এবার একটু সামথার হয়ে যাক...
ঘাপটি মেরে চুপটি করে বসে ছিলাম জড়সড় ঘরে, যেন শীত ঘুম দিচ্ছিলাম লম্বা। তারপর পুজো পুজো গন্ধে গা ঝারা দিয়ে উঠতেই আমার আকাশ, আমার বাতাস। ঘুম ভাঙতেই গাড়ি ছুটল হু হু, মেঘ পিওনের ছুটির দিনে আকুল বইল তিস্তা, আর টুক করে তাকে টপকে গিয়ে বন পাহাড়ি রাস্তা। NJP থুড়ি নিউ জলপাইগুড়ি থেকে বড়জোর ঘণ্টা দুই আড়াই, পাহাড়ি চড়াই ভেঙে আচমকা বাঁক ঘুরতেই, সাত সকালে হাই তুলছে কাঞ্চনজঙ্ঘা। যেতে যেতেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে কাঠ পাথরের ছিমছাম দু কামরাগুলোর পিঠে চাক বাঁধছে honey bee আর মন কেমনের কাঁচা রোদে,পাহাড় মাথার চ্যাপ্টা জুড়ে something somewhere সামথার – না শোঁকা ফুলের কুঁড়ি। আমাদের ডাকছিল HOMECALLING Samthar, ঘর থেকে দূরে আর একটা নিজের সে, ছক ভাঙা Home Stay, যে আলসে সকালে হাত বাড়িয়ে টেনে নিল চেনা অচেনা পাখীর সুরে...”দিল সে রে...”। তারপর আর কি, আমি তুমি আর কাঞ্চনজঙ্ঘা। না, একটু ভুল হোল, মাঝে কাঞ্চনজঙ্ঘাকে রেখে এক মাথায় কুম্ভকর্ণ তো আর এক মাথায় পান্ডিম। আমি ভোর জাগলে কি হবে,ওদিকে বুদ্ধ শুয়ে ( Sleeping Buddha কি আর সাধে বলে) আর তাকে আদর বুলিয়ে দিচ্ছে লালচে কমলা প্রথম আলো। এক কাপ কফি, উঁকিঝুঁকি বুলবুল সিপাহী আর কোণঠাসা ধোঁয়া মেঘ, ব্যাস আর কি... আয় চুপ, তোর সাথে এলো পাহাড়ে ফুটফুটে মাখি। সূর্য ডুবুডুবু হলে পাম্বোদাড়া থেকে একদিকে কাঞ্চনজঙ্ঘার মাথায় রঙের খেলা, আর একদিকে শিলিগুড়িকে তালুতে রেখে শেষ বেলার তিস্তা। উঁকি মারলে দেখা যাবে, একপাশ জুড়ে কালচে সবুজে ডুয়ার্স।
সাত সকালে Homecalling এর চৌহদ্দিতে একা একেলা মন হেঁটে হেঁটে ঘুরল খানিক নিরিবিলি এমাথা থেকে ওমাথা। তারই ফাঁকে ফাঁকে তবু চলল এ কথা সে কথা গাছ চিনে চিনে, আশেপাশেই যখন কখনো এলাচ, মিলেট, স্কোয়াশ, ঝাড়ু, কখনো হাসি মুখ কমলালেবু। চেনা অচেনা পাখীর সাথে কতদিন বাদে লুকোচুরি খেলা শুরু। দিনে দিনে চাকা গড়ালে কখনো ছুঁয়ে দিলাম রেলি নদীর আদুর, দোল খাওয়া ঝোলা ব্রিজ, জল কিত কিত, কখনো বা চুনাভট্টির নুড়ি বুক, চাইলে পাশেই পাহাড় কোলে চারকোল বা কাফের এর জঙ্গল। Home এও আছে যজ্ঞেও আছে কর্তা কৌশিক দা,ভোর থাকতে ঘুম ভাঙাচ্ছে তো সন্ধ্যা গড়াতে চালে ডালে বসাচ্ছে, বিশাল দাজু হু হু রাতে বাইক হাঁকিয়ে ড্রাইভার তুলে আনছে চাঁদ মাখা কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে ভিউ পয়েন্ট যেতে হবে যে, আর এইভাবে মুহূর্তরা তৈরি হচ্ছে তবু রাত মাহাত্ম্যে ঘোর ধরা চোখ দেখল কোজাগরী পূর্ণিমায় চাঁদ হাসছে কাঞ্চনজঙ্ঘা আর ওর গলা জড়িয়ে ডায়মন্ড নেকলেস সেজে কালিম্পং শহর। মুনলিট ডিনারে মাংস খিচুড়ি আর পাঁপড় ভাজা... হয়ে বেশী, কারন জিভে নয়, স্বাদ যে লেগে থাকলো চোখে... এটাই তাজা খবর।
© সৌরীন
0 Comments
Leave a Reply. |
Best Washing MachineCategories
All
Archives
November 2021
Best Autoclean Chimney |