#গন্তব্য_দার্জিলিং
#স্কুটি_রাইডিং #বাঁশবেড়িয়া-#রায়গঞ্জ #তারিখ-22/12/20 #পর্বঃ১ (আগাম ধন্যবাদ জানাই গ্রুপ আড্মিনিস্ট্রেশন কে, আমার পোস্ট ও আমাদের স্কুটি রাইডিং পাহাড় এর ভ্রমণ বৃত্তান্ত ভ্রমণ পিয়াসী বন্ধুদের কাছে তুলে ধরার জন্য) =============== "#অনেক_শক্তিমান_হাল_ছেড়ে_দেয় #হার_মানে_বহু_দ্রুতগামী #জীবন_যুদ্ধে_শুধু_তারাই_যেতে #যারা_ভাবে_জিতবোই_আমি" যদিও দার্জিলিং টুর কোন যুদ্ধ ছিলো না, বরং জীবনের দুর্দান্ত প্রাপ্তি, কিন্তু এক কথায় প্রতিকূলতা,বাধা,বিপত্তি,অনিশ্চয়তা, ভয়,নিষেধ,অসম্ভবনা কে জয় করা টাও একরকম যুদ্ধই বটে ।আর আমার মনে হয় সংঘর্ষ একটু আধটু জীবনে না থাকলে , জীবন টা বড় একঘেয়ে হয়ে যেত। ( 110 সিসি)পক্ষীরাজ কে নিয়ে দুজনের জার্নি বেশ মজাদার উপলব্ধি বটে, স্কুটি রাইডিং এ দার্জিলিং টুরের প্রতিটা ধাপে আমরা আনন্দ পেয়েছি,আমাদের কাছে এটা অসাধারন একটি টুর কেননা এতো সুদীর্ঘ সময়ের টুর এটাই প্রথম ছিলো, যা কিনা অন্যদের কাছে সাধারণ মনে হলেও হতে পারে আমাদের কাছে অনন্য । ভ্রমণ মানে জীবন বাঁচা, ভ্রমণ হলো এক বুক অক্সিজেন, এক একটি ভ্রমণ যেনো এক এক রকমের শিক্ষার আলোকে নিমজ্জিত করে মানুষকে। আমরা দুজনেই বরাবর একটু ব্যতিক্রমী।আমাদের টান টা একটু অসম্ভবনার দিকেই সর্বদা, মানে কঠিন টা করার মধ্যে বেশ একটা দারুণ মজা খেলে যায় ।একটা বাস্তব কথা বলি স্কুটি তে অনেকেই নাক সিটকায়, "ওহো! স্কুটি তে পাহাড়?হবে না বা পারবে না !বাইক নিয়েই যেতে যেখানে মানুষ কতবার ভাবছে সেখানে স্কুটি তাও দুজন এক গাড়িতে, অসম্ভব "। এভাবে একটু দমে যায় অনেকেই,আমি নিরাশ হইনি, বন্ধুও হয়নি ,আমরা আবার অন্য কথা বলি ,"পারবো না" বলে কিছু কথা আমাদের অভিধানে নেই। চেষ্টা ও মনোবল টাই আসল। অনেক সুদূরের স্বপ্ন দেখি আমরা দুই বন্ধু, অনেক কিছু অসম্ভব কে জয় করার স্বপ্ন দেখি দুজনেই, আরো যাবো এগিয়ে উৎসাহ নিরুৎসাহ সব কিছুকে পিঠে কোলে চাপিয়ে নিয়েই ছুটবো,কারণ এই দুইই মানুষের ভেতরকার শক্তি কে জাগ্রত করে তোলে।