বকখালির বালুকাবেলার নির্জনতা...
এত সুন্দর ভ্রমণ গ্রুপের সাথে পরিচয় হয়ে বেশ ভালো লাগছে। ছোট্ট একটি ভ্রমণকথা বন্ধুদের সাথে ভাগ করে নিচ্ছি,জানি না কেমন লাগবে... মে মাসে ৩-৪ দিনের টানা লম্বা ছুটি,তাই কোথাও কিছু খুঁজে পাওয়া গেল না hotel। হঠাৎ মনে হলো,দীঘা পুরী তো অনেক গেলাম,এবার না হয় স্বাদ বদল হোক। তাই হঠাৎ করে এক রাতে সব গুছিয়ে বাচ্চা নিয়ে পরের দিন ভোরে বেরিয়ে পরা। Diamond harbour পর্যন্ত বেশ সুন্দর রাস্তা,গঙ্গা দেখা,পথে এক অতি সাধারণ চাচার দোকান থেকে চা,ওমলেট খাওয়া। তারপর নামখানাতে পৌঁছালাম সকাল ১১ টা নাগাদ। দীর্ঘদিন চাকরীসূত্রে নদীপথে যাতায়াত থাকায় এই নদী দর্শন আমার কাছে নতুন কিছু নয়। হাতানিয়া-দোহানিয়া নদীর পারে এসে এবার অপেক্ষা, দুটো vessel চলে,কিন্তু একটা বন্ধ ছিল সেদিন।তাই চললো দীর্ঘ অপেক্ষা। নদী দেখে পুরোনো বহু কথা মনে পড়লো,৭ বছর চাকরী জীবনের কথা। ৩ ঘন্টা পরে আমাদের ভাগ্য খুললো,আমরা নদী পাড় করলাম।তবে এও আরেক experience... vessel এ গাড়িতে বসে গাড়ি না চলেও কেমন দিব্বি নদী পাড় করলাম। সব শেষে ৩ টে নাগাদ আমরা পৌঁছালাম আমাদের booking করা hotel এ। কোনো মতে স্নান সেরে খিদে পেটে মাছ ভাতকে অমৃত ভেবে পেট ভরালাম। ভরা পেটে মনখুশ করা মেজাজে সমুদ্র দর্শনে বেরিয়ে পড়লাম। নতুন বাঁধানো রাস্তা,বেশ ফাঁকা চারদিক।আসলে চোখ তো দীঘা পুরী দেখে অভ্যাস। কিন্তু এ কি সমুদ্র তো কত কত দূরে,সাদা বালি আর পাগলপারা হাওয়া। ছোট্ট মেয়েটা পাগলের মত খুশিতে বালি ঘাটতে বসলো।আমিও photo তোলায় মত্ত হলাম আর বেচারা বর মেয়ে-বৌ সামলাতে ব্যস্ত। হাটতে হাটতে গেলাম সমুদ্রের পাড়ে ঝাউবনের মধ্যে থাকা বনবিবির মন্দির দেখতে। কি নিরিবিলি চুপচাপ জায়গা,বসে বসে গল্প,ছবি তোলা,মেয়ের আবদার মেটানো-এ সবের মাঝে বেরিয়ে আসছি হঠাৎ ওখানের সেবায়েত বললেন যে দেবী কে দিলেন না কিছু,কি আর বলি যে দেবী তো এই মন্দিরে নেই,এই প্রকৃতিতে আনন্দ মনে তিনি ঘুরছেন। এটা নেহাত আমার ব্যক্তিগত ধারণা।তবু ঐ লোকের হাতে কিছু দিয়ে এলাম,এত সুন্দর জায়গাটা তো উনি দেখভাল করছেন। সন্ধ্যা নামলো পাড়ে,এক রুগ্ন অতি মিষ্ঠভাষী মহিলা এসে chair এ বসতে বললেন- ঘন্টায় ১০ টাকা। বসে বসে সূর্যাস্ত,বুদ্ধ পূর্ণিমার চাঁদ দেখা,চা ice cream খাওয়া চললো। অন্ধকার চারিপাশ,তার মাঝে আমরা কিছু tourist, সামনে দূর সমুদ্র,আপাত নিরীহ মানুষের কথা- আহা কি সুখ। কোনো phone call নেই,জটিলতা নেই,বড় সুন্দর ছিলো সেদিনের নিরবতা,চুপ করে বসে থাকা। উঠতেই হলো ৭.৩০ নাগাদ,কিন্ত ঐ chair ভাড়া দিদি কখন আপন হয়ে গেছে। পরের দিন আসার অঙ্গীকার করে আসলাম পূর্ণিমাদির কাছে। ফেরার রাস্তায় চোখে পড়লো ৪-৫ টা ভাজা মাছের দোকান,নোলা সামলাতে না পেরে line দিলাম খেতে। চিংড়ি ভাজা খেয়ে বেশ জিভের স্বাদও মিটলো। রাতের নির্জন পথে ফিরতে ফিরতে বেশ ভালবেসে ফেললাম বকখালিকে। সভ্য জগতের ছোঁয়া কম এসেছে,তাই মনে হয় এখনও এত শান্তি।
0 Comments
Leave a Reply. |
Best Washing MachineCategories
All
Archives
November 2021
Best Autoclean Chimney |