ধানকার - পিন ভ্যালি - কাজা - হিক্কিম - লাঞ্জা - কোমিক - চিচাম ব্রিজ - কিয়াটো - লোসার - কুঞ্জুম পাস - রোটাং পাস - মানালি) হিক্কিম ধুসর পাহাড়িয়া রাস্তার বাঁক বেয়ে , হিমেল হাওয়া মেখে, পৃথিবীর সর্বোচ্চ পোস্ট অফিস থেকে রং বেরং এর পিকচার পোস্ট কার্ডে মনের কথা আর ভালোলাগার অনুভূতি প্রকাশ করতে চান? এর জন্য আপনাকে কিন্তু বিদেশ ভ্রমণ করতে হবে না। ভারতবর্ষের হিমাচল প্রদেশের লাহুল স্পিতি জেলার হিক্কিম গ্রামেই রয়েছে পৃথিবীর সর্বোচ্চ পোস্ট অফিস। ৪৪৪০ মিটার উচ্চতায়। কাজা থেকেই সেরে নেওয়া যায় এই ভ্রমণ। হিক্কিম উত্তর ভারতের হিমাচল প্রদেশের লাহুল ও স্পিতি জেলার একটি গ্রাম। হিক্কিম, কাজার নিকটে অবস্থিত। ৪৪০০মিটার উচ্চতায় সারা বছর মানুষজন বসবাস করেন, ভারতের এমন জনবসতির অন্যতম গ্রাম হিক্কিম। গিরিবর্ত্মগুলিতে অত্যধিক তুষারপাতের কারণ হিক্কিম বছরের অর্ধেক সময়, অন্যান্য অঞ্চল থেকে বিচ্ছিন্ন থাকে। স্থানীয় মানুষ ঘর বানানোর জন্য পাথর প্রচুর ব্যবহার করেন। তাংগিউদ গুম্ফা বৌদ্ধবিহার এখান থেকে কাছে। বিশ্বের সর্বোচ্চ ভোটদান কেন্দ্র হিক্কিম । এটি লিমকা বুক অফ রেকর্ডসে ও নথীবদ্ধ আছে। হিক্কিমের ডাকঘর বিশ্বের সর্বোচ্চ উচ্চতায় অবস্থিত ডাকঘর। পিন কোড ১৭২১১৪।
রিনচেন শেরিং- হিক্কিম গ্রামের এই ডাকঘর টিকে ভারতীয় ডাক বিভাগের স্থায়ী কর্মী হিসাবে চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন সেই ১৯৮৪ সাল থেকে। তুষারপাত, তুষার ঝড় সহ নানা প্রতিবন্ধকতাকে সঙ্গী করে। মোবাইল ফোন আর ইন্টারনেটের সংযোগ ছাড়াই আজও সমানতালে চালু এই ডাকঘর। হিক্কিম গ্রামে শেরিং এর ছোট্ট বাড়িটি কেই ভারতীয় ডাক বিভাগ স্থায়ী পোস্ট অফিস হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
যেখান থেকে পরিচালিত হয় ডাকবিভাগের সমস্ত কাজকর্মও। এখান থেকেই মিলে যায় কোমিক মনাস্ট্রির নামে প্রেরিত মঙ্কদের পাসপোর্ট। স্থানীয় কৃষকদের গচ্ছিত টাকাপয়সাও জমে এই ডাকঘরে। এই মুহূর্তে পাহারঘেরা অপরূপ সৌন্দর্যকে সঙ্গী করে স্পিতি উপত্যকার বুকে রমরমিয়ে চলছে বিশ্বের সর্বোচ্চ ডাকঘর। তাই বিশ্বের সমস্ত পর্যটকদের কাছে স্পিতি ভ্যালির এই সর্বোচ্চ ডাকঘরটি এক অনন্য আকর্ষণ। সুতরাং প্রিয়জনকে মনের কথা লিখে, পিকচার পোস্টকার্ডে ভাসিয়ে দেবার জন্য হিক্কিম পোস্ট অফিসে আপনাকে স্বাগত। একাই চালান এই পোস্টঅফিস। তার সঙ্গে দেখা হয়নি আমাদের। কারণ তিনি তখন কাজায় গেছিলেন পোস্টাল ষ্ট্যাম্প আনতে। তাই বাধ্য হয়ে পাশের এক মহিলার কাছে আমাদের বাড়ির ঠিকানা লেখা পোস্ট কার্ড গুলি রেখে আসলাম পোস্টাল টিকিটের দাম সহ। পোস্টকার্ডের দাম ছিল 30 টাকা আর পোস্টাল স্ট্যাম্পের দাম 6 টাকা মোট 36 টাকা খরচ করে আমরা সবাই নিজের নিজের বাড়ির ঠিকানায় চিঠি পোস্ট করেছিলাম। জানিনা সেই চিঠি আদেও আমাদের বাড়িতে এসে পৌঁছাবে কিনা? কারণ আমরা শুনেছিলাম যে এই চিঠি অধিকাংশই নাকি হারিয়ে যায়। তবুও অনেক আশা নিয়ে আমরা এই চিঠি পোস্ট করেছি। চিঠি, হিক্কিম থেকে পায়ে হাঁটা পথে যায় কাজা; সেখান থেকে রেকং-পিও হয়ে সিমলা। সিমলা থেকে ট্রেনে কালকা, সেখান থেকে বাসে দিল্লি। তারপর সারা ভারতবর্ষে ছড়িয়ে পড়ে চিঠিপত্র। আশাকরি এই একই পথে আমাদের বাড়িতেও এসে পৌঁছবে বিশ্বের উচ্চতম পোস্ট অফিসের স্টাম্প লাগানো রঙিন পোস্টকার্ডের সেই চিঠি। আমাদের গ্রুপের দুজন মেম্বারের ঠিকানায় সেই চিঠি এসে পৌঁছালে ও আজ পর্যন্ত বাকী সদস্যরা আশা করে আছি যে এই বুঝি আমাদের বাড়ীতে ও চিঠি আসব। কিন্তু "আশায় মরে চাষার" মতোই আমাদের হাল।
0 Comments
Leave a Reply. |
Best Washing MachineCategories
All
Archives
November 2021
Best Autoclean Chimney |