হঠাৎ ক্যালেন্ডারে চোখ রেখে দেখলাম শনিবার রথের ছুটি।ব্যস,একটা ক্যাজুয়াল লিভ নিলেই দুদিন ঘোরা যাবে। কাছাকাছি ঘোরার কথা হলে সবার আগে দীঘার কথাই মনে পরে,তার ওপর বৃষ্টিতে সমুদ্র স্নানের লোভ আর সামলাতে পারলাম না।আমরা সাত জন বন্ধু(সহকর্মী হলেও এখন আমরা যেন একই পরিবারের সদস্যরা) মিলে ঠিক করলাম তাহলে দীঘাই হোক রথের ছুটির গন্তব্য।একমাস আগে ট্রেনের টিকিট, হোটেল বুকিং করে ফেললাম।তারপর কতো কি পরিকল্পনা।শেষপর্যন্ত চলে এলো সেই শুভদিন Friday13th। তাম্রলিপ্ত এক্সপ্রেস করে আমাদের কচিকাঁচাদের সাথে নিয়ে পৌঁছে গেলাম দীঘায়।আমরা ওল্ড দীঘার হোটেল পূর্ণিমাতে ছিলাম। পৌঁছেই লাগেজ রেখেই সমুদ্রের কাছে।অমাবস্যা থাকায় সমুদ্র উত্তাল।তবে স্নান করা যাচ্ছে।কিন্তু বৃষ্টির কোনো লক্ষণ নেই।চড়া রোদ মাথার ওপর।স্নান সেরে বিকেলের পড়ন্ত রোদে সমুদ্রের কি অপরূপ শোভা দেখলাম তা ভোলার নয়,কি উত্তাল ঢেউ।পাড়ের বোল্ডারে আছড়ে পড়ছে রুপোলি ঢেউয়ের ছটা।দুধসাদা জল আছড়ে পড়ছে পাড়ে।অনেক রাত পর্যন্ত সেই গর্জন সহ উত্তাল সমুদ্র দেখে হোটেলে ফিরতে মন না চাইলেও উঠতে হলো।পরদিন সকালে স্নান করতে গিয়ে শুনি জোয়ার চলছে এখন সমুদ্রে নামা যাবেনা।ভাঁটার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।তাই অপেক্ষা করলাম।কি অপরূপ সেই সৌন্দর্য সমুদ্রের।ভয়ঙ্কর হলেও অপরূপ।ঢেউ আছড়ে বোল্ডার পেড়িয়ে রাস্তায় এসে পড়ছে।একটা ছাউনি তে বসে ডাব খেতে খেতে সেই দৃশ্য উপভোগ করলাম আমরা সবাই।ধীরে ধীরে শান্ত হলো অর্থাৎ ভাঁটা শুরু হলো।সমুদ্রের ধারের ক্যামেরাম্যানরা বললেন যে ,একটু পরেই স্নান করা যাবে।ঠিক তাই।প্রাণ ভরে আমরা সকলে খুব স্নান করলাম।কিন্তু বৃষ্টি হলোনা ছিটেফোঁটাও।এরপর লাঞ্চ করে একটা গাড়ি বুক করে গেলাম তালসারি।সেখানেও ভাঁটা থাকায় এক নতুন অভিজ্ঞতা। এক একটা বাইকে দুজন করে বীচের কাছে মোহনায় যাওয়া হলো।আর যেখানে লাল কাঁকড়া আছে সেখানে।দারুন অভিজ্ঞতা হলো এটা।এর আগেও অনেকবার তালসারি গিয়েছি এই বাইক চড়া হয়নি।জোয়ার থাকলে নৌকো নাহলে হেঁটে যেতে হতো।তারপর উদয়পুর।উদয়পুর বীচ আমাদের খানিকটা নিরাশ করলো।আগে ওখানে একটা নির্জনতা ছিল।এখন শুধু মাছভাজা দিয়ে বিয়ার আর হুক্কা খাবার যেন আস্তানা হয়েছে দেখলাম।তাই খানিক থেকেই দীঘায় ফিরলাম।রথের বিকেল, সুন্দর সুন্দর রথ সাজিয়ে দাঁড় করানো আছে রাস্তার পাশে।তবে কোথাও জিলিপি আর পাঁপড় ভাজার দোকান নেই।অগত্যা কিছু স্ন্যাক্স খেয়ে আবার সমুদ্র দেখা।ঘরে ফিরতে মন না চাইলেও ফিরতে হলো।পরদিন সকাল সাড়ে দশটায় ট্রেন।তাই সকালে ঠিক করলাম শুধু সমুদ্র দেখবো প্রাণ ভরে।হোটেলে ফেরার সময় বৃষ্টি দেখা দিল।স্নানের বৃষ্টি অধরা রেখে সমুদ্রকে বিদায় জানিয়ে তাম্রলিপ্ত এক্সপ্রেস ধরে বাড়ি ফিরলাম।তবে এই ট্যুরের উপরি পাওনা ছিল বর্ষার ইলিশ, সেটা আমাদের নিরাশ করেনি। Post By:-Suneeta Saha
0 Comments
Leave a Reply. |
Best Washing MachineCategories
All
Archives
November 2021
Best Autoclean Chimney |