"হাওয়া বদল চাই যাও পশ্চিমে -" দেওঘর :-# [ ২ খণ্ড ] তপোবন - এ যাওয়ার রাস্তায় চলেছি এবার । প্রায় ২০ কিমি পথ অতিক্রম করে এলাম পাহাড়ের পাদদেশ এ , আকাশ ঝলমলে ! হিন্দু পূণ্যার্থী দের আনাগোনা এখানে বরাবরই থাকে তায় শ্রাবন মাস , ফিরতি পথে বাবাদর্শন এর সাথে "রাম,সীতা, লক্ষণ ,বাল্মিকী মুনির " লোককাহিনি বিজড়িত এই পাহাড়ে ঢুঁ মেরে যান সবাই ।পাহাড়ে মন্দির ও গুহা আছে। এখানে কালোমুখো হনুমানের আধিক্য বেশি । এখানকার ইতিহাস টা সংক্ষেপে বলি - রাবন লঙ্কায় শিবলিঙ্গ নিয়ে যাওয়ার সময় এইখানে ধ্যানে বসেন । শৈব রাবন এর তপস্যা ভঙ্গের জন্য দেবতারা পবনপুত্রের কাছে অনুরোধ করে , হনুমান তাঁর গদার ঘায়ে ধরিত্রী কাঁপিয়ে দেয় । রাবনের ধ্যান ভঙ্গ হয়ে যায় ! এই কাহিনী শুনে রাম ও সীতা ১৪ বছর বনবাসের শেষে এই স্থানে এসেছিলেন , সীতা মাতা রাবনের ধ্যানভঙ্গের প্রমান চাইলে হনুমান একটি শিলাতে দাগ দেন , লক্ষণভাই ঐই পাথরটি সমান ভাবে কেটে ফেলেন এবং তার মধ্যে হনুমানের মূর্তি দেখতে পান ,রাম ও সীতা মা খুশি হয়ে ফিরে যান গয়ার পথে এবং দশরথের পিন্ড দান করেন ।সীতা মা এর তপভূমি ও বলাহয় , বাল্মিকী মুনি ও তপস্যা করত এই পাহাড়ে। আমরা নিচের দোকানে জলযোগ করে উঠে পড়লাম সিঁড়িবেঁয়ে । অনিচ্ছাকৃত একটি গাইড ঝুলে পড়ল গলায় , অনুরোধ ফেললাম না দুটো কারনে - ১>ফটো তুলে দেবে আমাদের ২ > এই ভিড়ে ঐরা তাড়াতাড়ি দর্শন করিয়ে সঠিক পথে নিয়ে যাবে , লাইন দিতে হবেনা । চারিদিকের অপরূপ নৈসর্গিকতা সবাইকে মুগ্ধ করেদেবে নিচের মানুষজনকে পিঁপড়ে র মত দেখাচ্ছে ! আর ঐ গাছ পালা রাস্তা ,গাড়ী ও দোকান গুলোকে ছোটবেলার ঝুলনযাত্রার সময় যে গ্রাম বানাতাম ঐ বালি ও সবুজ কাঠের গুড়ো দিয়ে ঠিক সেই রকম লাগছে ! একেকটা পাথর যেন ছোট বলের মত দেখতে লাগছে! তপোবনে ও শিবমন্দির আছে । সিঁড়ি পথের পাকদন্ডি বেঁয়ে উপরে উঠলাম কিছু গুহা ও আছে একে একে দেখে নিলাম। তবে পা সাবধানে ফেলে চলতে হয় ! ফটো তোলার জন্য আদর্শ এক চাতালে এসে ৩৬০° ঘাড় ঘুরিয়ে দেখলে মন ভালো হতে বাধ্য । অনতিদূরে স্পষ্ট ভাবে #ত্রিকুটপাহাড় “ কে দেখা যাচ্ছে । এগিয়ে চললাম জঙ্গলের পথ ধরে বৌ তো ভয়ে একটা গুহাতে ঢুকলই না , গাইড তার নিজস্ব ভঙ্গিতে ইতিহাস /পুরানের কথা বলে চলেছে যার সার সংক্ষেপ আমি আগেই বর্ণনা করেছি , গরমটা ভালোই লাগছিল তাই গাছের নিচে পাথরের উপর বসে গল্প টা শুনলাম । এবার ঐ চিড় ধরা শিলা টি দর্শন করানোর জন্য এগোলাম । এবার গুহা ততোধিক সংকীর্ন পালিয়ে যাওয়ার পথ নাই । "জয় হনুমান" বলে ঢুকে পড়লাম গুহায় ,আবালবৃদ্ধবনিতা সবাই আগে যাবে , ঠেলা ধাক্কা দিয়ে , যাইহোক দর্শন করে নামলাম নিচে , গাইড কে প্রাপ্য মিটিয়ে