সময় ও সুযোগের অপেক্ষায় শুধু। খুব ইন্টারেস্টিং গপ্পো আমাদের এই দার্জিলিং ভ্রমণ ,স্কুটি চালিয়ে আমি এই মজা জীবনে কখনও পেতাম না যদি পাহাড়ে রাইডিং না করতাম , চরম আনন্দ আমরা দুজনেই পেয়েছি রাইডিং করে, চড়াই এ ওঠার সময় গাড়ি উঠবে তো? তার ওপরে যখন ঢাল এ উঠে সামনে গাড়ি এলে বা জ্যাম এ পড়লে দাঁড়াতে হচ্ছিলো তখন হুরহুর করে গাড়ি নেমে যাবার সম্ভাবনা,ব্রেক যেখানে ধরছে না (ঢাল এ) গাড়ির হ্যান্ডেল ঘুরিয়ে পা দিয়ে রাস্তা দৃঢ় ভাবে আটকে থাকা আর উতরাই এর সময় ব্রেক ধরতে ধরতে নামা উফ্ফ সেসব বেশ শিক্ষণীয়। সম্পূর্ণ টুর টাকে কয়েকটি পর্বে আনবো সকলের সামনে, স্কুটি নিয়ে দার্জিলিং টুরে যাবো আজ থেকে 4বছর আগে ধুর বছর কেনো চারদিন আগেও ভাবিনি ।রাইডিং আজকাল আমাদের পাগল করে তুলছে ।যারা স্কুটি নিয়ে দূরে রাইডিং করতে ভয় পাও তারা অবশ্যই পড়বে,উৎসাহ মিলবে। এমন এক রোমাঞ্চকর গল্পের শুরুটা কিন্তু অন্য ভাবে হয়েছিলো... প্রবল শীতের আমেজ, সময় টা ডিসেম্বর এর মাঝামাঝি ,বেশ জাঁকিয়ে ঠাণ্ডা টা পড়েছে ।স্নান সেরে ছাদে বসে উষ্ণ রোদে গা শেঁকছি , এক আরামদায়ক মনোমুগ্ধকর স্পর্শ পিঠে আঙুল বুলিয়ে যাচ্ছে সুখের , হঠাত্ ফোন টা বেজে উঠলো,দেখি বান্ধবীর (চন্দনা),ফোন ধরতেই বললো "আমার সব প্যাকিং কমপ্লিট"..... আমি-কী? কিসের প্যাকিং? সকালে কথা হলো বলিস নিতো কোথাও যাবি... সে- কালকে দার্জিলিং যাচ্ছি । আমি- তাই? কার সাথে? সে-তোর সাথে, অবশ্য পক্ষীরাজ নিয়ে যাবে? । আমি-কী? তোর মাথা খারাপ হয়ে গেছে? কালকে দার্জিলিং যাবি আজ দুপুরে বলছিস?এরপর না আমি ফোন করি তাকে আর না সে আমায়,কোন কথা হয়নি, দুপুরে জমিয়ে ঘুম দিলাম সব ভুলে গিয়ে শীত ঘুমে গেলাম?, সন্ধ্যায় হঠাত্ দরজায় কলিং বেল বাজলো, চোখ ডোলতে ডোলতে দরজা খুলে দেখি, পক্ষীরাজ দাঁড়িয়ে, সাথে তার মালকিন হাতে ব্যাগ...?? আমি-কী করেছিস ভাই? তুই সত্যি যাবি ভেবেছিস?? এরপর এতো গল্পে যাচ্ছি না, তবে কম সময়ের প্যাকিং কার্য আমি পারবনা জানি, তাই সে কাজের চাপ ও নিইনি,ওকেই দিলাম, ওই আমার ব্যাগ প্যাক করলো সাড়ে সাত থেকে সাড়ে নয়টা অবধি? এই লাগবে ওই লাগবে করে করে, তবে আমরা লাগেজ যত সম্ভব কম করতে চেয়েছি,হাতে গোনা সমস্ত কিছু, যতটা প্রয়োজন তার অধিক কিছুই নয় । ওর মুখে শুনলাম, দার্জিলিং প্রায় 700কিমি প্রায় 17/18ঘন্টার জার্নি বা তার অধিক । তখন আমি- হ্যাঁ? এতো কিমি? পুরুলিয়া এর অর্ধেক এর অর্ধেক ছিলো, যেটা কিনা অক্টোবর এ করে এসে।কিন্তু কোন প্লান ছাড়া পাহাড়? কোথায় থাকবো ?