সব ধাম একবার, মায়াপুর বারবার.. কবিগুরু ঠিকই বলেছেন - 'দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া ঘর হইতে দুই পা ফেলিয়া, একটি ধানের শিষের ওপর একটি শিশির বিন্দু।' কবি গুরুর কথা স্মরণ করে বেরিয়ে পড়লাম কল্যাণী থেকে আশি কিলোমিটার দূরে মায়াপুর, The International Society for Krishna Consciousness (ISKCON) এর উদ্দেশ্য। রবিবার ছুটির দিনে ঠিক করা হল, সঙ্গী হিসেবে পেলাম ক্রিস কে। উদ্দেশ্য একটাই iscon এ পুজো দেওয়া আর তারই দৌলতে ঘুরে আশা।. কল্যাণী স্টেশন এ চলে এলাম সকাল সাতটায়। টিকিট কাটলাম কৃষ্ণনগর স্টেশন। ভাড়া 15 টাকা। ট্রেন এর টাইম 7.25, যথারীতি ট্রেন এ উঠলাম, মেঘলা আকাশ, আর শীতল হওয়ার স্রোত কে উপেক্ষা করে ট্রেন এগিয়ে চললো কৃষ্ণনগর এর উদ্দেশ্য। রবিবার হলেও ট্রেন এর ভিড় ছিল মোটামুটি, তার উপর কৃষ্ণের জন্মদিন বলে কথা, তাই সিট না পেয়ে, গেটের কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম। ট্রেন ছুটে চলেছে, রানাঘাট পেরোতেই দেখতে পেলাম লাইনের দুই দিকে কলা গাছের জঙ্গল। " ভালোই লাগছিল প্রাকৃতিক পরিবেশ উপভোগ করতে করতে যাওয়ার মজাই আলাদা। 8.35 এ আমরা কৃষ্ণনগর এ নেমে চলে গেলাম অটো ধরতে, স্টেশন এর পাশেই অটো স্ট্যান্ড, ওখানে মায়াপুর ঘাটের অটো ধরলাম, অটো চললো ভাঙা রাস্তার উপর দিয়ে। ফাঁকা রাস্তার উপর দিয়ে ছুটে চলেছে, রাস্তার পাশে অনেক পুরোনো খিরিস গাছ রাস্তা টাকে ছাতার মতো আগলে রেখেছে। 9. 14 am এ আমরা পৌঁছে গেলাম মায়াপুর ঘাট এ। ঘাট এর এক কোণে ছোট্ট একটা টিকিট কাউন্টার, যেখানে এই অকাল এর দিনেও এক টাকার টিকিট পাওয়া সত্যই গর্বের বিষয়। টিকিট কেটে উঠে গেলাম নৌকো তে, ছোট্ট নদী, নাম জলঙ্গি। শান্ত নদী, নীল জল তার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে । ঘাট পেরিয়ে মায়াপুর এলাম, এখান থেকে iskon মন্দিরে যাওয়ার জন্য toto বাস সর্বদা মজুত। আমরা পায়ে হেঁটে এগিয়ে গেলাম iskon এর দিকে। মাঝে অনেক গুলো আশ্রম এ ঢুকে দেখতে দেখতে iskon এ ঢুকলাম। iskon এ ঢুকতে চোখ এ পরবে এক কোণে non stop হরিনাম এর একটা কুটির, এর উল্টো দিকে রয়েছে, প্রভুপাদ পুষ্প সমাধি। তার উল্টো দিকে রয়েছে বিশাল iskon মন্দির যা এখনো কাজ চলেছে, যার রূপের ছটায় জগত বিখ্যাত। তার এই পাশে মেন রাধা কৃষ্ণের মন্দির। আমরা একের পর এক মন্দির দর্শন করতে লাগলাম। এরই ফাঁকে দুপুরের খাওয়ার এর টিকিট কাটলাম। এখানে খাওয়ারের টিকিট তিন রকম এর পাওয়া যায়। এক 30 টাকার, যেখানে খিচুড়ি সাদা ভাত এর মধ্যে পরে, দুই 50 টাকার, তিন 70 টাকার। আমরা 70 টাকার দুটি টিকিট করলাম, খাওয়ার মেনু গুলো ছবি তে আপলোড করে দেবো। এর পর আমরা মেন মন্দির এ ঢুকলাম, রাধা কৃষ্ণের অপরূপ সৌন্দর্য যে কোনও মানুষের মনে ভক্তি সঞ্চার করার সাহস রাখে। এখানে পুজো দেওয়ার জন্য কাউন্টার আছে, এখান থেকে পুজো জন্য টাকা দিতে হয়, সঙ্গে নাম গোত্র দিতে হয় । পুজো 101 টাকা দিয়ে শুরু, বিভিন্ন রকম এর আছে, কুপন করার পর নির্দিষ্ট ডিস্ক থেকে, নির্দিষ্ট টাইম এ সেটা collect করতে হয়। আমি পুজো দেওয়া পর দেখলাম প্রসাদ হিসেবে রয়েছে গোটা ফল, যেমন আপেল,বেদনা, কলা, laddu, Sasha ইত্যাদি। এর পর ওখান থেকে বেরিয়ে গেলাম গোসালার উদ্দেশ্যে। এখানে যেটা অবাক লাগে যে প্রতিটি গরু র একটি particular নাম আছে, আর গরু কে প্রতিপালন করার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। এখানে পাওয়া যায় ঘি, মাখন, মিষ্টি, আরো অনেক কিছু। এর পর গেলাম গদা ভবন এ এখানে আমাদের খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে, চেয়ার টেবিলে বসে, fried rice খাওয়ার মজাটাই আলাদা। সংক্ষিপ্ত বিবরণ এ এইটুকু বলবো iskon কে অনুভব করতে গেলে যেতে হবে, আর একদিন এর ট্যুর হলে iskon কে পছন্দের তালিকায় রাখা যেতেই পারে, সকাল থেকে সন্ধ্যা হলেও iscon কে দেখে শেষ করা যাবে না, আর iskon এর সন্ধ্যা আরতির কথা বললাম না। দেখতে হলে যেতেই হবে মায়াপুর। Post By-Soumen Maity
0 Comments
Leave a Reply. |
Best Washing MachineCategories
All
Archives
November 2021
Best Autoclean Chimney |