নরম পানীয়তে গলা ভিজিয়ে রওনা দিলাম পরবর্তী গন্তব্যের উদ্দ্যেশে - ত্রিকূট পাহাড়- দেওঘর শহর থেকে ১০ কিমি দূরত্বে দুমকা যাওয়ার পথে অবস্থিত একটি পাহাড়। এটির তিনটি শৃঙ্গ আছে, যা থেকে ত্রিকূট নামটি এসেছে। ধূম্র ধুসর বিরাট ত্রিকূট পাহাড়। হিমালয় এর কাছে এর গড় উচ্চতা কিছুই নয়। কিন্তু বিরাট বলছি এই কারণেই যে যখন পাহাড়ের সামনে দাঁড়ালাম, তখন নিজেকে কত ক্ষুদ্র মনে হল। পাহাড়ের উপরে ঘন জঙ্গলের মধ্যে ত্রিকূটাচল মহাদেবের মন্দির আছে। সবচেয়ে উঁচু শৃঙ্গটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২৪৭০ ফিট ও মাটি থেকে ১৫০০ ফিট উঁচু। দুমকা রোড ধরে কিছুটা যাওয়ার পরই দুর প্রান্তরে ত্রিকূট পাহাড় চোখে পড়ল। দেখে মনে হল কোনও প্রাচীন বৃদ্ধ ঋষি দীর্ঘকাল ধরে তাঁর ধুনির আগুন আগলে বসে আছেন। আর তাঁর ওপারেই যেন অচেনা রাজ্য।তিনটির মধ্যে দুটিতে ট্রেকিং করা যায় ও একটিতে খাড়াইয়ের জন্য হেঁটে ওঠা যায়না। আগের পর্বে বলেছিলাম - দেওঘর শহরটির খুব বেশি পরিবর্তনহয়নি । ঠিকই , তবে দুমকা রেল যোগাযোগ টা হয়েছে ! রাস্তাগুলো ঝাঁ চকচকে , সবথেকে উল্লেখযোগ্য -সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট , যেটা র উৎপন্ন সমস্ত বিদ্যুত ব্যাবহৃত হয় বাবাধাম মন্দিরে ! এই পথেই বাঁদিকে রয়েছে সারিসারি সৌরপ্যানেল । ভালত লাগল তাই উল্লেখ না করে পারলাম না । দুমকা রোড ছেড়ে রাস্তা বাঁ দিকে ঘুরে গেলো। সেই রাস্তা একদম পাহাড়ের সানুদেশ অবধি পৌঁছেছে। তারপরেই সেই রাস্তার গতি রোধ করেছে জঙ্গলে ঢাকা ত্রিকূট পাহাড়। ডানদিকে একটি সিঁড়ী উঠে গেছে কিছুটা, তারপরেই একটি সমতল জায়গা। সেখানে বাবা ত্রিকূটেশ্বর এর মন্দির। আশ্চর্য্য পরিবেশ। শান্ত প্রাচীন সব গাছপালা আগলে রয়েছে চাতাল টাকে। সেখানে দুর্গা মন্দির, গণেশ মন্দির ও আছে। বাবা ত্রিকূটেশ্বর এর মন্দির এর পাশে একটি নল দিয়ে অণর্গল স্বচ্ছ জল নির্গত হয়ে চলেছে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে। সেই রকম সুস্বাদু জল খেয়েছি আগেও ।সেই সঙ্গে উপকারিও বটে। ঝাড়খণ্ডের জল-হাওয়া নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। সেই জল পাহাড়ের কোথা থেকে আসছে কে জানে? এই পাহাড় থেকেই কিন্তু ” ময়ূরাক্ষীর “ নদীর উৎপত্তি। পাহাড়ের নিচে এসে রজ্জুপথ এর দিকে এগোলাম ১২৮ /- টাঃ করে একটি টিকিট । চড়ে পড়লাম 4 আসন বিশিষ্ট কেবিনে । প্রথমবার এই রোপওয়ে তে চড়লাম , এর আগে প্রতিবার পায়ে ট্রেক করে উঠেছি । 2006-07 এ বার তিনেক এসেছিলাম। তখন শ্রমিকদের ঘাড়ে করে এই রোপওয়ে তৈরির জিনিস উপরে নিয়ে যেতে দেখতাম । ঐ পথ অনুসরন করেই আমরা বিনা গাইডে উঠতাম এই চূড়ায় ! 