কী করবো?এতো কিমি রাইডিং তো আগে আমরা করিনি ।আসলে সে মনে মনে একটা প্লান ভেজেই এসেছিলো।সে জানে আমি পারবো,আর আমিও জানি সে যখন ভেবে নিয়েছে সেও পারবে, পাহাড় পাহাড় করে বহু সময় ধরে পাগলামী করছে, ওর পাহাড় প্রীতি আমাকেও পাহাড়ের প্রতি আবেগ প্রবণ করে তুলেছিল, পাহাড় কে এতো ভালবেসে ফেলবো বুঝিনি ।এরপর আমাদের পরিচিত অভিজ্ঞ দুই দাদার সাথে একটু আলোচনা করা হয় রাস্তা সংক্রান্ত বিষয়ে । আমার সাথেও কিছুটা আলোচনা করলো , আমার আবার রাইডিং এ অল্প বিস্তর দক্ষতা থাকলেও রাস্তা সংক্রান্ত যেকোন জ্ঞান চন্দনার বেশি , তাই সে যেভাবে বলে আমিও এগিয়ে যাই ।সময় তো কম এর মধ্যে খেয়ে ঘুমাতে হবে ভোর 5টায় বেরোনো, এতো ঘণ্টার রাইডিং, শরীর ক্লান্ত হলে চলবে না । এমন একটা রোমাঞ্চ কর টুরের উত্তেজনা তে আমি কিছু সময় ছটফট করেছি ঠিকই কিন্তু কখন যেনো ঘুমিয়ে গেছি, অল্যর্ম বাজার অনেক আগেই উঠে পড়লাম, রেডি হয়ে নিলাম দুজনেই সুরক্ষা কবজ গুলি পড়ে , ঠাকুর প্রণাম করে , পক্ষী রাজ কে ধূপ দেখিয়ে প্রণাম করে জয় গুরু বলে বেরিয়ে পড়লাম ।এ বিষয়ে বলে রাখা দরকার ডিসেম্বর এ দু বার ডাক্তার এর ঘরে সেবা নিয়েছে পক্ষীরাজ, ।ডাক্তাররা ছাড়পত্র দিয়েছিলো দূরের যেকোন যাত্রার জন্য ।আমরা যাত্রা শুরু করলাম বাঁশবেড়িয়া থেকে মগরা গুরাপ রোড ধরে ।কী যে একটা উন্মাদনা জাগছে যতবার ভাবছি দার্জিলিং আমাদের এবারের গন্তব্য ঠিক ততবারই । ঘন কুয়াশার চাদর এলিয়ে রাস্তা গুলো যেনো ঘুমোচ্ছে, বেশ অন্ধকারময় ও কুয়াশাময় । এগিয়ে যাচ্ছি ফগ লাইট ও হ্যাজার্ড লাইট জ্বালিয়ে । তখন জমিয়ে ঠাণ্ডা, কুয়াশায় ভিডিও করতে গিয়ে চন্দনা বেশ নাজেহাল ঠাণ্ডা তে, দস্তানা খুলতেই হাত ঠান্ডায় জমে যাচ্ছিলো ওর?,তবু আমার আবদারে ভিডিও করে সে ।এরপর দুর্গাপুর এক্সপ্রেস ওয়ে ধরে শক্তিগড়ে যখন ঢুকলাম সময় তখন প্রায় সকাল 6,30 মিনিট।সেখানে চায়ের দোকানে চা, বিস্কুট খাই ও ফ্রেশ হয়ে ,একটু হাত পা গুলো কে ,ও পক্ষীরাজ কে বিরাম দিয়ে আমরা বর্ধমানের দিকে এগিয়ে গেলাম, উল্লাস মোড় হয়ে এগোতে থাকলাম, এলো নতুন গ্রাম সেখানে পেট্রোল পাম্প এলে পক্ষীরাজ কে পেট ভরিয়ে তেল খাইয়ে , আমরাও একটু ফ্রেশ হয়ে নিলাম,ফুটি সাকোর জঘন্য রাস্তা সাথে অজস্র বাম্পার ডজ করতে করতে কুলি , উফ্ফ এটা কেমন রাস্তা? আমি ওকে বারবার জীগ্গেস করছিলাম এই রাস্তা ধরে মানুষ দার্জিলিং এর পথে যায়? হায় ভগবান, অন্য রাস্তা কী ছিলো না?