কৈখালী নামটাও ফিকে এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কাছে#
নদী ,নির্জনতা ও অরণ্যের কোলে যেতে কার না ভালো লাগে । বন্ধুর উপদেশে, বন্ধরা দল বেঁধে বেরিয়ে পড়লাম কলকাতার কাছে থাকা জনকোলাহল মুক্ত নৈসর্গিক জায়গা কৈখালী । বন্ধুর বাড়ি নিমপিঠ এই এবং বন্ধুর বাবা কাজ করেন নিমপিঠ রামকৃষ্ণ আশ্রমেই তাই আমাদের থাকা খাবার ব্যাবস্তা উনি করে দিয়েছেন । শিয়ালদা থেকে সকাল ৮:১৫ এর নামখানা লোকাল ধরে পৌঁছেযায় জয়নগর মাজিলপুর স্টেশন । সময় ১:৩০ ঘন্টা লাগে । তারপর সেখান থেকে টেম্পো করে জামতলা ও জামতলা থেকে অটো করে গন্তব্যস্তল কৈখালী আটো থেকে নেমে দেখি জনকলাহল মুক্ত সবুজে খেরা কৈখালীর পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে মাতলা নদী ,নদীর ধারে আছে মানগ্রোফ গাছ । পাশে আছে রামকৃষ্ণ আশ্রম ও রাত্রি যাপনের জন্য সরকারি আবাসন । নদীর ওপারে আছে ঝাড়খালী ও রয়েল বেঙ্গল টাইগারএর দেশ । ডানদিকে কাতামারী । অপরূপ দৃশ্য টা এখনো চোখে ভাসে । সেই বন্ধুর বাবা আমাদের জন্য আশ্রমের ভেতরে একটি ঘরের বেবস্থা করে দেয় । তথাকথিত প্রবেশ করি আশ্রমে , শান্ত প্রকৃতি, বিভিন্ন রকমের ফুল ফুটে আছে চারিদিকে , দেখলাম রামকৃষ্ণ মন্দির ও আশ্রম । দুপুরে সরকারি আবাসন থেকে আমরা ভুরিভোজ সারি এবং সারা দিন কৈখালী তে দিন কাটিয়ে বাসার উদ্দেশে রওনা দেই । কম টাকায় এত সুন্দর সপ্তাহানিক ভ্রমণ হবে ভাবতেই পারে যায় না । তবে , কৈখালী গেলাম কিন্তু মূল আকর্ষণ ঝাড়খালী যাওয়া হয়নি সময়ের দরুন । তাই আপনার গেলে দুদিন সময় নিয়ে যান থাকুন কৈখালী সরকারী আবাসনে। আশাকরি ফুসফুসের সাথে চনমনে হয়ে উঠবে মনটাও ।
0 Comments
হঠাৎ শনিবার ছুটি পেলাম আগের রাতে ভাবলাম বাইক নিয়ে কোথাও গেলে কেমন হয়??? কাউকে কিছু না বলে you tube এ সার্চ করলাম পছন্দ হলো মন্দির নগর বিষ্ণুপুর, তার প্রধান কারন জয়পুর জঙ্গল আর টেরাকোটা শিল্প নিজের চোখে দেখা এবং অবশ্যই শনিবার এর পোড়ামাটির হাট!!! গুগুল ম্যাপ বলছে যেতে হবে 134 Km !!! সকাল 6.34মিনিটে এ বাড়ি থেকে বাইক স্টার্ট দিলাম 80km গিয়ে আরামবাগ পৌঁছলাম 8.35 মিনিটে সেখানে চা - টিফিন খেয়ে বাইকে পেট্রোল নিয়ে 9.10মিনিটে জার্নি স্টার্ট করলাম, দ্বারকেশ্বর নদী পার হয়ে কোতুলপুর -আরামবাগ রোড ধরলাম এখনও যেতে হবে 54 km!!! কোতুলপুর এর পর রাস্তার দুইধারের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে দেখতে এগোতে থাকলাম তারপর এলো জয়পুর জঙ্গল সেখানে দাঁড়িয়ে ফটো সেশন করলাম 1st টাইম জঙ্গল এরমধ্যে বাইক চালানো স্মরণীয় করে এগিয়ে যেতে থাকলাম বিষ্ণুপুর এর দিকে...