1000 ফিট উঠতে গিয়ে দেখতাম 10 জনের দল 4 জনে এসে ঠেকেছে ! এবার তাই অভিজ্ঞতাটা সম্পূর্ণ আলাদা ঝাড়খন্ডের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রের প্রথমবার রোপওয়ে তে প্রিয়জনের সাথে ! ভয় ও এডভেঞ্চার কে সাক্ষী করে দুলতে দুলতে কড়মড় আওয়াজ করতে করতে উঠতে থাকল কেবিন গুলো ।নিচ দিয়ে তখন ঘন জঙ্গলে ঘেরা পাহাড়ের ছোট ছোট চূড়া গুলো ক্রমশঃ ছোট হয়ে যাচ্ছে । খাঁড়াই সর্বোচ্চ চূড়াতে যেতে অসম্ভব ভালো লাগবে ।প্রচুর হনুমান আছে। তাদের জন্য বরাদ্দ ভেজা ছোলা সঙ্গেই ছিল । ১০ মিঃ সব শেষ করেদিল পবনপুত্রেরা! ফিরলাম সেই একই পথে ! ভালোলাগার আবেশ কে সঙ্গে নিয়ে ! ধন্যবাদ ! Post By:- Biltu Aich
0 Comments
ll প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে মোড়া 'ম্যাসানজোড় বাঁধ' ll কয়েকদিন আগেই গেছিলাম এখানে তবে এবার দ্বিতীয়বার, আসলে প্রথমবার যখন গেছিলাম তখন আমার কাছে ক্যামেরা নামক বস্তুটি ছিল না তাই সেই ছবি কেবলমাত্র মনের লেন্সেই ধরা পড়েছিল l এবার আর সেই ভুল হয়নি l জায়গাটার একটা নিজস্বতা রয়েছে এবং পারিপার্শ্বিক প্রকৃতি নিতান্তই নিদারুণ লোভনীয় যা ছবি তোলার ইচ্ছেটাকে চরম সীমায় পৌঁছে দেয় l যতো সন্ধ্যে গড়াতে থাকে ততোই ঠিক যেন গিরিগিটির মতো প্রাকৃতিক নিয়মেই রং পাল্টাতে থাকে ম্যাসানজোড় এবং লেন্সের খিদেও মেটাতে থাকে l যারা এখনও এই সৌন্দর্য্য থেকে বঞ্চিত তারা অবশ্যই দিন দুয়েকের একটা ছোট্ট ট্রিপ প্ল্যান করে ফেলতেই পারেন, আশা করি নিরাশ হবেন না l Post By:- Gourab Sarkar
মলুটি টেরাকোটা গ্রাম - মা মৌলিক্ষা এবং তারাপীঠ রামপুরহাট থেকে ১৫ কিমি দূরে, বাংলা ঝাড়খন্ড বর্ডারে দুমকা জেলায় মৌলিক্ষা মায়ের মন্দির । সবাই হয়তো তারাপীঠেই যান, কিন্তু মলুটি গ্রাম - মৌলিক্ষা মায়ের কথা জানেন না । রামপুরহাট ১৫ কিমি দূরে রামপুরহাট দুমকার রাস্তায় গিয়ে বাংলা – ঝাড়খণ্ড সীমান্তে মলুটি মোড় থেকে বাঁদিকের রাস্তায় ৬ কিমি গেলে পৌঁছে যাবেন মলুটি গ্রাম। বর্তমানে গ্রামটি ঝাড়খণ্ডের অন্তর্ভুক্ত। মৌলিক্ষা মায়ের কাছেই বাবা বামাখ্যাপা প্রথম সিদ্ধ লাভ করেন, প্রথম পুরোহিত উনিই, তাইমলুটি মৌলিক্ষা মায়ের মন্দির হলো সিদ্ধপীঠ । বাবা বামাখ্যাপা এরপর তারাপীঠ চলে যান । মৌলীক্ষা মন্দিরে বামদেবের যে সাধনা কক্ষটি রয়েছে সেখানেতে বামদেবের ত্রিশূল ও বামদেব ব্যবহৃত বৃহৎ শঙ্খটি আজও সেই ইতিহাসের সাক্ষী বহন করে চলেছে। গ্রামের স্থানীয় মানুষ মৌলিক্ষা মাকে ছোটোবোন এবং তাঁরা মাকে বড়োবোনও বলে ডাকেন । কালী পূজার রাতে সারারাত ধরে এখানে পূজা হয় । মলুটি গ্রাম হলো টেরাকোটার গ্রাম । সারা গ্রামে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ১০৮ টা শিব মন্দির ছিলো । টেরাকোটা কাজের মন্দির । কিন্তু পরিচর্যা এবং যত্নের অভাবে ৩৬ টা মন্দির আর এখন নেই । বাকি ৭২ টা মন্দির মলুটি গ্রামে আছে । টেরাকোটার কাজ দেখার মতো । মন্দির গুলি সপ্তদশ থেকে শুরু করে উনিশ শতকে তৈরি, রাজা বাজ বসন্তের বংশের ভিন্ন ভিন্ন রাজাদের আমলে। মন্দির গুলি বাংলার একচালা ও চারচালা শৈলীর এক সুন্দর নিদর্শন । মন্দির গুলি প্রায় সবকটি পোড়ামাটির তৈরি অর্থাৎ টেরাকোটার । টেরাকোটার বর্গাকার প্যানেল বসিয়ে মন্দিরগুলির গায়ে বসানো হয়েছে । টেরাকোটার পানেল গুলিতে রামায়ণ, মহাভারতের ও শাক্ত পদাবলীর মহিসাসুর ও মা দুর্গার যুদ্ধের বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে। তারাপীঠে পুজো দিয়ে একবার ঘুরে আসতে পারে্ন মলুটি গ্রামতে। দেখে আসতে পারেন প্রাচীন বাংলার প্রায় ভুলে যাওয়া একচালা আর চারচালা মন্দিরের ইতিহাস । Post By:- Subhojit Tokdar
গিরিডি পরেশনাথ মধুবন ট্রিপ গাইড A] গিরিডি: ------------- "উশ্রী নদীর ঝর্ণা দেখতে যাবো/ দিনটা খুব বিশ্রী" - ছোটবেলায় সহজপাঠে পড়া সেই কথা । সেই উশ্রী নদী আর ঝর্ণা (জলপ্রপাত) সত্যি আছে বাস্তবে - প্রোফেসর শঙ্কুর দেশ গিরিডিতে । আর দিনটি যদি বিশ্রী না হতে হয় মানে যৌবনারত উশ্রীঝর্ণা দেখতে হলে যেতে হবে বর্ষাকালে , যখন বৃষ্টির জলে জলপ্রপাত স্বয়ংসম্পূর্ণা ।বর্ষাতে হলুদজল আর তেমনি তার স্রোত । প্রচন্ড জল আর গতিবেগ । উচ্চতা খুব বেশী নয় কিন্তু জল আছড়ে পড়ছে । গিরিডি থেকে ১২ কিমি দূরে উশ্রী জলপ্রপাত । গিরিডিতে আর আছে খাণ্ডলী ডাম, ট্যুরিজম পার্ক। খান্ডলী ডাম, লেক কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে ট্যুরিজম পার্ক । পাশেই আছে খান্ডলী পাহাড় । গিরিডি থেকে ১৫ কিমি দূরে এই খান্ডলী ট্যুরিজম পার্ক । টয়ট্রেন থেকে ওয়াটার স্পোর্টস সবকিছু আছে । শীতকালে পিকনিক করার খুব ভালো জায়গা। এছাড়া গিরিডি থেকে দেখে নেওয়া যায় : ১) হরিহর ধাম : অন্যতম বৃহৎ শিবলিঙ্গ । গিরিডি থেকে হাজারীবাগ পথে ৬০ কিমি দূরত্বে। ২) সূর্য্য মন্দির : পুকুরের মধ্যে পদ্ম আকৃতির সুন্দর মন্দির জামুয়া দেওঘর যাওয়ার পথে গিরিডি থেকে ৪৫ কিমি দূরত্বে । ৩) ঝাড়খন্ডি ধাম : হাজারীবাগের পথে ঝাড়খণ্ডের সবচেয়ে পুরানো শিব মন্দির । ৪) তোপচাচি লেক : ধানবাদের পথে পরেশনাথ পাহাড়ের পাদদেশে কৃত্রিম লেক । B] মধুবন পরেশনাথ : -------------------------- গিরিডি থেকে ২৯ কিমি দূরে জৈনদের শ্রেষ্ঠ তীর্থক্ষেত্র মধুবন পরেশনাথ । পরেশনাথ পাহাড়কে ঘিরে এই তীর্থক্ষেত্র । জৈনদের ২৪ জন তীর্থংকরের মধ্যে ২৩ জন তীর্থংকর নির্বাণলাভ করেন পরেশনাথ পাহাড়ে । ২৩ তম তীর্থংকর স্বামী পার্শ্বনাথ মোক্ষলাভ করেন