ও জানায় হ্যাঁ এটা ধরেই যায়। আমি ভাবছিলাম ও নিশ্চই ভুল রাস্তায় ঢুকেছে । তাই বারবার বলছি কিরে ঠিক যাচ্ছি?ও বলছিলো হ্যাঁ রে ।যাইহোক দীর্ঘ সময় এমন খারাপ রাস্তায় গাড়ি চালিয়ে শর্ষের ক্ষেত দেখলাম এরপর মোড় গ্রাম এর দিকে যাচ্ছি । মন প্রান ভরে গেলো, খারাপ রাস্তার তিক্ততা কাটিয়ে মনটা মুহুর্তেই ফুরফুরে হয়ে গেলো । এমন শর্ষের ক্ষেত সত্যি আগে কখনও দেখি নি । দূর দিগন্ত জুড়ে শুধু শর্ষের ক্ষেত, গভীর হলুদ রঙের । কী ভালো লাগছিলো মিঠে রোদ আর হলুদ শর্ষের ক্ষেত ।মোরগ্রাম ঢোকার আগে ফের খারাপ রাস্তা পেলাম, বড় বড় গর্ত রাস্তায়, যেগুলো বেশ চওড়া,সমগ্র রাস্তা যেনো খুঁড়ে খুঁড়ে রাখা হয়েছে, লরি, ট্রাক পাস যখন করছে তখন যেনো ধুলোর পাউডার কেউ বাতাসে মিলিয়ে দিচ্ছে কুয়াশার মত, এরই মাঝে সেই গর্তের মুখে একজন পঙ্গু মানুষ ভিক্ষে করছে, ধুলোয় তার শরীর আচ্ছাদিত, একটু অসাবধানতা তার মৃত্যু ডেকে আনতে পারে, আমরা খুব আশ্চর্য হলাম, এমন বিপদ জনক খারাপ রাস্তার মাঝে বসে এভাবে ভিক্ষে করছে । যাইহোক এগোচ্ছি আমরা, এক ঘন্টা পর পর কিছু সময় আমায় বিরতি দিয়ে চন্দনা চালাচ্ছিলো, তবে আমি বেশি সময় পিলিয়ন হয়ে বসতে পারিনা, রাইডিং করার জন্য হাত পা বেশি কামড়াতে থাকে?,তবে অনেকেই ভাবেন পিলিয়নরা বেশ আনন্দেই যায়, আমার মনে হয় তাদের ঘাড় পীঠ, কোমর বেশি ধরে , আমি তো চালাতে চালাতে হাত, পা কোমর, মাথা নানান ভাবে সুবিধা মতো নেড়ে চেড়ে নিই, যাতে এক ভাবে বসে কোন অসুবিধা না হয়, তাই ব্যাথা যন্ত্রনা টা উপলব্ধি হয়না বা হচ্ছিলো না তখনও ।মোরগ্রাম পার করেই এন.এইচ এ উঠতেই একদম ঝকঝকে সুন্দর রাস্তা পেয়ে আমি মনে মনে আনন্দিত হলাম ও শান্তির নিঃশ্বাস ফেললাম । এরপর ধূলিয়ান গঙ্গা হয়ে ফারাক্কা ব্যারেজ দিয়ে পাস করছি,অধিক জ্যাম থাকার দরুন , পক্ষীরাজ কে উড়িয়ে নিই ফুটপাত এর ওপরে, সেখান থেকেই এগোতে থাকি,সময় তখন প্রায় দুপুর 1টা, চন্দনার কাছে ওটা স্বপ্নের মত, ট্রেনে যেতে যেতে কখনও ভাবেনি সে এখান থেকে তার পক্ষীরাজ এ চড়ে যাবে কখনও ।আর আমি তখনও বিস্মিত, আচ্ছা এগুলো স্বপ্ন নয়তো, হঠাত্ কেউ ডাকবে আর ভেঙে যাবে ?