৫ ই ডিসেম্বর ২০২০ সকালে হঠাৎ আমাদের মাথায় উঠলো বাই তো কংকালীতলা যাই। কয়েকদিন ধরে মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল আমাদের যে মোটর সাইকেলের হেলমেটে ক্যামেরা লাগিয়ে কোথাও গেলে কেমন হয়? আমার ৫ বছরের মেয়ের কৌতুহল সব থেকে বেশি ছিল। তাই ছোটো করে শুরু করে ফেললাম কংকালীতলা মন্দির ভ্রমণ।
বোলপুর স্টেশন থেকে ৯ কিলোমিটার (লাভপুর রোড হয়ে) অথবা ১১ কিমি (শ্যামবাটি- প্রান্তিক রোড হয়) দূরে কোপাই (শাল নদী) নদীর তীরে শক্তিপীঠ কঙ্কালীতলা মন্দির। আমরা সকাল ৮ টায় বোলপুর শান্তিনিকেতন স্টেশন থেকে বাইকে আমাদের মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে আমরা বোলপুর স্টেশন - বোলপুর চৌরাস্তা - শান্তিনিকেতন - শ্যামবাটী - প্রান্তিক হয়ে পৌছে গেলাম কংকালীতলা মন্দির। তন্ত্রচূড়ামনির মতে, এটি ২৮ নং সতীপীঠ। প্রাচীনকালে এই জায়গাটি কাঞ্চি নামে প্রসিদ্ধ ছিল। তন্ত্রচূড়ামনিতেও এই স্থানের উল্লেখ আছে। পীঠ নির্ণয়তন্ত্রে বলা হয়েছে এখানে দেবীর কংকাল পড়েছিল এবং এটি দেবীর একান্নতম পীঠ। কিন্তু ভারতচন্দ্রের অন্নদামঙ্গল কাব্যগ্রন্থ অনুযায়ী, বলা হয়েছে এখানে দেবীর কাঁখ বা কাঁকাল বা কটিদেশ পতিত হয় এবং এটি দেবীর আঠাশতম পীঠ। সম্ভবত: কাঁকাল থেকেই কংকালীতলা নাম হয়েছে। তবে এই শক্তিপীঠ নিয়ে শাস্ত্র ও জনগণের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে। এখানে দেবীর নাম "দেবগর্ভা"। কোপাই নদীর তীরে কুন্ডের মধ্যে দেবীর অধিষ্ঠান। কুন্ডের পাশের মন্দিরে দেবী পটে অর্থাৎ ছবিতে কালীরূপে পূজিতা হন। এখানে ভৈরবের নাম "রুরু"। মন্দির প্রবেশের আগেই লাইন দিয়ে পূজো দেওয়ার ডালা গ্রহনের জন্য অনেক দোকান আছে। কোনো বিশৃঙ্খলা নেই। এখান থেকে একটি দোকান থেকে পূজার ডালা নিয়ে লাইন দিল মা ও মেয়ে। সুন্দরভাবে পূজো দিয়ে কিছুক্ষণ মন্দিরের চারপাশ ঘুরে নিলাম। মন্দির চত্বরে এক বাউল বন্ধু সুন্দর বাঁশি বাজিয়ে চলেছেন।
মন্দিরের পাশেই যে কুন্ড টি আছে, বলা হয় সেখানেই দেবীর কংকাল পড়েছিল। এখনও সেখানে কিছু পাথর আছে। ওগুলোকে দেবীর দেহাংশ মানা হয়। এই কুন্ডের জল কখনো নাকি শুকায় না। পাশেই শ্মশান আছে। এখানে নাকি গুপ্ত তন্ত্র সাধনা হয়। বর্তমানে এই শ্মশান টি ইলেকট্রিক চুল্লীতে পরিবর্তন করা হচ্ছে।
এরপর মন্দিরের পাশে ভোগ মন্দির টি ঘুরে দেখলাম। এখানে ভোগ প্রসাদের ব্যবস্থা করা হয় ভক্তদের জন্য। সাধারণ দর্শনার্থীরাও ভোগের প্রসাদ পেতে পারেন কুপন স়ংগ্রহের মাধ্যমে। এর পাশেই বয়ে চলেছে কোপাই নদী বা শাল নদী। এরপর আমরা মন্দির থেকে রওনা দিলাম বাড়ির উদ্দেশ্যে। প্রান্তিক স্টেশন এ দেখি রেলগেট পড়ে আছে। অগ্যতা কিছুক্ষন অপেক্ষা করলাম। এই সুযোগে আমার মেয়ে লকডাউনের জন্য ভূলতে বসা রেলগাড়ির দর্শন করতে পারলো। ও কিন্তু খুব আনন্দ করলো এই করোনা পরিস্থিতিতে সমস্ত ধরনের সতর্কতা মেনে। আমার ছোট্ট মেয়ের বানানো ভ্লগটি কেমন লাগলো জানাবেন। ভালো লাগলে অবশ্যই লাইক ও সাবস্ক্রাইব করবেন
0 Comments
Leave a Reply. |
Best Washing MachineCategories
All
Archives
November 2021
Best Autoclean Chimney |