পাহাড়ের শীর্ষে । পরেশনাথ পাহাড়ের উচ্চতা প্রায় ৪৫০০ ফুট । পাহাড়ের শীর্ষে দুধসাদা মার্বেলের মন্দির আছে স্বামী পার্শ্বনাথের স্মৃতির উদ্দেশ্যে । মন্দিরের ভিতর স্বামীজীর পদচিহ্ন পূজিত হয় । (মন্দিরের মধ্যে ছবি তোলা যায়) পরেশনাথ পাহাড়েই ২৪ জন তীর্থংকরের মন্দির সহ জলমন্দির আছে । জৈন তথা হিন্দুদের পূর্ণতীর্থ হল এই পরেশনাথ মন্দির । নিচে মধুবন হলো বেস পয়েন্ট । এখন থেকেই যাত্রা শুরু হয় । মধুবনে প্রচুর জৈন মন্দির । এবং ধর্মশালাও আছে । মধুবন থেকে পায়ে হেটে ট্রেকিং পথ ৯+৯= ১৮ কিমি । ঘন্টাছয়েক সময় লাগে উঠতে । রাতে ভোরের দিকে ট্রেকিং শুরু করে বিকেলের মধ্যে মন্দির দর্শন করে নেমে আসা শ্রেয় । যারা হেঁটে উঠতে পারেন না, তাদের জন্য ডুলি সার্ভিস আছে । ৮৯ কেজি পর্যন্ত ডুলি ভাড়া জনপ্রতি ৪৫০০ টাকা । ৯০ কেজি হয়ে গেলে সেই ভাড়া ৬৫০০ টাকা। আর আছে সবচেয়ে সহজ বাইক সার্ভিস । দুবছর হলো চালু হয়েছে । বাইকের রাস্তা আলাদা । ১৭+১৭=৩৪ কিমি ঘুরপথে বাইকে করে পাহাড়ের উপরে মূল মন্দিরের এক কিমি আগে পর্যন্ত বাইক যায় । এর পরের পথ সিঁড়ি বাঁধানো । বাইক ভাড়া ৫০০ টাকা থেকে ৮০০ এর মধ্যে । দরদাম করার উপর নির্ভর করে । কিভাবে যাবেন : ----------------- গিরিডি থেকে পরেশনাথ মন্দিরের বেসপয়েন্ট মধুবন ২৯ কিমি এবং পারশনাথ স্টেশন থেকে মধুবন ২৬ কিমি । তাই দুদিক থেকেই মধুবন পারেশনাথ আসা যায় । তবে পারসনাথ হলো হাওড়া দিল্লি মেন লাইনে ধানবাদের পর । তাই অনেক ট্রেন এই লাইনে । দিল্লি/ মোগলসরাই গামী সব ট্রেন পারসনাথ স্টেশনে দাঁড়ায় । ( সবচেয়ে ভালো ট্রেন রাতে হাওড়া মুম্বাই মেল ভায়া এলাহাবাদ) এছাড়া কলকাতা থেকে সরাসরি গিরিডি যাওয়ার এক্সপ্রেস ট্রেন আছে । কলকাতা পাটনা এক্সপ্রেস গিরিডি লিংক । মধুপুর পর্যন্ত কমন লাইন, তারপর গিরিডি লিংক এক্সপ্রেস ভোরবেলা গিরিডি স্টেশন পৌঁছে দেয় । রাতে ফেরার ক্ষেত্রেও একই ব্যবস্থা । কোথায় থাকবেন : --------------------- মধুবন এবং গিরিডি তে প্রচুর হোটেল, ধর্মশালা আছে । এদিকে ধর্মশালার প্রচলন বেশী । কম টাকায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ঘর পাওয়া যায় । গিরিডি স্টেশনের পাশেই মোদী ধর্মশালাতে আমরা ছিলাম । পরিস্কার পরিচ্ছন্ন । ২০০ টাকায় attached বাথরুম সহ ঘর । আরো কমে ১০০ টাকায় কমন বাথরুম সমেত ঘর । (যোগাযোগ : ৯৫৭০০৯২২৭৬) এরকম অনেক ধর্মশালা গিরিডি এবং মধুবনে আছে । Post By:- Subhojit Tokdar