10.45 মিনিটে পা রাখলাম বিষ্ণুপুর এর মাটিতে... এক জীবন্ত ইতিহাসের সাক্ষী থাকলাম সারাটাদিন...এখানকার মন্দির গুলো সবই পোড়ামাটির আর টেরাকোটা কাজ,শিল্পীরা কত নিপুন হাতে এগুলো তৈরি করেছে তা অবাক চোখে দেখলাম Iআমার চোখে সেরা লাগলো রাসমঞ্চ l দুপুরের লাঞ্চ করে গেলাম জোড় মন্দির প্রতি শনিবার এখানে পোড়ামাটির হাট বসে সেই হাট এ কতরকম পোড়ামাটির জিনিস দেখলাম,তারসাথে আদিবাসী নাচ আর ধামসা ও মাদল বাউল গান,অসাধারণ কাটলো পুরো দিনটা l 3.30P. M এ বাড়ি ফেরার জন্য গাড়ি স্টার্ট দিলাম ফিরবো গ্রামের বাড়ি তাই দূরত্ব একটু কম 107K. M!!! পথে আরামবাগ এ দাঁড়িয়ে একটু চা বিরতি করে সোজা বাড়ি পৌঁছলাম 6.45P.M...
সুন্দরবনের দুয়ারে ঝড়খালি
ডিসেম্বরের শেষ, ঠান্ডাটাও এবারে পড়েছে বেশ জাঁকিয়ে। হওয়ার মধ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে বেশ একটা উৎসব উৎসব মেজাজ। আমাদের অফিসই বা এই মেজাজের ব্যতিক্রম হবে কেন, রব উঠলো একটা পিকনিক করতে হবে। সেই মত শুরু হলো তোড়জোড় আর আলোচনা। সবার ইচ্ছা একটু নিরিবিলি আর offbit জায়গা। তবে জায়গাটা হতে হবে কোলকাতার কাছাকাছি, যেখানে দিনে দিনে গিয়ে ফিরে আসা যাবে। কারণ আমাদের অনেকজনই আছে যারা বাইরে রাত কাটাতে পারবে না। অবশেষে বহু আলোচনার পর ঠিক হলো ফেব্রুয়ারির ১১ তারিখ আমরা যাব পিকনিকে। আর জায়গা? জায়গা হলো সুন্দরবনের প্রবেশদ্বার ঝড়খালি। কোলকাতা থেকে দূরত্ব একটু বেশিই (১০০ কি.মি. এর সামান্য বেশি ), কিন্তু একদম ভোরবেলা নিজেদের গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়লে দিনে দিনে ফিরে আসা যেতেই পারে। শুরু হলো তোড়জোড়। প্রথমেই খোঁজ করা হলো মাথা গোঁজার ঠাঁইয়ের। internet ঘেঁটে দেখলাম Royal Sundarban Wild Resort টি বেশ সুন্দর। অবশেষে এলো সেই দিন। আমার pickup point ছিলো সকাল ৬:৩০ মিনিটে exide মোড়ে। সেইমত ভোর ৫টা নাগাদ বেরিয়ে পড়লাম বাড়ি থেকে। তখনো সূর্য্যিমামার ঘুম ভাঙ্গতে বেশ কিছুক্ষণ সময় বাকি আছে। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতেই চলে এলো হাওড়া স্টেশন যাবার বাস। পাঁচ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে গেলাম হাওড়া স্টেশন। সোয়া ছটার মধ্যেই পৌঁছে গেলাম Exide মোড়ে। বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হলো সবার আসার জন্য। সবাই আসতে আমরা এগিয়ে চললাম পরবর্তী peekup point শিয়ালদহর জন্য। সবাইকে নিয়ে আমরা যখন শিয়ালদহ ছাড়লাম ঘড়িতে তখন সাড়ে সাতটা বেজে গেছে। Science City পার করার পর বাইপাসের বাঁদিকের পাশের রাস্তা ধরে কিছুটা গিয়ে আবার বাঁদিক