সত্যি দার্জিলিং যাচ্ছি স্কুটি তে ?এ যেনো স্বপ্ন, বিশ্বাস হচ্ছিলো না । একটা চিমটি দে তো দেখি, ওরে সর্বনাশা চিমটি দিলো সে, ছোটবেলার রাম চিমটি শাম চিমটি মনে পরে গেলো? ।সেখান থেকেই এগোতে থাকি,সময় তখন প্রায় দুপুর 1টা,এরপর দাঁড়াই পেট্রল পাম্প এ, পক্ষী রাজ পেট ভরে তেল খায়, আমরাও ফ্রেশ হয়ে কেক ও জল খেয়ে নিই, ও চুইংগাম মুখে নিয়ে এগোতে থাকি পুনরায় ।
এরপর মালদা রায়গঞ্জ টোল ট্যাক্স পাস করে আমরা এগোচ্ছি তখন 3টে হবে। হঠাত্ সেখানে গাড়ির পেছনের টায়ার সমস্যা করলে মুহুর্তেই স্পীড কমিয়ে নিই ও বাঁ দিক চেপে দাঁড়িয়ে যাই, খারাপ রাস্তায় দীর্ঘ সময় চালিয়ে টায়ার বেশ ক্ষতি গ্রস্ত হয়েছিলো, সৌভাগ্য বশত কয়েক পা দূরের গ্যারেজ থেকে টায়ার বদলে নতুন টায়ার লাগিয়ে নিই ।কারণ সম্পূর্ণ টুর টা নির্ঝঞ্ঝাট চাইছিলাম আমরা । বেশ কিছু সময় অতিবাহিত হয় গ্যারেজে , কারণ গ্যারেজ মালিক কে ফোন করে দূর থেকে ডেকে আনতে হয়, 2কিমি দূর থেকে টায়ার কিনে আনতে হয়, তাই অনেকটা সময় এখানে কেটে যায়। এর মাঝে তো বলতে ভুলে গেছি আমরা সকালের খাবার ,দুপুরের খাবার কিন্তু স্কিপ করে গেছি, পেট্রোল পাম্প গুলোতে দাঁড়িয়ে জল বিশ্কুট, কেক খেয়েছিলাম তাই খুব একটা ক্ষিদে ভাব টা ছিলো না ।দার্জিলিং যাবার আনন্দে ব্রেকফাস্ট ,লাঞ্চ সব মাথার ওপর দিয়ে চলে গেছে ।এদিকে ধীরে ধীরে দিনের আলো কমতে থাকে, সূর্য শর্ষের ক্ষেতে ধীরে ধীরে লুকোতে থাকে, এরপর আমরা রায়গঞ্জ ঢুকি বিকেল 5 নাগাদ। আমাদের দার্জিলিং টুর টা নিয়ে কাউকেই সেভাবে জানানো হয়নি, হাতে গোনা কয়জন ছাড়া, যার কথা না বললেই নয় রাজীব দা যিনি প্রথম থেকে দার্জিলিং টুর টা জানতে পেরে আমাদের সাথে একরকম জুড়েই ছিলেন । বার বার ফোন করে উৎসাহিত করা,বা আমরাও যখন পাম্প বা কোথাও দাঁড়িয়েছি, ওনাকে ফোন করেছি ঠিক সময় মত যাচ্ছি কিনা জানতে চেয়েছি, উত্তরে তিনি জানিয়েছেন দারুণ যাচ্ছি,হেব্বী টাইমিং, খুব ভালো লাগছিলো তখন, উনি খুব সুন্দর ভাবে আমাদের গাইড করছিলেন ।রাজীব দা জানান রায়গঞ্জ এ হোটেল ভেঙ্কটেশ এর কথা । সেখানে বাজেট ফ্রেন্ডলি রুম না থাকায়, সেখানের লোকাল মানুষের থেকে জানতে পারি কিছু ভালো হোটেলের নাম। একদম পুরোনো হোটেলে গিয়ে উঠি নাম নটরাজ । সব দেখে বুঝে সেফ লাগলো ও বাজেট আমাদের পকেট ফ্রেন্ডলি, আর গাড়ি রাখার সুব্যবস্থা আছে দেখে থেকে গেলাম ।