শিমুলতলা বললেই বাঙালিরা নস্টালজিক হয়ে পড়ে। তা সে 'চেঞ্জে' যাওয়া হোক বা হঠাৎ মনে পড়ে যাওয়া কোনো বাংলা সিনেমা বা গল্পের প্লট হোক। বাঙালির পশ্চিমে ছড়িয়ে আছে উশ্রী নদীর ঝর্না, প্রফেসর শঙ্কুর গিড়িডির বাড়ি, বিভূতিভষণের জঙ্গল, দাদার কীর্তি সিনেমার টুকরো ছবি।
সেই ব্রিটিশ রাজ থেকে বিহারের হ্যামলেট শিমুলতলা প্রভৃতি জায়গাগুলো হওয়া বদলের এক ঠিকানাতে পরিণত হতে শুরু করে। পরবর্তী কালে অভিজাত বাঙালি সম্প্রদায় এখানে প্রাসাদোপম ভিলা তৈরি করে নিজেদের অবসর যাপনের জন্য। শুধু কি তাই, ভ্রমণপিপাসু বাঙালিরা নেহাতই স্বাস্থ্য রক্ষায় এসে মাসের পর মাস থেকে যেতে শুরু করে এই অঞ্চলে। তবে পেটের দায় বড় দায়। এক সময় অর্থ উপার্জন হয়ে ওঠে নগর কেন্দ্রিক আর বিভিন্ন রাজনৈতিক চড়াই উৎরাই বেয়ে চলতে গিয়ে শিমুলতলা হয়ে পড়ে জনশূন্য। পড়ে থাকে বাড়িগুলো। মাসের পর মাস, বছরের পর বছর। কিন্তু কেউ আর ঘরে ফেরে না।
'বেশ তো, তোমরা সবাই গরমের ছুটিতে শিমুলতলা থেকে ঘুরে এসো না? ওখানে কেয়ার টেকার বাবুলাল আছে। খুব ভালো রান্নার হাত তার। তোমাদের কোনো অসুবিধে হবে না।' শুধুমাত্র এই লাইন গুলো দিয়েই শুরু হয়েছে কত গল্প। টেনিদার চার মূর্তি অভিযান । মনে পড়ে? শুরু হলো নতুন প্রবাদ, টিলা টিলা শিমুলতলায় ভিলা ভিলা ঘর।
আজকের শিমুলতলা অনেক পাল্টে গেছে। কিছু পুরনো বাড়ি হাত বদলে স্কুল, হোটেলে পরিণত হয়েছে। তবে বাকিগুলোর দশা করুন। ডাল পালা আর শিকড় বাকরে জর্জরিত বাড়ীগুলো যেনো শিমুলতলার বয়স বাড়িয়ে তুলেছে আরো অনেক। আমার মতই আপনারা যারা ভিটে মাটি ছেড়ে বিদেশ বিভুইয়ে ছড়িয়ে আছেন, হাজার চেষ্টা করেও পারছেন না ঘরে ফিরতে। এই বাড়ীগুলো দেখে হইতো কান্না পাবে। ছোটবেলার অনেক খুনসুটি মনে পরে যাবে। আর যারা অনেক বছর আগে শিমুলতলা ঘুরে গেছেন, তারা দেখুন তো কোনো স্মৃতি ভেসে ওঠে কিনা। আজও শিমুলতলার জলে মিরাকল আছে যা সব হজম করে দেয়। বাবুলালরা আজও দুর্দান্ত রান্না করে। লাট্টু পাহাড় থেকে সূর্য ডোবা আজও ভালো লাগে। আসুন না একবার। ঘুরে যান। সপ্ন দেখি সেই দিনের, যেদিন সব বিশ্বের সমস্ত পরিযায়ীরা তাদের বাড়ি ফিরেছেন। সেবছর দুর্গাপুজোয় দশমীতে কোনো কান্না থাকবেনা।
0 Comments
Leave a Reply. |
Best Washing MachineCategories
All
Archives
November 2021
Best Autoclean Chimney |