কিন্নরের পথে পথে কল্পা সাংলা ছিটকুল
দ্বিতীয় পর্ব :- আগের পর্বে শেষ করেছিলাম সারাহানের সূর্য উদয় পর্যন্ত। তারপর আমরা কল্পার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেবার প্রস্তুতি সুরু করলাম। হোটেল শ্রীখন্ডের ম্যানেজার এর সহায়তায় একটি মারুতি জেন গাড়ি ২২০০ টাকার বিনিময়ে আমাদের কল্পা পৌঁছানোর জন্য ঠিক করা হল। সকাল থেকেই আকাশের মুখ ভার , ঝিরিঝিরি বৃষ্টি ও তৎসহ হিমেল হাওয়ায় জুনের প্রথম সপ্তাহেও কাঁপূনি ধরিয়ে দিচ্ছিল। কোনক্রমে স্নান ও প্রাতরাশ সেরে মা ভীমাকালির চরনে প্রনাম করে উঠে বসলাম গাড়িতে। গাড়ি সারাহান থেকে জেওরি নামল অতীব খারাপ প্রায় কাঁচা একটি রাস্তা দিয়ে।কারন প্রধান রাস্তা সতদ্রুর উপর নির্মীয়মান অর্ধসমাপ্ত সেতুর জন্য বন্ধ।রাস্তার দুই পাশে আপেল বাগানের মধ্যে দিয়ে অবতরণ করে যখন NH 5 এ পৌঁছল আমাদের গাড়ি তখন সূর্যদেব আবার সমহীমায় উজ্জ্বল হয়ে উঠল। গাড়ি ছুটে চললো পাহাড়ের বুক চিরে তৈরি করা মসৃণ রাজপথ ধরে,আর সঙ্গে চললো খরস্রোতা শতদ্রু কয়েকশো ফুট নিচে গভীর গিরিখাতের মধ্যে দিয়ে। চতুর্দিকের অতীব সুন্দর পরিবেশ মনের মধ্যে এক অনাবিল আনন্দের সৃষ্টি করছিল। দূরে তুষার শুভ্র কিন্নর কৈলাস এর চূড়ায় মেঘ রোদ্দুর এর খেলা প্রত্যক্ষ করতে করতে পৌঁছে গেলাম কারচম। এখানেই শতদ্রু ও বসপা নদীর মিলনস্থলে তৈরী এক বিশাল নদী বাঁধ । অতীব সুন্দর সেই স্থানকে ডান দিকে রেখে আমরা এগিয়ে চলেছি কল্পার দিকে। খুব শীঘ্রই পৌঁছে গেলাম রেকংপিও যা কিন্নরের জেলা সদর। এখানেই ড্রাইভারের কথা মত ATM থেকে প্রয়োজনমত টাকা তুলে নিতে হলো কারন ওপরে কল্পাতে ATM থাকলেও টাকা নাও থাকতে পারে। ধীরে ধীরে আমাদের গাড়ি যত আর ও উপরে উঠতে লাগল ততই পরিস্কার হতে লাগলো তুষার শুভ্র কিন্নর কৈলাস। পৌঁছে গেলাম আমাদের ঠিকানা HPTDC HOTEL KINNAUR KAILASH. অনবদ্য অসাধারণ অসামান্য ইত্যাদি কোন বিশেষন ই উপযুক্ত নয় এই স্থানের সৌন্দর্যের বর্ণনায়। সমস্ত রকম সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত হোটেল এর ঘর সত্যিই প্রশংসনীয়। ভাড়া ও খুব বেশি নয় , সমস্ত রকম কর সমেত ২৭৫০ টাকা/দিন (৩ বেড) । যাইহোক বৈকালিক চা স্নাকস্ শেষ করতেই হোটেল এর ঠিক উল্টো দিকে বরফাবৃত কিন্নর কৈলাস রেঞ্জ এর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ জোরকানডেন (৬৪৭৩ মিটার) , ঠিক পাশেই কিন্নর কৈলাস (৬০৫০ মিটার) বা সুউচ্চ রালডাং চূড়ায় তখন শুরু হয়েছে সূর্যাস্তের রক্তিম আলোর খেলা , স্বগতোক্তি নবকুমার এর মতো "আহা যাহা দেখিলাম তারে জন্মজন্মান্তরে ভুলিবার নয়"।আর সত্যি ই এত কাছ থেকে এত সুউচ্চ শৃঙ্গ দেখার অভিজ্ঞতা আমাদের আগে হয় নি। এরপর ধীরে ধীরে সম্পুর্ন অন্ধকার গ্ৰাস করল আর চন্দ্রালোকে উদ্ভাসিত হয়ে উঠল চতুর্দিক , সৃষ্টি করল এক অপার্থিব সৌন্দর্যের। আজ এই পর্যন্তই থাক। To be continued...
Post By:- Avijit Chowdhuri
0 Comments
Leave a Reply. |
Best Washing MachineCategories
All
Archives
November 2021
Best Autoclean Chimney |