জয় মা শ্রী শ্রী শ্মশান কালী দেবী।।
আজকে নিয়ে এসেছি আমার জ্যাঠা মশাই এর বাড়ির থেকে কিছুটা দুরে বটতলার শ্মশান কালী মন্দিরে।। হুগলী জেলার বাহিরগড় বটতলায় অবস্থিত এই কালী মন্দির।। হাওড়া থেকে রাজবলহাট বা আঁটপুর গামী বাস ধরে সোজা চলে আসা যায় বাহিরগড়।। বাসস্টপ থেকে প্রায় মিনিট পনের হেঁটে গেলেই গ্রামের শেষ প্রান্তে বটতলা শ্মশানের পাশে রয়েছে এই নগণ্য মাতৃ মন্দির।। তার আগে পড়বে আমার জেঠুর বাড়ি।। আমার জেঠুর বাড়িতে আগে কার্তিক মাসের দীপাবলি অমাবস্যায় কালী পূজা উদযাপন হতো।। এখন সেই কালী পূজা অনেক বছর আগে বন্ধ হয়ে গেছে।। আমার জেঠুর বাড়ির পাশেই রয়েছে শ্রী শ্রী রক্ষাকালী মায়ের মন্দির ও বুড়ো শিবতলা।। জৈষ্ঠ্য মাসের অমাবস্যায় সন্ধ্যা বেলায় মায়ের মাটির মুর্তি এনে সারারাত ধরে কালী পূজা হয়,, হোম,, যজ্ঞ,, পাঁঠাবলি,, চন্ডীপাঠ হয়।। ভোর বেলার আগে মায়ের মুর্তি বিসর্জন দিয়ে দেওয়া হয়,, ও মায়ের কাঠামোতে বাকি ৩৬৪ দিন নিত্য পূজো হয়।। মায়ের মন্দিরের পাশেই রয়েছে বহু প্রাচীন বুড়ো শিবতলা ও তার সংলগ্ন প্রাচীন বটগাছের নিচে রয়েছে পঞ্চানন শিবের থান।। তার পাশে রয়েছে মায়ের দিঘী।। এবারে আসি শ্রী শ্রী শ্মশান কালী মন্দিরের কথায়।। আমার জেঠুর বাড়ি ও রক্ষাকালী মায়ের মন্দিরের মাঝখান দিয়ে একটি মাটির রাস্তা সজা চলে যাচ্ছে শ্মশানের দিকে।। গ্রামের শেষ প্রান্তে।। ঐ মন্দিরের সদস্যদের মধ্যে আমার জেঠিমা ও জেঠু প্রধান ছিলেন। আগে এই মন্দির ছিল মাটির দেয়াল ও খড়ের ছাউনি ছিল।। মা কালীর ছিল অতি ভয়ানক উগ্র রূপ।। পরবর্তী কালে মায়ের পাকা মন্দির নির্মাণ করা হয়,, ও পুরানো মুর্তি নষ্ট হয়ে গেলে আমার জেঠুর পরামর্শ মতো মায়ের শান্ত স্বরূপা শ্যামাকালীর মুর্তি আনা হয়।। মা কালী তার দুই সখী ডাকিনী ও বর্ণিনীর সাথে রয়েছেন।। মায়ের পদতলে শায়িত মহাদেব রয়েছে,, ও মায়ের বাহন শিবা ? ( শিয়াল ) রয়েছে।। মায়ের চারটি হাতে রয়েছে খড়্গ,, অসুরের ছিন্ন মুন্ড,, এবং অভয়মুদ্রা ও বরমুদ্রা।। একটি সত্যিকারের মরার ? খুলি বেদীতে রয়েছে।। এছাড়াও একটি শনিদেবের নীল মুর্তি বেদীর উপর রয়েছে।। মায়ের দরজার দুইদিকে তারা মায়ের দুটি ছবি টাঙানো আছে।। মায়ের মন্দিরের বামদিকে রয়েছে মায়ের ভোগঘর।। এখানে মায়ের ভোগ রান্না হয়।। আগে যখন আমার জেঠুর বাড়িতে কালী পূজা হতো,, তখন আমার জেঠিমা শ্মশান কালী মায়ের ভোগ রান্না করে মাকে নিবেদন করে আসতো,, তারপর বাড়ির ঠাকুরের জন্য ভোগ রান্না করতো।। মায়ের মন্দিরের মধ্যে যে নীল শনিদেবের মুর্তি আছে,, সেটা নাকি আমার জেঠুর দিয়েছিলেন।। ভোগঘরের সামনে রয়েছে দুটি তুলসীমঞ্চ।। মায়ের মন্দিরের দক্ষিণ দিকে রয়েছে পাঁচটি বিশাল বড় বটগাছ দ্বারা আবৃত শ্মশানভুমি।। বর্তমানে মৃতদেহ সৎকারের জন্য একটি বেদী নির্মাণ করে বাঁধিয়ে দেওয়া হয়েছে।। মন্দিরের পিছনে রয়েছে দুটি বিশাল পুকুর।। ওকে বলে বালিখাদ।। স্থানীয় লোকেরা বলেন যে ঐ পুকুরে দুটি বিশাল আকৃতির কাৎলা মাছ রয়েছে।। মাঝরাতে দুটি পৃথক পুকুর নাকি এক হয়ে যায় এবং মাছ দুটো খেলা শুরু করে।। এই পুকুরে নাকি অতৃপ্ত আত্মার বাস আছে।। এছাড়াও এই মন্দির আসার সময় একটি ছোট বাঁশঝাড় পার করতে হয়।। সেখানেও নাকি কিছু অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটেছে।। আমি শনিবার সন্ধ্যায় মায়ের দর্শন ও পুজো দেওয়ার জন্য গেছিলাম।। আমারো কিছু ভয়ের অনুভূতি হয়েছিল।। কিন্তু হয়ত সেটা অজপাড়াগাঁয়ের ঘুটঘুটে অন্ধকারের জন্য।।
0 Comments
Leave a Reply. |
Best Washing MachineCategories
All
Archives
November 2021
Best Autoclean Chimney |