বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য - স্বাধীন সার্বভৌম ভারতবর্ষকে এভাবেই ব্যাখ্যা করা যায়। বিশেষ করে ভৌগোলিক বৈচিত্র যে ভারতবর্ষের পদে পদে ভ্রমণপিপাসু রাই সে সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত। বৈচিত্রের কথা বললেই মানচিত্রে একটা রাজ্যের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ হয়। সেটা আর কেউ নয়, আমাদের প্রতিবেশী রাজ্য উড়িষ্যা । এখানে অনেক ভ্রমণস্থল দেখা যায় যেখানে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম হয়। তারই মধ্যে একটি স্থান হলো শিমলিপাল_অভয়ারণ্য। গ্রানাইট পাথরের পাহাড় , অগণিত গাছ, পাখি, সরীসৃপ , স্তন্যপায়ী নিয়ে ময়ূরভঞ্জ জেলার এই জাতীয় উদ্যানটি বৈচিত্রময়তার সাথে সাথে রহস্যময়ী ও বটে।©ইন্দ্রনীল।
শিমলিপাল নামটি এসেছে শিমুল_গাছের জন্য। এই স্থানে প্রচুর লাল_শিমুল_গাছ পাওয়া যায় বলে এর নাম #শিমলিপাল। আয়তনের হিসাবে শিমলিপাল উড়িষ্যা তথা পূর্ব ভারতের বৃহত্তর অরণ্য। ©ইন্দ্রনীল,এটি প্রধানত তিনভাগে বিভক্ত ১. হাদগর_ওয়ার্ল্ডলাইফ_সাংচুয়ারী, ২. কুলডিহা_ওয়ার্ল্ডলাইফ_সাংচুয়ারী, ৩. শিমলিপাল_টাইগার_রিজার্ভ । এই জাতীয় উদ্যান ইকোলজিকাল দিক থেকেও স্বতন্ত্র। ●২৭৫০ বর্গ কিমি র এই অভয়ারণ্যের মধ্যে ●৯৮০বর্গ কিমি সংরক্ষিত ও পর্যটকদের বিচরণ ক্ষেত্র। তার মধ্যে ●৩৩০ বর্গ কিমি কোর_এরিয়া। এখানে ১০৭৬ প্রজাতির উদ্ভিদ,৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ২৪২ প্রজাতির পাখী, ৩০ প্রজাতির সরীসৃপের সাথে ১২ টি নদী ও খৈরীবুরু ও মেঘাসানি_পাহাড় থাকায় অভয়ারণ্য টি সম্পূর্ণ পাহাড়ী ও সমতলভূমি থেকে উচ্চে অবস্থিত।©ইন্দ্রনীল অধিকারী, ভারতবর্ষের একমাত্র মেলানিস্টিক_বাঘের আবাসস্থল এই অরণ্যে শেষ খবর অনুযায়ী ৯৯টি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। বুধবালঙ্গা, খৈরী, পলপলা, সালান্দা_নদী এই অভয়ারণ্যের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে তিনটি জলপ্রপাতের সৃষ্টি করেছে ১.উস্কি ২.জোরান্ডা(ভারতবর্ষের ১৯তম জলপ্রপাত,সপ্তম সিঙ্গল ড্রপ ওয়াটারফলস) ৩.