দেওঘর ও বৈদ্যনাথ ধামে কিছুসময়ের বিশ্রাম : প্রতিদিনের একঘেয়ে জীবন থেকে মুক্তি পেতে ও জীবনকে একটু আধ্যাত্মিকতার স্বাদ দিতে এক শুক্রবার আমি (সুমন), সৌরভ ও শুভ্রাংশু হাওড়া থেকে রাক্সউল এক্সপ্রেসে চড়ে বসলাম জসিডির উদ্দেশ্যে। রাত 11 টায় স্টেশন ছেড়ে ট্রেন পরদিন সকালে 5 টার সময়ে জসিডি পৌঁছালো। স্টেশন থেকে অটো নিয়ে (200 টাকা) আমরা পৌঁছালাম আমাদের হোটেল যশোদা ইন্টারন্যাশনালে (ডিলাক্স রুমের ভাড়া দিনপ্রতি 1650 + ট্যাক্স)। সিঙ্গারা ও কচুরি সহ জলযোগ করে একটা অটো নিয়ে আমরা বেরিয়ে পড়লাম সাইট-সীইং এর উদ্দেশ্যে(সারাদিনের জন্যে ভাড়া 1200) । প্রথমে গেলাম সংকটমোচন মন্দিরে, সেখান থেকে আধ কিমি যেতে কুণ্ডেশ্বরী মন্দির, করিঙ্গাসুরের পিঠে সিংহাসিনা চতুর্ভূজা জগদ্ধাত্রী। তারপর গেলাম বমপাস টাউনে নবদুর্গা মন্দির। এরপর আমাদের গন্তব্য নওলাখা মন্দির। ন'লাখ টাকা দিয়ে তৈরি হয়েছিল বলে এর এই নাম । কিছুটা বেলুড়মঠের আদলে তৈরি এই মন্দিরে গোপাল আর রাধাকৃষ্ণের মূর্তি আছে । সিঁড়ি দিয়ে উঠে মন্দিরের চত্বরটা খুব মনোরম। সেখান থেকে গেলাম দেওঘর শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত তপোবন পাহাড় । পাহাড়ের ধাপে ধাপে নানারকম মন্দির রয়েছে ।তপোবনের ছাদ থেকে পাহাড়ের ধাপে ধাপে উঠে একেবারে মাথায় চলে গেলে চারদিকের দৃশ্য খুবই মনোরম ।মাটি থেকে 350 ফুট উপরের রয়েছে শিব মন্দির।তপোবন পাহাড় থেকে নামার রাস্তাটা সবথেকে বেশি রোমাঞ্চকর । চাইলে সিঁড়ি দিয়ে খুব আরামে নেমে আসা যায়, আবার চাইলে পাহাড় ভেঙ্গে বিপদের ঝুঁকি নিয়েও নামা যায় । এরপর আমরা গেলাম দেওঘর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ত্রিকূট পাহাড়, এর বৈশিষ্ট্য হল এটা দেওঘরের সবথেকে উঁচু জায়গা । ভাতের হোটেল না পেয়ে লাঞ্চ সারা হলো শশা, কলা ও আখের রস খেয়ে। এখানে পাহাড়ের উচ্চতা ১,৫০০ ফুট । চাইলে হেঁটে উপরে যাওয়া যায়, নাহলে রোপওয়ে আছে। ওঠানামা মিলিয়ে মাথাপিছু 200 টাকার টিকিটে ত্রিকূট পাহাড়ে উঠতে সময় লাগে মিনিট দশেক । রোপওয়েতে এই ভ্রমণটা খুবই সুন্দর । ত্রিকূট পাহাড়ের ওপর থেকে দেওঘরের দৃশ্য অত্যন্ত মনোরম । এরপর গেলাম নন্দন পাহাড়। নন্দন পাহাড় কে পাহাড় না বলে টিলা বলা যায়, এখান থেকে দেওঘরের পানীয় জলের সরবরাহ হয় । পাহাড়ে উঠতে ১৪০ টা সিঁড়ি আছে । পাহাড়ের ওপরে যথারীতি কিছু মন্দির আছে , আছে খুব সুন্দর নন্দী মূর্তি , আর পাহাড়ে ওঠার পথে একটা বাচ্চাদের পার্ক আছে । এছাড়া একটা টয়ট্রেনও আছে যেটা পাহাড়ের গা-বেয়ে ওপরে ওঠানামা করে । একটা মাছ ঘর ও আছে। আমরা পাহাড়ে কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করে ফিরে এলাম । পরের গন্তব্য অনুকূল ঠাকুরের সৎসঙ্গ আশ্রম। স্নিগ্ধ পরিবেশ সত্যিই মনোমুগ্ধকর। এরপর রামকৃষ্ণ মিশনে সন্ধ্যারতি দেখে হোটেল ফিরে ডিনার করে পরিশ্রান্ত শরীরে ঘুমের জগতে পাড়ি দিলাম । পরেরদিন ভোরে উঠে বৃষ্টির মধ্যে রওয়ানা দিলাম বৈদ্যনাথ মন্দিরের উদ্দেশ্যে। ৭২ ফুট উঁচু মন্দিরে দেবতা এখানে বৈদ্যনাথ নামে খ্যাত। দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের অন্যতম বৈদ্যনাথ মন্দিরটি ১৫৯৬ সালে গড়েন রাজা পূরণমল।