==== কেদারনাথের ডাইরি (পার্ট 2)=== ************************************** কাল রাতে ভালো ঘুম হয়নি, হবে কি করে? মোটা মোটা চালের ভাত, ডাল, নিরামিষ তরকারি 2 টো রুটি, গলা দিয়ে নামেনি, নিদেন পক্ষে একটা ডিম ভাজা হলে ভালো হতো. কিন্তু কি করা যাবে, তার ওপর কাল সারা রাত বৃষ্টি হয়েছে, এখনো হচ্ছে, ভোর বেলা ওঠা অভ্যাস টা আমার কোনো দিনের নেই, সানরাইজ দেখা আমার কখনো হয়ে হয়নি, ঠান্ডায় লেপ মুড়ি দিয়ে মটকা মেরে পরে থাকা টা বুদ্ধি মানের কাজ বলে মনে হলো , কিন্তু সুমন সেই কখন উঠে পড়েছে, এক বার করে বাইরে যাচ্ছে, এক বার করে ঘরে আসছে, আর বলছে চলো না গো, সব লোক চলে গেল, বৃষ্টি থেমে গেছে, অতএব উঠতে আমাকে হলো, ফ্রেশ হয়ে সাড়ে আটটার সময় হোটেলের লকার রুমে ব্যাগ পত্তর রেখে, রওনা হলাম কেদারনাথের পথে , হালকা হালকা বৃষ্টির মধ্য শুরু পথ চলা, গৌরী কুন্ড থেকে কেদারনাথ পুরো রাস্তা টাই 99% খাড়াই, প্রথম পাঁচ কিলোমিটার আপনি গর্ গর্ করে চলে যাবেন, তারপর আস্তে আস্তে আপনার দেহ বিদ্রোহ শুরু করবে, বিশেষ করে,.... যারা আমার মতো... যারা জীবনে কোনো দিনও ফুটবল পায়ে মাঠে নামেননি... হাঁটা হাঁটি করেন না,.... বাড়ি থেকে বাজার, বাজার থেকে বাড়ি, গাড়ি ছাড়া চলেন না,.. সাইকেল চালান না,... রক্তে হালকা সুগার... তারা কখনোই এ পথে হেটে ওটার চেষ্টা করবেন না. ঘোড়াই একমাত্র অবলম্বন হতে পারে. যাইহোক দুই ধারের অপরূপ শোভা, দেখতে দেখতে আপনি কখন রাম্বারা এসে পৌঁছে যাবেন, আপনি বুঝতেই পারবেন না, এখানে আলুর পরোটা খুব বিখ্যাত সবাই খায় তাই আমিও খেলাম, সাময়িক ব্রেক, রেলিংয়ে ধার ধরে দাড়িয়ে দেখবেন, মাথার ওপর দিয়ে কেমন হেলিকপ্টার চড়ে মানুষ জন চলেছে, বাবা ভোলানাথের দর্শনে, আবার রাস্তায় কত অশীতিপর বুড়ো বুড়ির দল চলেছেন পেনিতে, ডুলিতে, এই pene জিনিস টা বেশ ভালো, যেমন আসামের চা বাগানের মহিলারা চা পাতা তোলে ঝুড়িতে, সেই রকম এক জন মানুষ কে ওই ঝুরির মধ্যে বসিয়ে পিঠে করে নিয়ে চলে আরো একজন মানুষ. এইসব দেখতে দেখতে কখন যে চলে এসেছি লিঞ্চলে মনেই নেই.... , কিন্তু পা আর চলল না. ভীষণ টান পড়লো পায়ে, মনে মনে ভাবছি আর কি যেতে পারবো না. হাওড়া থেকে হরিদ্বার 1650 km ট্রেন , হরিদ্বার থেকে সোনপ্রয়াগ 123 km বাসে এসে, এই 5 কিলো মিটার আর যেতে পারবো কিনা মনে সংশয়, আমার পাশ দিয়ে অনেকে চলে যাচ্ছে, ঠিক তখনি এক ঘোড়া ওলা বলে উঠলো"""" ভাইয়া জায়েগা,'' ' দর দাম করে উঠে বসলাম...... ঘোড়া চলল আমাকে নিয়ে মহাপ্রস্থানের পথে , এবার আসি একটু ইতিহাসের পাতায় সৌজন্যে গুগুল কাকু