বরেহপানি( ভারতবর্ষের দ্বিতীয় উচ্চতম জলপ্রপাত) । কলকাতা থেকে এর দূরত্ব প্রায় 300 কিমি। বালাসোর অথবা বারিপদা পৌঁছে , সেখান থেকে গাড়িতে পৌঁছে যাওয়া যায় শিমলিপাল টাইগার রিজার্ভ। শিমলিপাল নিয়ে একটি পুরানো ঘটনা আপনাদের জানাচ্ছি - অনেক কাল আগে এখানে এক নিঃসন্তান বাঙালি রেঞ্জার ফ্যামিলি বাস করতেন। তারা একবার পথভোলা আশ্রয়হীন এক ব্যাঘ্র শাবক কে খুঁজে পান। তারপর সেই কন্যা ব্যাঘ্রটিকে মানুষ করতে থাকেন সন্তান স্নেহে। তার নাম রাখা হয় #খৈরী । সে যখন বড় হয় আস্তে আস্তে ফিরে পেতে থাকে তার অভিজাত ব্যাঘ্র বংশের গরিমা এবং হিংস্র হয়ে উঠতে থাকে। ইতিমধ্যে একদিন প্রতিদিনের অভ্যাসবশত রেঞ্জার সাহেবের সহধর্মিনী যখন তাদের এই কন্যা সন্তান টিকে সাথে নিয়ে ঘুমাচ্ছিলেন তখন #খৈরী তার গলার টুঁটি টিপে ধরে । রেঞ্জার সাহেব কোনোভাবে বুঝতে পেরে ছুটে এসে এই ঘটনায় স্তম্ভিত হয়ে যান। মুহূর্তে নিজেকে সামলে নিয়ে নিজ পত্নীর প্রাণ বাঁচাতে তিনি তার লাইসেন্সড রাইফেল থেকে #খৈরী কে গুলি করেন ।©ইন্দ্রনীল অধিকারী মৃত্যু হয় খৈরীর। ততক্ষনে অবশ্য রেঞ্জার সাহেবের স্ত্রীও পরলোক গমন করেছেন। এই ঘটনায় রেঞ্জার সাহেব ভীষণ ভেঙে পড়েছিলেন। একাধারে স্ত্রীর মৃত্যু তারসাথে তারই হাতে প্রাণ প্রিয় কন্যা সন্তান সম খৈরীর মৃত্যুর পরিনামও খুব খারাপ হয়।©ইন্দ্রনীল অধিকারী শোকে ,কিছুদিনের মধ্যে তিনিও মৃত্যু বরণ করেন।শিমলিপালে যারা গেছেন তারা এটা শুনে থাকবেন আর যারা যেতে চান তারা গেলে তারাও স্থানীয় মানুষ জনের থেকে এটা শুনতে পাবেন।©ইন্দ্রনীল অধিকারী। ঘটনাটি যেমন হৃদয়বিদারক তেমনি আরো আকর্ষণীয় করে তোলে সিমলিপালকে। সেই আকর্ষণ আরো ও বাড়বে যখন নিম্নে জঙ্গলের বিভিন্নভাগের নাম জানতে পারবেন ---- ন্যাশনাল হাইওয়ে ৬ নম্বর দিয়ে পৌঁছানো এই অভয়ারণ্যে সর্বমোট ৭ টি চেক গেট আছে। ১. কালিকাপ্রসাদ ২. ব্রুন্দা বান ৩. নিগিরধা ৪. ভজন ৫. পিথাবাটা ৬. চাহালা ৭. এবং #তুলসিবানি। কোর এরিয়া গুলোর মধ্যে পড়ে----- ১. ●বরেহাপানি ২. ●জোরান্ডা ৩. ●ধুদরু চম্পা ৪. ●লুলুং ৫. ●নাবানা ৬. ●ব্রুন্দাবান ৭. ●জেনাবিল ৮. ●বরাকামুরা ৯. ●পিথাবাটা ১০. ●জোরান্ডা ১১. ●মাকাবাড়ি ১২. ●বাকুয়া ১৩. ●বলরামপুর। প্রবেশের জন্য বাংরিপসির নিকটবর্তী ●পিথাবাটা গেট অথবা ঠিক অন্যপ্রান্তের জোশিপদার দিকে ●খৈরী -লুলুং গেট ব্যাবহার করা যায়। এখানে ●চাহালা বলে একটি স্থান আছে যেখানে বন্য জন্তু রা নুনমাটি খেতে আসে। রহস্যময়ী এই জঙ্গলে চলুন একবার ঘুরে আসা যাক।
1 Comment
Pallabi Datta
12/6/2018 03:23:51 pm
Khub valo laglo. Jabar icchha roilo.
Reply
Leave a Reply. |
Best Washing MachineCategories
All
Archives
November 2021
Best Autoclean Chimney |