মন্দির চত্ত্বরে শিব ছাড়াও জয়দুর্গা, অন্নপূর্ণা, কেদারনাথ, ইন্দ্রেশ্বর, মহাকাল প্রভৃতি 21 টি দেবদেবীর মন্দির রয়েছে। কথিত আছে বৈদ্যনাথধামে সতীর হৃদয় পড়ে। তাই এটিকে ৫১ পীঠের মধ্যেও গণ্য করা হয়। মন্দিরের উত্তরে রয়েছে ১৫০ সিঁড়ির ক্ষীরগঙ্গা দিঘি। ৬ কিমি দূরে গঙ্গা। পুরাণ বলে কৈলাস থেকে শিবকে লঙ্কায় নিয়ে যাওয়ার পথে দেবতাদের ছলনায় এখানেই নামিয়ে রাখেন রাবণ। দেবতাও অনড় হয়ে যান। লঙ্কায় রাবণালয়ে আর যাওয়া হয়নি মহাদেবের। এখানেই প্রতিষ্ঠিত হন দেবতা। দুপুরে হোটেলে এসে মাছ ভাত খেয়ে বিকালে বেরোনো হলো দেওঘর বিখ্যাত পেড়া কিনতে। অবশেষে বৈদ্যনাথ ধামকে বিদায় জানিয়ে রাত 12 টায় মিথিলা এক্সপ্রেসে চড়ে পরেরদিন সকাল 6 টায় হাওড়া পৌঁছালাম Post By:- Suman Datta
ঘুরে এলাম #নেতারহাট #পর্ব_১ তিনদিনের ছুটিতে হঠাৎ করেই বেড়িয়ে পড়া রাঁচির উদ্দেশ্যে, গন্তব্য নেতারহাট আর বেতলা। হাওড়া থেকে রাত দশটা দশে ক্রিয়াযোগ এক্সপ্রেসে সকাল সাতটায় রাঁচি। সেখান থেকে একটা সুমো ভাড়া করে (দিনপ্রতি ২৫০০ টাকা) রওনা দিলাম। রাঁচি থেকে নেতারহাট ১৫০ কিমির বেশি রাস্তা। শুরুর ২৫-৩০ কিমি রাস্তা বেশ খারাপ কারণ হাইরোড চওড়া ও উঁচু করার কাজ চলছে। আর তাই সময় লেগে গেল প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা। মাঝপথে চাকা পাংচার হওয়ায় কিছুটা সময় বেশি লাগলো। তবে শুরুর অংশ বাদ দিলে বাকি রাস্তা মাখনের মত। উপরি পাওনা দূরে দেখতে পাওয়া ছোট ছোট টিলার মত পাহাড়। মাঝে লোহারদাগাতে থেমে লাঞ্চ, তারপর আবার চলা (নেতারহাটে আগে থেকে অর্ডার দিতে হয় খাবারের জন্য তাই দেরি হয়ে গেলে লোহারদাগাতে দুপুরের খাওয়া সেরে নেওয়াই ভালো)। এপ্রিল মাস, তাই রোদের তেজ একটু বেশিই। যাইহোক বেলা দুটো নাগাদ পৌঁছলাম নেতারহাট। এখানে থাকার সব থেকে ভালো জায়গা হোটেল প্রভাত বিহার (সরকারি, ঝাড়খণ্ড ট্যুরিজমের সাইটে অনলাইন বুক করা যায়)। তারপরেই সব থেকে নাম করা রবি-শশী লজ। কিন্তু আগে থেকে বুক না করা থাকায় কোথাও ঠাঁই হল না। অগত্যা অন্যত্র খোঁজ। জায়গা মিলল হোটেল প্রকাশে। দিনপ্রতি সাতশ টাকা হিসাবে ঘর ভালই, কিন্তু অসুবিধা বাথরুমের। বাথরুম মোটামুটি পরিস্কার হলেও এসবেস্টসের ছাদ, খোলা জানলা, রাতে আলোর অভাব এসব তো আছেই, সব থেকে বড় অসুবিধা হল ভেতরের চারখানা ঘর আর একটা বিশাল ডরমিটরির জন্য একটাই বাথরুম। কিন্তু আর কোন উপায় না থাকায় তাতেই