এরপর রুমে এসে ফ্রেশ হতেই পেটের দুষ্টু ক্ষুধার্থ ইঁদুর গুলো চেচিয়ে গাল দিতে লাগলো?, বাধ্য হয়ে ছুট লাগলাম ব্রেকফাস্ট লাঞ্চ ও ডিনার টা একসাথে সারবো বলে?। পাশেই জীগ্গেস করে জানলাম ছোট একটি খাবারের হোটেল,এক কাকু রুটি করছেন, দূর থেকে এক ঝলক দেখে বুঝলাম তিনি বেশ পরিষ্কার কাজ করেন, দোকান টিও বেশ সাফ ,কাগজের থালা ব্যবহার হয়, বললাম চল ভালোই হবে খাবার । আমরা ভাত চিকেন ও মাছ নিলাম, সঙ্গে ছিলো আলুর চোকা ডাল ও সবজী, লেবু, পেয়াজ । বেশ সুস্বাদু খাবার । খেয়ে এরপর রুমে ঢুকে জিনিস পত্র গুছিয়ে রেখে দু-দণ্ড গপ্পো করে, পরের দিনের প্লান প্রোগ্রামিং করে শুয়ে পড়লাম জলদি ।পরের দিন রায়গঞ্জ এর জন্য বেরোবো । আমরা সেখান থেকে 5টার পরে বেরোবো ঠিক করি, কারণ অচেনা জায়গা, তারপর কুয়াশা হবে প্রচুর, তাই 6টায় বেরোবো ঠিক হয় । কিন্তু আলর্ম বাজার বহু আগেই ঘুম ভাঙে, ভোর 4টে, শুয়ে রইলাম চোখ বন্ধ করে । এরপর 5টা নাগাদ জানলা খুলে দেখি গভীর কুয়াশা । চন্দনা কে বললাম দেখ রাস্তা দেখা যাচ্ছে না, 6টা তেও এই কুয়াশা কাটবে বলে মনে হয়না, কুয়াশা আমাদের খুব না হলেও কিছুটা চিন্তায় ফেলে, তাতে আবার এমন অন্ধকার ।বারবার জানলা দেখি, এবং বুঝে যাই ঘন কুয়াশা তেই যাত্রা শুরু করতে হবে নাহলে উপায় নেই, পাহাড় ঢুকতে দেরী হয়ে যেতে পারে । আমরা তখনই উঠে রেডি হতে থাকি ,ভাবি ব্যাগ বেঁধে ফেলবো, কারণ ব্যাগ গাড়িতে বাঁধতে সময় লেগে যায় অনেকটাই , আমাদের দুটো ব্যাগ ছিলো, একটা পায়ের সামনে একটা গাড়ির সাইডে বাঁধতে হয় ।হোটেলের স্টাফ তখন গভীর ঘুমে, তাকে ডাক দিলে সে এই শীতে উঠে গায়ে মাথা শোয়টার মাফলার দিয়ে দু চারটে তালা খুলতে খুলতে প্রায় 5/10মিনিট কেটে গেলো,ফোনের আলো জ্বেলে গাড়িতে ব্যাগ বেঁধে দেখলাম ঘড়িতে তখন ভোর 5.45। আমরা গুরুদেব কে স্মরণ করে দুজনে হাসি মুখে করমর্দন করে ঘন কুয়াশার মাঝে পক্ষীরাজ এ সওয়ার হলাম। ক্রমশ প্রকাশ্য................................... @পুস্পিতা চক্রবর্তী
0 Comments
Leave a Reply. |
Best Washing MachineCategories
All
Archives
November 2021
Best Autoclean Chimney |