চাঁদিপুরের সুন্দরী বিচ ও পঞ্চলিঙ্গেশ্বর দর্শনের অনুভূতি :- ভ্ৰমণ সর্বদাই আমার খুব পছন্দের একটি হবি, IBM এ চাকুরীর সময় আমাদের একটি ছোট্ট গ্রুপ তৈরি হয়, যারা সুযোগ পেলেই চলে যাই weekend ট্রিপে, এরকমই এক শুক্রবার রাতের চেন্নাই মেল ট্রেনে চেপে বসলাম আমি (সুমন) , অভিক, চিত্রদীপ, মৌমিতা, অর্পিতা, পায়েল ও লাবনী, চাঁদিপুরের উদ্দেশ্যে । রাত 10.48 এ হাওড়া থেকে ট্রেন রাত 3.10 এ পৌছালো বালেশ্বর স্টেশনে, রাত তখনও গভীর থাকায় এক ঘন্টা স্টেশন এ অপেক্ষা করে দুটো অটো নিয়ে চলে গেলাম আগে থেকে বুক করে রাখা ওড়িষ্যা সরকারি "পান্থনিবাস ট্যুরিস্ট লজে"। ট্রেনে সারাক্ষন গল্প করার কারণে একটু টানা ঘুম দিয়ে চলে গেলাম স্নান সেরে Complementary Breakfast নিতে , তারপর 10 টা নাগাদ আগে থেকে বুক করে রাখা অটো নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম sight-seeing এর উদ্দেশ্যে। প্রথমে গেলাম ( চাঁদিপুর থেকে দূরত্ব ৪৪ কিমি) নীলগিরি পাহাড়ের কোলে সবুজ জঙ্গলে ঘেরা পাঁচ শিবলিঙ্গের অধিষ্ঠান পঞ্চলিঙ্গেশ্বরে। দেবস্থানের পাশাপাশি এখানে রয়েছে মন ভালো করা পাহাড়িয়া আরণ্যক পরিবেশ। পঞ্চলিঙ্গ থেকে নাম হয়েছে পঞ্চলিঙ্গেশ্বর। পাহাড়ের গা বেয়ে ঝরছে ঝরনা। সেই ঝরনার জল এসে জমছে নীচের একটি গর্তে। জলভর্তি এই গর্তের ভিতর রয়েছে পাঁচটি শিবলিঙ্গ। জলে হাত ডুবিয়ে শিবলিঙ্গগুলি স্পর্শ করা যায়। আর এই টিলার চারপাশের পরিবেশ গা ছমছমে। চারপাশ ঘিরে রয়েছে আম, শিরীষ, শাল, চাকুন্দি, অশোক, আকাশমণি ইত্যাদি গাছ। বুনো ফুলের গন্ধ ভেসে আসে বাতাসে। দুপুরেও শান্ত স্নিগ্ধ ছায়া ঢেকে রাখে চারদিক। সাথে রয়েছে ছোট ছোট কয়েকটি কৃষ্ণ, পার্বতী ও হনুমান মন্দির , নিকটবর্তী দোকান থেকে ডালা কিনে পুজো দেওয়ার সুবন্দোবস্ত রয়েছে। নীলগিরির নিচে থেকে উপরের মন্দিরে উঠতে একটু কষ্ট হবে, তবে পাহাড় কেটে সিঁড়ি করে দেওয়া আছে। পথের দুপাশে হরেক ঠাকুরের মূর্তি ও খাবারের পসরা সাজিয়ে বসে আছে দোকানিরা । এরপর আমরা চলে গেলাম ১০ কিমি দূরের নীলগিরি শহরে। দেখলাম প্রাচীন রাজবাড়ির ধ্বংসাবশেষ এবং জগন্নাথ মন্দির। এরপর রাস্তার পাশে একটি ধাবাতে দুপুরের খাবার সেরে চলে গেলাম বালেশ্বর থেকে ৬ কিমি দূরে ‘ওড়িশার বৃন্দাবন’ রেমুনা, ক্ষীরচোরা গোপীনাথের মন্দির। শ্রী কৃষ্ণের জীবনীর বিভিন্ন ঘটনা দেয়ালে খোদাই করে বর্ণনা করা আছে এখানে, অপরাহ্নের অপূর্ব মুহূর্তে মন্দিরের সামনে প্রদীপ জ্বালিয়ে পাওয়া গেল স্বর্গীয় অনুভূতি । এরপর গেলাম পুরীর মন্দির অনুকরণে বানানো জগন্নাথ মন্দিরে। অপূর্ব গঠনশৈলীর এই মন্দির সন্ধ্যের অপূর্ব আলোকমালায় রূপকথার রাজপ্রাসাদের মতো দেখতে লাগে। ওখানে প্রসাদ খেয়ে সন্ধে সাতটায় চলে এলাম হোটেলে। রাত এ ডিনার করে বেড়াতে গেলাম সমুদ্রসৈকতে । ঢেউ এর আওয়াজ , ঝিনুকের দোকান আর মনোরম পরিবেশ দৈনন্দিন জীবন থেকে মনকে যেন অন্যদিকে নিয়ে চলে যায় । অনেক রাত অবধি আড্ডা মেরে চলে এলাম হোটেলের ঘরে। পরদিন সকালে সময় দেওয়া হলো শুধু সমুদ্রকে, সমুদ্র স্নান,বালি নিয়ে ছোড়াছুড়ি ও photo session করে দুপুরের খাবার কাঁকড়া ও পমফ্রেট সহযোগে সারা হলো নিকটবর্তী Arpita Beach Resort এ । দুপুরে কিছুক্ষণ গল্প ও তাসখেলার পর বিকালে যাওয়া হলো মার্কেটে কিছু কেনাকাটা করতে , সেখানে সবাই প্রিয়জনের জন্য উপহার কিনলাম, একটু এদিক ওদিক ঘোরা হলো। সন্ধ্যেটা Chikchen pakora ও Coffee সহযোগে কাটিয়ে রাতের ডিনার সেরে বেরিয়ে পড়লাম অটোতে বালেশ্বরের উদ্দেশ্যে, পিছনে ফেলে এলাম স্বপ্নসুন্দরী ও এক ভালোলাগার সী বিচ। রাত 11 টার সময়ে আমাদের মাদ্রাস হাওড়া মেলে উঠে পরেরদিন ভোররাতে পৌছালাম হাওড়া। মনে রয়ে গেল একটি ছোট্ট উইকেন্ড ট্রিপের অমলিন স্মৃতি।। এখানে থাকার সবচেয়ে ভালো জায়গা হল ওডিশা পর্যটনের পান্থনিবাস। ঘরভাড়ার সঙ্গে ধরা আছে বেড টি ও প্রাতরাশের খরচ(1650 delux double)। সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন এই ঠিকানায়: পান্থনিবাস, পঞ্চলিঙ্গেশ্বর, পো:- শ্যামসুন্দরপুর, ভায়া- রাজনীলগিরি, জেলা- বালেশ্বর (ফোন নম্বর: ০৬৭৮২-২১১৯৫৯/06782-211959) Post By:- Suman Datta
0 Comments
Leave a Reply. |
Best Washing MachineCategories
All
Archives
November 2021
Best Autoclean Chimney |