মানিয়ে নিতে হল। তাড়াতাড়ি করে মালপত্র রেখে বেরলাম সূর্যাস্ত দেখতে দশ কিমি দূরে ম্যাগনোলিয়া ভিউ পয়েন্টের উদ্দেশ্যে। পথে পড়ল নেতারহাট পাবলিক স্কুল (রেসিডেন্সিয়াল)। খুব আহামরি কিছু না হলেও সুন্দর করে ফুল দিয়ে সাজানো শান্ত পরিবেশ বেশ ভালো লাগলো। যদিও পরিসরে অনেক ক্ষুদ্র তবু জায়গাটা অনেকটা আমাদের শান্তিনিকেতনের কথা মনে পড়িয়ে দেয়। স্কুলের একজন কর্মচারী ঘুরিয়ে দেখালেন স্কুলের বিভিন্ন ল্যাবরেটরি। এরপর চললাম ভিউ পয়েন্টের দিকে। যেতে যেতে শুনলাম ম্যাগনোলিয়া ভিউ পয়েন্টের নামকরণের গল্প, এক ভারতীয় রাখাল আর ইংরেজ মেয়ে ম্যাগনোলিয়ার প্রেমকাহিনীর করুণ পরিণতির কথা। পৌঁছে দেখলাম বহু গাড়ি ও মানুষের ভিড়। জায়গাটা বেশ সুন্দর করে বাঁধিয়ে গ্যালারীর মতো করা আছে। সেখানেই একটা জায়গা খুঁজে বসে পড়লাম। আকাশ রীতিমতো মেঘলা, তাই সূর্যকে ভালোভাবে চাক্ষুষ করা গেলো না, কিন্তু সূর্যাস্তের আকাশের সৌন্দর্য মুগ্ধ করে দেওয়ার মতো। ছটা বাজার আগেই সূর্য টুপ করে ডুব দিলো আর আমরাও উঠে পড়লাম। হোটেলে ফিরতে হবে এবার। রাতের খাবারের অর্ডার আগেই দেওয়া ছিল (যদিও এদের নিজস্ব রান্নার ব্যবস্থা নেই, কিছুদুরের একটা ক্যান্টিন থেকে খাবার দিয়ে যায়, দামও সাধ্যের মধ্যে)। কিন্তু মুশকিল হল সময় কাটানো নিয়ে। কারণ ঘরে টিভি নেই, মোবাইলে বিএসএনএল আর এয়ারটেল ছাড়া টাওয়ার নেই(যার কোনটাই নেই আমার)। অগত্যা আড্ডা দেওয়ার উদ্দেশ্যে ছাদে গিয়ে বসলাম। আর মাথার ওপর তাকাতেই বুঝলাম সময় কাটানোর জন্য প্রকৃতি এখানে দরাজহস্ত। একসাথে এতো তারা শেষ কবে দেখেছি মনেই পড়ে না। মনে হল সম্পূর্ণ অন্য জগতে এসে পড়েছি। কতক্ষণ যে আকাশের দিকে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে বসে ছিলাম জানি না। হুঁশ ফিরল হোটেল ম্যানেজারের ডাকে, খাবার এসে গেছে। তাড়াতাড়ি উঠে পড়লাম, খেয়ে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়তে হবে, কাল ভোরবেলা উঠে সূর্যোদয় দেখতে যাবো। Post By:- Titas Bhaumik
কলকাতা থেকে ডিমনা লেক ঝাড়খণ্ড : ঈদের ছুটিতে বেড়িয়ে এলাম হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেনে টাটা স্টেশনে নেমে ভাড়ার গাড়িতে করে পৌঁছলাম ডিমনা লেক ঝাড়খণ্ড এ । অসম্ভব সুন্দর জঙ্গলের নিশ্তব্দতা ও প্রক্রীতীর মোহময় মাধূর্যতা ঘেরা ডিমনা লেক ।এক ই সাথে পাহাড় আর লেকের সৌন্দর্য সত্য ই দারুন উপভোগ্য । হাতে যদি থাকে ১/২ দিন তবে নিশ্চিন্তে ঘুরে আবার বাড়ি ফিরে আসা যায় । Post By:- মুস্তাক আলি
Post By:- Arunabha Kunti
Post By:- Suparna Roy
|
Best Washing MachineCategories
All
Archives
November 2021
Best Autoclean Chimney |