ঘুরে পরলাম বাসন্তী হাইওয়েতে। পথে বানতলার কাছে দেখি একটা দোকানে গরম গরম লুচি ভাজা হচ্ছে। ভোরবেলা কারোরই কিছু খেয়ে আসা হয়নি। অতএব যাত্রায় সাময়িক বিরতি। গরম গরম লুচি আলুর তরকারি আর জিলিপি দিয়ে বেশ জমে গেলো সকালের জলখাবার। জলখাবার খেয়ে আবার শুরু হলো যাত্রা। কখনো দিগন্ত বিস্তৃত ধানের ক্ষেত কখনো ছোটো গ্রাম আবার কখনো ছোটো শহরের মধ্যে দিয়ে ছুটে চললো আমাদের বাস। ক্যানিং পেরিয়ে কিছুটা যেতে পড়লো মাতলা নদী। দেখতে দেখতে একসময় পৌঁছে গেলাম ঝাড়খালি বাজারে। ঝড়খালি বাজার থেকে আরও কিছুটা এগিয়ে আমাদের রিসর্ট। রিসর্টে পৌঁছতে পৌঁছতে প্রায় বেলা ১২টা বেজে গেলো। রিসোর্টে ঢুকেই মনটা ভরে গেল। গেটের সামনেই রয়েছে ছোট্ট একটা জলাশয়। জলাশয়ের পাশের রাস্তা দিয়ে এগিয়ে গেলে পরপর সাজানো ছোটো ছোটো কটেজগুলি। কি সুন্দর তাদের নাম আমুদি, পুঁইমাচা, টগরী ... আরও কত কি। সব নামই জঙ্গলের সঙ্গে মিলিয়ে। সারা রিসোর্টটা জুড়ে ফুটে আছে গাঁদা, জবা, চন্দ্রমল্লিকা, মোরগঝুটি আরো কতরকমের ফুল। দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। সোমবার বলেই বোধহয় রিসর্টে আর কোনো অতিথি ছিল না। রিসোর্টের বাগানে শীতের মিঠে কড়া রোদ্দুরে ঘুরতে বেশ ভালোই লাগছিলো। মাঝে এলো গরম গরম চিকেন পকোড়া আর চা। চা পকোড়া খেয়ে বেরিয়ে এলাম রিসর্টের বাইরে। রিসর্টের ঠিক উল্টো দিকেই রয়েছে সুন্দরবনের বিখ্যাত ম্যানগ্রোভ গাছের ঘন জঙ্গল। দেখলাম জঙ্গলের মধ্যে একটা নৌকাও রাখা আছে। তার মানে জোয়ারের সময় ওই পর্যন্ত জল চলে আসে। আসে পাশে কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি আর ছবি তুলে কেটে গেলো আরো বেশ কিছুটা সময়। ইতিমধ্যে ডাক পরলো মধ্যাহ্ন ভোজনের। সবাই এসে জড়ো হলাম রিসর্টের রেস্তোরাঁতে। একে একে সকলের খাবার পরিবেশিত হলো। খাবারের স্বাদ ও পরিমাণ বেশ ভালো।
দুপুরের খাবার শেষ হতে হতে প্রায় আড়াইটে বেজে গেলো। এরপর আরও কিছুটা সময় গল্পগুজব আর ঘোরাঘুরি করে কাটিয়ে, বিকাল সাড়ে তিনটে নাগাদ আমরা রিসর্ট থেকে check out করে বের হয়ে পড়লাম ঝড়খালি জেটি ঘাটের উদ্দেশ্যে। এখান থেকেই বিদ্যাধরী নদীর বুকে ঘুরে বেড়ানোর লঞ্চ ভাড়া করতে হয়। কিন্তু বাস বা গাড়ি কোনোটাই পুরোপুরি জেটিঘাট অব্ধি যায় না। প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা পায়ে হেঁটে যেতে হয় জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে। বড় মনোরম সেই রাস্তা। এখানে রয়েছে ভারতের প্রথম Tiger rescue centre। আর আছে ছোট্ট একটা পার্কও। এই পার্কের মধ্যে একটি পূর্ণ বয়স্ক বাঘকেও রাখা আছে। তবে সময়ের অভাবে আমাদের আর পার্কে ঢোকা হয়ে ওঠেনি। রাস্তা ধরে আমরা এগিয়ে চললাম জেটিঘাটের দিকে। আগেই সাবধান বাণী নজরে এসেছিলো, এবার স্বচক্ষে দেখলাম। বেশ কয়েকটা কয়েকটা মোটাসোটা হৃষ্টপুষ্ট বাঁদর বসে আছে রাস্তার মাঝখানে। জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে একসময় পৌঁছে গেলাম জেটিঘাটে।