ebala. In কেদারনাথের মন্দির সুমুদ্রপার থেকে 3583 মিটার/(11755ft) উপরে, গাড়োয়াল হিমালয় রেঞ্জের মন্দাকিনী নদীর ধরে অবস্থিত. বারোটা জ্যোতির্লিঙ্গ এর মধ্যে সব থেকে শক্তিমান এই বাবা ভোলানাথ. মহাভারতের পান্ডব রা যুদ্ধে বহুমানুষের প্রাণ নিয়ে পাপ স্থলন করবার জন্য বৈশিষ্ট মুনির পরামর্শে এখানে মহাদেবের পুজোর আয়োজন করেছিলেন কিন্তু মহাদেবও ধর্মসঙ্কটে পড়েছিলেন, এত মানুষ হত্যা করে পুজো করলেই তিনি ক্ষমা করে দেবেন, এমন সোজা মানুষ তিনি নন.... তিনি করলেন পান্ডব দের সঙ্গে লুকোচুরি খেলা, একটা ষাঁড় সেজে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন হিমালয়ের কোলে, ব্যাটা ভীম সবার আগে মহাদেব কে চিনতে পারে শেষ হয় লুকোচুরি খেলা. যাক আর বেশি ইতিহাস শোনাবো না নইলে আপনারা ভাববেন আমি গাজা খেয়ে ভুল ভাল বকছি,,,,, অবশেষে আমি বহু কষ্ট করে ঘোড়ার পিঠে চেপে পৌছুলাম কেদারনাথের দরবারে,,, মন্দিরে গিয়ে পুজো দিয়ে কিছুক্ষন অপেক্ষা করলাম সন্ধ্যা অরুতি দেখে রাতে একটা তাঁবু তে ছিলাম, ব্যাবস্থা বেশ ভালোই , রাতে স্লিপন ব্যাগ দিয়েছিলো, ব্যাংকার ছিলো শোবার. খেতে ইচ্ছা ছিলো না সারা দিনের ধকলে, আর ভালো লাগছিলো না, সামান্য কিছু চিড়ে আর সন্দেশ খেয়ে শুয়ে পড়লাম তাড়াতাড়ি, অপেক্ষা করলাম এক নতুন ভোরের আসায়.... সকাল হতেই বেরিয়ে ধরলাম বাড়ি ফেরার পথ, সানরাইজ আর দেখা হয়নি মেঘলা থাকায়, কথিত আছে কেদারনাথের সানরাইজ দেখা নাকি ভাগ্যের কথা, সূর্যের প্রথম রশ্মি যখন হিমালয়ের পাহাড়ে পরে এক স্বর্ণাভ রূপের সৃষ্টি হয়, এই মুহূর্ত কে( গোল্ডেন মোমসেন্ট অফ হিমালয় বলা হয়.) আমরা যদিও এতটা সৌভাগ্যবান নই, দেখেছিলাম কিছুটা, ওতো সকালে ঘোড়া পাইনি, কিন্তু নামতে একটুও কষ্ট হয়নি, কারণটা আগেই বলেছিলাম, নামার পথে পুরোটাই তখন ঢালু, পিকের আমির খানের মতো বোম বম ভোলে বম বম ভোলে বলতে বলতে নিচে নেমে এলাম, গৌরীকুণ্ডের 2কিলোমিটার আগেই আমার স্মার্ট ফোন আর ক্যাবলা ফোনের টাওয়ার পেয়েগিয়েছিলাম,ততকাল কোটায় কেটে নিলাম বাড়ি ফেরার 2টো টিকিট কিন্তু বেলা 12tar সময় শোন্ প্রয়াগ নেমে কোনো বাস পাইনি, রাত্রিটা ওখানে কাটিয়ে পরদিন সাড়ে পাঁচটায় প্রথম বাস ধরে নেমে এলাম হরিদ্বারে, দুপুরে দাদা বৌদির হোটেলে ভাত ডাল আলুপটলের তরকারি পোস্ত সুক্তো আমের চাটনি পাঁপড় খেয়ে, হর কি পৌর ঘাটে অরুতি দেখে, গঙ্গায় চান করে রাতের ট্রেনে সোজা বাড়ি...... Post By:- Prasun Nandy
0 Comments
Leave a Reply. |
Best Washing MachineCategories
All
Archives
November 2021
Best Autoclean Chimney |