জেটিঘাটে পৌঁছে দেখলাম পুরানো জেটি বন্ধ হয়ে গেছে। লঞ্চ booking অফিসের মধ্যে দিয়ে গিয়ে এখন লঞ্চে উঠতে হয়। ঘন্টা হিসাবে লঞ্চ ভাড়া পাওয়া যায় এখানে। আমরা ২ ঘন্টার জন্য একটি লঞ্চ ভাড়া করে, তাতে উঠে পড়লাম। লঞ্চের নিচের দিকে রয়েছে চারটি double বেড কেবিন আর উপরে রয়েছে বসার ডেক। রয়েছে সুন্দর washroom এর ব্যবস্থাও। বসার জন্য় ডেকে চিয়ার পাতা রয়েছে অনেকগুলো। আমরা সকলেই উপরের ডেকে উঠে পড়লাম। কিছুক্ষণের মধ্যেই লঞ্চ ছেড়ে দিলো। আস্তে আস্তে বনের পাশ দিয়ে এগিয়ে চললো লঞ্চ। সুন্দরী, গড়ান, গেঁওয়া আরও কত জানা অজানা গাছ আর পাখি দেখতে দেখতে এগিয়ে চললাম বিদ্যাধরী নদী মধ্যে দিয়ে। কখনো দেখলাম মাছরাঙ্গা পাখি একনিষ্ট মনে জলের দিকে চেয়ে বসে আছে শিকারের আশায়, কখনো আবার দেখলাম একদল সি-গাল মাছধরা নৌকার পিছু পিছু ধাওয়া করে উড়ে চলেছে। বিদ্যাধরীর ব্যাপ্তি এখানে বিশাল, ভুল হয় সমুদ্র বলে। একুল থেকে ওকুলকে মনে হয় একটা সরু কালো সুতোর মত। তীরে সবুজের সমারহ আর বিদ্যাধারীর কালচে সবুজ জলে তার প্রতিফলন দেখতে দেখতে কখন যে একঘন্টা কেটে গেলো খেয়ালই করা গেলো না। এখান থেকে লঞ্চ তার মুখ ঘুরিয়ে ফেরার পথ ধরলো। এদিকে সূর্যদেবও তার দিনের পাট চুকিয়ে ঢলে পড়েছেন পশ্চিম দিকে। নদীর জলে আস্তে আস্তে লাগতে শুরু করেছে লালের ছোঁয়া। ঝড়খালিতে লঞ্চের মধ্যে বসে সূর্যডোবার দৃশ্য এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। প্রকৃতি যে কত রকমের রং দিয়ে নিজেকে সাজাতে পারে তা লিখে বর্ণনা করা সম্ভব নয়। সময় যত এগোতে থাকে, যত সূর্যের আলো কমতে থাকে তত বাড়তে থাকে রঙের বাহার। ক্যামেরায় সে দৃশ্য বন্দী করার চেষ্টা করলাম। কিন্তু ছবিতে যা উঠলো তার থেকেও অনেক সুন্দর সেই দৃশ্য। একসময় আস্তে আস্তে প্রকৃতির সব আলো ম্লান হয়ে গেলো, নেবে এলো রাত। জ্বলে উঠলো লঞ্চের আলো। আস্তে আস্তে আমাদের লঞ্চ আবার এসে ভিরলো জেটিঘাটে। এবার ফেরার পালা। চাঁদের স্নিগ্ধ আলোকে পাথেয় করে ফিরে চললাম আমাদের বাসের কাছে। দূষণহীন কালো আকাশে তখন মিটমিট করে জ্বলছে সপ্তর্ষি, কালপুরুষ আরো অসংখ্য় তারারা সেও এক মনে রাখার মত অভিজ্ঞতা…. |
Best Washing MachineCategories
All
Archives
November 2021
Best Autoclean Chimney |